ভাবাদিঘির জট এখনও কাটেনি। আটকে আছে রেলের কাজ। অথচ তারকেশ্বর — বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে গোঘাট পর্যন্ত। তারকেশ্বর থেকে রেল চলাচল শুরু হয়েছে অনেক দিন আগেই। অপরদিকে বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি রেলের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। ময়নাপুর ও বড় গোপীনাথপুর হয়ে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেল স্টেশন ও লাইন পাতার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। রেল সূত্রে জানা গেছে নতুন বছরের গোড়ার দিকে বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি রেল চলাচল শুরু হবে। এজন্য প্রস্তুতি চলছে। ভাবাদিঘির জট কাটলেই গোঘাটের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হবে। তখনই সম্পূর্ণ হবে তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ।
প্রসঙ্গত, তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেলপথ সরাসরি কবে চলবে তার নিশ্চয়তা এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নতুন বছরের গোড়ার দিকে মানুষজন পেতে পারে ঠাকুরের জন্মস্থান কামারপুকুরের আগেই সারদা মায়ের জন্মস্থান জয়রামবাটিতে রেল পরিষেবা। যেভাবে রেলপথ তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে চলছে তাতে আগামী ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি, কামারপুকুর, তারকেশ্বর সরাসরি রেলপথ চালু হয়ে যাবে বলেই ধারণা। এই মুহূর্তে ভাবাদিঘির অংশের রেল লাইনের কাজ আটকে আছে। অবশ্য তারকেশ্বর থেকে গোঘাট পর্যন্ত চলছে ট্রেন। গোঘাট থেকে কামারপুকুর ঢোকার আগে ভাবাদিঘি পর্যন্ত ট্রেন লাইনের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে, কিন্তু ভাবাদিঘির সামান্য অংশের কাজের জন্য সরাসরি গোঘাট থেকে কামারপুকুর রেলপথ পাতার কাজ এখনো আটকে। রেল সূত্রে খবর, তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেলপথের বাকি কাজ দ্রুত শেষ হয়ে ট্রেন চলাচল করবে। তার আগেই বিষ্ণুপুর, ময়নাপুর, বড় গোপীনাথপুর হয়ে জয়রামবাটি পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে ইতিমধ্যে জোরকদমে জয়রামবাটি রেল স্টেশনের কাজ চলছে। বড় গোপীনাথপুরের রেল স্টেশন তৈরি ও স্লিপার পাতার কাজ চলছে । এলাকার মানুষ খুশি এই কাজে। উল্লেখ্য, জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরের আদলে রেল স্টেশনের ভবন তৈরি হয়ে গেছে। বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি আসার ক্ষেত্রে বড় গোপীনাথপুর রেলস্টেশন এলাকায় স্লিপার পাতার কাজ চলছে। বড় গোপীনাথপুর স্টেশন এলাকায় প্ল্যাটফর্মের ছাউনি ও শেড, ফুট ওভারব্রিজ তৈরির কাজ চলছে। সবচেয়ে বড় বিষয় এই স্টেশনে বা এই পথে এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়ানোর মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। কামারপুকুর রেল স্টেশন এবং টিকিট কাউন্টার, রেল স্টেশনের প্রবেশ গেট আগেই তৈরি হয়ে গেছে। অথচ কামারপুকুর থেকে জয়রামবাটি ও গোঘাট দুদিকের কাজ সেইভাবে শুরু হয়নি।
এদিকে কামারপুকুর রেল স্টেশনে ইতিমধ্যে ইলেকট্রিক খুঁটি নামানো হয়েছে।
কামারপুকুর থেকে ভাবাদিঘির আগে পর্যন্ত ইলেকট্রিকের কাজও সেরে ফেলতে চাইছে রেল কর্তৃপক্ষ। ভাবাদিঘির অংশের কাজ দ্রুত শেষ করে জয়রামবাটির সাথেই একসঙ্গে সরাসরি এই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ ।
প্রসঙ্গত, রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের টাইলস, পাথর ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে। ট্র্যাকের কাজ চলছে। এছাড়া ওভার ব্রিজের কাজও শুরু হয়েছে। বড় গোপীনাথপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টার ভবনের কাজও চলছে। এখানে তিনটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। কামারপুকুর, জয়রামবাটি ও গোপীনাথপুর বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় পদস্থ আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করছেন।
এদিকে কামারপুকুর স্টেশন আগেই মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে। এখানে প্ল্যাটফর্মের শেডও তৈরি, টিকিট কাউন্টার আগেই তৈরি হয়ে গেছে।
অপরদিকে ময়নাপুর থেকে বড় গোপীনাথপুরের কাজও অনেকটা এগিয়ে গেছে। রেল সূত্রে খবর, ভাবাদিঘির জট রয়ে গেলেও বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত ট্রেন চলাচল খুব শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে।
এদিকে আবার রেল সূত্রে খবর জয়রামবাটি এবং কামারপুকুর এই দুটি জায়গাতেই দুটি স্টেশনে একযোগে ট্রেন চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে বিষ্ণুপুর থেকে বড় গোপীনাথপুর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করা হতে পারে।