মঙ্গলবার | ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:০৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
খালাসিটোলা, রবীন্দ্রনাথ ও পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস পীযূষ পাঠ প্রস্তাব : ড. পুরুষোত্তম সিংহ চর্যাপদে সমাজচিত্র : নুরুল আমিন রোকন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দশম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুর ও তৎকালীন বঙ্গসংস্কৃতি : অসিত দাস দধি সংক্রান্তি ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

আমজনতার আমকথা : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৫২০ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২

“মধুমাখা ফল মোর বিখ্যাত ভুবনে/তুমি কি তা জান না ললনে?”

হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোলাপখাস, তোতাপুরি, আম্রপালি,ফজলি, দশেরি, চৌসা… নামগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমজনতার আম সেন্টিমেন্ট। তাইতো ভারতের জাতীয় ফল আম। জৈষ্ঠ্যের হাঁসফাঁস গরমে আমের মিঠে স্বাদের রসনায় ডোবেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কারণ স্বাদে-গুণে-পুষ্টিতে, রোগ প্রতিরোধে এর জুড়ি মেলা ভার।

শুধু “আমটি আমি খাবো পেড়ে” নয়, আমগাছের পাতা, ছাল, মুকুল, আমের আঁটির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঔষধিগুণ। আমগাছের পাতা গবাদি পশুদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গাছের কাঠ বিভিন্ন আসবাবপত্র, নৌকা ইত্যাদি তৈরি করতে প্রয়োজন। আমগাছের শীতল ছায়া শান্তি দেয় ঘর্মাক্ত পথিককে। গাছটি আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে।

আমাদের ছোটবেলায় কাঁচা আম ছেঁচে নুন-লঙ্কা মিশিয়ে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করার আমেজ এখনো প্রলুব্ধ করে। চরক সংহিতায় বলা হয় — কচি আম রক্তপিত্তকর, মধ্যবয়সী আম পিত্তকর। সমীক্ষায় দেখা গেছে, কচি আম অম্লকষায় স্বাদে রুচিকর, বায়ু ও পিত্তবর্ধক। বেশি খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। তাই রান্না করে খাওয়া ভালো। গরমের দিনে কাঁচা আম দিয়ে শোল মাছ রান্না করলে আমশোল তৈরি হয় — যা ছিলো আমাদের রবি ঠাকুরের বড়ই পছন্দের পদ।

পাকা আমের মধ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আয়রন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, ফ্যাট, ফোলেট, ভিটামিন — এ, সি, কে, ই, সামান্য বি, বিভিন্ন ধরনের খনিজ থাকে। আমে উচ্চ ক্ষতাসম্পন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পাকা আমার পানা খাওয়া যেতে পারে। দুপুরে পাকা আম দিয়ে দুধে-ভাতে খেলে অবসাদ, ক্লান্তি, অনিদ্রা, কোষ্ঠবদ্ধতা, অরুচি নষ্ট করে। পাকা আম স্মৃতি বর্ধক। এটি অ্যালঝাইমার্স প্রতিরোধেও কার্যকর।

বাড়ির সকলে পাকা আম হাপুস হুপুস করে খাবে আর ডায়াবেটিস আছে বলে আপনি খাবেন না, তা আবার হয়! ডায়াবেটিস রোগীদের পাকা আম ছোট টুকরো করে কাটা অর্ধেক কাপ খাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম পাকা আমে প্রায় ৭০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। সঠিক পরিমাণ ডায়েট চার্ট বানিয়ে আম খাওয়া যায় অল্প পরিমাণে। হার্টের রোগীদের জন্য ভালো ফল। তবে, প্রতি ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

আগে গাছ থেকে আম পেড়ে চালের হাঁড়িতে, বস্তার মধ্যে রেখে পাকানো হতো। এখন কার্বাইড দিয়ে আম পাকানো হয়। রাসায়নিক স্প্রে করা হয়। পাকা আম খাবার আগে কিছুক্ষণ জলে ডুবিয়ে রাখার পরে ভালোভাবে ধুয়ে কাটুন।

সুদূর প্রাচীনকাল থেকে আম নিয়ে চলছে গবেষণা। বেদের বহু পূর্বে (আজ থেকে প্রায় ১০-১২ হাজার বছর আগে ) আম নিয়ে চর্চা চলছে। বৌদ্ধ ধর্মে আম ও আম গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। জৈন দেবী অম্বিকাকে ঐতিহ্যগতভাবে আমগাছের তলায় উপস্থাপন করা হয়। ইলোরা গুহাগুলোর ৩৪তম গুহায় এই চিত্র দেখা যায়।

মোগল সম্রাট বাবর তার জীবনচরিত ‘বাবরনামায়’ আমের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন। মৌর্য সম্রাট অশোক একটি নির্দেশাবলীতে রাস্তার দুধারে আম গাছলাগানোর কথা জানা যায়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, দিল্লির সম্রাটগণ একেকজন ছিলেন জগৎবিখ্যাত আম-বিশেষজ্ঞ। মোগল সম্রাট আকবর ভারতের শাহবাগের দাঁড়ভাঙায় এক লাখ আমের চারা রোপণ আমবাগান তৈরি করেন। সম্রাট, নবাব, জমিদার, বর্ধিষ্ণু পরিবার … প্রায় সকলেই আমের চাষ করেছেন। এই আম-প্রীতিই যদি পরিবেশ রক্ষায় সাহায্য করে তাহলে মন্দ হয়না।

বাংলায় একটি কথা প্রচলন আছে, ‘আমে-দুধে মিশি গেলে আঁটিটা গড়াগড়ি খায়’। তবে এবার আর আঁটি গড়াগড়ি খাবে না। এই আঁটি থেকেই সৃষ্টি হবে নতুনের। ‘আম’ জনতার ‘আম’ প্রীতিকে কাজে লাগিয়ে পরিবেশ বাঁচানোর বৃহত্তর আন্দোলোনে সামিল করেছেন শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়। সৌজন্যে তার ‘মিশন গ্রিন মুম্বাই’। দেশের সকল নাগরিকের কাছে আবেদন করেন, “আম খাওয়ায় পর আঁটিটিকে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে কাগজে মুড়ে পার্সেল করে পাঠিয়ে দিন। লক্ষ্য রাখতে হবে, আঁটি যেন ভালোভাবে শুকনো হয়। আঁটিতে ছত্রাক জন্মালে সেখান থেকে আর নতুন গাছ হবে না। সেই আঁটি থেকে চারাগাছ বানিয়ে দেশের নানা প্রান্তের চাষীদের কাছে বিনামূল্যে পাঠিয়ে দেবো আমরা।” এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে গাছপাকা আমের স্বাদ পৌঁছে যাবে শুধু নয়, তার সঙ্গে বৃক্ষ রোপন বাঁচাবে পরিবেশ।

পরিবেশ বাঁচানোর এই কাজ প্রায় চার বছর ধরে চলছে কলকাতায়। ‘মিশন গ্রিন কলকাতা’ এর উদ্যোগে সক্রিয় যোগদান রয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসকদের। গাছ লাগানো থেকে বিলি করাতে ভূমিকা রয়েছে অল্পবয়সীদেরও। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার গ্রামে ও শহরে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা চালু আছে, যা নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক।

বিভূতভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপুর আমের শুকনো আঁটি দিয়ে ভেঁপু বানানোর কথা বাঙালি ভোলেনি এখনো। আমআঁটি যে তুচ্ছ, অবহেলার নয় সে গুণপনায় সমৃদ্ধ। পৃথিবীর ফুসফুসকে সতেজ রাখার জাদু লুকিয়ে আছে এর মধ্যে।

আপনি নিজেও বাড়িতে সুস্বাদু আমের আঁটি ফেলে না দিয়ে সেখান থেকে নতুন গাছ তৈরি করতে পারেন। আমগাছ বসাতে পারলে অক্সিজেনের সঙ্গে মিলবে স্বাদের রসদ।

Source : Various news articles and journals have been referred for the Writeup.


আপনার মতামত লিখুন :

2 responses to “আমজনতার আমকথা : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Amar Nath Banerjee says:

    হিমসাগর is best তাই না?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন