আরামবাগে তাঁর প্রথম রাজনৈতিক জনসভা করতে এলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁর এই আগমন ঘিরে চরমে উঠেছিল মানুষের কৌতুহল। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষেরও প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। তাই কাতারে কাতারে ভিড় করেছিল সাধারণ মানুষ। দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে লোকের মুখে মুখে ঘুরছিল বেশ কিছু সম্ভাবনার কথা। প্রধানমন্ত্রী হয়তো রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে আরামবাগ-বর্ধমান, বিষ্ণুপুর হাওড়া ভায়া তারকেশ্বর, আরামবাগ রাধানগর এর মত বেশ কিছু প্রকল্পের ঘোষণা করবেন। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান রাধানগর, শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুর ইত্যাদি এলাকা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন কর্মসূচি গ্রহণের কথা বলবেন কিংবা আরামবাগ মহাকুমার জন্য নতুন কোনো চমক দেবেন।
কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই ঘটেনি। রাজ্যের কিছু সরকারি প্রকল্প, অপরিশোধিত তেলের লাইন, কলকাতার বন্দরের উন্নয়ন ইত্যাদির কথা ঘোষণা করলেন যাদের সঙ্গে আরামবাগের সরাসরি কোনো যোগ নেই। ফলে কার্যত হতাশ সাধারণ মানুষ এমনকি বিজেপির নেতাকর্মীরাও। তার বক্তব্যের অনেকাংশ জুড়েই ছিল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার যে আন্দোলনের কথা ঘোষণা করছিলেন তার প্রত্যুত্তর দিতে পাল্টা অভিযোগের পথেই হাঁটলেন নরেন্দ্র মোদি, তিনি সোচ্চার হলেন সন্দেশখালীর প্রসঙ্গ তুলে। কিন্তু স্পষ্টতই তাতে মন ভরলো না সাধারণ মানুষের।
তৃণমূলের ভোট ব্যাংকের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ গরিব মানুষ এবং নারী সমাজ। লক্ষীর ভান্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূল তার এই ভোটব্যাংক যখন মজবুত করার চেষ্টা করছে সেই সময় দেখা গেল প্রধানমন্ত্রীর এই সভায় উপস্থিতির ক্ষেত্রে বিশেষ করে তপশিলি জাতি উপজাতি এবং বিশেষ করে মহিলাদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কোনো ঘোষণা বা কর্মসূচি এই উপস্থিত জনতার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলো বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, আরামবাগের মতো জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর সভা যে বিরাট একটা আবেগ তৈরি করেছে তার স্থায়িত্ব বেশিদিন হবে না।