শুক্রবার | ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:২৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস মহাকুম্ভ উপলক্ষে এবার যে জনপ্লাবন দেখা যাচ্ছে, তা এককথায় অভূতপূর্ব : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘আখের রস’ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সরস্বতী দিদিমণি’ মহাকুম্ভ থেকে মহাদুর্ঘটনা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুঁজছে মাটির নিরাপত্তা : রিঙ্কি সামন্ত জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার মির্জা নাথানের চোখে বাংলার ভুঁইয়াদের হাতি : মাহবুব আলম ভিয়েতনামের গল্প (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত “কপোতাক্ষ নদ”-এর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত : আসমা অন্বেষা কৃষ্ণনগরে সর্বধর্ম ভ্রাতৃত্ব সমাবেশ : ড. দীপাঞ্জন দে চোখের ক্যানসার থেকে সাবধান! দিন দিন বাড়ছে, আগাম সতর্কতা জরুরি : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী রাখাইন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বিদ্বজ্জনসমাজ ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কবিয়ালের প্রেত : অসিত দাস ষষ্ঠীলা একাদশী বা ষটতিলা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত একদা বিরুদ্ধরাই আজ নেতাজির স্তুতিগানে সরব : সন্দীপন বিশ্বাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

রবীন্দ্রনাথ ও পুরীর মন্দির : অসিত দাস

অসিত দাস / ৪২১ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, “রবীন্দ্রনাথ ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দির দেখেন, কিন্তু পুরীর মন্দিরে প্রবেশ করেন নাই শুনিয়াছিলাম। আর-একজন প্রবেশ করেন নাই পুরীর মন্দিরে— তিনি মহাত্মা গান্ধী।”

রবীন্দ্রনাথ কালান্তর-সংযোজন পর্বে হিন্দুমুসলমান প্রবন্ধে সখেদে লিখেছেন, “হিন্দু দেবতা পর্যন্ত জাত বাঁচিয়ে চলেন, স্বয়ং জগন্নাথ পর্যন্ত প্রত্যক্ষদর্শনীয় নন। বৈমাত্র সন্তানও মাতার কোলের অংশ দাবি করতে পারে, — ভারতে বিশ্বমাতার কোলে এত ভাগ কেন।”

রবীন্দ্রনাথ শেষবারের জন্য পুরীতে যাত্রা করেন ১৯ এপ্রিল ১৯৩৯। বলাবাহুল্য জমিদারিসূত্রে পুরীতে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির বসতবাড়ি ছিল। যা পরে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠাকালে তাঁকে বিক্রি করতে হয়েছিল। উড়িষ্যার নবগঠিত প্রদেশে নতুন শাসনব্যবস্থায় কংগ্রেসের শাসন প্রবর্তিত হয়েছে; কবি কংগ্রেস গভর্নমেন্টের অতিথি। তখনকার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিশ্বনাথ দাস।

রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে উড়িষ্যার সম্বন্ধ বহুকালের। এমনকি উড়িষ্যায় এক সময় দ্বারকানাথ ঠাকুরের জমিদারি ছিল। মহর্ষির জীবিতকালে বহু বছর সমস্ত জমিদারি একসঙ্গে ছিল, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের এস্টেট তখনও পৃথক হয়নি। সেই অখণ্ড জমিদারি তদারক করবার জন্য রবীন্দ্রনাথকে একাধিকবার পুরীতে আসতে হয়। পুরীতে কবির একটি বাড়ি ছিল; ‘পোড়াবাড়ি’ নামে সেটি পরিচিত। কবি তৈরি বাড়ি কেনেন এবং গগনেন্দ্রনাথরা জমি কিনে ‘পাথারপুরী’ নামে অট্টালিকা নির্মাণ করেন। পরে অর্থের প্রয়োজনে কবিকে ওই বাড়ি বিক্রি করে দিতে হয়।

কবির ৭৯তম জন্মোৎসব পালিত হয় পুরীতে। কবি আছেন সার্কিট হাউসে; এখানে বিহারীলাল গুপ্তের সঙ্গে তিনি আসেন প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে। কবি এখানে বসে অমিয় চক্রবর্তীকে লিখছেন, ‘মনে পড়ছে এইখানেই এই বাড়িতেই লিখেছিলুম— “হে আদি জননী সিন্ধু, বসুন্ধরা সন্তান আমার”— সমুদ্রে তখন বোধ হয় যৌবনের উদ্দামতা ছিল। তার সঙ্গে ছন্দের পাল্লা দেবার স্পর্ধাতেই আমার এ লেখা।’

আজ কবির বয়স আশির কাছাকাছি, আজ তিনি অনুভব করছেন, “এখনকার লেখায় সেদিনকার মত উদ্বেল প্রাণের অচিন্তিত গতিমত্ততা থাকতেই পারেনা, আছে হয়ত আত্মসমাহিত মনের ফলফলানোর নিগূঢ় আবেগ”।

পুরীতে কবি তিন সপ্তাহ ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁর জন্মদিন পড়ে। সেদিন [৮ মে ১৯৩৯] সার্কিট হাউসে উড়িষ্যার কয়েকটি মহিলা সমিতি সমবেতভাবে কবিকে সংবর্ধনা দেয়। পরদিন গভর্নমেন্ট পার্কে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বনাথ দাসের উদ্যোগে কবির জন্মোৎসব মহা-আড়ম্বরে উদ্‌যাপিত হয়। বহু সহস্র লোক উদ্যানে জমায়েত হয়। জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিতরা কবির আয়ুবৃদ্ধি কামনা করে সংস্কৃতমন্ত্র ও কবির গুণগান করে প্রশস্তি পাঠ করেন। এছাড়া উড়িষ্যার আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মানপত্র পাঠ করা হয়।

এইদিন চার্লস অ্যান্ড্রুজ় পুরীতে ছিলেন। তিনি কবির জন্মদিন উপলক্ষে একটি কবিতা পাঠ করেন—

Time can add to thy majestic brow

The snow-white radiance of the mountain height.

Thou canst look back on all the past years now

Veiled in the clouds below, white azure light

রবীন্দ্রনাথ সর্বশেষে তাঁর ভাষণ দেন। এই দিনে ‘জন্মদিন’ নামে কবিতা লেখা হয়—

তোমরা রচিলে যারে

নানা অলংকারে

তারে তো চিনি নে আমি,

চেনেন না মোর অন্তর্যামী

তোমাদের স্বাক্ষরিত সেই মোর নামের প্রতিমা।

পুরীতে থাকার সময় জন্মদিন সম্বন্ধে কবিতা ছাড়াও কবি আরও কয়েকটি কবিতা লেখেন। যেমন ‘এপারে ওপারে’ [নবজাতক], ‘অত্যুক্তি’ [সানাই]।

অমিয় চক্রবর্তীকে চিঠিতে লিখেছেন, “কল্যাণীয়েষু, পুরীতে এসেছি, সে খবর পূর্বেই পেয়েছ। উড়িষ্যায় যারা নতুন রাষ্ট্রনায়ক আমি তাদের নিমন্ত্রিত অতিথি। ব্যাপারটার মধ্যে নূতনত্ব আছে। …আমার কোনো কর্ম নেই, এখানে আমাকে কারো কোনোই প্রয়োজন নেই, যাঁরা আমাকে যত্ন করে রেখেছেন তারা আমার কাছ থেকে কোনো ব্যাবসায়িক পরামর্শ দাবী করেন নি। আমার শরীর-মনে সমুদ্রের হাওয়া যে শুশ্রূষাশীতল হাত বুলিয়ে দিচ্চে সেটা নূতন দায়িত্বপ্রাপ্ত উড়িষ্যাপ্রদেশের আতিথ্যের প্রতীক”।

যে রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে পুরীর মন্দিরের পুরোহিতরা কবির গুণগান করেন ও সংস্কৃত মন্ত্র পাঠ করেন কবির মঙ্গলাকাঙ্ক্ষায়, সেই রবীন্দ্রনাথকে পুরীর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এটা বিশ্বাস করতে মন সায় দেয় না। আসল সত্যিটা সামনে আসাই দরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন