মঙ্গলবার | ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:১৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (প্রথম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন রবীন্দ্রনাথের লেখা চিঠিতে তাঁর স্পেনযাত্রা বাতিলের অজুহাত : অসিত দাস ফ্ল্যাশব্যাক — ভোরের যূথিকা সাঁঝের তারকা : রিঙ্কি সামন্ত সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (চতুর্থ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস মিয়ানমার সংকট, প্রতিবেশি দেশের মত বাংলাদেশকে নিজস্ব স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সিকাডার গান’ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (তৃতীয় পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (শেষ পর্ব) : উৎপল আইচ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (দ্বিতীয় পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (চতুর্থ পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (শেষ পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ প্রথম পাঠ — সায়র আলমগীরের গল্পগ্রন্থ ‘এক মন অন্য মন’ প্রেমময়তার গাল্পিক দলিল : সৌমেন দেবনাথ আন্তন চেখভ-এর ছোটগল্প ‘গুজবেরি’ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (প্রথম পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (তৃতীয় পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৭তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ স্প্যানিশ ফ্লু থেকে বাঁচতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্পেনে গেলেন না : অসিত দাস ভোটের হার কম, ভোটারদের উৎসাহ কম, চিন্তায় বিজেপি : তপন মল্লিক চৌধুরী সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (দ্বিতীয় পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৬তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়: এক বাঁধনছেঁড়া গণশিল্পী : সন্দীপন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (প্রথম পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৫তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ রামগতপ্রাণ দাস্যভক্তির শ্রেষ্ঠ বিগ্রহ হনুমানজি : রিঙ্কি সামন্ত লুইজ গ্লিক ও সাহিত্যে সমকালীনতা : সাইফুর রহমান ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৪তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে কি করা হচ্ছে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন সাহিত্যে যুদ্ধ, যুদ্ধে সাহিত্য : মিল্টন বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথ কখনও শিমুলতলা আসেননি : জমিল সৈয়দ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৩তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

হুগলির দেবী ওলাইচন্ডী আজও ভক্তদের কাছে জাগ্রত দেবী রূপে পূজিত : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ১৭১ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪

দেবী চণ্ডী বা চণ্ডিকা দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থের সর্বোচ্চ দেবী। তিনি বিচিত্র শক্তি মত্তার অধিকারিনীদেবী। তিনি একধারে বৈদিক পৌরাণিক এবং লৌকিক ভাবনা সঞ্জাত মহামাতৃকা।ওলাইন্ডী হলেন দেবী চণ্ডীরই লৌকিক রূপভেদ। লোকবিশ্বাস অনুসারে, ইনি ওলাওঠা (কলেরা) রোগের দেবী এবং ময়াসুরের পত্নী। লৌকিক শব্দ ‘ওলার’ অর্থ দাস্ত (উদরাময়/তরল মলত্যাগ) হওয়া এবং ওঠার অর্থ বমি হওয়া। যে রোগের দাস্ত ও বমি দুইই হয় অর্থাৎ দেহের মধ্যে বর্জ্য পদার্থ নামাওঠা একইসঙ্গে চলতে থাকে সেই রোগকে ওলাওঠা রোগ বলে। শুদ্ধ বাংলায় এর নাম বিসূচিকা। ইংরেজিতে কলেরা। এই ওলাওঠা বা কলেরা রোগের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মাতা ওলাই চন্ডী। ইনি মহামারী প্রতিরোধক দেবী, তাকে ডাবের জলে স্নান করিয়ে তুষ্ট রাখতে হয়। তিনি রুষ্ট হলে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যায়।

হিন্দুর ঘরের ওলাইচন্ডীই মুসলমানের ঘরে গিয়ে হচ্ছেন ওলাবিবি। এককভাবে ওলাইচণ্ডীর পূজা ছাড়াও কোনও কোনও থানে সাতবোন বা নয়বোন নিয়ে ওলাবিবির পূজা প্রচলিত। এই সাত বোনের নাম হল ওলাবিবি, ঝোলাবিবি, আজগাইবিবি, চাঁদবিবি, বাহড়বিবি, ঝেটুনেবিবি ও আসানবিবি।

কোনও কোনও আধুনিক গবেষকের মতে লৌকিক “সাতবিবি” ধারণাটি হিন্দু সপ্তমাতৃকা (ব্রহ্মাণী বা ব্রাহ্মী, বৈষ্ণবী, মাহেশ্বরী, ইন্দ্রাণী বা ঐন্দ্রী, কৌমারী, বারাহী ও চামুণ্ডা) ধারণার দ্বারা প্রভাবিত। তবে উক্ত সপ্তমাতৃকার সঙ্গে সাতবিবির কোনও সাদৃশ্য নেই বললেই চলে। ভারতে প্রাগার্য যুগ থেকেই যে সাত দেবীর পূজা প্রচলিত ছিল, তার প্রমাণ অধুনা পাকিস্তান রাষ্ট্রের সিন্ধুপ্রদেশে অবস্থিত প্রাচীন মহেঞ্জোদাড়ো শহরের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে থেকে প্রাপ্ত একটি সিলমোহরে পাওয়া যায়। এই সিলমোহরটিতে সাতজন নারীকে একসঙ্গে দণ্ডায়মান অবস্থায় দেখা গিয়েছে।

ওলাইচণ্ডী বাংলার লোকসংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে তাঁর পূজা প্রচলিত। অবশ্য স্থান বিশেষে ওলাইচণ্ডী শস্যদাত্রী দেবী, প্রজননের দেবী ও সন্তানপ্রদায়িনী লোকমাতা। পশ্চিমবঙ্গে ২৪ পরগনা, কলকাতা, বর্ধমান, বীরভূম, মেদিনীপুর, হুগলি-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খুব গুরুত্বসহকারে ওলাইচন্ডী দেবীর পূজা করা হয়।

হুগলি স্টেশন থেকে সামান্য দূরে তেওয়ারি পাড়া, কাছেই কাপাসডাঙ্গা। জি টি রোড থেকে পথটি বালির মোড়ের দিকে গেছে। ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে অটো বা টোটো করে পাঁচ মিনিট লাগে পৌঁছতে। হুগলী-চুঁচুড়া পৌরসভার অন্তর্গত ওলাইচন্ডীতলা। এখানে মাহিষ্যদের পাশাপাশি বর্গক্ষেত্রীদের বসবাস লক্ষ্য করা যায়। এখানে তেমাথায় অশ্বত্থ গাছের নিচে মা ওলাইচণ্ডীর থান। এখানেই পরে মন্দির স্থাপনা করা হয়।

মন্দির কবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সে নিয়ে নির্দিষ্ট করে কেউ সঠিক বলতে পারেন না। লোকশ্রুতি অনুযায়ী, অনেক বছর আগে এক বাগদী পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্য ব্যক্তি স্বপ্ন দেখেন, “আমি কাছেই পুকুরের ঘাটে অবহেলায় পড়ে আছি। আমার বুকে আছাড় মেরে কাপড় কাচে পাড়ার সব মানুষ। ওখান থেকে এই তেমাথায় পিপুল গাছের নিচে আমাকে প্রতিষ্ঠা কর। এই গ্রামের মানুষ সুস্থ থাকবে। ওলাওঠা রোগ থেকে মুক্তি পাবে।”

কেউ কেউ বলেন গাছের তলায় নাকি ঝাড় দেওয়ার শব্দ শোনা যায় অথচ কাউকে দেখতে পাওয়া যায় না। আবার কেউ দেখেন গাছের সব পাতা এক জায়গায় জড়ো হয়ে গিয়ে ধুলো উড়তে। যারা এসব দেখেছেন বা শুনেছেন তারা এই অঞ্চলে মানুষদের কথাগুলি জানিয়েছেন। কেউ বা নিছক গালভরা গল্প কথা বলে এড়িয়েছেন, কেউবা মেনেছেন বিশ্বাস ভরে।

এই অঞ্চলের হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে একাধিক মানুষকে মা স্বপ্ন দিয়েছেন এখানে মা’কে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। বলাগড় অঞ্চলের সরকার পুকুর থেকে তুলে এনে প্রস্তর খন্ডটি স্থাপনা করা হয়। ১৯০৭ সালে দোলের দিন চান করতে গিয়ে পল্লীর মানুষরা লক্ষ্য করেন মুসলিম মহিলারা এই (সাড়ে তিন ফুট লম্বা ১ ফুট চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি ঘনত্ব) পাথরের খোদাইয়ের উল্টোদিকে সমান জায়গায় কাপড় কাচছেন। উল্টে দেখেন নানা অলংকৃত পাথরের মধ্যে একটি চার হাত মানবী মূর্তি খোদিত আছে। পরের দিন ছিল শনিবার। সেই থেকেই প্রতি বছর দোলযাত্রার পরের শনিবারে প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মায়ের পুজো এবং মেলার আয়োজন করা হয়। যদিও এসব ঘটনার ঐতিহাসিক সত্যতা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

প্রথমের দিকে প্রস্তর খন্ডটি গাছের নিচে রাখলেও পরে বেদীর উপর বসানো হয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঘট স্থাপিত হয়। দু’ধারে পোড়া মাটির ঘোড়ার ছলন দেওয়া হয়। প্রতিদিন সিঁদুর লেপার ফলে সঠিকভাবে বোঝা যায় না এটি কিসের মূর্তি। মনে হয় দক্ষিণা কালীর বিশেষ ভঙ্গিমার মূর্তি।

ভক্তরা মানসিক দেয় পোড়ামাটির ঘোড়া। বাৎসরিক পূজার উপকরণ হল লাল গামছা, লাল ফুল, লালকর, লোহা, শাঁখা, ফল, সন্দেশ, বাতাসা, সুগন্ধি ধুপ ইত্যাদি। নারী ছাড়াও হাড়ি, ডোম প্রভৃতি নিম্নবর্ণীয় হিন্দুরাও মায়ের পূজায় পৌরোহিত্যের অধিকারী। শনি-মঙ্গলবারে দেবীকে নিরামিষ ভোগ দেওয়ার রীতি রয়েছে। নিত্য পুজো করা হয় সকাল ৯ টা থেকে ১২টা, সন্ধ্যায় ৬.৩০ থেকে সাড়ে আটটা। ১৯৮২ থেকে ট্রাস্টি বোর্ড মন্দির পরিচালনা করেন। মানসিক বলি থাকলে কমিটি থেকে অনুমতি নিতে হয়। মন্দিরে বিয়ে অন্নপ্রাশন হয়।

বাৎসরিক পূজায় ভক্তরা ডাবের জল এত বেশি দেন যে এই মেলা ‘ডাবের মেলা’ নামেও পরিচিতি লাভ করেছে। তার সঙ্গে শশা, কলা, ফুল, মিষ্টি দেওয়ার চল আছে। মেলায় ক্রেতার ভিড় প্রচুর হয়। পুজোর শেষে হয় হরির লুট। গতকাল শনিবার ছিল মায়ের বাৎসরিক পূজা। আজ গঙ্গায় ঘট বিসর্জন দিয়ে পুজোর সমাপ্তি। শতাধিক দোকান ও হাজার হাজার ভক্তদের প্রাণ চঞ্চলে মুখরিত ওলাইচণ্ডীর থান।

তথ্য ঋণ : হুগলী-চুঁচুড়ার ইতিহাস , উইকিপিডিয়া এবং নিজস্ব


আপনার মতামত লিখুন :

4 responses to “হুগলির দেবী ওলাইচন্ডী আজও ভক্তদের কাছে জাগ্রত দেবী রূপে পূজিত : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Amar Nath Banerjee says:

    প্রচুর পড়াশুনা তোর। বেশ লিখিস। তোর সব লেখাই পড়ি। অনেক জানা হয়। আমার আশীর্বাদ রইলো।

  2. Ranapratap Sen says:

    @suranjana তোর আর আমার তো ওখানেই বাড়ি৷আরো কিছু জানানোর থাকলে লেখ৷

    @Rinki, বনু, খুব খাটছিস এসব লেখালেখির জন্য৷ লিখতে থাক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বাংলা নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩০ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন