রবিবার | ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৫৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (তৃতীয় পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী বসিরহাটে নুনের হাট, শ্যামবাজার নুনের বাজার : অসিত দাস মুর্শিদাবাদের আমকথা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত জেন অস্টিন নারী স্বাধীনতার অন্যতম পথিকৃৎ : মনোজিৎকুমার দাস ইসবার ইন্ডিয়া জোটকা সরকার, আমরা একাই একশো — মমতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (শেষ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন মুর্শিদাবাদের আমকথা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (দ্বিতীয় পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (শেষ পর্ব) : জামিল সৈয়দ কবি কুসুমকুমারী দাশ ও পরাবাস্তবতার কবি জীবনানন্দ : বিজয়া দেব হুগলির লোকসভা ভোটে গ্রামীন এলাকায় ১৭১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (সপ্তদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (প্রথম পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ষোড়শ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আলাউদ্দিন অল আজাদ-এর ছোটগল্প ‘আমাকে একটি ফুল দাও’ ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতাকে বিজেপি বড্ড বেশি জরুরি করে ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকগীতি ঘাটু গান আজ অবলুপ্তির পথে : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (পঞ্চদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন হাসান আজিজুল হক-এর ছোটগল্প ‘স্বপ্নেরা দারুণ হিংস্র’ বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেদেদের বৈচিত্র্যময় জীবনযাপনের কথা : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (চতুর্দশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন নাইন্টিন সেভেন্টিন ওয়ান : শৌনক দত্ত বিশ্বপরিব্রাজক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ত্রয়দশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন নন্দিনী অধিকারীর ছোটগল্প ‘শুভ মাতৃদিবস’ গবেষণামূলক গ্রন্থ ‘ফ্লোরেন্স থেকে রাধানগর রেনেসাঁস ও রামমোহন’-এর মোড়ক উন্মোচন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ১৯২১-এ কথা দিয়েও স্পেনে গেলেন না কেন রবীন্দ্রনাথ : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ : তারাপদ রায় ও তার অন্ত নাই গো নাই : প্রব্রাজিকা বেদরূপপ্রাণা
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই অক্ষয় তৃতীয়া-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (সপ্তম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন

সন্‌জীদা খাতুন / ১৫৬ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ৫ মে, ২০২৪

এগার.

শ্যামলী খাস্তগীরের রান্নাতেও টকের প্রাধান্য দেখেছি। ভারতবর্ষের সকল প্রান্তের খাদ্যই তার কাছে আদরণীয় ছিল। দক্ষিণ ভারতীয় বহু রান্নাও সে করত, যাতে টকের প্রাধান্য। আমি সে সব খাবারের রসিক ছিলাম না বলে ওর বাড়িতে সাহেবদের দাওয়াতের ডাক থাকলে নানা ছুতোতে পালাতে হতো আমাকে। সাহেবরা দেখেছি। ঢের নির্বিকার। আসলে বোধ হয় বেজায় ভদ্র, না হয় টকটক রান্নার দিকে তাদেরও আকর্ষণ ছিল। শ্যামলী ইডলি রাধত, রাজমাও।

মানুষের অভ্যাস তার রুচিকে যে কী রকম বদলে দিতে পারে, দেখেছি অশোকবিজয় রাহার মধ্যে। উনি ছিলেন বেজায় আবেগপ্রবণ মানুষ, বলেছি আগে। আমার কবিতার ভাব আর আঙ্গিকের পরস্পর সম্বন্ধ’ নিয়ে উচ্ছ্বাসবশে কত কী যে বলেছিলেন। সেই অশোকদাই কিনা বিসর্জন কাব্যনাট্যটি নিয়ে বলেছিলেন, ‘ওতে কী রকম একটা পাঁঠা পাঁঠা গন্ধ’! জয়সিংহের আত্মদানের ঘটনাটি যে কতটা ভাববিহ্বল–সে কথা মোটে মানলেন না! বলিপ্রথা ওঁর কাছে এত স্বাভাবিক আর পাঁঠা খাওয়ার ব্যাপারটি এত সহজ যে আমাদের কথা মানলেন না কিছুতেই।

অথচ এই কবিটিই কী আন্তরিকভাবে লিখেছিলেন, ‘চমকে উঠি–আরে! আধখানা চাঁদ আটকে আছে টেলিগ্রাফের তারে! যা নিয়ে ছেলেরা ওঁর পেছনে লাগত। শৈলেশ্বর বাগ নামের এক শিক্ষার্থী তাঁর কাছে গিয়ে বলেছিল, অশোকদা, আমি একটা কবিতা লিখেছি— ‘অশোকবিজয় রাহা/আ — হা!’ বাস্তবিক ওই কবিতার লক্ষ ছিল তার আসল স্বভাব! অশোকদাও অবশ্য তাকে ছেড়ে দেননি। একদিন পথের মধ্যে ডেকে বললেন, ‘শোনো হে, আমিও একখান কবিতা লিখেছি। সেটা হলো— ‘শৈলেশ্বর বাগ/ভাগ’।

গুরু-শিষ্যের মধ্যে এমন অনেক কাণ্ড চলত শান্তিনিকেতনে। যেমন বালক প্রমথনাথ বিশী একদিন মাস্টার মশাইকে সতর্ক করে বলতে গেলেন–আশ্রমে কিন্তু মারধর করবার নিয়ম নেই। মাস্টার মশাই তখন তাঁকে কান ধরে আশ্রমের মাটি থেকে উঠিয়ে আর একবার শাসন করে আশ্রমের মাটিতে নামিয়ে দিলেন। আর একটা গল্প শুনেছি, শিল্পী মুকুল দের কন্যা মঞ্জরী একদিন ক্লাসে গিয়ে দেখে চিরকুমারী খিটখিটে স্বভাবের নলিনীদি মেয়েদের একে একে দাঁড় করিয়ে প্রতিজ্ঞা করাচ্ছেন, ‘আমি জীবনে কখনো বিবাহ করিব না।’ মঞ্জরীর পালা এলে ও উঠে দাঁড়িয়ে গড়গড় করে বলল, ‘আমি জীবনে সুযোগ পাওয়ামাত্র বিবাহ করিব’।

বারো.

বাংলাদেশে সবাই আমাকে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী আর ছায়ানটের শিক্ষক-সংগঠক বলে খুব জানলেও শান্তিনিকেতনে অদ্ভুত সব পরিস্থিতিতে পড়তে হতো আমাকে। গবেষণা করতে গিয়েছি রবীন্দ্রসংগীতের ভাবসম্পদ নিয়ে। শুনে সুরজিৎ সিংহ বললেন, ‘আপনি কি গান জানেন?’ শুনে হতবাক হয়ে থাকলাম। সামলে নিয়ে বললাম, তা জানি। ততক্ষণে উপাচার্যের বাড়ির ভেতর থেকে তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা সিংহ বেরিয়ে এসে আমার নাম শুনেই বললেন, ‘ও, আপনি তো গান করেন’! তখন মনে একটু বল-ভরসা এল!

আর একবার উপাচার্য অম্লান দত্তের বাসায় গিয়ে পরিচয় হলো লন্ডনপ্রবাসী এক দম্পতির সঙ্গে। ওঁরা উচ্ছ্বসিত হয়ে আমার ছাত্র ইকবালের গানের কথা বলছেন। ইকবালের স্ত্রী সাকীর নজরুলগীতির কথাও বলছেন। আমি মহা খুশি হয়ে বললাম ইকবাল আমার প্রিয় ছাত্র। অমনি তাদের উচ্ছ্বাস থেমে গেল। সন্দেহের চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন দুজনে। বললাম ওরা তো দুজনেই ছায়ানটের ছাত্রছাত্রী। হ্যাঁ, ছায়ানটেই তো গান শিখেছে ওরা। অর্থাৎ তাতে কি বোঝায় যে আমি ছায়ানটের শিক্ষক হতে পারি! বললাম, আমি ছায়ানটের অধ্যক্ষ। তাতে সন্দেহ বেড়ে গেল আরও। আসলে দোষ তো আমার পোশাক-আশাকের! যে রকম সাদাসিধে হয়ে চলি তাতে কে ভাববে যে আমি নামী শিক্ষক হতে পারি! মানুষকে ইমপ্রেস করতে হলে তেমন শাড়ি-জামা পরতে হবে না? একে তো চেহারাটাই আনইমপ্রেসিভ। তো এই ছিল আমার দশা! [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন