মঙ্গলবার | ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:১৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস মহাকুম্ভ উপলক্ষে এবার যে জনপ্লাবন দেখা যাচ্ছে, তা এককথায় অভূতপূর্ব : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘আখের রস’ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সরস্বতী দিদিমণি’ মহাকুম্ভ থেকে মহাদুর্ঘটনা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুঁজছে মাটির নিরাপত্তা : রিঙ্কি সামন্ত জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার মির্জা নাথানের চোখে বাংলার ভুঁইয়াদের হাতি : মাহবুব আলম ভিয়েতনামের গল্প (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

গেছো কলকাতার গল্পগাছা : অসিত দাস

অসিত দাস / ১৯২ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৩

তিনশো বছরের বেশি বয়সি কলকাতা আদিতে ছিল এক জলাজংলা জায়গা৷ কলকাতা তখন আক্ষরিক অর্থেই ছিল জঙ্গল। সপ্তগ্রামের বসাক ও শেঠ পরিবার কলকাতার ‘জঙ্গল-কাটানো’-র মূল কারিগর। সপ্তগ্রাম-বন্দর নাব্যতা হারালে তারা হাওড়ার পর্তুগিজ অধ্যুষিত বেতোড়ের হাটে বাণিজ্য করতে আসে। সেখানে সুবিধে না হওয়ায় তারা ভাগীরথীর উল্টোপারে সুতানুটি হাটের পত্তন করে। এর জন্যে জঙ্গলাকীর্ণ তথা অরণ্যসঙ্কুল কলকাতার জঙ্গল সাফ করতে হয় তাদের।

অরণ্যদ্রুম, গাছগাছালি, লতাগুল্মে পূর্ণ কলকাতায় তখন দিনের বেলাতেও হিংস্র শ্বাপদের গর্জন শোনা যেত৷ খালবিল-নদীনালা-বাদাবনে ভরা সোমত্থ চেহারা তখন নাগিনীকন্যার৷ কলকাতা-সুতানুটি-গোবিন্দপুর নিয়ে কলকাতা পত্তনের আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের নামশরীরে বৃক্ষলতাদি থাবা বসিয়েছে৷

উত্তর কলকাতার সিমলা তথা সিমুলিয়ায় শিমুলগাছের আধিক্য ছিল, এন্টালিতে ছিল হেঁতাল বা হিন্তাল গাছের সারি৷ বাঁশদ্রোণীর নদীনালায় বাঁশ দিয়ে তৈরি ডোঙা বা ডিঙি নৌকা চলছে তখন৷ আমদের ‘ধর্মতলা’ যে আসলে ‘দ্রুমতলা’ বা ‘দুরমোতলা’, ধর্মের কারবারিদের তা কে বোঝাবে? বৈঠকখানা বাজারের বিখ্যাত বটগাছতলায় জোব জার্নক সাহেব সপার্ষদ একটু জিরিয়ে নিতেন বলে শোনা যায়৷ তবে বটতলা সাহিত্যের আঁতুড়ঘর উত্তর কলকাতার শোভাবাজার সন্নিহিত বটতলা হলেও, বটগাছ একা তার পেটেন্ট দাবি করছে না৷ বট অর্থে মুখরোচক তেলেভাজা-বড়াও ক্রেডিট নিচ্ছে৷ পুরোনো কলকাতার হোগলকুড়িয়ায় ছিল হোগলাবাগান, সুকুমার সেনের মতে হোগলা থেকেই কলকাতার কাছের জেলা হুগলির নাম এসেছে৷ নোনাডাঙা, বাদামতলা, পেয়ারাবাগান, লেবুতলা, চালতাবাগান, কলাবাগান বস্তি নিয়ে শহর কলকাতার আবহমানের ফলার৷ পলতা, পটলডাঙা, নিমতলা, কলকাতার পেট ঠান্ডা ও আত্মার শুদ্ধিকরণ করছে চিরটা কাল ধরে৷

পুরনো কলকাতার দুর্গ-মর্গ-স্বর্গের রাস্তা কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল ফণীমনসা ও শিয়ালকাঁটায় জর্জরিত৷ পদ্মপুকুর, একডালিয়া ও ফুলবাগান, — এই সমস্ত তল্লাটে প্রস্ফুটিত ফুলের সঙ্গে গাছগুলিও বেশ মনোহর৷ বেলগাছিয়ায়, বেলতলায় বেলগাছ যে এক সময় ছিল, তা বোঝার জন্য ন্যাড়াকে বারবার বেলতলায় যেতে হয় না৷ শহর কলকাতায় গাদাগুচ্ছের গাছ যখন ছিল, বাগান তো থাকতেই হবে৷ বকুলবাগান, জোড়াবাগান, চোরবাগান, কলাবাগান, চালতাবাগান, মোহনবাগান, — কত বাগনের ছড়াছাড়ি৷ বাদুড়বাগানের বাদুড় কী গাছে ঝুলতো, তা ঠিক বলতে পারবো না। বাগবাজারের পলাশির যুদ্ধকালীন পেরিনস গার্ডেন অধুনা অবলুপ্ত হলেও, ধর্মতলায় ইডেন গার্ডেনস এখনও তার সান্ধ্যধর্ম ও ক্রিকেট ধর্ম পালন করে চলেছে৷ পুরোনো কলকাতায় সাপগাছি, কাঁকুড়গাছি ছিল৷

কলকাত্তাই বাবুবিবিদের আমড়াগাছিও ছিল৷ সাপগাছির দেখা মেলে না আর৷ কাঁকুড়গাছি তার বারো-তেরো অনুপাত নিয়ে বহাল তবিয়তে আছে, এখনও ধর্মকর্ম করছে৷ উত্তর কলকাতায় হোগলাবাগান ভরা হোগলাকুড়ে ছিল৷ গঙ্গাতীরের নাবাল জলাজমিতে শণ-পাটে ভরা শণগাছিও ছিল৷ উত্তর কলকাতার শণগাছিই কি সনাগাছি হয়ে এখনকার সোনাগাছি? পণ্ডিতগণ সোনাগাছি নামটির মূলে সোনা গাজীর মাজারের কথা বললেও, ‘সোনাগাছি’ই মনে হয় বেশি প্রণিধানযোগ্য, যেহেতু শণপাট/গাছ বেশি প্রাচীন৷ কলকাতায় আমতলা-জামতলা-লিচুতলা-শিউলিতলার ছড়াছড়ি৷ কত গলিতে কত গাছের নাম যে লুকিয়ে আছে, তার ইয়ত্তা নেই৷ ‘এ কলকাতার ভেতর আছে আর-একটি কলকাতা৷’ বড়োবাজারের আমড়াতলার মশলার খুশবু সমস্ত কলকাতার শরীর থেকে যেন ভেসে আসছে৷ কলকাতার প্রাচীন মানচিত্রে সাহেবরা বড়বাজারের আমড়াতলাকে ওমরাতলা লিখেছেন৷ হয়তো আমীর-ওমরাদের বাসছিল এখানে। একদা গাছগাছালিতে পূর্ণ কলকাতা কি ক্রমশ কংক্রিটের ‘জঙ্গল’ হয়ে যাচ্ছে?

বরং লবণহ্রদের দিকে কলকাতার আসল রূপটা কিছুটা ধরা পড়ছে। নলবন এলাকার মোচ্ছবের মধ্যেও কোথাও কোথাও কাশফুল চোখে পড়ে, উলুখাগড়ার জঙ্গলও মাঝে মাঝে উঁকি মারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন