শুক্রবার | ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:১১
Logo
এই মুহূর্তে ::
বুদ্ধদেব গুহ-র ছোটগল্প ‘পহেলি পেয়ার’ ‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (প্রথম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘তোমার নাম’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (অষ্টম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘হাওয়া-বদল’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার প্রবোধিনী একাদশী ও হলদিয়ায় ইসকন মন্দির : রিঙ্কি সামন্ত সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শুদ্ধতম প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা খাঁ : আবদুশ শাকুর নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘শুভ লাভ’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ভোটের আগে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি নানাদিকে মোড় ঘুরছে : তপন মল্লিক চৌধুরী সরকারি নিষেধাজ্ঞা, জমির চরম ক্ষতি ও জরিমানা জেনেও নাড়া পোড়ানো বন্ধে সচেতন নন চাষিরা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার আবুল বাশার-এর ছোটগল্প ‘কাফননামা’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ব্লকবাস্টার ‘আরাধনা’-র ৫৫ বছর — রাজেশ-শর্মিলা হিট-এর নেপথ্যে… : রিঙ্কি সামন্ত কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কখনও কারও সমালোচনা না করার দুর্লভ গুণ ছিল শ্যামলবাবুর : সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কাত্যায়নী ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত নটখট ছট : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কেবল নৈহাটি, নাকি ‘কংশাল’দের বন্ধু হতে চাইছে সিপিএম : তপন মল্লিক চৌধুরী অমৃতা প্রীতম — প্রেম, প্রগতি ও বিদ্রোহের এক অনন্য কবি : রুবায়েৎ আমিন তবু মনে রেখো… : সন্দীপন বিশ্বাস অন্নকূট পূজা হল গোবর্ধন পূজার আরেকটি নাম : আলোক চ্যাটার্জী ‘যমুনা’-র সেকাল একাল : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভাইফোঁটা — পুরাণ থেকে ইতিহাস ছুঁয়ে সমকাল : সন্দীপন বিশ্বাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ২৩ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

পল লাফার্গ (Paul Lafargue) (১৮৪২-১৯১১) // লরা মার্কসের স্বামী ও কার্ল মার্কসের জামাই

কিউবান-ফরাসি বিপ্লবী পল লাফার্গ জন্মগ্রহণ করেন কিউবায়। তিনি বলেছিলেন যে তিনটি নির্যাতিত জাতির রক্তধারা তাঁর শিরায় প্রবাহিত। কার্ল মার্কস তাঁর বিভিন্ন চিঠিতে কৌতুকের সঙ্গে লাফার্গকে কখনও ‘নেগ্রিলো’ কখনও ‘নিগ্রো’, কখনও বা ‘গরিলার বংশধর’ বলে সম্বোধন করেছেন।

১৮৫১ সালে তাঁর পরিবার বোর্দোতে আসেন। সেখানে তাঁর বিদ্যালয়ের পড়াশুনো সম্পূর্ণ হয়। তারপর তিনি চিকিৎসা নিয়ে পড়াশুনো করেন প্যারিসে। এখানে পজিটিভিস্ট দর্শনের দ্বারা প্রভাবিত হন। নেপোলিয়ন (৩) বিরোধী রিপাবলিকান দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিছুদিন পরে তাঁর দেখা হয় কার্ল মার্কস ও অগাস্ট ব্ল্যাঙ্কির সঙ্গে। ১৮৬৫ সালে লিজে আন্তর্জাতিক ছাত্র কংগ্রেসে অংশগ্রহণের ফলে তিনি ফরাসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত হন। তাই তিনি লণ্ডনে চলে যান। সেখানে মার্কসের বাড়িতে যেতেন তিনি। মার্কসের দ্বিতীয়া কন্যা লরার সঙ্গে তাঁর প্রণয়-সম্পর্ক স্থাপিত হয়, ১৮৬৮ সালে তাঁরা বিয়ে করেন।

লাফার্গকে ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনালের জেনারেল কাউন্সিলে নির্বাচিত করা হয় এবং তাঁর উপর স্পেনের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। ১৮৬৮ সালের ক্যানটোনালিস্ট বিপ্লবের পরে স্পেন ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগদান করে। তাঁর মধ্যে যে নৈরাজ্যবাদী প্রবণতা ছিল তা মার্কস ও অগাস্ট ব্লাংকির প্রভাবে দূর হতে থাকে। লাফার্গ ইতালীয় নৈরাজ্যবাদী জিউসেপ ফানেলির বিরুদ্ধতা করেন।

১৮৭১ সালে প্যারি কমিউনের পর দমন-পীড়ন শুরু হলে লাফার্গ স্পেনে চলে আসেন। তিনি মাদ্রিদে মার্কসবাদীদের জড়ো করার কাজ করেন এবং ‘ইমানসিপাসিওন’ পত্রিকায় বেনামে প্রবন্ধ লিখতে আরম্ভ করেন। কিন্তু সেইসব লেখার জন্য ১৮৭২ সালে নৈরাজ্যবাদী ফেডারেল কাউন্সিল তাঁকে বহিষ্কার করে। এখানে তাঁর শেষ কাজ ছিল হেগে মার্কসবাদী সংখ্যালঘুগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করা।

১৮৭২ থেকে ১৮৮২ সল পর্যন্ত লাফার্গ লণ্ডনে বাস করেছিলেন। শৈশবে তিন সন্তানের মৃত্যু হওয়ায় তিনি চিকিৎসাবিদ্যা পরিত্যাগ করে এক ফটোলিথোগ্রাফি ওয়ার্কশপ আরম্ভ করেন। এই ব্যবসা ব্যর্থ হয়। এঙ্গেলসের অর্থ সাহায্যে চলতে থাকে তাঁদের সংসার। লণ্ডন থেকে লাফার্গ ফরাসি দেশের শ্রমিক আন্দোলন দেখভাল শুরু করেন। তৃতীয় প্রজাতন্ত্রের প্রথম বছর গুলিতে অ্যাডলফ থিয়ের্সের প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাব ও দমন-পীড়নের ফলে শ্রমিক আন্দোলন তার যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছিল, তা আবার ফিরে পায়। ১৮৮০ সাল থকে লাফার্গ ফরাসি সমাজতন্ত্র সংবাদপত্র ‘লা ইগালাইট’ পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেন। এই সময়ে তিনি লিখতে শুরু করেন তাঁর বিখ্যাত বই ‘দ্য রাইট টু বি লেজি’। ১৮৮২ সালে তিনি তিনি এক বিমা কোম্পানিতে যোগ দেন, সেজন্য তাঁকে প্যারিসে আসতে হয়। প্যারিসে এসে তিনি নব গঠিত ফরাসি ওয়ার্কাস পার্টির কাজকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

১৮৯১ সালে পুলিশি হেফাজতে থাকার সময়ে তিনি একটি উপনির্বাচনে ফরাসি সংসদে নির্বাচিত হন। তিনিই প্রথম সমাজতন্ত্রী যিনি ফরাসি সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ফরাসি ওয়ার্কাস পার্টি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত হয়। একজন গোঁড়া মার্কসবাদী রূপেই তিনি আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তাঁরই মতো গোঁড়া ছিলেন ফরাসি শ্রমজীবী দলের আর এক নেতা জুলেস গুয়েসদে। এই দুই নেতাকে মার্কস তাঁর মৃত্যুর কিছু আগে কৌতুক করে লিখেছিলেন, ‘If one thing is certain, I am not a Marxist’ .

ফরাসি দেশে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম হলেন পল লাফার্গ। তিনি অনেকগুলি গ্রন্থের রচয়িতা : ‘বুর্জোয়া সেন্টিমেন্টালিজম’ (Bourgeois Sentimentalism), ‘সোশ্যালিজম অ্যাণ্ড ন্যাশনালিজম’ (Socialism and Nationalism), ‘দ্য রাইট টু বি লেজি’, ‘পিজেন্ট প্রোপার্টি অব ফ্রান্স’, ‘আ ভিজিট টু লুই মিশেল’, ‘দ্য ডেকাজেভিল স্ট্রাইক’, ‘দ্য মরো অব দ্য রেভলিউশন’, ‘রেমিনিসেন্সস অব মার্কস’, ‘ডারউইনিজিম অন দ্য ফ্রেঞ্চ স্টেজ’, দ্য মিথ অব অ্যাথেনা’, ‘দ্য চিনো-জাপানিজ ওয়ার’, ‘আইডিয়ালিজম অ্যাণ্ড মেটিরিয়ালিজম ইন দ্য কনসেপশন অব হিস্টি’, ‘সোশালিজম ইন ফ্রান্স-১৮৭৪-১৮৯৬-৯৭’, ‘দ্য অরিজিন অব অ্যাবস্ট্রাক্ট আইডিয়াজ’, ‘আওয়ার গোল’, ‘দ্য ব্যাঙ্কক্রাপসি অব ক্যাপিটালিজম’, ‘দ্য রাইটস অব দ্য হর্স অ্যাণ্ড দ্য রাইটস অব ম্যান’, ‘দ্য সোশালিসগট আইডিয়াল’, ‘সোশ্যালিজম অ্যাণ্ড দ্য ইন্টেলক্টচ্যুয়ালস’, ‘দ্য বয়কট’, ‘দ্য হিস্টোরিক্যাল মেথড অব কার্ল মার্কস’, ‘সিম্পল সোশ্যালিস্ট ট্রুথ’, ‘দ্য ওম্যান কোশ্চেন’, ‘পারসোনাল রিকাএকশন অব এঙ্গেলস’, ‘সোশ্যালিজম অ্যাণ্ড ইন্টারন্যাশনালিজম’ (Socialism and internationalism) প্রভৃতি।

পল লাফার্গ

জীবনের শেষ পর্বে লাফার্গ ও তাঁর স্ত্রী সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। তাঁরা প্যারিসের উপকণ্ঠে ড্রেভিল গ্রামে বসবাস করতেন। ১৯১১ সালের ২৫ নভেম্বর তিনি ও তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। লরা মার্কসের আলোচনায় আমরা পলের লেখা আত্মহত্যার চিঠিটি উল্লেখ করেছি। এই আত্মহত্যা সমাজতন্ত্রীদের বিস্মিত ও বিব্রত করেছিল। রাশিয়ার কমিউনিস্ট নেতা লেনিন ড্রেভিল গ্রামে লাফার্গের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। তাঁদের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন লেনিন, শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন। পরে লেনিন না কি তাঁর স্ত্রী ক্রুপস্কায়াকে বলেছিলেন : —

‘If one cannot work for the party any longer, one must be able to look truth in the face and die like Lafargue’ .

লাফার্গের প্রতিদ্বন্দ্বী, স্পেনের নৈরাজ্যবাদী অনসেলেমো লরেঞ্জো লাফার্গের মৃত্যুর মধ্যে তাঁর দ্বৈতস্বরূপের দ্বন্দ্বের কথা বলেছেন :

‘The double, original and, whatever the routine response, even sympathetic suicide of Paul Lafargue and Laura Marx, who knew and could live united and lovers until death, has awakened my memories. […..] Lafargue was my teacher : his memory is for me almost important as that of Fanelli. [….] In Lafargue were two different aspects that made him appear in constant contradiction : affiliated to socialism, he was anarchist communist by intimate conviction ; but enemy of Bakunin, by suggestion of Marx, he tried to damage Anarchism. Due to that double way of being, he caused different effect in those that had relations with him : the simple ones were comforted by his optimisms, but those touched by depressing passions changed friendship into hate and produced personal issues, divisions and created organizations that, because of original vice, will always give bitter fruit’ . (ক্রমশ)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন