শনিবার | ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৩৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দশম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুর ও তৎকালীন বঙ্গসংস্কৃতি : অসিত দাস দধি সংক্রান্তি ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস সসীমকুমার বাড়ৈ-এর ছোটগল্প ‘ঋতুমতী হওয়ার প্রার্থনা’ সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতিফলনে সিনেমা : সায়র ব্যানার্জী নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সুও দুও ভাসে’
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কর্মব্যস্ত জীবনে যদি নেওয়া যায় একটু মায়াদুপুরের ভাতঘুম : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৭৩০ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩

দুপুরবেলা লাঞ্চের পর কাজে বা মিটিংয়ে বসলেই জুড়িয়ে আসে চোখ। সঙ্গী হয় হাল্কা ঝিমুনি আর একটু নাক ডাকা। ব্যাপারটা ওয়াক ফ্রম হোম হলেও ঝক্কি কম ছিল কিন্তু ভাবুন তো অফিসের ডেস্কে বা মিটিং রুমে, ক্লাসে স্টুডেন্টদের সামনে এমন হলে কেমন লাগে! কর্মক্ষেত্রে ঘুমানো নিয়ে কত কাণ্ডই না ঘটে! বিষয়টা অস্বস্তিকর হলেও, এমন অভিজ্ঞতা কমবেশি সকলেরই রয়েছে।

প্রকৃপক্ষে সভ্যতার জন্মের পিছনে লুকিয়ে আছে মানুষের বুদ্ধি ও শ্রম। জীবনে শ্রমের প্রয়োজনীয়তা যতটা, ততোটাই দরকার বিশ্রামের। আর এই কর্মব্যস্ত জীবনে যদি নেওয়া যায় একটু ভাতঘুম, তবে মন্দ হয়না বৈকি।

দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর শরীরজুড়ে যে ঝিমুনি ভাব আসে তাকে চলতি ভাষায় ভাতঘুম বা দিবানিদ্রা বলা হয়। বিশেষ করে উষ্ণ জলবায়ুর দেশগুলোতে এ রকম ঝিমুনি ভাব বেশি প্রত্যক্ষ করা যায়। তাইতো ঘরে থাকলে দুপুরে বিছানার অমোঘ আকর্ষণ এড়িয়ে যাওয়া এ যেন এক চরম বিপ্লব। “ভোজনং যত্রতত্র শয়নং হট্টমন্দিরে” এই প্রবাদের উদাহরণ অফিস-কাছারি থেকে বাসে-ট্রেনে সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়।

আর বাঙালি বোধহয় একমাত্র জাতি যাঁরা দিবানিদ্রার জন্য আয়োজন করে। রবিবারের দুপুরে এই আয়োজনের প্রধান দুই অঙ্গ হলো মহার্ঘ্য খাসির মাংসের ঝোল এবং দ্বিতীয় উপাদান পাশবালিশ। এক বাটি লাল রগরগে মাংসের ঝোল দু-টুকরো আলুর সঙ্গে বাঁশকাঠি চালের গরম ভাত চটকে মেখে খেয়ে তৈরি করা হয় ভাতঘুমের বেস। যদিও বা গুরুপাক আহার নিবিড় নিদ্রার অন্তরায় তথাপি মাংস ভাত খেয়ে পাশবালিশ জড়িয়ে না ঘুমাতে পারলে ছুটির দিনে মজাই মাটি।

শুধু স্বদেশেই নয়, এই ভাতঘুম বেশ পপুলার বিদেশেও। সিয়েস্তা কথাটি (স্প্যানিশ শব্দ sjesta যার অর্থ ঘুম ) ভূমধ্যসাগরীয় এবং দক্ষিণ ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, মূল ভূখণ্ড চীন, এবং ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে প্রচলিত আছে। সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়ায় ছোট একটি ঘুম বা ভাতঘুম বড়ই প্রয়োজন।

উইনস্টন চার্চিলকে যুক্তরাজ্য তথা বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং লেখক হিসেবে গণ্য করা হয়। ৯১ বছরের জীবদ্দশায় দিনে পাঁচ ঘন্টা করে ঘুমালেও নিয়মিত ভাতঘুম দিয়ে তা পূরণ করতেন। ঘুম নিয়ে অনেক মজার মজার কথা বলতেন। শোবার ঘরে থাকতো দুটি বিছানা। একটিতে ঘুম না এলে, অন্যটিতে শুতেন। তাঁর মতে, দিবানিদ্রা নিলে বেশি কাজ করা যায়। দুপুরে ঘুমোলে তিনি একদিনে দেড় দিনের কাজ করতে পারতেন।

সৃষ্টিশীল ও ব্যতিক্রমী শিল্পী সালভাদোর দালি বিশ্বাস করতেন বিখ্যাত শিল্পী হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর হাতে চাবি নিয়ে ঘুম। এক সেন্টের কাছ থেকে শিখেছিলেন এই গোপন কৌশল। বৈকালিক ছোট্ট ঘুমের জন্য বুড়ো আঙুল ও তর্জনীর ফাঁকে ধাতুর তৈরি একটি ভারী চাবি নিয়ে, আরাম কেদারায় শুতেন। মেঝেতে রাখতেন একটি কাঁচের প্লেট। ঘুমিয়ে গেলে হাত থেকে চাবিটি কাঁচের প্লেটে পরলেই ঝনঝন আওয়াজে দালির ঘুম ভেঙ্গে যেতো।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি দুপুরে নিতেন একটা ভাতঘুম। নির্দেশ দেওয়া থাকতো অতি জরুরী ব্যাপার ছাড়া তাঁকে যেন সেইসময় ডাকা না হয়। ঘুম থেকে জেগে স্নান করে বিশাল উদ্যমে শুরু করতেন কাজ।

একান্তই যদি দুপুরে ঘুমাতে না চান তবে ঢুলুঢুলু ভাব লাগলেই শুনতে পারেন একটু রক মিউজিক।

দুপুরে খাওয়ার পর এনার্জি ড্রিংক না খেয়ে, টকদই বা সবুজ আপেল খেতে পারেন। কিছুক্ষনের জন্য খোলা হওয়ায় হাঁটতে পারেন। কর্মস্থলে থাকলে সহকর্মীদের সঙ্গে হালকা আড্ডা দেওয়া যেতেই পারে। এমনিই কর্মক্ষেত্রে ঘুমানো নিয়ে কত ট্রোলের ফাঁদে পরতে হয়। শুরু হয়ে যায় আজগুবি সব গল্প। তাতে মেশে রামধনুর রঙ। রাষ্ট্র হতে সময় লাগে কিছুক্ষণ। এতে বিব্রত হতে হয় ব্যক্তিটিকে।

অথচ চীনে মধ্যাহ্নভোজের পর কর্মীদের আধাঘন্টা ঘুমাতে উৎসাহিত করা হয়। কর্তৃপক্ষ মনে করেন উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য এটি জরুরী।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, দিনের বেলার ঘুম দুপুর ১টা থেকে ৩টের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের রাতে ঘুমের উন্নতি করতে সাহায্য করে। এবং তার সঙ্গে বিকালে মাঝারি ব্যায়ামের সাথে হাঁটা, রাতের ঘুম উন্নত করতে সাহায্য করে যা মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যর পক্ষে সহায়ক। দুপুরের ঘুম ব্লাড প্রেসারের উপর পজিটিভ এফেক্ট ফেলে।

সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর স্টার্ট-আপ সংস্থা ডি-টু-সি (D2C) হোম-এন্ড-স্লিপ ‘ওয়েকফিট সলিউশনস’ কর্মীদের দুপুরে ভাতঘুমের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিদিন দুপুর দুটো থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ৩০ মিনিট কর্মীদের ঘুমের জন্য সময়টি অফিশিয়ালি তারা চিহ্নিত করেছেন। এমনকি পাওয়ার ন্যাপের আদর্শ জায়গা বা নিঃশব্দ ঘরের ব্যবস্থাও তারা করেছে। অনিদ্রার সমস্যা বা স্পনডেলাইটিসের কারণে অনেকেই ভালোভাবে ঘুমোতে পারেন না। তাদের নিশ্চিন্ত ঘুমের জন্য আরামদয়ক গদি, বিছানা, আসবাব বিক্রি করে বেঙ্গালুরুর এই সংস্থা। এমনকি ক্রেতাদের জন্য আরামদায়ক বিছানা বা ম্যাট্রেসে ১০০ দিনের ট্রায়াল দিচ্ছে এই কোম্পানি। কোম্পানির এই পদক্ষেপ শুধু কর্মীদের কাছে নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেক সাড়া ফেলেছে।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী আহার, নিদ্রা ও মৈথুনে লুকিয়ে আছে জীবনের পরম সুখ। সুষম আহার যেমন সুখনিদ্রাকে আমন্ত্রণ জানায়, তেমনিই তুরীয় পর্যায়ের সঙ্গম শরীরকে নিয়ে যায় গভীর নিদ্রার দিকে।

উপসংহারে বলা যায়, ছোট্ট একটি ভাতঘুম কেবল আপনার শরীরকেই নয়, আপনার মনকেও সতেজ করতে পারে। আপনাকে আরও সতর্ক করে তোলে। আপনার ধৈর্য্য, সৃজনশীলতা বাড়ায়, আপনাকে আরও কর্মক্ষম করে তোলে। কিন্তু আপনাকে আপনার ঘুমের জন্য সীমা সময় নির্ধারণ করতে হবে যাতে জেগে ওঠার পর বিষণ্ণ বোধ করতে না হয়। জীবন তো তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করার জন্য আর সেই উপভোগের অন্যতম উপকরণ একটি ছোট্ট পাওয়ার ন্যাপ বা মায়াদুপুরের ভাতঘুম।।

“বিরাম কাজেরই অঙ্গ এক সাথে গাঁথা, / নয়নের অংশ যেন নয়নের পাতা।”


আপনার মতামত লিখুন :

8 responses to “কর্মব্যস্ত জীবনে যদি নেওয়া যায় একটু মায়াদুপুরের ভাতঘুম : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Pallab dey says:

    অসাধারণ লেখনী।

  2. শুভাশিস ঘোষ says:

    বাঃ! চমৎকার প্রতিবেদন। খুব ভাল লাগল।

  3. p k biswas says:

    আহা ঘুম বাহা ঘুম,মায়া ঘুম,রাত ঘুম ঘুমিয়ে*
    স্বপ্নের দেশে যাই শত বাধা পেড়িয়ে*ভাত ঘুম
    দুপুরের নাহলেতো চলেনা,সারাদিন ঝিমুনি কোনো বাধা মানেনা*বিছানা বা মাটিতে কিংবা
    গাছের ছায়া ঘুম পরিপাটিতে!!*
    অপূর্ব প্রতিবেদন*ঘুমের প্রয়োজন,তার ইতিহাস
    আপনি পাঠককে সম্মোহন করেন জাদু লেখোনীতে। ভালোলাগা ভালোবাসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন