শুক্রবার | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:৫৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৭তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ স্প্যানিশ ফ্লু থেকে বাঁচতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্পেনে গেলেন না : অসিত দাস ভোটের হার কম, ভোটারদের উৎসাহ কম, চিন্তায় বিজেপি : তপন মল্লিক চৌধুরী সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (দ্বিতীয় পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৬তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়: এক বাঁধনছেঁড়া গণশিল্পী : সন্দীপন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (প্রথম পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৫তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ রামগতপ্রাণ দাস্যভক্তির শ্রেষ্ঠ বিগ্রহ হনুমানজি : রিঙ্কি সামন্ত লুইজ গ্লিক ও সাহিত্যে সমকালীনতা : সাইফুর রহমান ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৪তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে কি করা হচ্ছে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন সাহিত্যে যুদ্ধ, যুদ্ধে সাহিত্য : মিল্টন বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথ কখনও শিমুলতলা আসেননি : জমিল সৈয়দ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৩তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়-এর ছোটগল্প ‘বিকাশের বিয়ে’ গরমের সময়ে চোখের যত্ন না নিলে অন্ধত্ব এবং ক্যানসারের ঝুঁকিও থাকে : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী হরিশ মুখার্জীর সন্ধানে (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০২তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘ইস্টিশনের অজয়’ হরিশ মুখার্জীর সন্ধানে (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০১তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ যাত্রায় নতুন প্রজন্ম তৈরি করেছিলেন কিংবদন্তি যাত্রাভিনেতা মোহিত বিশ্বাস : সন্দীপন বিশ্বাস আর. কে. নারায়ণ-এর ছোটগল্প ‘ছায়া’ অনুবাদ আনিকা শাহ হরিশ মুখার্জীর সন্ধানে (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০০তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘সই’ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (৯৯তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ বিজয়া দেব-এর ছোটগল্প ‘ভিজে শালিকের ডানা’ রাম রাজ্য!! : সুকুমারী ভট্টাচার্য
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

তবু মনে রেখো … বিস্মৃতির অতলে অমিয়া ঠাকুর : স্বর্ণাভা কাঁড়ার

স্বর্ণাভা কাঁড়ার / ১১৭৯ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১

রবীন্দ্রসঙ্গীতের সজ্ঞায় মনের মধ্যে ফুটে ওঠে যে ছবি তার পূর্ণতর রূপটি বিভাসিত হতে দেখা গেছে যাঁর মধ্যে তাঁর নাম অমিয়া ঠাকুর। প্রকৃত অর্থে শিল্পীর সন্ধান মেলে কদাচিৎ। অমিয়া ঠাকুরের মধ্যে দেখা গিয়েছিল সেই বিরল ব্যক্তিত্ব যা তাঁকে অনন্যতম স্বাতন্ত্রে মর্যাদা-মণ্ডিত করে তুলেছিল। হিরণ্যোপম কণ্ঠের অধিকারিণী অমিয়া ঠাকুর ছিলেন রবীন্দ্র সংঙ্গীত জগতের নেপথ্যবাসিনী শিল্পী। পেশাদারী শিল্পী না হওয়ায় তাঁর গান তেমনভাবে সাধারণের মধ্যে প্রচারিত হয়নি।

১৯০৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় তাঁর জন্ম। বাবা সুরেন্দ্রমোহন রায় ছিলেন ব্যারিস্টার, মা সুরেন্দ্রবালা দেবী ছিলেন অসামান্য রূপের অধিকারিণী। শৈশবেই অমিয়া দেবীর সঙ্গীতশিক্ষা শুরু, যার পূর্ণ বিকাশ ঠাকুর বাড়ির বধুরূপে। বেথুন স্কুলের ছাত্রী হওয়ার সূত্রে স্কুলের অন্যান্য পাঠ্যসূচীর সঙ্গে নানা ধরনের গান শেখার সুযোগ হয় তাঁর। সেই সব গানের মধ্যে ছিল এমন অনেক গান যা পরবর্তীকালে রবীন্দ্রসঙ্গীত বলে তিনি জেনেছেন। আট বছর বয়সে তাঁর রাগসঙ্গীতের শিক্ষা শুরু হয় বাড়িতে এক মুসলমান ওস্তাদের কাছে সারেঙ্গি সহযোগে। এরপর স্বনামধন্য ধ্রুপদ গায়ক যোগীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বারো বছর তালিম নিয়ে সাংগীতিক শিক্ষার ভিতটি গড়ে নিয়েছিলেন তিনি।

অমিয়া ঠাকুর তখন বেথুন কলেজের ফাস্ট ইয়ারের ছাত্রী — আঠারো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের ‘মায়ার খেলা’য় প্রমদা চরিত্র রূপায়ণের দায়িত্ব পড়ে তাঁর ওপর। মায়ার খেলার গান শিখলেন সরলা দেবীর কাছে আর গানের সঙ্গে অ্যাকশান দেখিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং। অমিয়া দেবীর বর্ণনায় সেই সুখস্মৃতির ছবি গাঁথা আছে তাঁর স্মৃতিকথায় (দেশ বিনোদন ১৩৮৬)। মায়ার খেলায় প্রমদার ভূমিকায় অমিয়া দেবী গান ও অভিনয় আক্ষরিক অর্থেই কিংবদন্তী হয়ে আছে। গানে-অভিনয়ে অমিয়া দেবী সেদিন প্রমদা-চরিত্রকে স্মরণীয় করে তুলেছিলেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, তখন মাইক ব্যবহার করা হতো না, রূপসজ্জার জন্য প্রসাধন সামগ্রীর সম্ভার এত পাওয়া যেত না। তথাপি বলা যায় অসাধারণ রূপ ছিল তাঁর — যেমন ছিল তাঁর মায়ের।

এই মায়ার খেলার সূত্র ধরেই ঘনিষ্ঠতা এবং বিবাহ। হিতেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র হৃদিন্দ্রনাথের সঙ্গে অমিয়া দেবীর বিবাহের প্রস্তাব দেন তৎকালীন ঠাকুর পরিবারের সঙ্গীত-শিক্ষক স্বনামধন্য গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রাহ্মমতে বিবাহ হয় ১৭ মাঘ ১৩৩৫। ঠাকুরবাড়িতে বিবাহে তাঁর সঙ্গীতচর্চার ছেদ পড়েনি। যোগীন্দ্রনাথের কাছে তালিম তখনও অব্যাহত ছিল, সেই সঙ্গে গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের তালিমও পেতে থাকেন।

পারিবাইরক সূত্রে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী ছাড়াও আর একজনের কাছে তিনি গান শেখবার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করেন — তিনি রবীন্দ্রনাথ। কলকাতায় যখনই এসেছেন নতুন নতুন গান শিখিয়ে গিয়েছেন অমিয়া দেবীকে। গুরু এবং শিষ্যার মণিকাঞ্চন যোগে শিষ্যার কণ্ঠে ‘ওগো কাঙাল আমারে’, ‘কী রাগিণী’, ‘বড়ো বিস্ময় লাগে’, ‘সখী আঁধারে’, ‘আমি শ্রাবণ আকাশে ওই’ — গানগুলি যে অনাস্বাদিত আনন্দ এনে দিয়েছে গায়নভঙ্গি ও সুষ্ঠু পরিবেশনে তা আজও অনেকে ভুলতে পারেন না। ভুলতে পারেন না রবীন্দ্রনাথের সপ্ততিতম জন্মোৎসব উপলক্ষে গীত প্রথমদিনে ‘মরি লো মরি আমায় বাঁশিতে ডেকেছে’ এবং রবীন্দ্রনাথের বিশেষ আদেশক্রমে দ্বিতীয় দিনে গাওয়া ‘ওগো কাঙাল আমারে’ গানগুলির কথা — যা শুনে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তৃপ্ত আনন্দিত হন। যদিও স্বামী হৃদিন্দ্রনাথের অনিচ্ছায় প্রকাশ্য সাধারণ অনুষ্ঠানে গান গাওয়া হয়ে ওঠেনি তাঁর। এমনকি বেশ কয়েকটি গান রেকর্ড হয়েও প্রকাশিত হয়নি। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর হিন্দুস্তান মিউজিকাল প্রোডাক্টস থেকে অমিয়া দেবী গীত ‘হে নতুন দেখা দিক আরবার’ ও ‘সম্মুখে শান্তি পারাবার’ গান দুটির রেকর্ড প্রচারিত হয়। এছাড়া প্রায় তিন দশক আগে পঞ্চকন্যা শিরোনামে একটি রেকর্ডে অন্যান্য কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর কণ্ঠের দুটি গান ‘বড়ো বিস্ময় লাগে’ এবং ‘তবু মনে রেখো’ প্রচারিত হয়েছিল। যদিও প্রচারিত গানদুটি তাঁর একেবারেই পছন্দ ছিল না বলে অনেকবার মন্তব্য করেছিলেন।

ঠিক যে মাপের শিল্পী ছিলেন অমিয়া ঠাকুর তাঁর পরিচয় সংরক্ষিত হয়নি সেইভাবে। তাঁরই সৌজন্যে রবীন্দ্রনাথের একটি অবিস্মরণীয় গান সংগ্রহ করতে পারা গেছে। অমিয়া দেবীর কণ্ঠে হিন্দী ‘এ ধনি ধনি চরণ পরসত’ গানটি শুনে তাঁরই কণ্ঠের জন্য রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন ‘কী ধ্বনি বাজে গহন চেতনা-মাঝে’।

গহন চেতনা-মাঝে যে ধ্বনি বাজাতে পারতেন তা কেবল তাঁর শিক্ষার গুণেই নয়, রবীন্দ্রসঙ্গীতে আত্মস্থ হওয়ার জন্য। যখনই তিনি গান করেছেন মনে হয়েছে এ গানের উৎস মস্তিষ্ক নয় হৃদয়। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে অমিয়া দেবী বলেছিলেন, ‘তাঁর মতো মানুষের কাছে যেতে পেরেছি। তাঁর ধ্বনি কানে নিয়েছি। তাঁর গান কণ্ঠে ধরেছি। তাতেই জীবন পূর্ণ।’ এ কেবল কথার কথা নয়। তাঁর জীবনের প্রতিটি পর্বেই পরিপূর্ণ জীবনের এই সুর ধ্বনিত হয়েছে।

১৯৮৬ সালের ১৩ নভেম্বর প্রয়াণ ঘটে অমিয়া ঠাকুরের। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, ৩৫ বছর পর ফিরে তাকালে মনে প্রশ্ন জাগে সত্যি কি আমরা যথার্থ সম্মান জানাতে পেরেছি অমিয়াদেবীকে? কলকাতা দূরদর্শনে তাঁর অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়েছিল নামমাত্র। কিছুদিন কলকাতা আকাশবাণীর অডিশন বোর্ডের সদস্যও ছিলেন। দু-চারটি সংস্থা থেকে সংবর্ধিত হয়েছিলেন — ব্যাস ওইটুকুই। আজকের প্রজন্ম অমিয়া ঠাকুরকে চেনেন না। কিন্তু এই রকম এক প্রতিভাকে জনমানসে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সকলের কর্তব্য।


আপনার মতামত লিখুন :

2 responses to “তবু মনে রেখো … বিস্মৃতির অতলে অমিয়া ঠাকুর : স্বর্ণাভা কাঁড়ার”

  1. Anjan Mukhopadhyay from Kolkata says:

    anek dhanybad , ei asadharan lekhatir janye

  2. Anjan Mukhopadhyay from Kolkata says:

    After reading this article , I made some search in the internet and found that the disc in which the songs “Hey nutan” and “Samukhey shanti parabar” appeared , were recorded under the training of Sailajaranjan Majumdar, Santiniketan and was published by Hindusthan Record No. 11975 . “Hey nutan” was the first song of the 80th birthday celebration of Gurudev and the other song was sung by Amiya Tagore after the demise of the graeat poet .

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বাংলা নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩০ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন