মঙ্গলবার | ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৩৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
মাটির গন্ধমাখা লোকগানে সতেজতার সন্ধানী অমর পাল : রিঙ্কি সামন্ত কোটিপতি সাংসদরাই কি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি : তপন মল্লিক চৌধুরী বাহের দ্যাশের লোকসংস্কৃতি ও লোকসঙ্গীত নানা বৈচিত্র্যে বৈচিত্র্যময় : মনোজিৎকুমার দাস আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (শেষ পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী মোদি ম্যাজিক ছিল কিন্তু সে ম্যাজিক ফিকে হয়ে গেছে : দিলীপ মজুমদার সুশান্ত দাসের ‘প্রকৃতিগাথা’ : দিলীপ মজুমদার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা ও আরাকান আর্মি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ভ্রমণ : প্রকৃতি আর ঈশ্বর যখন একটি বিন্দুতে মিশে যায়… : অমৃতাভ দে আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (তৃতীয় পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী বসিরহাটে নুনের হাট, শ্যামবাজার নুনের বাজার : অসিত দাস মুর্শিদাবাদের আমকথা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত জেন অস্টিন নারী স্বাধীনতার অন্যতম পথিকৃৎ : মনোজিৎকুমার দাস ইসবার ইন্ডিয়া জোটকা সরকার, আমরা একাই একশো — মমতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (শেষ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন মুর্শিদাবাদের আমকথা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (দ্বিতীয় পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ কবি কুসুমকুমারী দাশ ও পরাবাস্তবতার কবি জীবনানন্দ : বিজয়া দেব হুগলির লোকসভা ভোটে গ্রামীন এলাকায় ১৭১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (সপ্তদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আশাপূর্ণা দেবীর ট্রিলজি : সমাজ বিবর্তনের দলিল (প্রথম পর্ব) : মোজাম্মেল হক নিয়োগী নজরুল ও মধুপুর (প্রথম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (ষোড়শ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন আলাউদ্দিন অল আজাদ-এর ছোটগল্প ‘আমাকে একটি ফুল দাও’ ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতাকে বিজেপি বড্ড বেশি জরুরি করে ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকগীতি ঘাটু গান আজ অবলুপ্তির পথে : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (পঞ্চদশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন হাসান আজিজুল হক-এর ছোটগল্প ‘স্বপ্নেরা দারুণ হিংস্র’ বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেদেদের বৈচিত্র্যময় জীবনযাপনের কথা : মনোজিৎকুমার দাস শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (চতুর্দশ পর্ব) : সন্‌জীদা খাতুন
Notice :

পেজফোরনিউজ ডিজিটাল পত্রিকার পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই অক্ষয় তৃতীয়া-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার : এলিজাবেথ কলস্কি (৯৭তম পর্ব) অনুবাদ বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৯৩ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

Colonial Justice in British India: White Violence and the Rule of Law Elizabeth Kolsky

ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশিক বিচার — শ্বেতাঙ্গ হিংসা এবং আইনের শাসন, এলিজাবেথ কলস্কি

পঞ্চম অধ্যায়

উপনিবেশে বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আর আইনের সাবঅল্টার্ন ব্যবহার

দুপুরে আবার মার শুরু হল। এক সময় য়েসু চুরির দায় স্বীকার করে জানায় দুটি ঘড়ি এবং আরও কিছু দামি জিনিস যে লুকিয়ে রেখেছে। য়েসুকে নিয়ে গিয়ে উদ্দিষ্ট স্থান খুঁড়েও কিছু পাওয়া যায় না — এবারে তারা তাদের ভারি চামড়ার বুট দিয়ে য়েসুকে লাথি মারতে থাকে — যদিও প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানায় বেইলিকে অসুস্থ এবং জ্বরাক্রান্ত লাগছিল এবং সে দূরে কেদারায় বসেছিল (পরে বেইলি দাবি করে তার জ্বর হয়েছিল এবং সক্রিয়ভাবে য়েসুকে মারছিল না। তার আরও দাবি যে সে ‘দেখছিল কোনওভাবেই যাতে আইনভঙ্গ না হয়’) (Baillie’s petition to Arthur Oliver Villiers (Lord Amprhill), Governor of Madras, February 5, 1902, ibi)। য়েসু মালিকদের আরও দু জায়গায় নিয়ে গেলেও খুঁড়ে কিছু পাওয়া যায় না। তৃতীয়বাবের জন্যে তাকে গাছে বেঁধে স্ত্রীর সামনে মারাত্মকভাবে চাবুক পেটানো হয়।

-০-

বিকেল পাঁচটা নাগাদ সোনায়া পিল্লাই আর স্যামুয়েল দৌড়ে অন্নপুরানুমের রান্নাঘরে এসে একবোতল হুইস্কি, গেলাস আর ছুরি নিয়ে গাছের কাছে যায়। অন্য এক প্রত্যক্ষ্যদর্শীর সাক্ষ্য অনুযায়ী বেইলি য়েসুর মুখে হুইস্কি ঢেলে দিলেও ‘সেটা তার ঠোঁট গড়িয়ে পড়ে গেল’। সোনায়া য়েসুর বুকে কিছু হুইস্কি লেপে দেয় কিন্তু ‘সে আর শ্বাস নিচ্ছিল না’ (Madras Mail, August 1901, ibid)। রাস্তার লোকেরা মৃতদেহটাকে দেখতে পাওয়ার আশংকায় বেইলি সোনায়াকে দেহটাকে টেনে নিয়ে যেতে বলে। পরের দিন সকালে সোনায়া অন্নপুরানুমকে য়েসুর মৃত্যু সংবাদ দেয়, এবং তার মাল সামান নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার কথা বলে। পাহাড়ের এলাচ বাগানের অন্যান্য ভীতসত্রস্ত কর্মীর মত বাচাদের নিয়ে অন্নপূরানুম বাগান ছেড়ে চলে যায়। ম্যাকগাওয়ানের রাঁধুনি পরে সাক্ষ্যতে বলেছে — On the following morning I went away to my village being frightened at the occurrence of the previous day (ibid)। দু’তিনদিন পরে ন্যাশপাতি গাছের তলায় পড়ে থাকা বেত আর বাঁধনগুলো তারা পুড়িয়ে দেয়। পুলিশ পরে ছাই উদ্ধার করে।

অন্নপুরানুম যদি এই মামলাটি দায়ের না করত অন্যান্য মুঝ লুকিয়ে থাকা উপনিবেশিক বহু অত্যাচার আর খুন কাণ্ডের মত এই ঘটনাও মুখ লুকিয়ে থাকত। কিন্তু এক নাছোড়বান্দা মহিলার জন্যে মামলাটি ইতিহাসে ঠাঁই পেল। অন্নপুরানুম পাশের গ্রামে এক শিক্ষককে দিয়ে আবেদনপত্র লেখায়। য়েসুর মৃত্যুর এক মাস পরে অন্নপুরানুমের আবেদনটি হেড কনেস্টেবল ল্যাম্বার্টের হাতে পড়লে, যথাবিহিত তদন্ত শুরু হয়।

অন্যদিকে এর কিছু দিন আগেই চুরির অভিযোগের তদন্ত করতে বেইলি আর ম্যাকগাওয়ান, ল্যাম্বার্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অন্নপুরানুমের আবেদন পাওয়ার পর ল্যাম্বার্ট হত্যা অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেয় ভারতীয় ইন্সপেক্টর থারিয়ানকে। থারিয়ান ২১ এপ্রিল বাগানে পৌঁছে মৃতদেহ খুঁড়ে তোলার জন্যে বেইলি আর ম্যাকগাওয়ানের থেকে কুলি চায় কিন্তু ‘তারা জানায় তাদের কোনও কুলি নেই’। তারা থারিয়ানকে জানায় এই মৃত্যুটা আত্মহত্যা ‘য়েসু জিভ কেটে আত্মহত্যা করেছে।’

য়েসুর দেহটি মাটির তলা থেকে তোলা হলে সেটি প্রায় অবিকৃত আছে দেখা যায়, যদিও মাথার খুলি আর চামড়া এবং বাঁদিকের বাইসেপ আর ডান দিকের পায়ের ডিম খুলে গেছে। হাসপাতালে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানায় চামড়া না থাকায় দেহের ওপরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া মুশকিল। মারা যাওয়ার কারন বুকের শিরা ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ, I told the Inspector that the death must have been due to violence A severe and continued beating by a rattan might be a possible cause of death. It might cause death by shock। মালায়লম ভাষায় লেখা তদন্ত সমীক্ষাটি বেইলি আর ম্যাকগাওয়ানকে অনুবাদ করে শোনানো হয়। তারা কাগজটিতে স্বাক্ষর করার পরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সকালের খাওয়ারের জন্যে চলে যায় (পরে বেইলি আর ম্যাকগাওয়ান জানায় মালায়লম ভাষায় লেখা তদন্ত সমীক্ষা তাদের অনুবাদ করে শোনানো হয় নি)। ময়না তদন্তের সমীক্ষা দেখা আরেক ভারতীয় চিকিৎসক জানায় একজন স্বাস্থ্যবান মানুষের বুকের শিরা ছিঁড়ে মৃত্যু হয়েছে ‘যতদূরসম্ভব তার ওপর চরম অত্যাচার করার ফলে’। ২৪ এপ্রিল বেইলি আর ম্যাকগাওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়।

ছজন ইওরোপিয় এবং তিনজন ভারতীয় জুরির এজলাসে বেইলি আর ম্যাকগাওয়ানের মামলা চলতে থাকে। শ্রমিক, পুলিশ, স্থানীয় আমলা, চিকিৎসক এবং অন্যান্য নানান মানুষের সাক্ষ্য নেওয়া হয় – প্রত্যেকেই য়েসুর ওপর অমানুষিক অত্যাচারের বিশদ বিবরণ দেয়। স্থানীয় বাগিচা মালিকেরা অভিযুক্তদের পক্ষে মামলা লড়ার ১০০০ পাউন্ড সাহায্য তহবিল তৈরি করে। দুজন অভিযুক্তের দুটি বক্তব্য নির্ভর করে তাদের উকিল মামলা সাজায়। বেইলি জানান ঘটনাটা ঘটার সময় তার জ্বর হয়েছিল, সে য়েসুর দেহে লাথি, চাপড় বা অন্যান্য আঘাত করে নি। ম্যাকগাওয়ান জানায়, যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, তার জন্যে রাঁধুনিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন য়েসুকে গাছে বেঁধে রাখতে। ৩০ মিনিট পরামর্শ করে জুরিরা অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ থেকে তাদের মুক্তি দেন কিন্তু ‘গভীরভাবে আঘাত করা’ এবং আঘাত করে স্বীকারোক্তি নেওয়ার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত করেন। প্রধান বিচারপতি বেইলিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ম্যাকগাওয়ানকে চার বছরের বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। মালিকের নির্দেশ প্রতিপালন করা সোনায়া পিল্লাইকে ছমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ কার্জন মন্তব্য করেন, — it is one of those cases where what is called ‘grievous hurt’ in India bears the more uncompromising title of ‘murder’ at home (Curzon to Hamilton, August 28, 1901, BL, IOR, MSS Eur/F111/160 (1901))।

বেইলিকে প্রথমে মাদ্রাজ কারাগার পরে কোয়েম্বাটোরের কেন্দ্রিয় জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। বেইলি এবং তার পরিবার সরকারের কাছে মুক্তির এবং তাকে লন্ডনে পাঠানোর দাবি করতে থাকে (BL, IOR, L/PJ/6/601, File 995)। বেইলি দাবি করে প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা বাড়িয়েচড়িয়ে মিথ্যা প্রমান দাখিল করেছে। সে কোনওভাবেই এই পিটুনি কাণ্ডের অংশ ছিল না। তার সিদ্ধান্ত য়েসুর মৃত্যু নিজের দোষেই ঘটেছে, য়েসু বাঁধন ছিঁড়ে পালানোর চেষ্টায় ‘প্রাথমিকভাবে রোগের কারনে তার বুকের ধমনী এবং অন্যান্য শিরা ছিঁড়ে’ যায়। বেইলি আরও আবেদন করে বলে চিকিৎসা শাস্ত্রে য়েসুর মৃত্যুর কোনও কারন এবং প্রমান দেখানো যায় নি ‘য়েসু মারা যায় যেদিন তাকে মারা হয়।’ অশিক্ষিত, কুসংস্কারগ্রস্ত পাহাড়িরা তাদের বদ্ধ সংস্কার দিয়ে কার্য কারন সম্পর্ককে স্থাপন করেছে’ (Baillie’s petition to the Governor-General of Madras of February 5, 1902, BL, IOR, 108 L/PJ/6/601, File 995)। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন