শুক্রবার | ১লা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:২২
Logo
এই মুহূর্তে ::
মীনাক্ষী সেন-এর বড়োগল্প ‘একটি ভূতের বাড়ির আজগুবি গল্প’ অজ্ঞানতার আঁধার পেরিয়ে আলোর উৎসব : সন্দীপন বিশ্বাস রায় ভিলা ও বিশ্বরূপ মহারাজ (শেষ পর্ব) : কৌশিক মজুমদার ভূত চতুর্দশী — নেত্যকালীর মিরর ইমেজ ও প্রেতলোকের চোদ্দকাহন : প্রলয় চক্রবর্তী কালীপূজার আগের দিনটি চোদ্দবাতি জ্বালানো ও চোদ্দশাক খাওয়ার জন্যে নির্দিষ্ট : অসিত দাস পেঁয়াজের ঝাঁজে গৃহস্থের চোখে জল, সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়বে রাজ্য : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ধনং দেহী ধনতেরাস অ্যান্ড পুরুষালী গয়না : রিঙ্কি সামন্ত এ উৎসবের লগনে : নন্দিনী অধিকারী রায় ভিলা ও বিশ্বরূপ মহারাজ (দ্বিতীয় পর্ব) : কৌশিক মজুমদার কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (শেষ পর্ব) : শংকর ধনতেরাস এখন বাঙালিরও : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ডাক্তারদের আন্দোলন উপনির্বাচনে ইস্যু নয়, জয় নিয়ে শাসকদল নিশ্চিত : তপন মল্লিক চৌধুরী রায় ভিলা ও বিশ্বরূপ মহারাজ (প্রথম পর্ব) : কৌশিক মজুমদার কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (তৃতীয় পর্ব) : শংকর সেকালের প্রেতচর্চা — শিক্ষিত জনের কাছে থিওসফি : প্রলয় চক্রবর্তী মা কালী যখন মহালক্ষ্মী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (দ্বিতীয় পর্ব) : শংকর মহাকাব্যে ভেড়ার উল্লেখ : অসিত দাস কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (প্রথম পর্ব) : শংকর রমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ও একাদশী পালনের নিয়মাবলী : রিঙ্কি সামন্ত আশাপূর্ণা দেবী-র ছোটগল্প ‘চাবি’ একে দানা-য় রক্ষা নেই তারওপর ডিভিসি-র ৪২ হাজার কিউসেক জল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (নবম পর্ব) : বিজয়া দেব চেতনার সমস্যা, সামাজিক অবকাঠামো এবং বলপ্রয়োগ : এরিক ফ্রম, অনুবাদ ফাতিন ইশরাক বারবার ভিলেন সেই বঙ্গোপসাগর : তপন মল্লিক চৌধুরী নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রাখাইন পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ‘দানা’ থেকে ভয় পাবেন না, সতর্ক থাকুন, মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুত : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সই বা বন্ধুত্ব স্থাপনের উৎসব সয়লা : রিঙ্কি সামন্ত প্রথম পাঠ — “নিশিপালনের প্রহরে” নিয়ে, দুয়েকটি কথা : সোনালি চন্দ বৃহন্নলার অন্তরসত্তা : নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

খাদ্য রাজনীতি ও সবুজ বিপ্লব (শেষ পর্ব) : অনুপম পাল

অনুপম পাল / ১৪১ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৪

কৃত্রিম ভাবে খাদ্যপ্রাণে সমৃদ্ধ খাদ্য (বায়োফর্টিফিকেশন)

এদেশে খাদ্য হিসেবে জিনশস্য চালু করতে অনেক বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে খাদ্যপ্রাণে সমৃদ্ধ অস্বাস্থ্যকর লোহা সমৃদ্ধ জিন শস্য চাল, ভিটামিন এ সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইস ইত্যাদি চালু করতে গিয়ে গোটা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। একমাত্র অখাদ্য ফসল হিসেবে জিনশস্য তুলোর চাষ ভারতে সর্বাধিক হয়। কিন্ত ওই তুলো বীজের তেল বনস্পতি তৈরীতে ব্যবহার হয়। এবার ভারতে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যার দোহাই দিয়ে এবার নতুন চাল। সব কিছুর মূলে রয়েছে পরোক্ষ ভাবে সেই বিশ্ব বাণিজ্য ও AKI চুক্তি (ভারত মার্কিন কৃষি চুক্তি-২০০৫)। এর মধ্যে ভিটামিন এ’র অভাবে রাতকানা রোগ, লোহার অভাবে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কম হওয়ার জন্য রক্তাপ্লতা ও অনান্য অনুখাদ্য ও প্রোটিনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। অপুষ্টি দুরীকরনের জন্য বিশেষ কিছু ফসলে প্রথাগত প্রজনন, বাইরের থেকে খাবারে লোহা ও জিঙ্ক মৌলের লবন মিশিয়ে ও জিন পরিবর্তনের দ্বারা ফসলের “পুষ্টিগুণ” বাড়িয়ে দেওয়া হবে। সেই ভাবে তৈরী “পুষ্টিকর ফসল” খেয়ে ভারতবাসীর অপুষ্টি দূর করা যাবে বলে দাবী করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে খাবারে কৃত্রিম ভাবে খাদ্যপ্রান প্রবেশ করালেই তা দেহে শোষিত হয় না। অনেক জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া ও জৈব রাসায়নিকের উপস্থিতির উপর নির্ভর করে। যেমন ডাল ভাতের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ডালের লোহা সহজেই শোষিত হয়। লোহার পাত্রে রান্না করাও স্বাস্থ্যকর। ভিটামিন এ পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যায় সহজলভ্য সজনে শাক, কচু শাক, কুমড়ো, লালনটে, ছোলা শাক, আম, পেঁপে, গাব ইত্যাদিতে। সহজলভ্য ও নিরাপদ খাবারের উৎস থাকতে কেন আমরা কৃত্রিম ভাবে খাদ্যপ্রাণে সমৃদ্ধ খাবার খাব?

যাঁদের মনে প্রশ্ন নেই তাঁদের কাছে নিঃসন্দেহে উদ্যোগ ভালো, শুনতেও ভালো লাগবে। এমনটা মনে হচ্ছে দেশজ ফসলে কোন পুষ্টিগুণ নেই, মানে অপুষ্টিকর। ওই গবেষণার জন্য প্রচুর অর্থের যোগান আসবে, নতুন গবেষণাগারে, নতুন যন্ত্র বসবে, প্রজেক্ট ও সেমিনার হবে। ওই সব ফসলের বীজের একটা বাজার হবে। বিশেষ কিছু জাতও তৈরী করা হয়েছে। কৃষককে প্রতি বছর বীজ কিনতে হবে। সেই সঙ্গে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের বাজার হবে। অথচ ওই টাকায় দেশের বহু ফসলের বহু জাতের পুষ্টিগুন যাচাই করা সম্ভব। হায়দ্রাবাদের ন্যাশনাল ইন্সটিউট অফ নিউট্রিশন মোটামুটি ভাবে অনেক ফসলের পুষ্টিগুন যাচাই করেছে, কিন্ত আলাদা ভাবে ফসলের বিভিন্ন জাতের পুষ্টিগুন নিরুপন এখনো করেনি। বিভিন্ন জাতে পুষ্টির হেরফের হওয়াটা স্বাভাবিক-কোনটায় বেশী কোনটায় কম। কৃত্রিম ভাবে যে পরিমান লোহা, জিঙ্কের পরিমান চালে ও গমে, বাড়ানো হচ্ছে তার থেকে বেশী পরিমান আছে দেশজ ধানে ও গমে এবং সেটা প্রাকৃতিক, শরীরে বিরুপ প্রতিক্রিয়াও হবে না। বিটা ক্যারোটিন-ভিটামিনএ’র আগের রুপ আছে সব রঙীন ফসল, কালো ও লাল চালে। ক্যালসিয়াম, ফাইবার ও খনিজ পদার্থ ভরপুর আছে মিলেটে, ১০০ গ্রাম রাগীতে ৩৪৪ মিগ্রা ক্যালশিয়াম আছে এবং শরীরে সহজেই শোষিত হবে। সুতরাং কৃত্রিম ভাবে পুষ্টি ভাবে না বাড়িয়ে দেশজ ফসল খেতে উৎসাহ দেওয়াই তো বৈজ্ঞানিক, বাস্তব সম্মত। এর ফলে ফসল বৈচিত্র্যও সংরক্ষনও হবে। খরচ কম হলেও রাষ্ট্র ওই পথে হাঁটতে চায় না।

শেষের কথা

১৯৯০ দশকে বিশ্ব বানিজ্য চুক্তির পর রাষ্ট্রের কল্যানকর ভুমিকা কমে গিয়েছে। রাসায়নিক কৃষি ব্যবস্থাটা এমনি যে যে চাষের খরচ বেড়েই চলেছে। কমানোর জন্য কোন আন্তরিক উদ্যোগ নেই। অথচ দেশের অন্তত ৬০ ভাগ মানুষের জীবন ও জীবিকা কৃষি ও পশুপালন। ভারী ধাতু যুক্ত বিষাক্ত রাসায়নিক সার, আগাছানাশক, কীটনাশক জমি ও ফসলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। সার ও অনান্য কৃষি পন্যের দাম ক্রমবর্ধমান। রাসায়নিক কৃষির উৎপাদন ব্যয় বেশী। পুরো কৃষি ব্যবস্থা এখন করপোরেটের নিয়ন্ত্রনে। কৃষকরা কৃষিকাজ ছেড়ে শহরে গিয়ে মজুর খাটছে। পশ্চিমবাংলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কৃষকদের নিয়ে বাস যাচ্ছে দিল্লী ও চেন্নাইএ। কৃষকরা জনমজুরে পরিনত হচ্ছে। বর্তমান উন্নয়ন ধারনায় রাষ্ট্র ব্যবস্থা মনে করে শহরের উন্নয়ন হলেই দেশের উন্নয়ন। অন্য দিকে দেশে এখনো অনেক ধরনের উচ্চ ফলনশীল দেশজ ফসল আছে। ধান, গম, মিলেট ও শাকসবজি ইত্যাদি। সেই নিয়ে কৃষকদের সচেতন করার বিষয়ে রাষ্ট্র ততটা আগ্রহ প্রকাশ করছে না। রয়েছে নানা বাধ্যবাধকতা। জৈব কৃষি, প্রাকৃতিক কৃষি, মিশ্র ফসল, ঝুম কৃষির মাধ্যমে পর্যাপ্ত বিষমুক্ত খাবার উৎপাদন করা সম্ভব এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। বিষমুক্ত খাবার খেয়ে চিকিৎসা ব্যয়ও কমবে। উল্লেখ্য আজ চিকিৎসা ব্যয় গ্রামের মানুষেরও বেড়েছে। এর মধ্যে ক্যানসার অন্যতম। দরকার এখন পাশ্চাত্ত্য চশমা ত্যাগ করে দেশজ ফসল ও বহু পরীক্ষিত দেশজ কৃষি ব্যবস্থার বিজ্ঞানকে বোঝা এবং আন্তরিক দরদ। সরকার এখন প্রাকৃতিক কৃষি ও ফসল বৈচিত্র্যের কথা বলছে, রাসায়নিক সার ব্যবহার কমাতে বলছে। বড় কঠিন কাজ। আশার কথা অনেক কৃষকই জৈব কৃষিতে ঝুঁকেছেন। শংসিত জৈব ফসল বড় বাজারে যেমন বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে সেই ভাবে মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠছেন। অন লাইনে জৈব খাবার বিক্রি হচ্ছে। অনেক জায়গায় রাষ্ট্রের উদ্যোগকে ছাপিয়ে গিয়েছে কৃষক ও কৃষক সংগঠনের উদ্যোগ। কৃষি বিপনন দপ্তর আগের থেকে সক্রিয় হয়েছে। বহু জেলাতেও জৈব কৃষি পন্য বিক্রি হচ্ছে ছোট ছোট বিপনীর মাধ্যমে যেটা ১০ বছর আগেও ছিল না।

তথ্যসূত্র:

১। Goutam Pingle, 2017, Paddy Yields in Pre-industrial South India, Economic & Political Weekly, April 22, 2017 vol lII, no 16.

২। John H. Perkins, 1977, Geopolitics and the Green Revolution, Oxford University Press, পৃ 153

Madhusri Mukherjee, 2011, Churchill’s Secret War, The British Empire and the Ravaging of India during World War II, Basic Books

৩। Richa Kuma, 2016, Putting wheat in its Place, or, why the Green Revolution wasn’t quite what it’s made out to be-, Oct, 31, 2016, theWire.in

৪। Uma Purushothaman, 2014, US food aid and food assistance programmes, 1954-2007, URI: http://hdl.handle.net/10603/18736, School of International Studies, JNU

৫। Vandana Shiva, 1991, The Violence of the Green Revolution, Navdanya, New Delhi

৬। অনুপম পাল, ২০২২, কৃষি ভাবনা ও দূর্ভাবনা, কলাবতী মুদ্রা, কলকাতা

৭। বিশ্বেন্দু নন্দ, ২০১৯, পলাশী পূর্বের বাংলার বানিজ্য, কলাবতী মুদ্রা, কলকাতা

৮। বিশ্বেন্দু নন্দ, ২০১৯, পলাশী পূর্বের বাংলার বানিজ্য, কলাবতী মুদ্রা, কলকাতা

৯। দেবল দেব, ২০০০, লুঠ হয়ে যায় স্বদেশভুমি, উৎস মানুষ, কলকাতা

১০। দেবত্র দে, ২০২১, ঔপনিবেশিক রেল- লুন্ঠনের ইতিহাস, ট্রেনিক প্রকাশন, নৈহাটি

১১। দেবাশীষ লাহা, ২০২৩, অমৃতস্য পুত্রা:, সুজন পাবলিকেশন, শলপ, হাওড়া

লেখক প্রাক্তন কৃষি অধিকারিক, জৈবকৃষি ও দেশজ ফসলের গবেষক ও লেখক, লেখকের মেল; anupampaul99@gmail.com

আসন্ন কলকাতা বই মেলায় প্রকাশিতব্য লেখকের কৃষি ভাবনা ও দুর্ভাবনা গ্রন্থের চতুর্থ সংষ্করনের সার সংক্ষেপ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন