বৃহস্পতিবার | ২৪শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:০৫
Logo
এই মুহূর্তে ::
বারবার ভিলেন সেই বঙ্গোপসাগর : তপন মল্লিক চৌধুরী নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রাখাইন পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ‘দানা’ থেকে ভয় পাবেন না, সতর্ক থাকুন, মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুত : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সই বা বন্ধুত্ব স্থাপনের উৎসব সয়লা : রিঙ্কি সামন্ত প্রথম পাঠ — “নিশিপালনের প্রহরে” নিয়ে, দুয়েকটি কথা : সোনালি চন্দ বৃহন্নলার অন্তরসত্তা : নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী দুই দশক : শৈলেন মান্না ভরা বর্ষায় জলপ্রপাতের মুখোমুখি… : বিদিশি বসু দামোদর মাউজো-এর অনুবাদ গল্প ‘হরতাল’ বঙ্গে কুবেরের পূজা : অসিত দাস বাংলা সাহিত্যের দেবতারদের দেখা মেলে ওই ঘরেই : অশোক মজুমদার মালবাণকে ছুঁয়ে রূপোলী সমুদ্রসৈকতে : নন্দিনী অধিকরী মার্ক্সবাদ, মনোবিশ্লেষণ এবং বাস্তবতা : এরিক ফ্রম, অনুবাদ ফাতিন ইশরাক সাহিত্যের প্রাণপ্রবাহে নদী : মিল্টন বিশ্বাস এবার দুর্গা পুজোকেও ছাপিয়ে গেল রানাবাঁধের লক্ষ্মীপুজো : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় দেড় হাজার বছর প্রাচীন ঘোষগ্রামের লক্ষীকথা : রিঙ্কি সমন্ত হুতোমের সময় কলকাতার দুর্গোৎসব : অসিত দাস নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘বৈতালিক’ কোজাগরীর প্রার্থনা, বাঙালির লক্ষ্মীলাভ হোক : সন্দীপন বিশ্বাস তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ ভাবাদিঘিতে ফের জোর করে বন্ধ করা হলো : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর — অনেক বিদ্যাসাগর মাঝে তিনি একক : প্রলয় চক্রবর্তী আমেরিকা-ইসরায়েল সম্পর্কের শেকড় অনুবাদ ফাতিন ইশরাক নিয়ম নীতি আচারে লক্ষ্মী পূজার তোড়জোড় : রিঙ্কি সামন্ত আমার প্রথম বই — ঘুণপোকা : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-এর ছোটগল্প ‘কে জাগ রে’ জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন একটি বিপ্রলম্ভের কবিতা : প্রসেনজিৎ দাস আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত ও যুক্তিযুক্ত মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী রেখা দাঁ ও বিজ্ঞান আন্দোলন : দীপাঞ্জন দে বাংলা উপন্যাসে নিম্নবর্গ : মিল্টন বিশ্বাস বদলে যাওয়ার অসুখ : বিষ্ণু সরকার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই মহাঅষ্টমীর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বারবার ভিলেন সেই বঙ্গোপসাগর : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ২০ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বছরে বেশ কয়েকবার; তিন-চার মাস অন্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কথা আমরা শুনে থাকি। চর্চায় আসে যেগুলি বেশি শক্তিশালী কিন্তু কম শক্তির ঘূর্নিঝড়ও প্রায়শ তৈরি হয়। এইসব ঘূর্ণিঝড়ের বেশিরভাগই আছড়ে পরে বাংলায় আর ওড়িশায়। কখনও কখনও ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উপকূলীয় অঞ্চলও। দুনিয়ার সবচেয়ে প্রাণঘাতী এবং ক্ষতিকারক ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তিস্থল হল বঙ্গোপসাগর। কিন্তু কেন? যে বিস্তীর্ণ জলরাশি ডিসেম্বর জানুয়ারিতে একেবারে শান্ত এবং নীল থাকে কিন্তু গ্রীষ্মে এমনকি তারপরও বৃষ্টিতে একেবারে অন্যরূপ ধারণ করে ফুঁসতে থাকা ঘোলা জলের সমুদ্র হয়ে ওঠে।

পৃথিবীর যে জায়গাটিতে আমদের বসবাস, সে জায়গাটিতে সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি প্রবণতা পাশাপাশি অবস্থান করছে। একদিকে মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ স্থলভাগ আর ঠিক তার পাশেই বঙ্গোপসাগর অর্থাৎ সুবিশাল জলভাগ। ফলে ঘুরেফিরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে পড়া ছাড়া উপায় নেই। প্রায় সারা বছরই সূর্যের প্রখর তাপ থাকে মধ্য ভারতের বিশাল স্থলাঞ্চলে। সূর্যরশ্মীর তাপে ওই বিস্তীর্ণ স্থলাঞ্চলের বাতাস গরম হয়ে ওপরে উঠে যায় ফলে নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয় মধ্য ভারতের স্থলভাগে। মধ্য ভারতের বিশাল স্থলভাগের সীমানা থেকেই আবার বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলভাগ। এখানে তাপাঞ্চল সৃষ্টি না হয়ে ঘটে উল্টো ঘটনা। সূর্যের তাপে প্রতিদিন বঙ্গোপসাগরের জল থেকে বাষ্প তৈরি হয় বিপুল পরিমাণে। জলীয় বাষ্প ভরতি সেই বাতাস যেহেতু ভারী তাই তার পক্ষে বেশি ওপরে ওঠা সম্ভব হয়না। আর তার ফলেই উচ্চচাপের পরিস্থিতি থাকে এই অঞ্চলে।

আমরা জানি বাতাসের ধর্মই হল উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হওয়া। তাই বঙ্গোপসাগর থেকে জন্ম নেওয়া ভারী এবং অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা বাতাস উত্তর ভারতের স্থলাঞ্চলের দিকে ছুটে যায়। এই প্রবণতাই জন্ম দেয় ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের। তার মানে কি বাতাস বঙ্গোপসাগর থেকে মধ্য ভারতের দিকে যেতে চাইলেই ঘূর্ণি‌ঝড় তৈরি হবে? না ঠিক তেমনটা নয়, সমুদ্রের ওপর জমতে থাকা জলীয় বাষ্প বা ভারী বাতাস ঘূর্ণাবর্তে পরিণত হবে কি না, সেটা অনেকটাই নির্ভর করে তাপমাত্রা কতটা কমছে বাড়ছে তার উপর। ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা হয় তখনই যখন সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যায়। কিন্তু এর পরও প্রশ্ন থাকে শুধু বঙ্গোপসাগরেই কেন এত বেশি ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন সৃষ্টি হয়? ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে তো আরব সাগর অবস্থান করছে, সেখানেও তো একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা। হ্যাঁ, আরব সাগরেও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, কিন্তু সেই সব ঝড়ের বেশিরভাগই চলে যায় পশ্চিম দিকে অর্থাৎ ঝড় আঘাত করে মধ্য এশিয়ার উপকূলে গিয়ে। কারণ, ভারতের পশ্চিম উপকূল জুড়ে বিস্তৃত পাহাড়ে (পশ্চিমঘাট পাহাড়) বাতাস বাধা পায়। তাছাড়া মধ্য ভারতের চেয়ে নিম্নচাপের তীব্রতা অধিকাংশ সময় মধ্য এশিয়ার দিকেই বেশি থাকে।

ন্যাশনাল সাইক্লোন রিস্ক মিটিগেশন প্রজেক্ট বা এনসিআরএমপি-র তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলির মধ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ আছড়ে পড়ে পূর্ব উপকূলে। অন্যদিকে আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় তুলনায় শতকরা ২৫ শতাংশের মতো কম। আরব সাগরের তুলনায় বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা তৈরি হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। বঙ্গোপসাগর আরব সাগরের তুলনায় অপেক্ষাকৃত অগভীর। বঙ্গোপসাগরের বৃহত্তর ভূপৃষ্ঠের এলাকা উত্তাপের কারণে বাষ্পীভবন বেশি হয়। দ্রুত বাষ্পীভবন এলাকায় একটি উচ্চ-চাপ অঞ্চল গঠন করে যা অস্থিরতা সৃষ্টি করে। সেই কারণে সেখানে ঘূর্ণিঝড় গঠনের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠে। তাছাড়া বঙ্গোপসাগর তিন দিক ভূমি দিয়ে বেষ্টিত হওয়ার জন্য অতিরিক্ত আর্দ্রতা এবং অস্থিরতা তৈরি করে। ঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়লে নিচু উপকূলীয় অঞ্চলগুলি প্রায়শই প্লাবিত হয়। বঙ্গোপসাগরে বেশি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার জন্য আরেকটি কারণ হল বঙ্গোপসাগরের আকৃতি যা দীর্ঘ এবং এর উপকূলরেখা বাঁকা, সেই কারণে বাতাস যখন উপসাগরে প্রবেশ করে তখন তার গতিবেগ বৃদ্ধি পায়। যে গতিবেগ ঝড়কে ধ্বংসাত্মক করে তোলে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, অগভীর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী ঘূর্ণিঝড়ের তীব্র বাতাস যখন জলরাশিকে ঠেলতে থাকে, তখন ফানেল বা চোঙার মধ্যে তরল পদার্থ যেমন আচরণ করে ঠিক তেমনটা ঘটে। সমুদ্রের ফুলে ফেঁপে ওঠা জল চোঙা বরাবর ছুটতে থাকে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে যথেষ্ট ঘনবসতি, বিশ্বের প্রতি চারজন মানুষের একজন থাকে বঙ্গোপসাগর উপকূলে। প্রায় ৫০ কোটি মানুষের বসবাস। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের ভোলায় যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, সেটি ছিল বিশ্বের ইতিহাসের সবচাইতে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়। যাতে মারা গিয়েছিল প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ৩৪ ফুট। বঙ্গোপসাগর বরাবরই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল। ১৯৭০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ১১৭টি ঘূর্ণিঝড় এদেশের মাটিকে আঘাত হেনেছে, যাতে চার লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৯ সাল ছিল সবথেকে বেশি ঘূর্ণিঝড়ের বছর। ২০২০ এবং ২০২১-এও যথেষ্ট ক্ষতি হয় ঘুর্ণিঝড়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন