সোমবার | ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:২৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
উনিশের উত্তরাধিকার : শ্যামলী কর কেট উইন্সলেটের অভিনয় দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জিং ভূমিকার ৩টি চলচ্চিত্র : কল্পনা পান্ডে হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলা — আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংকট : সুব্রত কুমার দাস সিন্ধুসভ্যতার ভাষা যে ছিল প্রোটোদ্রাবিড়ীয়, তার প্রমাণ মেলুহা তথা শস্যভাণ্ডার : অসিত দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (শেষ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস জাতিভিত্তিক জনগণনার বিজেপি রাজনীতি : তপন মল্লিক চৌধুরী গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তালশাঁসের চাহিদা : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (ষষ্ঠ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস ভারতের সংবিধান রচনার নেপথ্য কারিগর ও শিল্পীরা : দিলীপ মজুমদার চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (পঞ্চম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস আলোর পথযাত্রী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (চতুর্থ পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস কন্নড় মেল্ল থেকেই সিন্ধুসভ্যতার ভূখণ্ডের প্রাচীন নাম মেলুহা : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (তৃতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস লোকভুবন থেকে রাজনীতিভুবন : পুরুষোত্তম সিংহ চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (দ্বিতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত রবীন্দ্রনাথের ইরান যাত্রা : অভিজিৎ ব্যানার্জি ঠাকুরকে ঠাকুর না বানিয়ে আসুন একটু চেনার চেষ্টা করি : দিলীপ মজুমদার যুদ্ধ দারিদ্র কিংবা বেকারত্বের বিরুদ্ধে নয় তাই অশ্লীল উন্মত্ত উল্লাস : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী ও শান্তিনিকেতন : প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বাঙালী রবীন্দ্রনাথ : সৈয়দ মুজতবা আলী অনেক দূর পর্যন্ত ভেবেছিলেন আমাদের ঠাকুর : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথের প্রথম ইংরেজি জীবনী : সুব্রত কুমার দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (প্রথম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস শুক্লাম্বর দিঘী, বিশ্বাস করে দিঘীর কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায় : মুন দাশ মোহিনী একাদশীর ব্রতকথা ও মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত নিজের আংশিক বর্ণান্ধতা নিয়ে কবিগুরুর স্বীকারোক্তি : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে সিংহবাহিনী মন্দির, নবগ্রাম (ঘাটাল) : কমল ব্যানার্জী

কমল ব্যানার্জী / ৩২৯ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫

মেদিনীপুর জেলার পুরাকীর্তির দুই বিখ্যাত গবেষক শ্রীতারাপদ সাঁতরা ও শ্রী প্রণব রায় মহাশয় মোটামুটি একই সময়ে (১৯৮৬/৮৭ সালে) ঘাটালের কাছে নবগ্রামের বিখ্যাত রায় (কংসবণিক ) পরিবারের তৈরি সিংহবাহিনী মন্দিরের ক্ষেত্রসমীক্ষা করে লিখেছিলেন — “এ গ্রামের উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি হলো, রায়পাড়ায় রায় পরিবারের গোপাল ও সিংহবাহিনীর পুবমুখী পঞ্চরত্ন মন্দির। এ মন্দিরে নিবদ্ধ প্রতিষ্ঠাফলকটির পাঠ নিম্নরূপ : “শকাব্দা ১৬৩১ … অতএব ১৭০৯ খ্রীস্টাব্দ এটির প্রতিষ্ঠা কাল”। আঠারো শতকের একেবারে গোড়ার দিকে এটি তৈরি হয়েছিল।

এরপর কেটে গিয়েছে তিন শ’ বছর। একদিকে জমিদারী উচ্ছেদ, অন্যদিকে পরিচর্যার অভাবে, সর্বাঙ্গে জরার আঘাত নিয়ে মুমূর্ষু হয়ে হারিয়ে যাওয়ার দিন গুনছে লিপিসাক্ষ্যে সর্বপ্রাচীন নবগ্রামের (ঘাটাল) সিংহবাহিনী (১৭০৯ স্ত্রীঃ) মন্দিরটি। মন্দির আজ বিগ্রহহীন। ওনাদের সকলেই একমত যে পোড়ামাটির ফলকসজ্জর উৎকর্ষতায় নিরিখে এটি মেদিনীপুর জেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ মন্দির হিসাবে গন্য হতে পারে। তারও দশ বছর আগে জেলার অগ্রণী গবেষক পঞ্চানন রায় কাব্যতীর্থ মহাশয় প্রণব রায়ের সাথে যৌথভাবে “ঘাটালের কথা” বইয়ে এটির বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছিলেন।ওনাদের সম্মিলিত দৃষ্টিতে দেখা সৌন্দর্যের অনেকখানিই আজ ম্লান হয়ে এসেছে । যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে সে সম্পর্কে বলা যায় “প্রবেশপথের উপরে লঙ্কাযুদ্ধের বিভিন্ন দৃশ্যের ফলকগুলি একান্তই মনোরম। মন্দিরের সামনে ত্রিখিলান প্রবেশপথের ওপরের তিন প্রস্থে, কার্নিশের নীচে ও দুপাশে পোড়ামাটির ফলকের ছড়াছড়ি। মূর্তিগুলি ছোট ছোট ছাঁচে তৈরি। ভিত্তিবেদিসংলগ্ন দেওয়ালের প্যানেলগুলিতে সামাজিক দৃশ্যপট যেমন, শিকার দৃশ্য, প্রহরীসহ শৃঙ্খলিত বন্দী প্রভৃতি রয়েছে।

বেশ কয়েকটি ফলক নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকটি প্রতিকৃতি দেউলে শঙ্খবাদনরতা নারীমূর্তি উল্লেখযোগ্য। ছোট্ট ছোট্ট কুলুঙ্গীতে রাধাকৃষ্ণ, পূতনাবধ, ধেনুকাসুরবধ, গায়িকা, সন্ন্যাসী, বাদক প্রভৃতির মূর্তিও আছে। একটি ফলকে মহিলার টিয়াপাখিকে খাওয়ানোর দৃশ্যটি অনবদ্য। মন্দিরটির দক্ষিণদিকেও একটি অলিন্দ আছে। এছাড়া স্তম্ভমূলেও উৎকীর্ণ হয়েছে শিকারযাত্রা ও সন্ন্যাসীদের মিছিল। এ মন্দিরের অলঙ্করণসজ্জার আর এক বিশেষত্ব হল, পোড়ামাটির ফলকের সঙ্গে সবুজাভ মাকরা পাথরে উৎকীর্ণ অনুপম ভাস্কর্যযুক্ত ফলকের ব্যবহার, যা এ মন্দিরের শিল্পী-স্থপতির কারিগরী মুন্সীয়ানার প্রমাণ দেয়”। এরমধ্যে আরও ষাট বছর কেটে গিয়েছে বিগ্রহহীন এই মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আরও জীর্ণ হয়েছে। রায় পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্য অসিত রায় জানালেন তাঁদের পূর্বপুরুষের কাঁসাপেতলের বড় ব্যবসা ছিল।

নবগ্রামের পাশ দিয়ে এক সময়ে প্রবাহিত হত রত্নাকর নদ। বর্তমানে যা প্রায় খালে পরিণত হয়েছে। সেই নদীতে বর্ষাকালে বড় নৌকা আসত। রত্নাকর নদ থেকে শিলাবতী হয়ে জল পথে দেশে বিদেশে বহু জায়গায় পৌঁছে যেত রায়েদের কাঁসাপিতলের পণ্য সামগ্রী। ধীরে ধীরে বিত্তশালী হয়ে ওঠে রায় পরিবার। সময়ের নিয়ম মেনে সুখের দিনে গোপাল ও সিংহবাহিনীর মন্দির এবং শিবের মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। কোনো এক সময়ে পণ্য বোঝাই নৌকাডুবিতে দুর্দিন নেমে আসে পরিবারে।

পরবর্তী কালে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপর্যস্ত পরিবারের উত্তরাধিকারীরা মন্দির সংরক্ষণের জন্য কিছুই করে উঠতে পারেননি। ফলে এক সময় শিব মন্দিরটি ধূলিস্যাৎ হয়ে যায় । কালের রক্তচক্ষুকে অবহেলা করে টেরেকোটা ফলকে মোড়া সিংহবাহিনীর মন্দিরটি আজও দাঁড়িয়ে আছে। অবিলম্বে এই প্রাচীন মন্দিরটির সংস্কার ও সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন।


আপনার মতামত লিখুন :

5 responses to “সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে সিংহবাহিনী মন্দির, নবগ্রাম (ঘাটাল) : কমল ব্যানার্জী”

  1. প্রনব রঞ্জন সৎপথী। says:

    শিল্পীর নিপুণ হাতে তৈরী মন্দিরের ভাস্কর্য সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এমন স্থাপত্য কলার অবলুপ্তি মেনে নেওয়া যায় না। স্থানীয় গুণীজনদের চেষ্টায় সরকারি বা বেসরকারি ভাবে এগুলি রক্ষা করা সম্ভব।

    • Kamal Banerjee says:

      স্থানীয় মানুষ যদি এগিয়ে আসেন তবে জঙ্গল মুক্ত করে এগুলি অনায়াসে পর্যটনের যোগ্য হয়ে উঠতে পারে

  2. Sanjukta Ghosh says:

    শ্রী কমল ব্যানার্জি মহাশয় দীর্ঘদিন ধরেই বাংলার হারানো মন্দিরগুলি নিয়ে নিরলস কাজ করে চলেছেন।
    আপনাদের ধন্যবাদ এগুলি জনগোচরে আনবার জন্য

  3. Suchandra Chakravarty says:

    আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই মন্দিরটির ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে লেখার জন্য। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে সঙ্গে কি কোনও আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে? মন্দিরটির accessibility কিরকম? কাছাকাছির মধ্যে আর কিছু আছে?

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন