যমের দুয়ারে কাঁটা দিতে রীতিমত ঘটা করে তার অ্যাসিস্ট্যান্ট চিত্রগুপ্তের পুজো হুগলির আরামবাগের বাতানাল গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে এখানকার কায়স্থ সমাজ এই পুজো অর্চনা করে আসছেন ভাই দ্বিতীয়ার দিনে। এদিন গ্রামের বউদের বাপের বাড়ি যাওয়া বারণ। তাদের ভাইয়েরা ফোটা নিতে আসেন বাতানল গ্রামে। অপরদিকে গ্রামের বিবাহিত মহিলারা গ্রামে ফিরে আসেন পুজো উপলক্ষে এখানেই তারা ভাইয়েদের ফোঁটা দেন। পুরোহিত চিত্রগুপ্তের কপালে ফোঁটা দেওয়ার পরই শুরু হয় ভাই ফোঁটা। এই রীতি চলে আসছে একেবারে শুরু থেকে। আগে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে চিত্রগুপ্ত পুজোর রেওয়াজ থাকলেও বর্তমানে এই রাজ্যে একমাত্র এই বাতানলের পুজো ছাড়া আর কোন পুজো অনুষ্ঠানের খবর পাওয়া যায়নি।
যেহেতু চিত্রগুপ্ত যমরাজের অফিসে মানুষের পাপ পুণ্যের হিসেব রাখেন তাই তাকে খুশি করতে পারলে মানুষকে আর নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না, এই বিশ্বাসে কাতারে কাতারে সাধারন মানুষ অংশগ্রহণ করতে আসেন এই পুজোয়। এই দেবতাকে বাণিজ্যের শ্রী বৃদ্ধির আশীর্বাদ কর্তা হিসেবেও মনে করেন অনেকে। তাই এই উপলক্ষে খাতা কলমের পূজো করা হয়।
স্কন্দ পুরাণে উল্লেখ আছে একবার ব্রহ্মার সামনে গিয়ে যমরাজ তার কাজ সামলানোর জন্য একজন ধার্মিক ন্যায়পরায়ণ, বুদ্ধিমান, বেদ জ্ঞান সম্পন্ন এবং লেখায় পটু সহকর্মী চেয়ে আবেদন করেন। এরপর ব্রহ্মা ধ্যানমগ্ন হলেন। ধ্যানের শেষে চোখ খুলে তিনি দেখলেন সামনে খাতা কলম হাতে একজন দাঁড়িয়ে। তিনি তার নাম দিলেন চিত্রগুপ্ত। অল্প কালের মধ্যে যমরাজের সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মার খুব প্রিয় পাত্র হয়ে উঠলেন চিত্রগুপ্ত। পরে ঋষি সুশর্মার কন্যা ইরাবতীর সঙ্গে এবং মনুর কন্যা দক্ষিণার সঙ্গে তার বিবাহ দেন ব্রহ্মা।
এই পুজোর উদ্যোক্তা বাতানাল গ্রামের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ সরকারের বক্তব্য, “আমার পিতামহ ভূপাল চন্দ্র সরকার ১১৫ বছর আগে এই পুজোর সূচনা করেন। আমরা কায়স্থ সম্প্রদায়ের মানুষ চিত্রগুপ্তদেব কে আমাদের প্রপিতামহ বা পূর্বপুরুষ বলে মনে করি। বর্তমানে এই গ্রামের কায়স্থ পাড়ার একুশ ঘর বাসিন্দা মিলে এই পুজো করা হয়। আমরা কার্য্য উপলক্ষে কলকাতা এবং বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকলেও পুজোর সময় এখানে এসে একসঙ্গে মিলিত হই। এই উপলক্ষে বিচিত্রানুষ্ঠান, ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন রকম খেলাধুলা ইত্যাদির আয়োজন করা হয়। কোভিড পরিস্থিতির কারণে বিগত দুই বছর অনাড়ম্বর ভাবে পুজো সারতে হলেও বর্তমান বছরে আমরা সবাই মিলে খুব আনন্দ করছি।”
নতুন তথ্য, জেনে খুব ভালো লাগলো
দেবাশিস স্যারের নিত্য নতুন তথ্য আমাদের মতো পাঠক কুল সমৃদ্ধ করে।
তার কলমকে কুর্নিশ 🙏
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি
চমৎকার
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
এত নিকটে এ রকম একটা পূজো হয় জানা ছিল না। সম্পূর্ণ একটি নতুন তথ্য জেনে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ।
পড়ার জন্য এবং মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
বাঃ