শুক্রবার | ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:২৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (সপ্তদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (প্রথম পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ষোড়শ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আলাউদ্দিন অল আজাদ-এর ছোটগল্প ‘আমাকে একটি ফুল দাও’ ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতাকে বিজেপি বড্ড বেশি জরুরি করে ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকগীতি ঘাটু গান আজ অবলুপ্তির পথে : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (পঞ্চদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন হাসান আজিজুল হক-এর ছোটগল্প ‘স্বপ্নেরা দারুণ হিংস্র’ বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেদেদের বৈচিত্র্যময় জীবনযাপনের কথা : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (চতুর্দশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন নাইন্টিন সেভেন্টিন ওয়ান : শৌনক দত্ত বিশ্বপরিব্রাজক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ত্রয়দশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন নন্দিনী অধিকারীর ছোটগল্প ‘শুভ মাতৃদিবস’ গবেষণামূলক গ্রন্থ ‘ফ্লোরেন্স থেকে রাধানগর রেনেসাঁস ও রামমোহন’-এর মোড়ক উন্মোচন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ১৯২১-এ কথা দিয়েও স্পেনে গেলেন না কেন রবীন্দ্রনাথ : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ : তারাপদ রায় ও তার অন্ত নাই গো নাই : প্রব্রাজিকা বেদরূপপ্রাণা পেজফোরনিউজ-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ২০২৪ শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (দ্বাদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন কাশ্মীরে বিজেপির প্রার্থী নেই, মোদীর সফরও বাতিল উপত্যকা ও লাদাখে : তপন মল্লিক চৌধুরী অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে অক্ষয় হোক সম্পদ সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধি : রিঙ্কি সামন্ত শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (একাদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন রবীন্দ্রনাথরা কি কবিয়ালের বংশধর? : অসিত দাস নিমাই ভট্টাচার্য-এর বড়োগল্প ‘প্রাইভেট প্রাকটিশ’ উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে নজর কাড়ল আরামবাগ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (দশম পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আমার রবীন্দ্রনাথ : লুৎফর রহমান রিটন রবীন্দ্র সাহিত্যের নতুন প্রান্ত : মিল্টন বিশ্বাস
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই অক্ষয় তৃতীয়া-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

নববর্ষ আসে, কবিতার অক্ষর বলে, ‘তুমিও সুন্দর’ : অমৃতাভ দে

অমৃতাভ দে / ৭৭ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বিশেষ সংখ্যার লেখা।

আগামীকালের মধ্যে ক্রমাগত

যাচ্ছেন, অন্ধের মতো, সুনিশ্চিত, যেমন

গতকাল বলে কিছু নেই আর

গতকাল চলে গেছে অন্ধকারে, চির-নির্বাসনে

নিজেকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করতে-করতে করতে- করতে

আগামীকালের টানে টানে

এতদূর এলেন

এই যে ক্রমাগত আসা

এই-ই বেঁচে থাকা

এই বাঁচাটাকে নিস্পৃহ

মুছতে মুছতে

মুছতে মুছতে

শূন্য করে

অন্ধকারে নিক্ষেপ করাই

আগামীকাল

শীত চলে যাচ্ছে। উষ্ণতা একটু একটু করে বাড়ছে আমাদের মফস্বলে, ঝরাপাতার মরশুম। পাতা ঝরার শব্দ আমার কাছে কবিতার অন্ত্যমিলের মতোই।

কোকিল আজও ডাকে পুতুলনগরীতে। বুধবার।

সকালবেলায় আসত যে ফকির, উচ্চারণ করত ‘রাধে রাধে’। সে তো আসেনি অনেকগুলো সপ্তাহ।ঝরাপাতা উড়ে আসে ঘরের দরজায়।এই সময় কেমন শূন্য শূন্য লাগে।

মন ঘুরিয়ে নিই বড় প্রেক্ষাপটে

কারুকাজ করা সূর্যাস্ত দেখি

তার বুকে ভালোবাসার মতো লেপটে আছে

একটুকরো রঙিন মেঘ

ঐ রকমই আমিও লটকে আছি

পৃথিবীর বুকে, এক বিন্দু হয়ে

জীবন উপভোগ্যই

যা চাই, তা পাই বা না-পাই

একটু হাওয়ার দোলায় পাতার খেলা, একটু মেঘের ছোঁয়ায় আলোর আনন্দ, ডালে বসে দোলা মগ্ন পাখিটির আহ্লাদ — চারপাশের ছোটো ছোটো সুখের ঢেউয়ের মধ্যে ভেসে থাকতে ইচ্ছে করে।ভাবি ‘এত দুঃখের মধ্যে আমিও তো কম সুখী নই।’কবিতাই একমাত্র আশ্রয়।দেবদাস ভুলিয়ে দেন শোক-তাপ-দুঃখ। বুঝি, ‘জীবন এক টুকরো স্বপ্নই’। একদিন বিহ্বল এক স্বপ্নের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে স্বপ্নের অতীত হয়ে যাব আমিও। কবিতার নাম ‘কোমা’। অসহ্যকে অসহ্য কষ্টের মধ্যেও দেবদাস বলেন ‘তুমিও সুন্দর’। সমগ্র কাব্যগ্রন্থের কবিতাপাতায় বিস্ময়ের ঘোর লেগে। আছে মনে হয় ধ্বনির স্রোতের উল্লাসের ভিতর বেঁচে আছি আমিও। সমুদ্রের তীরে অন্ধকারে যেমন হতবাক হয়ে শুনি অন্তহীন ঢেউয়ের উল্লাস। চারিদিকে তাকায়, মন বলছে যে, ‘এত সুন্দর’/ এক  আঁজলায় ফুরোবে না’। যা কিছু হয়ে ওঠা এ জগতে সবই সুন্দর। চারিদিকের সমস্ত সুন্দরের মধ্যে আমিও বিন্দু বিন্দু হয়ে মিশে যাচ্ছি। ক্ষণকালের শিশিরবিন্দুতে আকাশখণ্ড দেখা যায় যেভাবে, আকাশের গভীরতা টলটলে নীল—সেইরকম অনুভব করি আমার জীবন। জীবনরেখা ম্লান হাসির মতো, ঠোঁটেই মিলিয়ে যাওয়া তিলেক আভাস — সুন্দর কবি চোখেই কেবল আভাস। কবির মতো আমিও ঘাসের ডগায় রেখে আমার জীবনকে উপভোগ করি। নিজেকে অনন্ত আলোর ছায়াপথে রেখে যেতে ইচ্ছে করে আমারও। ফুল, ফল, বনরাজি, পশুপাখি, নদনদী শস্যভূমি, গৃহভূমি সব স্বপ্নের সঙ্গে জড়িয়ে রেখে যেতে চাই। জগৎজোড়া এক বিস্ময়। কবি লেখেন —

সন্ধ্যা যেমন

শঙ্খধ্বনিতে

পাঁচালির সুরে

আশ্চর্য হয়ে ওঠে

বাঁশি যেমন

বুকের শ্বাসে

দিঘির জলে যেমন

পদ্ম

গোধূলির রং-এ যেমন

আকাশ …

জগৎ — জোড়া এ এক বিস্ময়

প্রত্যেকেরই একজনকে চায়

আমার হৃদয়ও

এই পৃথিবীতে কিছু পেয়ে

আশ্চর্য হয়ে উঠেছিল

অল্প বাতাসে দু একটি এলোমেলো বাঁশপাতার দোলা চোখে পড়ে কবির। নিশ্চুপ মুগ্ধ পাখিটিকে দেখে মুগ্ধ হন তিনি। কবির মনে এরাই এনে দেয় পূর্ণ তৃপ্তি। আমিও বুঝি বাতাস থেমে গেলে,পাখি উড়ে গেলে এই তৃপ্তির জগত এক নিমেষে উধাও হয়ে যাবে। প্রশ্ন জাগে মনে, অন্ধকার পূর্ণ করবেন কী দিয়ে? জীবনেও ভাঙচুর আছে। পূর্ণ করার কথা ভাবি সেই জীবনকেও। নীরবতার মধ্যে পৃথিবীর ঘূর্ণনের মাদক শব্দ প্রিয় হয়ে ওঠে, প্রতিরাতেই ওই শব্দের রস পান করে নেশাতুর হই, জগতের ব্যর্থ প্রেমের মধুর সংগীত কেউ শুনিয়ে চলে যেন বুকফাটা কাঁপা কাঁপা সুরে।

জীবনের কত রং, কত জলছবি।পাড় ঘেঁষে জোলাদের গ্রাম। পুরোহিত হরিনাম গায়, মন্দিরে লৌকিক বাংলার প্রতিমার মুখ। শান্ত নদী, তার বুকের মাটির সঙ্গে বসে কথা বলা যায়। শ্যাওলায় কুচো মাছের ঝাঁক। তার পাড়ে জোলাদের পাড়া।সুতো রং করে বালিকারা — এ ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে আজীবন।

‘বর্ষামঙ্গল’ কবিতাটি পড়তে পড়তে মনে জীবননাট্যের ক্যানভাসে চোখ রেখেছি আমি।

বর্ষা, গুড়গুড় মেঘের ডাক

অল্প হাওয়ায় দুলতে দুলতে

ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির আদর

বাংলার পলিমাটি এখন রজস্বলা

মা খিঁচুড়ি বসিয়ে দিলেন উনুনে

টিনের ফুটো চালার ওপর পিচ – চট দেওয়া হল

আমাদের চারটে হাঁসের খুশি আর ধরে না

সানকিভাঙা পুকুর উপচে জল চলে এলো দুয়োরে গামছায় মাছ ছেঁকে তোলার দামাল কৈশোর

বাবার সেলাই মেশিনের শব্দের মতো নরম

একটানা বৃষ্টি ঝিম ধরিয়ে দেয়

বাবা চিন্তিত,কিন্তু মা একেবারে বেপরোয়া

থালায় থালায় খিঁচুড়ি আর ডিম ভাজা

বাবা গান ধরলেন — পাগলা মনটারে তুই …

মা বললেন — ঐ দেখো, ঐ দেখো

ঐ ঘনপাতার গাছটায় দু-একটা কদম ফুটেছে

খুশির দিন আসে তাঁর কবিতা, মরতে মরতেও বাঁচতে ইচ্ছে করে। মেঘভাঙা রোদে দোয়েল পাখি নাচে, তার খুশি তার ঠোঁটের একটা রঙিন ফড়িং। অনেক দিনের পরে কারখানা খুলবে মামার, ছেঁড়া জামা সেলাই করেন মামী।’আবার হবে বোনাস/দুগ্গাঠাকুর দেখা/এই তো সাধের জীবন/মরতে মরতে বাঁচা।’

তাই তো,

‘ফুরিয়ে যাবার আগেও আমরা ভাবি—

আমাদের জন্যে আছে অন্য ভুবনে

বাকি আধখানার জীবন।’

মনে পড়ে যাচ্ছিল সেই বিখ্যাত পঙক্তিগুলি—

I see trees of green

Red roses too

I see them bloom

For me and for you

And I think to myself

What a wonderful world

 #

I see skies of blue

And clouds of white

The bright blessed day

The dark sacred night

And I think to myself

What a wonderful world

 #

The colors of the rainbow

So pretty in the sky

Are also on the faces

Of people going by

 #

I see friends shaking hands

Saying, “How do you do?”

They’re really saying

“I love you”

 #

I hear babies cry

I watch them grow

They’ll learn much more

Than I’ll ever know

And I think to myself

What a wonderful world

Yes, I think to myself

What a wonderful world

Oh yeah

(What A Wonderful World performed by Louis Armstrong).

পৃথিবী সত্যিই বড়ো সুন্দর, কোকিলটা মাঝে মাঝে ডাকছে, ঝিরঝিরে  বাতাস, জগতে সুখের শেষ নেই। আসলে দুঃখ ঘোচে না।’ মুষড়ে থাকি কবির মতোই। ভাবি কীভাবে উৎরাব। ‘যেন একটা কীটকে ছেঁকে ধরেছে একঝাঁক পিঁপড়ে।’ কোথাও একটা বিষাদ লেগে থাকে। ‘বিপন্ন বিস্ময়’ আমাদের ক্লান্ত করে আজও। সেই ক্লান্তিকে দূরে সরিয়ে বলতে তবু ইচ্ছে করে, ‘জীবন যখন/একবার অন্তত তাকে অবিস্মরণীয় করে তুলুন।’ এই জীবনরেখা ম্লান হাসির মতো, ঠোঁটেই মিলিয়ে যাওয়া তিলক আভাস।সেও বড়সুসুন্দ, সুন্দররের  শুরু নেই, শেষ নেই, পরিনাণ নেই,কেবল আভাস একটু আভাস।

কবি দেবদাস আচার্য-র কাব্যগ্রন্থ ‘তুমিও সুন্দর’ পাঠ-পরবর্তী অনুভূতি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন