মঙ্গলবার | ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৩১
Logo
এই মুহূর্তে ::
‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস মহাকুম্ভ উপলক্ষে এবার যে জনপ্লাবন দেখা যাচ্ছে, তা এককথায় অভূতপূর্ব : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘আখের রস’ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সরস্বতী দিদিমণি’ মহাকুম্ভ থেকে মহাদুর্ঘটনা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুঁজছে মাটির নিরাপত্তা : রিঙ্কি সামন্ত জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার মির্জা নাথানের চোখে বাংলার ভুঁইয়াদের হাতি : মাহবুব আলম ভিয়েতনামের গল্প (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মারক গ্রন্থ : শতাব্দী দাশ

শতাব্দী দাশ / ১৭৯৮ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩

কবি হেমচন্দ্র বাগচী (১৯০৪-১৯৮৬ খ্রি.) আজকের দিনে প্রায় বিস্মৃত একটি নাম। তাঁর স্মরণে একটি বই বের হয়েছে দীপাঞ্জন দে’র সম্পাদনায়। তাঁর নামাঙ্কিত এই স্মারকগ্রন্থের সম্পাদকীয় থেকে জানতে পারলাম যে, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল, কবির পঁয়ত্রিশতম প্রয়াণ দিবসের সময় থেকে এই গ্রন্থ প্রকাশ ভাবনার পর্যায়ে ছিল। পরে ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতি রক্ষা সমিতি’-র প্রথম আনুষ্ঠানিক সভার (৭ জুলাই, ২০২১) পর থেকে এই গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হতে শুরু করে। এই উদ্যোগ সত্যিই খুব প্রয়োজনীয় ছিল। যাঁরা এই মহান উদ্যোগে সামিল হয়েছেন এবং স্মারকগ্রন্থটি প্রকাশ করেছেন তাঁরা অত্যন্ত ধন্যবাদার্হ। কবির ১১৭তম জন্মবার্ষিকীতে প্রকাশিত হয়েছে এই স্মারক গ্রন্থটি।

সাতাশ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই স্মারকগ্রন্থে কবিকে নিয়ে লিখেছেন। এঁরা সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিশিষ্ট মানুষ। বিশেষ যত্ন নিয়ে তাঁরা কবির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। রচনা করেছেন তাঁকে নিয়ে অসামান্য কিছু কবিতা। খগেন্দ্রনাথ দত্তর লেখা থেকে আমরা জানতে পারি যে, বিগত ২০০৩-০৪ সাল জুড়ে কৃষ্ণনগরের বিশিষ্ট মানুষজন এবং কবির পরিবারের কিছু সদস্য মিলে কবির শততম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান খুব সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছিলেন। ঐ উপলক্ষে একটি স্মরণিকাও প্রকাশিত হয়েছিল। সেই স্মরণিকার সূত্র ধরে বর্তমান প্রজন্মের কিছু মানুষ উদ্যোগী হয়েছেন কবি হেমচন্দ্র বাগচীকে নতুন করে আবিষ্কার করার উদ্দেশ্যে। বলা যেতে পারে তাঁদের এই উদ্দেশ্য সর্বাংশে সফল।

প্রথিতযশা সাহিত্যিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর শুভেচ্ছা বার্তা এই স্মারক গ্রন্থের মুকুটের পালকসম। এছাড়া সুশোভন অধিকারীর মতো সুখ্যাত লেখকের অক্ষরশৈলী এই গ্রন্থের সম্পদ। পাশাপাশি পার্শ্বনাথ রায়চৌধুরী, রতনকুমার নাথ, সঞ্জিত দত্ত, দেবাশিস ভৌমিক, মন্দিরা রায়, তপন বাগচী, বাসুদেব মণ্ডল, অপূর্ব দাশ, সতীনাথ ভট্টাচার্য, অমৃতাভ দে, কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, মীনা সাহা, শর্মিষ্ঠা আচার্য-সহ একাধিক লেখকের গুরুত্বপূর্ণ লেখায় বইটি ভরপুর। এই লেখাগুলি ছাড়াও গ্রন্থটিতে রয়েছে দীপঙ্কর দাস, শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ, সুজিত কুমার বিশ্বাস, সর্বাণী দত্তের মতো একাধিক কবির মৌলিক কবিতা।

হেমচন্দ্ৰ বাগচীর প্রথম কাব্যগ্রন্থ দীপান্বিতা প্রকাশিত হয় ১৯২৮ সালে, দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ তীর্থপথে ১৯৩১ সালে, তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ মানসবিরহ ১৯৩৮ সালে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পাদিত বাংলা কাব্যপরিচয় গ্রন্থে তাঁর ‘দুরাশা’ কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৩৯ সালে ‘কবিকিশোর’ নামে তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়। ইতিপূর্বে ১৯২৭ সালে কলকাতার কর্নওয়ালিস স্ট্রিটে বর্তমানে (বিধান সরণী) কবি হেমচন্দ্র বাগচী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রকাশনী সংস্থা, যার নাম ছিল বাগচী এণ্ড সন্স। ঐ সংস্থা থেকে কবি করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শতনরী’ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। কবি, শিক্ষক, অধ্যাপক, প্রকাশক, একাধারে সবকিছুই ছিলেন কবি হেমচন্দ্র বাগচী। কৃষ্ণনগর থেকে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হত ‘বৈশ্বানর’ পত্রিকা। ১৯৪১ সালে এর চারটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর কর্মময় জীবনপঞ্জি স্মারকগ্রন্থে অত্যন্ত যত্নসহকারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পরিশিষ্টে আছে তাঁর পাণ্ডুলিপির একটি পাতা, যা এই গ্রন্থের অমূল্য সম্পদ। পরিশিষ্টের আলোক-চিত্রগুলিও খুব সুন্দর।

কবির ৮২ বছর ব্যাপী জীবনের মধ্যে মাত্র ৪২ বছর তিনি কর্মমুখর ছিলেন। পরবর্তী ৪০ বছর তিনি মানসিক বৈকল্য রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ অবস্থায় কাটিয়েছিলেন। কল্লোল যুগের একজন বিখ্যাত কবি হয়েও আজ তিনি যেন বিস্মৃতির অন্তরালে। কবির অত্যন্ত প্রিয় ছিল প্রকৃতি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত ভাবপ্রবণ ও রোমান্টিক। তাঁর জলাঙ্গী কবিতায় এই রোমান্টিকতা ধরা দিয়েছে। এই স্মারক গ্রন্থের আর একটি সম্পদ হল হেমচন্দ্র বাগচীর লেখা একটি প্রবন্ধের পুনঃপ্রকাশ, যার শিরোনাম প্রাচীন ভারতের নাট্যশিল্প। এটি পাঠ করলে তাঁর পাণ্ডিত্য সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। স্মারক গ্রন্থ থেকেই জানতে পারলাম ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কবি হেমচন্দ্র বাগচীর কাব্য সংগ্রহ (১ম খণ্ড)। কবির পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাও এক্ষেত্রে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।

‘কবি হেমচন্দ্ৰ বাগচী স্মৃতি রক্ষা সমিতি’-র উদ্যোগে প্রকাশিত এই স্মারক গ্রন্থটি তাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেবে বলে মনে হয়। পাঠকরা এই বইটি পড়ে কল্লোল যুগের এই বিখ্যাত কবির জীবন ও সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তবে কবি ও তাঁর পরিবারের আরও কিছু আলোকচিত্র থাকলে আরও ভালো হত। আশা করা যায় ভবিষ্যতে হেমচন্দ্র বাগচীকে নিয়ে চর্চা অব্যাহত থাকবে এবং পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর আরও ব্যাপক মূল্যায়নে প্রবৃত্ত হবে।

উল্লেখ্য, গ্রন্থটি প্রকাশের পর পাঠক মহলে বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়। গ্রন্থটির প্রচারে কবি হেমচন্দ্রের অনুরাগীরা বিশেষ ভূমিকা নেন। তিন মাসের মধ্যেই এই স্মারক গ্রন্থের সবকটি কপি নিঃশেষ হয়ে যায়। এই সংবাদ আমাদের কাছে এক ইতিবাচক বার্তা এনে দেয়। ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মারক গ্রন্থ’-এর দ্বিতীয় সংস্করণ এখনো প্রকাশ পায়নি। তবে একটু স্বস্থির খবর এই যে, ‘কবি হেমচন্দ্ৰ বাগচী স্মৃতি রক্ষা সমিতি’-র সদস্যদের কথা অনুযায়ী অতি শীঘ্র এই গ্রন্থটি পুনরায় প্রকাশ করা হবে। ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মারক গ্রন্থ’টির প্রকাশ বিষয়ে আরেকটি কথাও বলতেই হয়— এটি হল বাংলা সাহিত্যের এক বিস্মৃতপ্রায় কবিকে স্মরণ করার প্রশংসনীয় প্রয়াস। এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কৃষ্ণনগরের ‘কবি হেমচন্দ্ৰ বাগচী স্মৃতি রক্ষা সমিতি’-র সম্পাদক দীপাঞ্জন দে  এবং তাঁদের দলের সকল কবি অনুরাগীকে আমি কুর্ণিশ জানাই।

গ্রন্থ পরিচয়: ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মারক গ্রন্থ’ সম্পাদনা দীপাঞ্জন দে। প্রকাশক ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতি রক্ষা সমিতি’, কৃষ্ণনগর, নদিয়া। ISBN: 978-93-92251-01-6। প্রকাশকাল: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১। যোগাযোগ: ৯৭৩৪০ ৬৭৪৬৬।

লেখক: মুখ্য বিজ্ঞানী, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়।


আপনার মতামত লিখুন :

3 responses to “কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মারক গ্রন্থ : শতাব্দী দাশ”

  1. দীপাঞ্জন দে says:

    বিজ্ঞানী শতাব্দী দাশ ম্যাডামকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

  2. tapan bagchi says:

    গ্রন্থালোচনাটি পড়ছে। বিজ্ঞানী শতাব্দী দাশকে ধন্যবাদ এটি লেখার জন্য। সুন্দর লেখা। বাগচী-পদবিধারী হয়ে আমিও গর্বিত কবি হেমচন্দ্র বাগচীকে নিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন