আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক দেবাশিস শেঠের ফ্লোরেন্স থেকে রাধানগর রামমোহনের নবজাগরণকে ঘিরে ‘রেনেসাঁস ও রামমোহন’ গ্ৰন্থকে ঘিরে পাঠক সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি কোলকাতার বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভা অফ ইন্ডিয়ার সভাঘরে রামমোহন গবেষক দেবাশিস শেঠ এর লেখা ‘রেনেসাঁস ও রামমোহন ‘গ্রন্থটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। গ্ৰন্থে ফ্লোরেন্স থেকে রাধানগরের নবজাগরণের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরেছেন লেখক। যা পাঠক সমাজে সমাদৃত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্ৰন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক, পুরাণবিদ্ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ী, বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন মিদ্দে প্রমুখ। তাঁদের আলোচনায় এই গ্রন্থটির মৌলিকতা সম্পর্কে বারবার বিভিন্ন তথ্য উঠে আসে। অধ্যাপক ডক্টর সুরঞ্জন মিদ্দের কথায়, “রাজা রামমোহন রায়ের জন্ম খানাকুলের রাধানগরে। এই মহাপুরুষের জন্মের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে গেলে রাধানগর কেন্দ্রিক যে ইতিহাস জানার প্রয়োজন অত্যন্ত তথ্যনিষ্ঠ ভাবে দেবাশিস তা আমাদের সামনে উপস্থাপিত করেছেন। এই মৌলিক আলোচনা রামমোহন অনুসন্ধানীদের নিশ্চিতভাবেই সমৃদ্ধ করবে”।
সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, “একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় থেকে দেবাশিস যে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান কাজগুলি করছেন তার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানাই। ভারতবর্ষের নবজাগরণ এবং তার ক্রমবিকাশ সম্পর্কে জানতে গেলে কোন প্রেক্ষাপট থেকে রামমোহন গড়ে উঠেছেন তা জানা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত জরুরী। দেবাশিস তার এলাকায় আঞ্চলিক ইতিহাসের উপর আরো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। যেমন হুগলি জেলার স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস, এলাকার মঙ্গলকাব্যের সম্পাদনা এরকম অনেক কাজ। তার লেখা বাংলা সাহিত্য কে সমৃদ্ধ করবে এই আশা রাখি।”
নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ী জানান, “নবজাগরণ কে সঠিকভাবে বুঝতে গেলে শ্রীচৈতন্যদেব থেকে শুরু করতে হবে। সেখান থেকেই শুরু হয়েছে সামাজিক সংস্কারের কাজ। সমসাময়িক পন্ডিতদের সঙ্গে ধর্ম সম্পর্কে রামমোহনের বিভিন্ন তর্ক আলোচনা ও যুক্তিনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত রামমোহনের দৃষ্টিভঙ্গি এগুলি আমাদের জানতে হবে।” রামমোহনের ধর্মচিন্তা ও তার আদর্শ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত আলোকপাত করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসাধারণ আবৃত্তি পরিবেশন করেন ছন্দা রায়। খানাকুল থেকে আগত রামমোহন প্রেমী মানুষজন ও কলকাতার রামমোহন অনুরাগীদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল এদিনের সভাঘর।