শনিবার | ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:৪৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
পুজোর পরিবর্তন, পরিবর্তনের পুজো : সন্দীপন বিশ্বাস পিতৃপক্ষের মধ্যে পালিত একাদশী — ইন্দিরা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত অরণ্যের অন্তরালে তাম্বদি সূরলা : নন্দিনী অধিকারী ভারতীয় চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ হীরালাল সেন : রিঙ্কি সামন্ত বিদ্যাসাগরের অন্তরালে ঈশ্বরচন্দ্র, পূর্ব পুরুষের ভিটে আজও অবহেলিত : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব সুধীর চক্রবর্তী স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার : দীপাঞ্জন দে কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে দুর্গা রূপে আরাধনা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাঙালির নিজস্ব দুর্গা : শৌনক দত্ত সে নারী বিচিত্র বেশে মৃদু হেসে খুলিয়াছে দ্বার : দিলীপ মজুমদার শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়-এর ছোটগল্প ‘প্রাতঃভ্রমণ’ বন্যায় পুনর্জীবন বেহুলার : রিঙ্কি সামন্ত গরানহাটা কি ছিল ভেড়ার হাট : অসিত দাস ডিভিসি-র ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ নাজেহাল, দায় কার : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সুধীর চক্রবর্তী মুক্তধারা ভাষণমালা : দীপাঞ্জন দে বোর্হেসের গোলকধাঁধা : অশ্রুকুমার সিকদার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের দুর্গোৎসব : রিঙ্কি সামন্ত মর্ত্যে দুর্গাপূজার সেকাল ও একাল : অসিত দাস বই-বাই : নবনীতা দেব সেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘প্রবাসী’ ম্যান মেড নয় ডিভিসি-র পরিকল্পনা আর রূপায়নে গলদ : তপন মল্লিক চৌধুরী রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে রাখাইনে সেইফ জোন তৈরি করা আবশ্যক : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ফলের নামটি পাকা কলা : রিঙ্কি সামন্ত বই-বাই : নবনীতা দেব সেন হেমচন্দ্র বাগচীর ১২০তম জন্মবর্ষ : দীপাঞ্জন দে নিম্ন চাপের অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত আরামবাগ : দেবাশিস শেঠ আরামবাগে ভয়াবহ বন্যা, দুর্যোগের পদধ্বনি, ক্ষোভ জনমানসে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মেয়েদের ক্ষমতায়নের পক্ষেও আওয়াজ তুলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী কবি দেবদাস আচার্য-র কবিতাজগৎ — বহমান পৃথিবীর জীবনপ্রবাহ, চেতনাপ্রবাহ : অমৃতাভ দে মনসার নাম কেন ঢেলাফেলা : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ কৌশিকী অমাবস্যার-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

তরুণ বাম ব্রিগেডও কেন ব্যর্থ হল হাল ফিরিয়ে লাল ছড়াতে : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ১৬৯ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ১৫ জুন, ২০২৪

বঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিল বামেরা। এর মধ্যে ২৩টি আসনে সিপিএম আর ৭টি আসনে বামফ্রন্টের শরিক দল। দলগুলির মধ্যে তিন জন আরএসপির, দু’জন সিপিআই এবং একজন ফরওয়ার্ড ব্লকের। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় কারণ, ফলাফল জানাচ্ছে এ রাজ্যের সিপিএমের ২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র দু’জন পেরেছেন জামানত রক্ষা করতে। এই দু’জন হলেন মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম এবং দমদমে সুজন চক্রবর্তী। বাদবাকিদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, এ বার রাজ্যে ‘হাল ফেরাতে, লাল ফেরাও’ স্লোগানে ভরসা রেখে মার্কসবাদী ক্যমিউনিস্ট পার্টি একঝাঁক তরুণ মুখকে প্রার্থী করেছিল। কিন্তু লাল ফেরেনি উলটে সব তরূণেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এদের মধ্যে খুব অল্প ভোটে জামানত খুইয়েছেন যাদবপুরে সৃজন ভট্টাচার্য এবং শ্রীরামপুরে দীপ্সিতা ধর। তমলুকের তরুণ প্রার্থী পেশায় আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় এক লক্ষ ভোটও পাননি। ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে লড়াইয়ে নামা তরূণ সিপিএম নেতা প্রতীক-উর রহমানও পারেননি তাঁর জামানত রক্ষা করতে কারণ তিনি পেয়েছেন এক লক্ষেরও কম ভোট। জামানত রক্ষা হয়নি বামফ্রন্টের বাকি দলগুলির সাত প্রার্থীর একজনেরও। উল্লেখ্য, বাম প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম। তিনি পেয়েছেন ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ভোট, শতাংশের হিসাবে ৩৩.৬২ শতাংশ ভোট। সুজন পেয়েছেন ১৯.১১ শতাংশ ভোট। একমাত্র মুর্শিদাবাদ আসনেই সেলিম দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন। আর কোনও আসনে কোনও বাম প্রার্থী দ্বিতীয়ও হতে পারেননি। অধিকাংশ তৃতীয় স্থানে, কেউ কেউ আবার চারেও চলে গিয়েছেন। জামানত খোয়াতে হয়েছে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নিরাপদ সর্দারকেও। সন্দেশখালি পর্বে এই প্রাক্তন বিধায়ক গ্রেফতার হয়ে বেশ কয়েক সপ্তাহ জেলে ছিলেন। ইনি পেয়েছেন ৭৮ হাজারের মতো ভোট, অন্যদিকে বসিরহাটের আইএসএফ প্রার্থী পেয়েছেন ১ লক্ষ ২৩ হাজার ভোট। একই ঘটনা মথুরাপুরেও, সিপিএমের চিকিৎসক প্রার্থী শরৎচন্দ্র হালদার জামানত খুইয়েছেন আর তিন নম্বরে উঠে এসেছেন আইএসএফ প্রার্থী।

কিন্তু প্রশ্ন হল, হাল ফেরাতে ফের লাল ফিকে হল কেন? বাম ভোট যে কেবল রামে গিয়েছে, এমন কি বলা যাবে? তবে নিশ্চিত বাম ভোটের একটা বড় অংশ এ বার তৃণমূলে গিয়েছে। মেদিনীপুরের সিপিআই প্রার্থী বিপ্লব ভট্ট বলেছেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে যাঁদের থাকার কথা, তাঁদের একটি অংশও তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। আমার সঙ্গে প্রচারে যে লোকজন বেরিয়েছিলেন, তাঁদের সকলে যদি আমায় ভোট দিতেন, তা হলে অন্তত দু’লক্ষ ভোট পেতাম।’’ ঘাটালের বাম প্রার্থী তপন গঙ্গোপাধ্যায়েরও একই বক্তব্য, ‘‘আমাদের সমর্থকের একটা অংশ, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের একটা অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।’’ মেদিনীপুর ও ঘাটাল এই দুই কেন্দ্রে বামেরা ৫ শতাংশ ভোটও পায়নি। কিন্তু বামেদের ‘ঘরের ভোট’ তৃণমূলে গেল কেন? মেদিনীপুর জেলার বাম নেতৃত্বের অনেকের মত, বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে বেশির ভাগ মানুষ এবার তৃণমূলকে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করেছেন। মেদিনীপুর জেলায় এ বার তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে ৪৭.৪০ শতাংশ ভোট আর বিজেপির মিলেছে ৪৫.৫৬ শতাংশ ভোট। অথচ ‘লাল-দুর্গ’-র আমলে মেদিনীপুরে ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত পাঁচ বার জিতেছিলেন আর ঘাটালে (পূর্বতন পাঁশকুড়া) গীতা মুখোপাধ্যায় জিতেছিলেন ছ’বার। মেদিনীপুর জেলার বাম নেতৃত্বের মত, বিজেপি বিরোধিতাই একমাত্র কারণ নয়। শ্রমজীবী, দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের ভোট এক সময় বামেরাই পেত, কিন্তু লক্ষীর ভাণ্ডার তথা পরিষেবা-ভোট এ বার চলে গিয়েছে ঘাসফুলে। নেতারা মানছেন, ‘‘তৃণমূল সরকার মানুষকে কিছু সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। আমরা মানুষকে বোঝাতে পারিনি যে, এই সুযোগ-সুবিধা তাঁদের হক, বাড়তি কিছু নয়।’’

তরুণ মুখের ভীড়, বাম-কংগ্রেস জোট এসব নিয়ে জনমানসে আলোচনা তো কম হয়নি, কিন্তু ভোট বাক্সে কোনো আঁচড় কাটতে পারলো না উলটে বামেদের ভোটব্যাঙ্কে রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকলো। দীপ্সিতা, সৃজন, সায়নদের মতো তরুণ সশরীরে প্রচার করে, জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন, কিন্তু ভোট বাক্সে তার প্রভাব পড়ল না কেন? সিপিএম নেতাদের আলোচনা থেকেই উঠে আসছে যে কথা, তা হল বামেরা দুর্নীতি, স্বজনপোষণ নিয়ে তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ-অসন্তোষকে বামেরা নিজেদের দিকে টানতে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ, তৃণমূলের প্রতি ক্ষুব্ধ যারা তাদেরই একটা বড় অংশ আজও মমতাকে শ্রদ্ধা করেন। বাম নেতাদের প্রতি সাধারণ মানুষের সেই শ্রদ্ধা আজ আর নেই। অন্যদিকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ রাজ্যের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প মানুষকে মমতার প্রতি আস্থাশীল করেছে। দেড় দশক আগে গায়ে গঞ্জে লালঝাণ্ডা ছাড়া সেভাবে কিছুই দেখা যেত না। তখন থেকেই বামেরা উদ্ধত এবং দূর্বিনীত হয়ে উঠেছিল, পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গেই সেই দাপুটে আচরণ গুটিয়ে গেল, ক্রমেই ক্ষয়িষ্ণু হল। বিধানসভা লোকসভা থেকে শুরু করে প্রতিটি ছোট ভোটে তারা পরাজিত হল। এবারে ফলাফলে আরও ধস নেমেছে সিপিএমের প্রাপ্ত ভোটের হার ৫.৬৫ শতাংশ। একইভাবে বামেদের রক্তক্ষরণ হয়েই চলেছে।

প্রসঙ্গত, এক্সিট পোল বা বুথফেরত সমীক্ষা সারা দেশ জুড়ে ভুলে ভরা হলেও বাংলায় কিন্তু তারা মিলিয়ে দিয়েছে। তারা বলেছিল, বামেরা বাংলায় খাতা খুলবে না। ফলাফলে দেখা গেল, সত্যি কোথাও কোনও আসন জেতেনি বামেরা। কি বলা যায় এটাকে, মানুষের ‘রাজনৈতিক প্রত্যাখ্যান’, নাকি গোটা দলটাই এখন রক্তশূন্যতায় ভুগছে? এমন্টাও বলছেন অনেকে, বামেরা আজ ‘জান কবুল আর মান কবুল’ বলে লড়াইতে নামতেই ভুলে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বামেরা ‘ফেরাতে হাল, ফিরুক লাল’ স্লোগান তুলেছিল তবে সেই প্রচারের ঝড় কেবলমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতেই আটকে ছিল। গ্রাম গঞ্জের মানুষের কাছে পউছায়নি, তারা সেই ভাষাও বোঝেন নি। তাই ব্রিগেডের সভা থেকে ইনসাফ যাত্রা-সহ নির্বাচনী সভা–সমাবেশে যত মানুষের সমাগম হয়েছিল, তারা শেষ পর্যন্ত বামেদের উপর ভরসা রাখতে পারেননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন