সোমবার | ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৪২
Logo
এই মুহূর্তে ::
ফ্ল্যাশব্যাক — ভোরের যূথিকা সাঁঝের তারকা : রিঙ্কি সামন্ত সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (চতুর্থ পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস মিয়ানমার সংকট, প্রতিবেশি দেশের মত বাংলাদেশকে নিজস্ব স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সিকাডার গান’ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (তৃতীয় পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (শেষ পর্ব) : উৎপল আইচ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (দ্বিতীয় পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (চতুর্থ পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (শেষ পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ প্রথম পাঠ — সায়র আলমগীরের গল্পগ্রন্থ ‘এক মন অন্য মন’ প্রেমময়তার গাল্পিক দলিল : সৌমেন দেবনাথ আন্তন চেখভ-এর ছোটগল্প ‘গুজবেরি’ সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে নাগরিকবৃত্তের যন্ত্রণা (প্রথম পর্ব) : মিল্টন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (তৃতীয় পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৭তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ স্প্যানিশ ফ্লু থেকে বাঁচতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্পেনে গেলেন না : অসিত দাস ভোটের হার কম, ভোটারদের উৎসাহ কম, চিন্তায় বিজেপি : তপন মল্লিক চৌধুরী সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (দ্বিতীয় পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৬তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়: এক বাঁধনছেঁড়া গণশিল্পী : সন্দীপন বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রের আই. সি. এস এবং বইয়ে ভুল-ত্রুটি (প্রথম পর্ব) : উৎপল আইচ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৫তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ রামগতপ্রাণ দাস্যভক্তির শ্রেষ্ঠ বিগ্রহ হনুমানজি : রিঙ্কি সামন্ত লুইজ গ্লিক ও সাহিত্যে সমকালীনতা : সাইফুর রহমান ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৪তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে কি করা হচ্ছে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন সাহিত্যে যুদ্ধ, যুদ্ধে সাহিত্য : মিল্টন বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথ কখনও শিমুলতলা আসেননি : জমিল সৈয়দ ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (১০৩তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়-এর ছোটগল্প ‘বিকাশের বিয়ে’ গরমের সময়ে চোখের যত্ন না নিলে অন্ধত্ব এবং ক্যানসারের ঝুঁকিও থাকে : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-এর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (৯৪তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৭০ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

Colonial Justice in British India: White Violence and the Rule of Law Elizabeth Kolsky

ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার — শ্বেতাঙ্গ হিংসা এবং আইনের শাসন, এলিজাবেথ কলস্কি

পঞ্চম অধ্যায়

ব্রিটিশ সেনা এবং ‘নিগার-লাঞ্ছনা’ করার সাম্রাজ্যবাদী দ্বিধা

ভারতবর্ষীয়দের ওপর ব্রিটিশ সেনার প্রাণ-নেওয়া ‘চক্কর’ রুখতে কার্জন সেনাদের গুলি ছোঁড়ার অনুমতি দেওয়া নিয়ন্ত্রণ করলেন (Government of India Home Department Circular Letter to Provincial Governments, Nos. 248-257, January 31, 1899, ibid)। নতুন আইনে বাহিনী অমত প্রকাশ করলে কার্জন লিখলেন’

They cannot see why the poor soldier should not be allowed to go out and shoot and harass at his own sweet will; and if in the course of the excursion a Native is killed, their attitude is that of a very fast bowler at cricket whom I once met and who having killed a man by the ball jumping up and striking him on the temple said to me, “Why did the damned fool get his head in the way? (Curzon to Hamilton, September 17, 1900, BL, IOR, Mss Eur/F111/159)।

প্রাইভেট ফাউন্টেন হেডলার এমারসনকে আদালত শাস্তি দিতে অস্বীকার করায়, কার্জন সেনাবাহিনীর ওপর নিরন্তর চাপ সৃষ্টি এবং তাঁর প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের ক্ষমতা ব্যবহার করলেন। ১৯০২-এর ৫ আগস্ট লিঙ্কনশায়ার রেজিমেন্টের (লেন এবং ডেঞ্চ) এমারশন এবং অন্য দুই সেনা মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির শোলামদেবী ফরেস্ট রিজার্ভে গুলি চালাচ্ছিল। জঙ্গলের চৌকিদার কামারুদ্দিন তাদের গুলি চালানোর অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে তারা জঙ্গলে গুলি চালানোর অনুমতিপত্রর (সবুজ) বদলে সাধারণ অনুমতিপত্র (সাদা) দেখায়। কামারুদ্দিন জানায় সেনাদের জঙ্গলে গুলি চালানোর অনুমতি নেই। তাদের মধ্যে একজন কামারুদ্দিনের হাত ধরে প্রায় পোয়া মাইল ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ভঙ্গীতে’ হাঁটতে শুরু করল। সেনাটি একটি পাখিকে গুলি করার জন্যে বন্দুক তুললে কামারুদ্দিন তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে সে তাঁর সঙ্গীদের নির্দেশ দেয়, ‘ব্যাটাকে গুলি কর, ব্যাটাকে গুলি কর’। ৪/৫ ফুট দূর থেকে এমারসন কামারুদিনের উরুতে গুলি করে। কামারুদ্দিন মাটিতে পড়ে গেলে, যতক্ষণ না তাঁর জ্ঞান চলে যায়, লেন তাঁর বন্দুকের মাথা দিয়ে তাকে আঘাত করিতে থাকে।

৪৫ মিনিট পরে কামারুদিনের জ্ঞান ফিরে এলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় থেক্কাভালান, জনৈক স্থানীয় অধিবাসী। দুদিন পরে ৭ আগস্ট ২৯ সেনানীকে তার হাসপাতালের বিছানার পাশে নিয়ে আসা হয় চিহ্নিত করার জন্যে। কামারুদ্দিন বলতে থাকে সে অসুস্থ অবস্থায় কাউকে চিনতে পারবে না (এমনও বলা হয়েছে প্রত্যেকে হয়ত তাদের গোঁফ দাড়ি কেটে এসেছিল)। ২৬ আগস্ট বাহিনীর সেনাদের আবার কামারুদ্দিনের সামনে আনা হলে সে লেন এবং এমারসনকে চিহ্নিত করে। কামারুদ্দিন আরও দুমাস হাসপাতালে অক্ষম অবস্থায় পড়ে থাকবে।

অক্টোবর ৬এ ত্রিচিরাপল্লী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটে আর এইচ শিপলের আদালতে মারাত্মকভাবে আহত করার মামলা দায়ের হয় এমারসন, লেন এবং ডেঞ্চের বিরুদ্ধে। শিপলে শনাক্তকরণের জন্যে যথেষ্ট প্রমান না থাকার অজুহাতে তাদের মুক্তি দেন। এবারে কার্জন হস্তক্ষেপ করে মাদ্রাজ হাইকোর্টকে চাপ দেন মামলাটি নতুন করে শুরু করার জন্যে। মাদ্রাজ হাইকোর্ট এমারসন আর লেনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করার নির্দেশ দিলে দেখা গেল এমারসন পদত্যাগ করে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। কোর্ট তার বিরুদ্ধে ফিউজিটিভ অফেন্ডার্স আইনে (১৮৮১) প্র্যত্যার্পণের শমন জারি করে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় (Judicial letter No. 6 to SS, May 7, 1903, NAI, Home/Public (A)/May1903/406-415)।

১৯০৩-এর ৩০ জুন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের মেট্রোপলিটন পুলিশ ইন্সপেক্টর জেমস স্টকলি, নরউইচের কাছের একটি মিল থেকে এমারসনকে গ্রেফতার করে। স্টকলি তাকে গ্রেফতারের শমন পড়ে শোনালে সে জানায় ‘আমি এর কিছুই জানি না! আমি একে গুলি করি নি। আমি তাকে হাসপাতালের আগে দেখিনি। আমি জঙ্গলেও যাই নি’ (BL, IOR, UPJl61641, File 1499)। স্টকিলি মাদ্রাজ হাইকোর্টের শমন এমারসনের থেকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এটি পেয়ে তু কী কোনও পদক্ষেপ নিয়েছ?’ এমারসন উত্তর দিল, ‘না, কেন নেব? ভারতে আমার সঙ্গে যা ঘটেছে সেটা কী যথেষ্ট নয়? আমি যেতে চাইলেও পারব না, আমার কাছে অর্থ নেই। আমি কমান্ডিং অফিসারকে চিঠি লিখেছিলাম, কিন্তু উত্তরটা খুঁজে পাছি না। এসব লর্ড কার্জনের কাজ, সে দেশের নেটিভদের সন্তুষ্ট করতে যা খুশি করতে পারে’।

পাঁচ সপ্তাহ পরে স্টকলি আর এমারসন ভারতে রওনা হয়ে ৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাজে পৌঁছয় (BL, IOR, L/PJ/6/659, File 197)। মামলাটি বিশদে ভারতজুড়ে নানান সংবাদপত্রে ফলাও করে ছাপা হয়। নায়ের-ই-আসিফি লিখছে ‘এমারসনের মামলার হেন বিষয় নেই যা জনগণকে উত্তেজিত করে নি’ (Naier-I-Asifa, October 15, 1903, BL, IOR, L/R/5/111. এছাড়াও দেখুন The Times, July 8 , 1903; and Madras Mail, October 5-10, 1903)। মাদ্রাজ মেল সাপ্তাহিক বিচার প্রক্রিয়ার কথোপকথন প্রকাশ লিখিতভাবে প্রকাশ হয়। বিচারক ছিলেন বিচারপতি বেনসন। ন’জন জুরির মধ্যে সাত জন ইওরোপিয় এবং দুজন ভারতীয়। এমারসনের বিরুদ্ধে তীব্রভাবে গুলিভর্তি বন্দুক নিয়ে কামারুদ্দিনের বাঁ পায়ে স্বেছায় আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়। এমারসন বার বার জানাতে থাকে তার নির্দোষিতা।

উকিলের পক্ষ থেকে জানানো হয় এটা একটা সাধারণ সনাক্তকরণের মামলা। জুরিরা সরাসরি কামারুদ্দিন আর থেক্কাভালানের সাক্ষ্য শোনেন। থেক্কাভালান জানান তিনি আর কামারুদ্দিন দুর থেকে শোনেন গুলি চলেছে, তারা সেখানে যান এবং তিনজন সেনাকে জঙ্গলে গুলি চালাতে দেখেন, কামারুদ্দিন তাদের ইংরেজি আর হিন্দুস্তানিতে কিছু বললে সেটা থেক্কাভালান বোঝেন নি। থেক্কাভালান দাবি করেন, তিনি এবং কামারুদ্দিন অকুস্থলে যাওয়ার পথে তার পায়ে একটি কাঁটা ফোটে। গুলির শব্দ শুনে তিনি যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে কামারুদ্দিনকে মাটিতে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

এমারসনের উকিল নুজেন্ট গ্রান্ট যুক্তি দেয় মামলাটা দাঁড়িয়ে আছে কামরুদ্দিনের আক্রমনকারীকে চেনার ওপরে, সেটা বেমানান এবং যুক্তিবুদ্ধিহীন এবং প্রমান হিসেবে জোরদার নয়। গ্রান্ট মন্তব্য করে, the policy of Government which interfered with the action of the Judicial Department and had brought Emerson all the way out from England to undergo a trial when there was not sufficient evidence to establish a conviction. The jury might have lately heard of several flagrant cases of such interference by Government, such as the Bain case and the case of Lieut. Rennick। উপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ যেভাবে এমারসনকে ভারতে টেনে এনেছে, তাকে নিন্দা করে করে জুরিদের উদেশ্যে বলেন তার মক্কেলকে ছেড়ে দিয়ে জুরিরা সরকারের উদ্দেশ্যে কঠোর বার্তা দিক [It was open to the Jury, by their verdict, to denounce the action of Government and to send Emerson back to his home and to his wife an honourable man (মামলার বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছিল Madras Mail, October 5, 6, 9, and 10, 1903)]। তার শেষ মন্তব্যে বিচারপতি বেনসন জুরিদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি মনে করছেন এমারসন নির্দোষ, এই মামলায় তাকে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে সেটি সমস্যার সৃষ্টি করেছে।

জুরিরা ১৫ মিনিটের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেয়। তারা বিচারপতিকে আবেদন করেন, তিনি যেন সরকারকে চাপ দিয়ে এমারসনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেন (Madras Mail, October 9, 1903)। বাড়ি ফেরার সময় এমারসনকে ৩০ পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় (BL, IOR, L/PJ/6/652, File 2555)। ভারতীয় সংবাদপত্র অভিযুক্তকে শাস্তি না দেওয়ার জন্যে মাদ্রাজ হাইকোর্টকে সমালোচনা করে। নাদেগান্নাদি লিখল, এমারসনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় encourage crime among Europeans of low character as they might suppose it to be a new way of making money (Nadegannadi, November 17, 1903, BL, IOR, L/R/5/111)। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বাংলা নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩০ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন