বুধবার | ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:১৫
Logo
এই মুহূর্তে ::
শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (নবম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন স্টেথোস্কোপ আবিষ্কারের কাহিনি : রিঙ্কি সামন্ত মজন্তালির বংশধর : নন্দিনী অধিকারী অপ্রতিরোধ্য আরাকান আর্মি রাখাইন পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সংকট : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (অষ্টম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন স্বর্গলোকে মহাত্মা ও গুরুদেবের সাক্ষাৎকার : সন্দীপন বিশ্বাস বই ছাপানো নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড : সাইফুর রহমান শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (সপ্তম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সৌমেন দেবনাথ-এর ছোটগল্প ‘শান্তিগন্ধা’ বিজেপির প্রভাবেই কি নির্বাচন কমিশনের আচমকা ভোট বৃদ্ধি : তপন মল্লিক চৌধুরী শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ষষ্ঠ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন নগ্ন নৃত্যে বাংলায় বৃষ্টির ব্রত – পুণ্যিপুকুর, হুদুম দেও, ব্যাঙের বিয়ে : রিঙ্কি সামন্ত শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (পঞ্চম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন বিজন প্রাণের প্রাঙ্গণে : সন্দীপন বিশ্বাস বিভূতিভূষণের পান্ডুলিপি — ‘পথের পাঁচালী’ : সবিতেন্দ্রনাথ রায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (চতুর্থ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (শেষ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথের বিদেশি ফটোগ্রাফার : দিলীপ মজুমদার দর্শকের অগোচরে শুটিং-এর গল্প : রিঙ্কি সামন্ত রশ্মির নাম সত্যজিৎ “রে” … : যীশু নন্দী হুগলিতে মাধ্যমিকে চতুর্থ ও দশম উল্লেখযোগ্য ফলাফলে নজর কাড়ল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (তৃতীয় পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (ষষ্ঠ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস ১৯২৪-এ রবীন্দ্রনাথের স্প্যানিশ ফ্লু হয়, পেরুযাত্রার সময় : অসিত দাস গাইনোকলজি ও গাইনি-ক্যান্সারে রোবোটিক অ্যাসিস্টেড সার্জারীর ভূমিকা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সমাজতান্ত্রিক আদর্শের ছোটগল্পকার আলাউদ্দীন আল আজাদ : আবু জাফর রেহমান শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (দ্বিতীয় পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (পঞ্চম পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাতি ফোলালেও আম জনতাকে ভোট কেন্দ্রে টানতে পারেননি : তপন মল্লিক চৌধুরী আলুর দামে রাশ টানতে না পারলে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (প্রথম পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস

ড. মিল্টন বিশ্বাস / ১৮০ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলা উপন্যাসের উদ্ভব ও বিকাশের সঙ্গে যে নাগরিক জীবন ও তার নানাবিধ আন্তর অসঙ্গতির চিত্র ঔপন্যাসিকের তীক্ষ্ণ দৃষ্টির আঁচড়ে উন্মোচিত হয়েছিল তা বঙ্কিমচন্দ্রের “রজনী’’ থেকে রবীন্দ্রনাথের “চোখের বালি’’ ও শরৎচন্দ্রের “গৃহদাহের’’ পল অতিক্রম করে বহুবর্ণিল বর্ণনা বিন্যাসে এক ভাস্কর্যসুলভ সৌধ নির্মাণের পর দেশভাগের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের উপন্যাসে ক্রমপ্রসার লাভ করেছিল অনিবার্য গতি সূত্রে।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নগরায়ণ এবং নাগরিক জীবনর ক্রমবর্ধমান প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে তার জীবন প্রণালী ও রুচির পরিবর্তন হতে থাকে। জীবনের নানাবিধ অনুষঙ্গ যেমন প্রেম-ভালোবাসা, নর-নারীর জটিল মানসিক ও দৈকি সম্পর্ক এবং অন্যান্য মূল্যবোধের পরিবর্তনকে আত্মস্থ করে ঔপন্যাসিক তাঁর সূক্ষ্ম দৃষ্টিকোণ থেকে নাগরিক সমাজে ব্যক্তির প্রথাগত পথের বিপরীতমুখীন হবার প্রবণতা ও তা থেকে পারিবারিক জীবনে দ্বন্দ্ব সংঘাতের উন্মেষ এবং সর্বোপরি ব্যক্তি চৈতন্যের অতল গহ্বরে টানাপোড়েনের পলে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় তারই কুশলী উপস্থাপন হতে থাকল এ সময়ে।

সেলিনা হোসেন স্বাধীনতা উত্তরকালে সাহিত্য জগতে প্রবেশের পরে নাগরিক জীবনের চিন্তা ও আবেগকে অন্তরে লালন করে নাগরিক মধ্যবিত্ত জীবনের জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তি মানুষকে অবলোকন করতে চেয়েছেন তাঁর “পদশব্দ’’ (১৩৯০/১৯৮৩) “মগ্নচৈতন্যে শিস’’ (১৯৭৯) “খুন ও ভালোবাসা’’ (১৯৯০) এবং “ক্ষরণ’’ (১৯৮৮) উপন্যাসে। আলোচ্য উপন্যাসে তিনি নাগরিক জীবনে ব্যক্তি মানুষের অতল গহীনে ডুব দিয়ে তাঁর যন্ত্রণা, কষ্ট, ভয়, হতাশা, সংশয়, সাহসিকতাকে পরিস্ফুট করেছেন অসামান্য আলোকসম্পাতে। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলো একডিকে যেমন নাগরিক রুচি এবং আবেগকে লালন করে তেমনি অন্যদিকে নাগরিক সভ্যতার যে ঋণাত্মক অবদান-সংশয়, বিচ্ছিন্নতাবোধ, কপটদাম্ভিকতা, নিঃসঙ্গতা, আত্মানুসন্ধানের আত্মদহন প্রভৃতি মনোজগতের অতল গহ্বরের অন্ধকারের পুঞ্জীভূত উপাদানসমূহ চরিত্রের মনের মধ্যে থেকে লেখক আবিষ্কার করেছেন বিশ্লেষণমুখী প্রক্রিয়ায়। নাগরিক পুঁজিতন্ত্রের অভিঘাতে যেহানে ব্যক্তির সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো অগ্রাহ্য হয়েছে, অনিকেত সঞ্চারী করে তুলেছে তার দৈনন্দিন জীবন, সেখানে যন্ত্রণাদগ্ধ সেই ব্যক্তির মনস্তত্ত্বের বিবরণ ও বিশ্লেষণ হয়ে উযেছে প্রধান। নাগরিক সভ্যতাও যে ধর্মীয় আবেষ্টন থেকে ব্যক্তির যন্ত্রণা ও অবচেতনার কামনাকে অগ্রাহ্য করতে চায় এবং এরই ফলে ব্যক্তি মানুষ কিভাবে প্রতিবাদী সত্তায় জাগরিত হয় তারই শিল্পরূপ এ-পর্যায়ের উপন্যাসের গতিচঞ্চল প্রান্ত।

সেলিনা হোসেনের “পদশব্দ’’ আট পরিচ্ছেদে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের ছাত্রী সালমার নাগরিক জীবনে দর্শনের অধ্যাপক পিতা এবং মা ও ভাইয়ের সঙ্গে একসঙ্গে একই গৃহে অবস্থান করা সত্ত্বেও নিরন্তর শূন্য থেকে শূন্যতার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে শেষে সকল প্রথানুগত্যের বিরুদ্ধাচারণের মাধ্যমে দীর্ঘদহন ও যন্ত্রণার মাঝসমুদ্র পেরিয়ে আত্মঅনুসন্ধানের উপকূলে উপনীত হবার কাহিনী।

উপন্যাসের পাঠ উন্মোচনেই আমরা সালমার সাক্ষাৎ পাই সে আবছেশ “পাপ আবার কি? মানুষ যতক্ষণ নিজের বিবেকের কাছে অপরাধী নয় ততক্ষণ কোন পাপ নেই।’’ জিজ্ঞাসায় জর্জরিত সে “তবু কেন তোমার জ্ঞানের তলায় এত অন্ধকার দেখি বাবা?’’ এবং বিরক্তি প্রকাশ “মা একবার ডেকে গেছে। সালমা ওঠেনি। আবার ডাকছে। সালমা চুপচাপ বসে থাকে। সাড়া দেয় না। মাঝে মাঝে ঐ কণ্ঠ ভীষণ কর্কশ লাগে। দয়ামায়হীন নিষ্ঠুর জল্লাদের মত’’ অর্থাৎ আমরা স্পষ্ট ইঙ্গিত পাচ্ছি সালমা যে পরিবারে ছোট ভাই সাকিব ও পিতা-মাতার সঙ্গে থাকে সে পরিবারের ওপর তীব্র ক্রোধ লালন করে। কিন্তু নিঃসঙ্গ সালমার এমন কোন সঙ্গী নেই যে সে সেই যন্ত্রণা লাঘবের জন্য সঙ্গ দেয়। এজন্য সে দোতলার নাসিমা আপা সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠে, যার — “মুখটা মুছে দিয়ে বড় একটা গোলাপ ফুলে ভেসে ওঠে’’। সেই নাসিমা আপা সম্পর্কে তার মার মনোভঙ্গি — “মা নাসিমাকে দেখতে পারে না। কেননা নাসিমা প্রচলিত সংস্কারের বেড়ি ভেঙ্গেছে। তাই মা’র যত রাগ’’ (পৃ. ১২)।

সালমা সাকিবের উল্টো মেরুর মানুষ। সালমা “ক্লান্ত হলেও গণ্ডীতে ফেরে না নতুন ছাউনী খুজে।’’ আর সাকিব “হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে ছাউনীতে ফেরে।’’ সালমা দর্শনের ছাত্রী, সাকিব সাইকোলজির, যা নাসিমা পড়ান। কিন্তু এ দুই ভাইবোন যেন একে অপরকে আশ্রয় করতে চায়। নিজেদের ভেতরের শূন্যতা পূরণের জন্য তারা নিদেনপক্ষে কলা বলতে চায়। উপন্যাসে উল্লেখ না থাকলেও এদের শূন্যতাবোধ দীর্ঘকালীন এটা বোঝা যায়। একদিকে সাকিব স্প্যানিশ গিটারের সুর মূর্ছনায় শূন্যতার ভেতর নিমজ্জিত হয়। আর তার শূন্যতা এমনই অনিকেত সঙ্কেত নির্দেশকে যে সে বাগানের মালি জলিলের ওপর ক্রোধান্বিত হয়ে ভাবে — “ষাট বছরের ওপরে আর কাউকে বাঁচতে দেয়া উচিত না। এর মধ্যে কারো যদি স্বাভাবিক মৃত্যু না হয় তবে তাকে গুলি করে মেরে ফেলা দরকার’’ (পৃ. ১৬)। কিন্তু তারপরও সে অশিক্ষিত মূর্খ জলিল মিয়ার ভালোবাসার গল্প শোনে। স্বাভাবিক জীবন বিকাশের জন্য নাসিমা আপার সঙ্গে সাব্বির ভাইয়ের নিঃসঙ্কোচ মিলন দৃশ্য দেখে সালমাও সহপাঠী বন্ধু রকিবের সঙ্গে জীবনের স্বাভাবিক প্রান্তকে স্পর্শ করতে চেয়েছে —

“রকিব তুই আমাকে নিয়ে যাবি সেই দ্বীপে? আমি যাব। স্লো মোশন ছবির মত যাব। নিঃশব্দে। ভেসে অেসে। আঃ কি আনন্দ। সুখ পেতে হলে সুখের মত করে পেতে হবে। একটু সুখে তৃপ্তি নেই। স্থল হয়ে যায়। তুই আর আমি আলাদা জগৎ পড়ব। নিয়ম ভাঙ্গবো সুখের রঙ্গ দেখব। পাখির ডাক বদলাব। গাছের পাতা বানাব। আমরা বিধাতার মত হবো। সৃষ্টির আনন্দে মাতবো। আরো কত কি করব। আরো কত কি’’ (পৃ. ৩৫)।

সালমার বহির্বাস্তবতার সঙ্গে অন্তর্বাস্তবতার দ্বন্দ্ব রূপায়ণে লেখক হয়েছেন আছেরা গতিশীল। এ জন্য সম্পর্কের সূত্র ও অধিকার থেকে পিতা-মাতা যে শাসন ও কর্তৃত্ব আরোপ করতে চায় তার ওপর সে সম্পর্কে তার সতর্ক, যুক্তিশীল মানসিকতা —

“উত্তরাধিকার সূত্রে সমাজের কাছ থেকে পাওয়া সংস্কারের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে এমন শর্ততো কেউ দেয়নি।’’ এজন্য —

“প্রতি মুহূর্তে নিজেকে অতিক্রম করে চলতে’’ চায় সালমা। সালমা এও জানে যে পিতা জাহিদ চৌধুরীর আদরের আতিশয্যের কারণ একদা গণকের বাণী নির্ভর —

“এ মেয়ে আপনার জন্যে ভাগ্য বয়ে নিয়ে এসেছে। এ যদিন ঘর ছাড়বে আরপরই আপনার একটা অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে’’ (পৃ. ২২)।

ভাগ্যে বিশ্বাসী অস্তিত্বের বিপন্নতায় ভীত পিতার অপত্য স্নেহে যে সালমা বাল্যকালে সংকট-পীড়া থেকে পিতার মধুর স্মৃতি নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছিল, একদিন সে পরিণত মানসিকতা অর্জনের পরে ভাবছে —

“তুমি অধ্যাপক জাহিদ চৌধুরী থাক। আমার বাবা হতে এস না’’ (পৃ. ৪৭)।

সালমা বিস্ময় জীবনের বিষণ্ণ মানসিকতা উন্মোচনের জন্য নির্ভাবনাময়ী রুবা ভাবীর সংসার চিত্রের উপকাহিনীটি লেখক বিষয়ের অনিবার্যতায় সংগ্রথিত করেছেন।

স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জীবন দৃষ্টির আলিঙ্গনে সালমা পিতামাতাকে সমালোচনা করেছে নির্মোহ-নিরাসক্তভাবে। তাঁদের চারিত্রিক ক্রটিসমূহ বিশে¬ষণে উন্মুক্ত সালমার সহনশীল ও মননশীল প্রবৃত্তিসমূহকে উন্মোচন ঔপন্যাসিকের অন্যতম কৃতিত্ব। তার ছোট ভাই সাকিবের সঙ্গে মিতালীর সম্পর্ক, বাগানে পোষা একজোড়া সুখ-দুঃখ নামে খরগোশ এবং জলিল মিয়ার বাল্যপ্রেমের গল্প ও টেলিফোনে অজ্ঞাত কণ্ঠস্বরে আলাপী জনৈক ব্যক্তির বেদনার্তস্বর প্রভৃতি অনুষঙ্গে ঔপন্যাসিক সালমার অন্তর্জগতের প্রচণ্ড ক্ষরণকে নাগরিক জটিলতার আশে¬ষে বিবৃত করেছেন।

প্রচলিত জীবনাগ্রহে অসম্মত সালমা জহিরের সঙ্গে মা’র দেয়া বিবাহ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বন্ধু রকিবের সঙ্গে নির্জন লোকালয়ের ডাকবাংলায় মিলিত হয়েছে।

নিজের আত্মমর্যাদায় সর্বদা সজীব ও স্বতন্ত্র সালমা পিতার প্রেসিডেন্ট পুরস্কার এবং রুবা ভাবীর পুনঃ পুনঃ সন্তান গ্রহণ প্রভৃতি অনুষঙ্গকে স্থুলভাবে পর্যবেক্ষণ করে। পিতার প্রতি চরম বিতৃষ্ণা থেকে সালমার মনোজগৎ বিশে¬ষিত ঔপন্যাসিকের সর্বজ্ঞ দৃষ্টিকোণে-

“সালমার ক্ষেত্রে বাবার ভালোবাসার অর্থ ওর নীতিজ্ঞান ও বুদ্ধির বিকাশের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা।’’ এ জন্য উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থেকে সালমার বমন উদগীরণ সঙ্কেতাবহ সৃষ্টি করে। এরপরই পিতার সাফল্যে বাসায় পার্টির আয়োজন হলে তা প্রত্যাখ্যান করে উপরতলায় নাসিমা আপার সঙ্গে মাদকদ্রব্যে রঙিন স্বপ্নের জাল বুনতে চায় সে। এ প্রসঙ্গে নাসিমা চরিত্রের বিকাশও লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। প্রচলিত সমাজের বিপক্ষ স্রোতে তিনি ইউনিভার্সিটির যোগ্য শিক্ষক হয়েও নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে সংশয় পোষণ করেন, অন্যদিকে নিজের পিতামাতার জন্য দুঃখবোধ জাগ্রত হলেও তাকে সাময়িক বলে উড়িয়ে দিয়ে নেশায় লুপ্ত হয়ে পড়ে থাকে। আর দাদুর মনোভঙ্গ পছন্দ না হলে সমাজের উপর কটাক্ষপাত করে নিজের আত্মস্বরূপ অন্বেষণে হন ব্রতী। এ জন্য তীক্ষ্ণ অনুভাবনার জাগরণ তার জাগরকেন্দ্রে। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বাংলা নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩০ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন