বুধবার | ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৪৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
অদ্বৈত মল্লবর্মণ — প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য-সমালোচক (তৃতীয় পর্ব) : রহমান হাবিব কাশ্মীরী মন্দির — অবহেলায় না অনীহায়? অবন্তীস্বামী ও মার্তন্ড মন্দির : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী মমতার স্পষ্ট বার্তা — আগে বাংলার মানুষ আলু খাবে, তারপর বাইরে পাঠানো হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় অদ্বৈত মল্লবর্মণ — প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য-সমালোচক (দ্বিতীয় পর্ব) : রহমান হাবিব লঙ্কা চাষ বাড়ছে, লাভবান চাষিরা, রপ্তানি বাড়াতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পাশাপাশি, তবে প্রাণ নেই, চিহ্ন বইছে ভেলুগোন্ডা, রবিবার জল সরার পরে : অশোক মজুমদার নলিনী বেরার কবিতা — স্বভূমি, স্বদেশ, স্বজন : ড. পুরুষোত্তম সিংহ অদ্বৈত মল্লবর্মণ — প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য-সমালোচক (প্রথম পর্ব) : রহমান হাবিব রংবাহারি ক্যাপসিকাম : রিঙ্কি সামন্ত রাজ্যের কৃষকমান্ডিতে কৃষকদের ধান বিক্রিতে দালাল মুক্ত করার নির্দেশ সরকারের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘উচ্ছেদ’ আমাদের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং নানা মত : তপন মল্লিক চৌধুরী বেঙ্গল গোট গ্রামীণ অর্থনীতিতে এনে দিতে পারে স্বচ্ছলতা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পিটার নাজারেথ-এর ছোটগল্প ‘মালদার’ অনুবাদ মাসুদ খান আমরা নারী-আমরাও পারি : প্রসেনজিৎ দাস ঝুম্পা লাহিড়ীর ছোট গল্প “একটি সাময়িক ব্যাপার”-এ অস্তিত্ববাদ : সহদেব রায় ঝুম্পা লাহিড়ী-র ছোটগল্প ‘একটি সাময়িক বিষয়’ অনুবাদ মনোজিৎকুমার দাস ঠাকুর আমার মতাে চিরকালের গৃহীর চিরগুরু : সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ভাবাদিঘির জট এখনও কাটেনি, বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি রেল চলাচল শীঘ্রই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (শেষ পর্ব) : অভিজিৎ রায় উৎপন্না একাদশী মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত মারাঠাভুমে লাডকি বহিন থেকে জয়, ঝাড়খণ্ডে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী প্রচারে হার : তপন মল্লিক চৌধুরী কিন্নর-কৈলাসের পথে : বিদিশা বসু হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (চতুর্থ পর্ব) : অভিজিৎ রায় ভনিতাহীন চলন, সাইফুর রহমানের গল্প : অমর মিত্র সাইফুর রহমান-এর বড়োগল্প ‘করোনা ও কফিন’ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (তৃতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় নানা পরিচয়ে গৌরী আইয়ুব : গোলাম মুরশিদ হাইপেশিয়া — এক বিস্মৃতপ্রায় গনিতজ্ঞ নারীর বেদনাঘন উপাখ্যান (দ্বিতীয় পর্ব) : অভিজিৎ রায় কেন বারবার মণিপুরে আগুন জ্বলে আর রক্ত ঝড়ে : তপন মল্লিক চৌধুরী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বাংলার ধানের গোলা

বিশ্বেন্দু নন্দ / ২৩১২ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সারা পৃথিবীর ধান্য উত্পাদক অঞ্চলেই ধান রাখার আগারের কথা পাওয়া গিয়েছে। বাংলার নানান প্রান্তে নানান ধরনের ধান গোলা তৈরি হয়। গঠণের তারতম্যে এদের ভিন্ন ভিন্ন নামকরণ হয়। মরাই বা তলা, কড়ুই, বাঁদি, ডোল ইত্যাদি।

গোলা

প্রচুর পরিমান ধান রাখা যায়। অন্ততঃ ৫ থেকে ১০ মন পর্যন্ত। সেগুলির চেহারা অনেকটা আয়তকার বাড়ির মত। মেঝে সাধারণত মাটিরই হয়, আবার পাকাও হতে পারে। এর স্থান মাটির কিছু ওপরেই। এর ভেতরে এক বা অনেক কুঠুরিও থাকতে পারে। গোলার দেওয়ালে থাকে জানালা। মই বা সিঁড়িতে উঠে এই গোলাতে ঢুকতে হয়। গোলার দেওয়াল নিকোনো মাটিরও হতেপারে আবার আজকালের রীতি অনুযায়ী সিমেন্ট দিয়ে লেপাও হয়। গোলার নিচের ছোট দ্বার খুলে দিয়ে নানান সময়ে প্রয়োজনে ধান বেরকরা হয়।

মরাই

মরাই নানান কিছু দিয়েই হতে পারে। দক্ষিণ বঙ্গের নানান জেলায় হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলায় খড়ের দড়ি পাকিয়ে পাকিয়ে প্রায় শঙ্কু আকৃতির ২০ থেকে ৪০ হাত পর্যন্ত উঁচুও মরাই তৈরি হয়। এছাড়াও বাঁশের বাঁখারির বুকো বা বোনা চাটাই দিয়েও মরাই তৈরি হয়। মরাইতে সাধারণতঃ ১ থেকে ৪ মন পর্যন্ত ধান রাখা যায়। মরাই তৈরির পদ্ধতি দেশজ কারিগরি দক্ষতার একটি বড় শৃঙ্গ।

মরাই-এর প্রধান উপকরণ পাকানো অথবা বিনুনি পাকানো খড়ের দড়ি, বীরভূমে যাকে বর বলে। খড়গুলিকে আগি ভিজিয়ে রেখে শুকিয়ে নিয়ে নরম করা হয়। এবার পাকানোর কাজ। এক হাতে কাজ হলে বিনুনিটি বেশ চওড়া হয় আর দুই হাতে— একজন পাকানো আর এক জন খড়ের যোগান দিলে সেই বিনুনি অনেক সরু হয়। খড়ের পর খড় জুড়ে দীর্ঘ বিনুনি তৈরি করা হয়। সাধারণতঃ নিম্ন আয় সম্পন্ন বাড়িতে এক জন সাহায্যকারী থাকেন যিনি দক্ষ কারিগরকে হাতজুড়ে সাহায্য করেন।

মরাই তৈরির জন্য মাটির ওপর সমান্তরাল দুটি মাটির দেওয়াল তৈরি করা হয়। একে পায়া বলে। এর ওপর সমান্তরালভাবে বাঁশ সাজিয়ে মেঝেটা ঘন করা হয়। মেঝে হয় দুই হাত থেকে তিন হাত ব্যাসের। মাটি থেকে দেড় থেকে ৩ হাত উঁচু হতে পারে এই মেঝে। মেঝেয় ঘনকরে সাজানো বাঁশের ওপর খড় বিছিয়ে দেওয়া হয়। যেমন আকৃতির মরাই গৃহস্থ চাইছেন সেই আকৃতির মেঝে করে সেটির ওপরে বরকে গোল করে ঘুরিয়ে রাখা হয়। এই বরগুলেকে ঠিকঠাক গোল করার জন্য বাঁশের বাতা দিয়ে টেনে রাখা হয়, যাতে এগুলি গুটিয়ে না যায়। নিচের থেকে ওপরের অংশ অনেকটা চওড়া হয়। বরের ভেতরের অংশে বরগুলিকে ঘণকরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

এবারে মরাই-এর ওপরে ছাওয়ার পালা। আর এক প্রকার পাকানো দড়ি যাকে বুট বলে, তা নিচেরদিকে বেড় দেওয়া হয়। বেড়ের ভেতর খড়কে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। পুরো মরাই তৈরি হয়ে গেলে মাথা ছাওয়ার কাজ। খড়ের গোড়ার দিকটা ছাউনির ভেতরে থাকে আর মাথার দিকটা বাইরে। প্রায় শ’পণের মতো খড় লাগে একটা মরাই ছাইতে। ছাওয়ার পর এবার মাথায় খড় দিয়ে মুকুট তৈরি হয়, যাতে ভেতরে জল না পড়ে।

মরাইতে দুতিন বছর পর্যন্ত ধান রাখা যায়। ধান বের করা হয়েগেলে বরগুলি গুছিয়ে রাখতে হয়। ধান বের করার দরকার হলে নিচের দিকের দুটি বরের মাঝখানে শাবল দিয়ে ফাঁক করে এই ফাঁকে একটা বাতা গুঁজে ফাঁকটা রেখে দেওয়া হয়। এবার সামনে মেচলা বা যে কোনো পাত্র ধরলে সেই পাত্রে ধান পড়ে। তবে খুব বেশি ধান এই মরাই থেকে বের করা হয় না, ধসে পড়ার আশংকা থাকে।

কড়ুই

বাখারির চাটাই দিয়ে মাটির মেঝে করে (বর্তমানে সিমেন্টের মেঝে) কড়ুই তৈরি হয়। সাধারণত ঘরামিরাই এধরনের পরিকাঠামো তৈরি করেন। কাঠামো তৈরি পর জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। তারপর শুকিয়ে আলকাতরা মাখানো হয় দীর্ঘ সময় বাঁচিয়ে রাখার জন্য। উল্টো শঙ্কু-আকৃতির হয় কড়ুই। ধান ঢালার জন্য ওপরে বড় দ্বার আর নিচে ধান বের করার জন্য ছোট দ্বার তৈরি হয়। কড়ুই-এর ভিতরের দিকে মাটি, খড়েরকুচি, আর গোবর জলে গুলে প্রলেপ দেওয়া হয়। এই প্রলেপের জন্য কড়ুইতে অতিরিক্ত হাওয়া ঢুকতে পারে না। কড়ুই-এর ছাদ মরাই-এর মতই ছাওয়া হয়। ছোট থেকে বড় নানান আকৃতির কড়়ুই হয়। ৩০ থেকে ২৫০ মন পর্যন্ত ধান এই আধারে রাখা যায়। সাত থেকে ১০ হাত পর্যন্ত এইগুলি উঁচু হয়। মাঝে মধ্যে দেওয়ালে আলকাতরা লাগিয়ে আর মেঝেতে গোবরের প্রলেপ নিকিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।

ডোল

অনেকগুলি চটের বস্তা পরপর সেলাই করে জুড়ে বড়সড় ব্যাগের আকার দেওয়া হয়। একেই ডোল বলে। এর মধ্যে ধান রাখা হয়। খড় মাটিতে বিছিয়ে তার ওপর সেলাইকরা ডোল রেখে তার ওপর দিয়ে ধান ঢালা হয় এবং এমন এক যায়গায় রাখা হয়, যাতে মাথার ওপর ছাউনি থাকে। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রয়োজনে ধানের বস্তাগুলোকে সহজেই চালে ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা হল ডোল।

বাঁদি

নানান আদিবাসী অঞ্চলের ধান রাখার পাত্র বাঁদি। খড় দিয়ে কোকুনেরমত আধার তৈরি করা হয় তার নাম বাঁদি। আড়াই থেকে তিন ফিট আকারের এই বাঁদি হয়। বর দিয়েই জড়িয়ে এই বাঁদি তৈরি করা হয়। দু-থেকে তিন মনেরমত ধান এই বাঁদিতে রাখা হয়। ঘরের উঁচু স্থানে বাঁদিগুলি মাচা বেঁধে রাখা হয়। কোড়া, সাঁওতাল সমাজ এই ধরনের আধারে ধান রাখেন।

ধান্যগলি

হুগলির আরামবাগ অঞ্চলে মাটির বাড়ি তৈরির সময় দেওয়ালের মধ্যে কলাগাছের কান্ডেরমত পচনশীল সামগ্রী রেখে দেওয়াল তৈরি হয়ে গেলে দেওয়ালে ভেতরে ফাঁকা অঞ্চল গলিরমত দেখতে হয়। তাই এই নাম গলি, আর ধান রাখা হয় বলে এর নাম ধান্যগলি। দু-তিন তলা মাটির বাড়ি হলে এই এই গলিপথ বেশ বড় হয়। ওপর থেকে ধান ঢেলে নিচে ধান বের করানোর স্থানটি কপাট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রয়োজনে কপাট খুলে ধান বের করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন