রবিবার | ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৪৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
গানের ভিতর দিয়ে দেখা পুজোর ভুবনখানি : সন্দীপন বিশ্বাস নবদুর্গা নবরাত্রি : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী সাদা কালোয় কুমোরটুলি : বিজয় চৌধুরী জেল খাটাদের পুজো, মাইক আসছে মাইক, ছুটছে গ্রাম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কাশ্মীর নির্বাচনে বিপুল সাড়ার নেপথ্যে কি ৩৭০ বিলোপের জবাব : তপন মল্লিক চৌধুরী তর্পণের তাৎপর্য : সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় মহালয়ার চন্ডীপাঠ মন্ত্র, মহিষাসুরমর্দিনী স্তোত্র : বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র পেজফোর-এর শারদোৎসব বিশেষ সংখ্যা ২০২৪ সুকুমার রায় মানেই শৈশব ও কৈশোর : রিঙ্কি সামন্ত অমৃতা প্রীতম-এর অনুবাদ গল্প ‘বুনোফুল’ মিল অমিলের মানিক ও মার্কেজ : রাজু আলাউদ্দিন কলকাতা ছিল একসময় ভেড়াদের শহর : অসিত দাস নিরাপদর পদযাত্রা ও শিমূলগাছ : বিজয়া দেব তোলা বন্দ্যো মা : নন্দিনী অধিকারী বাংলার নবজাগরণ ও মুসলমান সমাজ : দেবাশিস শেঠ সৌরভ হোসেন-এর ছোটগল্প ‘সালাম’ বঙ্গের শক্তি-পূজা : সুখেন্দু হীরা পুজোর পরিবর্তন, পরিবর্তনের পুজো : সন্দীপন বিশ্বাস পিতৃপক্ষের মধ্যে পালিত একাদশী — ইন্দিরা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত অরণ্যের অন্তরালে তাম্বদি সূরলা : নন্দিনী অধিকারী ভারতীয় চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ হীরালাল সেন : রিঙ্কি সামন্ত বিদ্যাসাগরের অন্তরালে ঈশ্বরচন্দ্র, পূর্ব পুরুষের ভিটে আজও অবহেলিত : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব সুধীর চক্রবর্তী স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার : দীপাঞ্জন দে কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে দুর্গা রূপে আরাধনা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাঙালির নিজস্ব দুর্গা : শৌনক দত্ত সে নারী বিচিত্র বেশে মৃদু হেসে খুলিয়াছে দ্বার : দিলীপ মজুমদার শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়-এর ছোটগল্প ‘প্রাতঃভ্রমণ’ বন্যায় পুনর্জীবন বেহুলার : রিঙ্কি সামন্ত গরানহাটা কি ছিল ভেড়ার হাট : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পিতৃপক্ষের সমাপ্তি মাতৃপক্ষের শুভ সূচনা-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

আবার সেই হাথরস! এবার স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলেবাবা : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ২১৯ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪

তিনি ভোলেবাবা। তাঁর মহিমা অপার। এই বাবাজী রাম রহিম, সদগুরুদের মতো স্বঘোষিত ধর্মগুরু। তিনি দাবি করেন, তিনি ভগবান হরির শিষ্য এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। গত ২রা জুলাই উত্তরপ্রদেশের হাতরসের ফুলরাই গ্রামে ‘নারায়ণ সাকার হরি’ ওরফে ‘ভোলেবাবা’ এক সৎসঙ্গের আয়োজন করেন। যদিও উদ্যোক্তারা ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতের অনুমতি চেয়েছিলেন কিন্তু সেখানে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। একটি তাঁবুতে অত মানুষ, তার উপর তাঁবুর ভিতরের আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং একটি মাত্র দরজা। ফলে ‘ভোলেবাবা’র পায়ের ধুলো কুড়োতে গিয়ে পদপিষ্ট এবং শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান ১২৫ জন ভক্ত। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা যাচ্ছে। একদিকে যখন মৃত্যুমিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, সেখানে ‘ভোলেবাবা’ পগারপার।

‘ভোলেবাবা’র অপার মহিমায় মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুমিছিলের এই ঘটনা কিন্তু প্রথম নয়।একযুগ আগেও ভোলেবাবার ধর্মীয়সভাতে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। ২০২২ সালে, করোনাকালে উত্তরপ্রদেশের ফারুকাবাদে তিনি একটি সৎসঙ্গের আয়োজন করেন। যেখানে পুলিশ প্রশাসন মাত্র ৫০ জনের অনুমোদন দিয়েছিল কিন্তু, করোনা বিধি ভেঙে সেখানে ৫০ হাজার ভক্তের সমাগম হয়েছিল। তবে এও জানা যাচ্ছে যে মৃত মেয়েকে বাঁচিয়ে তোলার ভেল্কি দেখিয়ে জেলও খেটেছেন এই ভোলেবাবা! এমন অনেক কীর্তি আছে তার। ২৩ বছর আগে আগ্রা থেকে পুলিশ নারায়ণ সাকার হরিকে গ্রেফতার করে ভক্তদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে। ভোলেবাবার দত্তক কন্যার ক্যানসার হওয়ায় তাঁর চ্যালাদের দাবি ছিল বাবা নিজের মেয়েকে জাদুবলে বাঁচিয়ে তুলবেন। সেই মেয়ে একদিন অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়। দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে গেলে, অশান্তি শুরু করে ভোলেবাবার সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা দেহ সৎকার করতে দেবে না। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, পুলিশ লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। যদিও ভোলেবাবা ও তাঁর ৬ সঙ্গীরা গ্রেফতার হয়। কিন্তু আদালতে প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় ভোলেবাবা।

এই ভোলেবাবার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, তিনি অন্য বাবাজীদের মতো গেরুয়া বা লাল, হলুদ পোশাক পরেন না। বদলে সাদা স্যুট এবং টাই, কখনও কখনও সাদা কুর্তা-পাজামা পরেন। ধর্মোপদেশ দেওয়ার সময় কখনও তাঁর স্ত্রীকেও সঙ্গে দেখা যায়। আর বাবাজির চ্যালারা গোলাপী শার্ট, প্যান্ট ও সাদা টুপি পরে থাকে। তবে কোনো সাংবাদিকের সৎসঙ্গে প্রবেশাধিকার নেই। বাবাজি সম্পর্কে কোনও ব্যক্তিগত বিবরণও জানার উপায় নেই। কারণ, এই ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার যুগেও তিনি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকেন। কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাঁর কোনও অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট নেই। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে হাথরসে যে পদপিষ্ট, শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তা সূরজ পাল ওরফে নারায়ণ সাকার হরির ধর্মীয় সভায় যোগ দিতে এসেই ঘটেছে। যেখানে ‘ভোলেবাবা’র জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও আড়াই লক্ষ ভক্তদের জন্য কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। না ছিল সেখানে কোনো মেডিক্যাল ব্যবস্থা এমনকি এই প্রবল গ্রীষ্মের আর্দ আবহাওয়ায় ছিল না কোনও ফ্যানের ব্যবস্থা। শুধু কি তাই, লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য ছিল না কোনো পাণীয় জলও। অথচ ‘বাবা’-র জন্য ছিল সবরকম ব্যবস্থা। সেই কারণেই দুর্ঘটনার মুহূর্তে তিনি ওই জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পেরেছিলেন।

এখন প্রশ্ন, আয়োজকেরা পুলিশের থেকে ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতের অনুমতি পেয়েছিলেন কিন্তু সেখানে জমায়েত হয়েছিল আড়াই লাখের কাছাকাছি ভক্তের। যদি ধরেও নেওয়া যায় আয়োজকেরা এত মানুষ আসতে পারে তা ভাবতে পারেন নি অথবা তারা জেনে বুঝেই চেপে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাজারে হাজারে মানুষ যখন ধর্মীয় সভার দিকে এগোচ্ছিলেন তখন কী পুলিশ সেই সংখ্যা আন্দাজ করতে পারেনি, কোনো পুলিশ কী সেখানে বা ধারে কাছেও ছিল না? জানা যাচ্ছে ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতে ৭০ জন পুলিশের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু পুলিশ কী জানতে বা বুঝতে পারলো না একটি তাঁবুতে লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত কিন্তু নেই কোনো মেডিকেল ব্যবস্থা, প্রচণ্ড গরম এবং বদ্ধ পরিবেশে নেই কোনো পাখা এমনকি পানীয় জল? অতিরিক্ত ভীড় আর চূড়ান্ত অব্যবস্থা থেকে যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়াটাই তো স্বাভাবিক। অথচ যোগী রাজ্যের পুলিশ সেটা ভাবতেই পারেনি। ঘটনার রিপোর্ট জমা করার জন্য ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু তদন্তকারীদের যোগীকেই প্রশ্ন করা উচিত অতিরিক্ত ভিড়ই কি হাথরস দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ? পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের কাছে জবাব চাওয়া দরকার কী ভাবে তাদের চোখ এড়িয়ে লক্ষ লক্ষ ভক্তদের নিয়ে সৎসঙ্গ এই আয়োজন করতে পারলো? নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলে বাবা’ নামের স্বঘোষিত ধর্মগুরু ঘটনার পর গাঢাকা দিয়েও বার্তা দিয়েছেন, তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পরই ওই ঘটনা ঘটেছে এবং দুর্ঘটনার জন্য সমাজবিরোধীরা দায়ী।

যোগী রাজ্যে এই মুহূর্তে নিখোঁজ ‘বিরিঞ্চিবাবা’র অনুগামী ভক্তের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। তাঁর নিজের নিরাপত্তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক বাউন্সারও আছে। নারায়ণ সাকার হরি ওরফে বিশ্ব হরি ওরফে ভোলেবাবা আসলে ছিলেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কনস্টেবল। শেষে ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে হেড কনস্টেবলেও উন্নীত হয়েছিলেন। তাঁর ভক্তরা বলেন, ভোলেবাবা তাঁদের বলতেন তিনি আইবি বা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোতে কাজ করতেন। আচমকা স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে নাম বদল করে ফেলে ধর্মের ধুয়ো আর জ্ঞান বিলিয়ে তিনি লক্ষ লক্ষ ভক্ত-অনুগামীদের ভগবান হয়েছেন, উত্তরোত্তর তাঁর শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। এই মুহূর্তে পুলিশের দৃষ্টি থেকে উধাও হয়ে থাকা ‘ভোলেবাবা’কে কবে পুলিশ গভীর জল থেকে তুলে আনে সেটাই এখন দেখার। যদিও উত্তরপ্রদেশের হাথরস জেলার সিকন্দ্র রাউ থানায় এফআইআর-এ সৎসঙ্গের আয়োজক জগৎগুরু সাকার বিশ্বহরির নাম নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন