সোমবার | ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:৫৪
Logo
এই মুহূর্তে ::
সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী জমিদার রবীন্দ্রনাথ : আহমাদ ইশতিয়াক আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর, এবারও অধরা রইলো আলোচনা : সুমিত ভট্টাচার্য জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব চাষির দুঃখের ঘরে সাপের বাসা, আজও রেহাই নেই ছোবলের হাত থেকে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সল্টলেক তথা লবণহ্রদই কি কুচিনান : অসিত দাস পদ্মা বা পার্শ্বপরিবর্তনী একাদশী ব্রতকথা : রিঙ্কি সামন্ত জয়া মিত্র-র ছোটগল্প ‘ছক ভাঙার ছক’ কত দিন বিনা চিকিৎসায় চলে যাবে অসুস্থ মানুষের প্রাণ? প্রশ্ন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের : সুমিত ভট্টাচার্য দেবী করন্দেশ্বরীর পূজো ঘিরে উৎসবের আমেজ মন্তেশ্বরের করন্দা : প্রবীর কুমার সামন্ত প্রেতবৈঠকে (প্ল্যানচেট) আত্মার আগমন : দিলীপ মজুমদার সংগীত সাধক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য : রিঙ্কি সামন্ত শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যের অন্দরে বাহিরে বিরাজমান সিণ্ডিকেট : তপন মল্লিক চৌধুরী কবিতা সিংহ-এর ছোটগল্প ‘পশ্চিম রণাঙ্গন আজ শান্ত’ কলকাতার আর্মেনিয়ান জনগোষ্ঠী : অসিত দাস মঙ্গলবারের মধ্যে কাজে ফিরুন — সুপ্রিম ধমক, উৎসবে ফিরুন — মমতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব বিবিসির ইয়ংগেস্ট হেডমাস্টার বাবর আলী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত হাঁসের ডিমের উৎপাদন বাড়াতে এগিয়ে এল রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় এ আমার এ তোমার পাপ : দিলীপ মজুমদার জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (চতুর্থ পর্ব) : বিজয়া দেব রোহিঙ্গা সংকট — ত্রান সহায়তা ও কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে কি তিলোত্তমা সুবিচার পাবে : তপন মল্লিক চৌধুরী বিবিসির ইয়ংগেস্ট হেডমাস্টার বাবর আলী (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সময় হোক বা পরিস্থিতি, প্রণাম সব শিক্ষককেই : প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (তৃতীয় পর্ব) : বিজয়া দেব রোহিঙ্গা সংকটের সাত বছর — বাংলাদেশ ও মিয়ানমার পরিস্থিতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন রবিবাবুর নোবেল রহস্য : সাইফুর রহমান জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (দ্বিতীয় পর্ব) : বিজয়া দেব স্যার এই পুরস্কার আপনারই প্রাপ্য — নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ডঃ আব্দুস সালাম : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ কৌশিকী অমাবস্যার-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (দ্বিতীয় পর্ব) : বিজয়া দেব

বিজয়া দেব / ৬৯ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রোমান্টিক যুগের প্রেমের মধুরতম অনুভূতি তার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে। মার্ক্সএর সাম্যবাদ ও ফ্রয়েডীয় মনোবিকলন তত্ত্ব এবং যুদ্ধোত্তর বিভীষিকা সৃজনশীল ধারাকে নতুন পথের বাঁকে এনে প্রশ্নে প্রশ্নে আলোড়িত করে তোলে। প্রশ্ন ওঠে, যে সমাজের ভিত অর্থনৈতিক নিপীড়ন, সেখানে প্রেমের খোলস গায়ে চাপিয়ে জীবনের জটিল সমস্যাকে ঢেকে রাখার প্রয়াস আদতে ভন্ডামি ছাড়া কিছুই নয়।

ফ্রয়েড দেখালেন যৌনচেতনাই প্রেমের আচ্ছাদিত প্রকাশ। মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “দিবারাত্রির কাব্য” এবং “পুতুলনাচের ইতিকথা” তে মনোবিকলন তত্ত্বের অসাধারণ শৈল্পিক প্রয়োগ আমরা দেখেছি। “সমুদ্রের স্বাদ: লেখকের কথা” য় মাণিক লিখছেন —

নিজের অসংখ্য বিকারের মোহে মূর্চ্ছাহত মধ্যবিত্ত সমাজকে নিজের রূপ চিনিয়ে দিয়ে সচেতন করার, মিথ্যার শূন্যকে মনোরম করে উপভোগ করার নেশায় মরমর এই সমাজের কাতরানি গভীরভাবে মনকে নাড়া দিয়েছিল। ভেবেছিলাম ক্ষতে ভরা নিজের মুখখানাকে অতিসুন্দর মনে করার ভ্রান্তিটা যদি নিষ্ঠুরের মত মুখের সামনে আয়না ধরে ভেঙে দিতে পারি। সমাজ চমকে উঠে মলমের ব্যবস্থা করবে।

সেই সময়ের প্রেক্ষিতে রোমান্টিক মনন ধাক্কা খেয়ে নেমে আসে ধুলিমাখা পথে, মনের গভীরে অচেতন অবচেতন এবং স্বপ্নজালে আচ্ছন্ন ঘুম ও জাগরণের যে স্তর তা নিয়েও নিরীক্ষামূলক লেখা প্রকাশ পেতে থাকে।

জগদীশ গুপ্ত আদালতে কাজ করতেন। যদি এভাবে ভাবা যায় মানুষের অন্ধকারময় জীবনের প্রতিচ্ছবি তাঁর জীবন অভিজ্ঞতায় জড়ো হয়েছিল বলেই অন্ধকারকে তিনি সাহিত্যে টেনে এনেছেন, সেটিও মনে হয় অতি সরলীকৃত ব্যাখ্যা হয়ে যাবে, কারণ লেখকের গল্পে ঘটনা ও কাহিনি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুখ্য ভূমিকায় দাঁড়িয়ে নেই, মুখ্য চরিত্রে দাঁড়িয়ে রয়েছে মানুষের মনোজগতের অন্তরালের অন্ধকার ও তারই প্রেক্ষিতে গূঢ়সঞ্চারী জীবনাচরণ। আকৃতিবিহীন সেই অন্তর্লোককে আকৃতি দেওয়াই যেন তাঁর দেয় ছিল পাঠকের কাছে। অন্তর্লোকের চেহারা বাহ্যিক পরিমার্জনের ধার দিয়ে চলে না, সেই জগত তারই নিজস্ব এবং স্বভাবতই অপরিশীলিত।

“আদিকথার একটি” গল্পটিতেও মুখ্য ভূমিকায় দাঁড়িয়ে রয়েছে মনোজীবনের গূঢ় প্রতিচ্ছবি। সুবল, খুশি, কাঞ্চন এই তিনটি চরিত্রকে নিয়ন্ত্রণ করছে যৌন জটিলতা। তেইশ/চব্বিশ বছরের সুবলের সাথে বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছরের মেয়ে খুশির। খুশির মা কাঞ্চন, রূপ-লাবণ্যে পরিপূর্ণ তার দেহ, সে যুবতী, মৃত গোপাল দাসের দ্বিতীয় স্ত্রী সে। চব্বিশ বছরের ভরপুর যুবক সুবলের স্ত্রী খুশি, বয়েস তার পাঁচ। এই অসম সম্পর্কের ত্রয়ী চরিত্রই গল্পটির চুম্বকশক্তি।

চালের ধামা জালার মুখে রাখতে গিয়ে সুবলের কোমরে হাড় খট করে ওঠে, কোমরের ব্যথায় সে ছটফট করতে থাকে, তেলের মালিশের ব্যবস্থা হয় এবং মালিশের দায়িত্ব নেয় কাঞ্চন নিজে। সেই মালিশের সুযোগে সুবল হঠাৎ খপ করে ধরে ফেলে কাঞ্চনের হাত এবং সেই সূত্রপাত। চব্বিশ বছরের যুবকের চাহিদা মেটানো খুশির নয়, কাঞ্চনের উচিত ছিল। কাঞ্চনের সৌন্দর্যের প্রতি আকর্ষণ সুবলের বিয়ের পূর্ব থেকেই ছিল এবং তার পাঁচ বছরের শিশু খুশিকে বিবাহ করবার পিছনে উদ্দেশ্যও ছিল তাই, কাঞ্চনের চোখের সামনে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে সুবলের উদ্দেশ্য এবং সমস্ত ব্যাপারটির কদর্যতা উপলব্ধি করে শিউরে ওঠে কাঞ্চন এবং তার চাইতেও ভয়ানক হয়ে ওঠে তার নিজের শরীরের চাহিদা, মনের টানাপোড়েন। সুবল সংক্রান্ত ঘটনায় ধীরে ধীরে প্রকট হতে থাকে তার জীবনের ব্যর্থতা, শূন্যতা, তীব্র অভাববোধ, যে চেতনা মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল, সুবলের ব্যবহার সেই চেতনাকে করে তোলে জাগ্রত, অস্পষ্ট, ছায়াময় হয়ে গিয়েছিল যা, তাই যেন মূর্তিধারণ করে আসে কাঞ্চনকেই গ্রাস করতে। একদিকে শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ, অপরদিকে তার ও সুবলের দেহজ চাহিদা এই উভয়ের টানাপোড়েনে পর্যুদস্ত কাঞ্চন সহসা উপলব্ধি করে সুবল এবং খুশির বিবাহের পিছনে চরম সামাজিক হৃদয়হীনতার ছোঁয়া —

“একই শয্যায় স্বামী স্ত্রী নিদ্রিত। পুরুষত্বের পূর্ণ বিকাশে সর্বদেহের অসাধারণ তেজপ্রাচুর্যে একজন যেন পৃথিবীর সমস্ত মর্মহীন রসহীনতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করিয়া এখন শুধু সর্বব্যাপী ক্লান্তিতে ভারাক্রান্ত হইয়া নিদ্রিত হইয়া পড়িয়াছে, তাহার পাশে পড়িয়া আছে একটি অতিশয় শিশু।”

কাঞ্চন উপলব্ধি করে সম্পর্কের এবং ব্যক্তিজীবনের ব্যর্থতা তৈরি করতে সমাজ এক অমোঘ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে আর মানুষ ভারবাহী গর্দভের মত তা পালন করে যাচ্ছে।

অতঃপর কাঞ্চন ও সুবলের অবৈধ সম্পর্কের কানাঘুষায় বসে সামাজিক বিচার। সুবলের বাস্তুবাটির মালিক বামন দাস অধিকারীর কঠোর বিচারে কাঞ্চনের ওপর হয় শারীরিক অত্যাচার এবং ঘটনার জন্যে কাঞ্চনকেই দোষী সাব্যস্ত করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুকুম দেওয়ার পরও পাঁচ বছরের খুশি বুঝতে পারে না কেন মা-কে ঘিরে এতবড় ঘটনাটি ঘটল। [ক্রমশ]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন