শনিবার | ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:৪২
Logo
এই মুহূর্তে ::
শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (পঞ্চম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন বিজন প্রাণের প্রাঙ্গণে : সন্দীপন বিশ্বাস বিভূতিভূষণের পান্ডুলিপি — ‘পথের পাঁচালী’ : সবিতেন্দ্রনাথ রায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (চতুর্থ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (শেষ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথের বিদেশি ফটোগ্রাফার : দিলীপ মজুমদার দর্শকের অগোচরে শুটিং-এর গল্প : রিঙ্কি সামন্ত রশ্মির নাম সত্যজিৎ “রে” … : যীশু নন্দী হুগলিতে মাধ্যমিকে চতুর্থ ও দশম উল্লেখযোগ্য ফলাফলে নজর কাড়ল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (তৃতীয় পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (ষষ্ঠ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস ১৯২৪-এ রবীন্দ্রনাথের স্প্যানিশ ফ্লু হয়, পেরুযাত্রার সময় : অসিত দাস গাইনোকলজি ও গাইনি-ক্যান্সারে রোবোটিক অ্যাসিস্টেড সার্জারীর ভূমিকা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সমাজতান্ত্রিক আদর্শের ছোটগল্পকার আলাউদ্দীন আল আজাদ : আবু জাফর রেহমান শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (দ্বিতীয় পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (পঞ্চম পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাতি ফোলালেও আম জনতাকে ভোট কেন্দ্রে টানতে পারেননি : তপন মল্লিক চৌধুরী আলুর দামে রাশ টানতে না পারলে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (প্রথম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন রবীন্দ্রনাথের লেখা চিঠিতে তাঁর স্পেনযাত্রা বাতিলের অজুহাত : অসিত দাস ফ্ল্যাশব্যাক — ভোরের যূথিকা সাঁঝের তারকা : রিঙ্কি সামন্ত সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (চতুর্থ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস মিয়ানমার সংকট, প্রতিবেশি দেশের মত বাংলাদেশকে নিজস্ব স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সিকাডার গান’ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (তৃতীয় পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (শেষ পর্ব) : উৎপল আইচ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (দ্বিতীয় পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (চতুর্থ পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (শেষ পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ প্রথম পাঠ — সায়র আলমগীরের গল্পগ্রন্থ ‘এক মন অন্য মন’ প্রেমময়তার গাল্পিক দলিল : সৌমেন দেবনাথ
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৩তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৭৩ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪

Colonial Justice in British India: White Violence and the Rule of Law Elizabeth Kolsky

ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার — শ্বেতাঙ্গ হিংসা এবং আইনের শাসন, এলিজাবেথ কলস্কি

পঞ্চম অধ্যায়

উপনিবেশে বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আর আইনের সাবঅল্টার্ন ব্যবহার

ফৌজদারি আইন সংশোধনী এক্টও (XII of 1923) কলকাতার অসরকারি, অআমলা ইওরোপিয় সম্প্রদায়ের সম্মতিক্রমে একই ধরণের একটা সমঝোতা সূত্র তৈরি হল। আইনে ইওরোপিয় ব্রিটিশ প্রজাদের জাতিগত প্রাধান্য স্বীকার করে নেওয়া হল, ইওরোপিয় এবং আমেরিকয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জুরি প্যানেলের দাবিও স্বীকার করে নেওয়া হল। একই সঙ্গে বলে রাখা হল নেটিভদের ইওরোপিয়দের সঙ্গে তুল্যমূল্য দেখাতে ভারতীয়রাও আদালতে ভারতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জুরি প্যানেলের দাবি জানাতে পারে। অবাক হওয়ার মত ব্যাপার হল ব্রিটিশ সেনাদের জন্যে আলাদা ব্যবস্থা তৈরি হল, ৫টি অপরাধ হত্যা, হত্যার চেষ্টা, ধর্ষণ, বিশ্বাসঘাতকতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতায় সরকারের সম্মতিক্রমে শুধুই হাইকোর্টে তাদের বিচার চাওয়ার অধিকার থাকল।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষজন হতাশ হলেও, হাফিজ মহমদ আবদুল রহিমের মত বহু ভারতবর্ষীয় আশ্চর্য হলেন না। তিনি দূরদর্শীর মত বললেন ‘স্বরাজ না এলে সত্যকারের সংস্কার সম্ভব নয়’ (Written evidence of Hafiz Muhammad Abdul Rahim, January 3, 1922, NAI Racial Distinctions (Main Correspondence))। এর জন্যে স্বাধীনতার পরে আসা ফৌজদারি আইন (জাতিগত বিশেষাধিকার হরণ) ১৯৪৯ পাস হওয়া অবদি অপেক্ষা করতে হবে, যে আইন বলে ফৌজদারি পদ্ধতির সংহিতা থেকে শেষতম জাতিগত সুবিধে পাওয়ার আইন বাতিল হল।

সিদ্ধান্ত

মহাযুদ্ধের শুরুতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যজুড়ে স্বশাসিত ডোমিনিয়ন থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক, প্রাতিষ্ঠানিক উপনিবেশ মিলে আশিটি টেরিটরিয়াল ইউনিট ছিল, মোট আয়তন ছিল ১১ মিলিয়ন বর্গ মাইল এবং আফ্রিকিয়, অস্ট্রেলিয়, এশিয় এবং আমেরিকিয় প্রজা মিলে জনসংখ্যা ছিল ৪০ কোটি, এরা সকলে ব্রিটেনকে সার্বভৌম ক্ষমতা হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছিল। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে সাধারণ ধারণার বিপ্রতীপে বাস্তবিকভাবে আমরা দেখি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ফুলেফেঁপে উঠেছে এবং ব্রিটেন আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু জার্মান এবং অটোমান সাম্রাজ্য এলাকা দখলে নেয়। এক শতাব্দ পূর্বে জে আর সিলি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন ‘অমনযোগীভাবে ঘটে যাওয়া কাজ’, কিন্তু আমরা মনে করি, যেভাবে বিশ্বজুড়ে সাম্রাজ্যের বিস্তার এবং ভিত্তিস্থাপিত হয়ে এটি বিশ্বক্ষমতার প্রধানতম অংশ হয়ে উঠেছে, তার পিছনে উপনিবেশের কর্তাব্যক্তিদের ফোকাস এবং মনোযোগের চিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে। মাথায় রাখতে হবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কর্তারা সর্বজ্ঞানীও ছিলেন না, তাদের উদ্দেশ্যও সবসময় ঘটে যাওয়া ঘটনাক্রমে নিবদ্ধ থাকত না অথবা তারা সব সময় স্পষ্টভাবে সব কিছু বুঝিয়ে বলার ক্ষেত্রে খুব একটা দঢ়ও ছিলেন না, কিন্তু বিশাল বিপুল সাম্রাজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখতে তাদের বিন্দুমাত্র অমনযোগী হওয়ার সুযোগ ছিল না।

এই বইতে আমি যুক্তি সাজিয়ে বলার চেষ্টা করেছি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শক্তি এবং ভারতে স্থায়িত্ব দেওয়ার চ্যালেঞ্জ সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরেই নিবদ্ধ ছিল। শ্বেতাঙ্গদের প্রকাশ্য হিংস্রতা এবং উপনিবেশের পক্ষে একে নিয়ন্ত্রণ করার অসম চেষ্টাগুলি বর্ণনা করতে গিয়ে দেখিয়েছি সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল হিংসা এবং এটি একাধারে সাম্রাজ্যের প্রভুত্বে ক্ষয় ধরিয়েছে এবং অন্যদিকে তাকে স্থায়িত্বও দিয়েছে। যদিও কোনও কোনও কোম্পানি কর্মচারী হয়ত responded to India by slowly shedding their Britishness like an unwanted skin and adopting Indian dress and taking on the ways of the Mughal governing class they came to replace (W. Dalrymple, “Plain Tales of British India,” The New York Review of Books, 54, 7 (April 26,2007)), অন্যদিকে উইলিয়াম অরবি হান্টারের মত ব্রিটিশেরা অন্যদের চামড়া গুটিয়েছেন এবং (তাদের অধিকাংশই) নানান অপরাধ করেও বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

অষ্টাদশ শতকের ব্রিটিশ ভারতে শুধুই ‘শ্বেতাঙ্গ মুঘল’দের বাস ছিল না, তাদের সঙ্গে লুঠেরাদের সংখ্যাও খুব কম ছিল না। আমরা যেমন খায়েরুন্নিসা এবং জেমস একিলিস কারকপ্যাট্রিকের অসামান্য ভালবাসার গপ্প পড়ি, ঠিক তেমনি সতর্ক থাকি এর পাশাপাশি উইলিয়াম অরবি হান্টার আর তার বিবি তিনটি বালিকা ভৃত্যের ওপর কী অমানুষিক অত্যাচার চালিয়েছিল সে ঘটনারও (Dalrymple; White Mughals)।

তাদের হত্যামুখী অপরাধের উদ্দেশ্য নিয়ে এই অবাধ্য তৃতীয় শ্বেতাঙ্গরা ব্রিটিশ ভারতজুড়ে উদ্বেগের ব্যাপ্ত ছায়া ছড়িয়ে দিয়ে মানুষকে সাবধান করে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল ভুল লোক শাসনের অধিকার পেলে কী ঘটনা ঘটতে পারে। তারা প্রথম সময়ের কোম্পানি রাষ্ট্রর ব্রিটিশ চরিত্রকে কলঙ্কিত করেছিল, শান্তি বিঘ্নিত করেছিল, এবং গুরুত্বপূর্ণ আইনশৃংখলার সঙ্কট ডেকে এনেছিল। ইওরোপিয় আইন হীনতার সরকারি প্রতিক্রিয়াটি ছিল আইনের সংহিতাকরণ করা, যা উপনিবেশের আইনের বিস্তৃতি ঘটায়, যদিও এর ফলে হিংসাকে দমন করে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করার কোনও সুরাহা ঘটে নি।

উনবিংশ শতকে ভারতজুড়ে অআমলা ব্রিটিশদের সংখ্যার সঙ্গে তাদের দুর্বৃত্ত আচরণ বাড়তে থাকে, এবং তারা সরকারি নানান প্রতিষ্ঠানে বিপুল প্রভাব বিস্তার করে। মৌখিকভাবে আইনি সাম্য প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, একের পর এক উপনিবেশিক প্রশাসন ফৌজদারি মামলায় ব্রিটিশ প্রজাদের বিশেষ অধিকার অর্পণ করে। ফলে আইন হয়ে ওঠে শ্বেত হিংসার সঙ্গী। আইন হিংসার প্রতাপ না কমিয়ে তাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বাড়িয়ে তোলার কাজ করে। এর সঙ্গে জুড়ে যায় ব্রিটিশ বিচারক, জুরি এবং পুলিশদের ইওরোপিয়দের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব। ভারতীয়দের বিরুদ্ধে হত্যা বা মারাত্মক ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ইওরোপিয়দের ওপর সরল ফৌজিদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়, তার ফলে অধিকাংশ সময়ে অভিযুক্ত কম বা বিনা সাজায় ছাড়া পেয়ে যায়। ১৮৪৪-এ বম্বের সুপ্রিম কোর্টের অধস্তন বিচারপতি এরস্কিন পেরি গর্বিতভাবে বলেছিলেন, — “one of the most valuable boons, which it lies within the competence of Government to confer upon this vast country, consists in the establishment of a rational and intelligible system of Law (Bombay Supreme Court Puisne Judge Erskine Perry to the Governor-General in Council, May 22, 1844, Report on the Civil Judicature in the Presidency Towns (1844))। এর ৫০ বছর পরে একের পর এক বিখ্যাত সব হিংসাত্মক ইওরোপিয়দের মামলায় ‘কলঙ্কিত রায়’ সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে বম্বের সংবাদপত্র প্রাতোদ লিখেছিল, “the law appears to sanction whatever is done by a European (Pratod, February 27, 1893, NAI, Report on Native Newspapers from Bombay)। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বাংলা নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩০ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন