মঙ্গলবার | ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:২০
Logo
এই মুহূর্তে ::
নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস মহাকুম্ভ উপলক্ষে এবার যে জনপ্লাবন দেখা যাচ্ছে, তা এককথায় অভূতপূর্ব : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘আখের রস’ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সরস্বতী দিদিমণি’ মহাকুম্ভ থেকে মহাদুর্ঘটনা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুঁজছে মাটির নিরাপত্তা : রিঙ্কি সামন্ত জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার মির্জা নাথানের চোখে বাংলার ভুঁইয়াদের হাতি : মাহবুব আলম ভিয়েতনামের গল্প (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত “কপোতাক্ষ নদ”-এর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত : আসমা অন্বেষা কৃষ্ণনগরে সর্বধর্ম ভ্রাতৃত্ব সমাবেশ : ড. দীপাঞ্জন দে চোখের ক্যানসার থেকে সাবধান! দিন দিন বাড়ছে, আগাম সতর্কতা জরুরি : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী রাখাইন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বিদ্বজ্জনসমাজ ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কবিয়ালের প্রেত : অসিত দাস ষষ্ঠীলা একাদশী বা ষটতিলা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত একদা বিরুদ্ধরাই আজ নেতাজির স্তুতিগানে সরব : সন্দীপন বিশ্বাস জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পদবি ঠাকুর থেকে Tagore হওয়ার নেপথ্যকাহিনী : অসিত দাস সুভাষের সুবাসে এখনও ম ম করছে ডালহৌসি শহরের বাতাস — এ এক তীর্থক্ষেত্র : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী তারাভরা তারানাথ (১৮১২-১৮৮৫) : নন্দিনী অধিকারী ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত জোটে ব্রাত্য কংগ্রেস কি দিল্লি ভোটের পর আরও গুরুত্ব হারাবে : তপন মল্লিক চৌধুরী খালাসিটোলা, রবীন্দ্রনাথ ও পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস পীযূষ পাঠ প্রস্তাব : ড. পুরুষোত্তম সিংহ
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী

নন্দিনী অধিকারী / ৫৪ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

আজ রাস্তায় হল্টার নেক ব্লাউজ,হাই টপ বুটের সঙ্গে খোলা আঁচল আর চুল উড়িয়ে এক বাসন্তিকা গটগট করে হেঁটে গেলেন।আমি উৎসুক, স্পন্দিত প্রেমিকের মত মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে রইলাম। ফিউশন পোশাকে যদি সুন্দরী বাস্তবে এমন স্বচ্ছন্দ হন তো শিল্পী আর কবির কল্পনা কি থেমে থাকতে পারে! তাঁদের তুলির আঁচড়ে,কলমের ডগায় নারী তো বটেই দেবীরাও বিচিত্রবেশধারিনী, নব নব রূপে আবির্ভূতা। যুগে যুগে কালে কালে আমরা তাই বিচিত্র ভাবনায় দেবদেবী কে পেয়েছি। সেই ভাবনার অনুসরণ করে মর্ত্যে তাঁদের আমাদের সুখদুঃখের সঙ্গী করেছি। কখনো তাঁরা আমাদের চৌহদ্দির সীমা ছাড়িয়ে স্বর্গলোকের বাসিন্দা হয়ে রয়ে গেছেন!

বসন্ত পঞ্চমীতে দেবী সরস্বতীকে আমের মুকুল,পলাশ ,অভ্র আর আবীরের অর্ঘ্য দিয়ে আমরা বরণ করে নিলাম। তিনি বসন্তদূতী হলেন। আমরাও সেজে উঠলাম বাসন্তীরঙের পোশাক-আশাকে।

সেই কোন যুগে সরস্বতী নদীর তীরে ঋষিরা বেদ পাঠ করতে করতে নদীকে দেবীত্বে উন্নীত করেছিলেন। নাম দিলেন বাগদেবী। বৈদিক জনগোষ্ঠী ভরতদের বিশেষ উপাস্যা বলে তিনি হলেন ভারতী।

এমন সুন্দরী দেবীটিকে আমাদের সুন্দর জাতীয় পক্ষীটির সঙ্গে খুব মানায়। তাই তিনি রাজহাঁসকে কখনো কখনো ময়ূরবাহনা। এই দেবীকে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মাবলম্বীরা আপন করে নিলেন।

বাংলার শিল্পীরা মেষকেও সরস্বতীর বাহন করেছেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সংগ্রহশালায়, আশুতোষ মিউজিয়ামে মেষবাহনা সরস্বতী শোভিত রয়েছেন। মেষবাহনার গল্পটিও ভারি মজার। বিদ্যার দেবীটি চিকিৎসা শাস্ত্রেও দড়। স্বর্গের ডাক্তার অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের সঙ্গে থেকে তিনি একবার দেবরাজকে সারিয়ে তুললেন। উপহারস্বরূপ সুরপতি ইন্দ্রের কাছ থেকে বীণাপাণি একটি মেষ উপহার পেয়েছিলেন।

অন্ধ্রপ্রদেশের একটি লেখতে কবি বর্ণনা করছেন, দুধসমুদ্রের অভ্যন্তর থেকে আবির্ভূত হয়ে সর্বশুক্লা দেবী এ ধরায় পা দিলেন। তাই তিনি এমন কুঁদফুলের মত সর্বশুক্লা। পরনে তাঁর শুভ্রবস্ত্র। হাতে ধরা শ্বেত পুন্ডরীক বা পদ্ম। তাঁর সঙ্গগুণে রাজহংসটিও ধবধবে সাদা। দুধ থেকে জল ছেঁকে পান করে পরম জ্ঞানী।

নৃত্যশীলা সরস্বতী মূর্ত হয়েছেন কর্ণাটকের ভাস্কর্যে। হালেবিড়ুর ভাস্কর্যে তিনি ষড়ভুজা। ডানদিকের তিন হাতে পদ্ম, অক্ষমালা, অঙ্কুশ। বামদিকের হাতে পাশ অস্ত্র, বীণা ও পুস্তক। তাঁর দুই দিকে দুই শিল্পী মৃদঙ্গ ও করতাল বাজাচ্ছেন।এই মূর্তিটি কি নটরাজকে মনে পড়ায়? হ্যাঁ সামান্য হলেও দুএকটি মূর্তিতে তিনি জটাজুটধারিণী, ত্রিনয়না। জটায় তাঁর অর্ধচন্দ্র। তাই তিনি শিবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

চতুর্ভুজা ব্রহ্মবাদিনীরূপে তিনি ব্রহ্মার মানসকন্যা। হাতে তাঁর কমন্ডলু, পুস্তক, রুদ্রাক্ষ এবং বীণা।

মহাদেব এবং ব্রহ্মার সঙ্গে জুড়ে আছেন অথচ বিষ্ণু কি বাদ যেতে পারেন?

পুরাণের কবি বললেন,তাঁর উৎপত্তি বিষ্ণুর জিহ্বাগ্র থেকে। তাই তিনি লক্ষ্মীর সপত্নী। তবে লক্ষ্মীর তুলনায় এক্ষেত্রে তাঁর মর্যাদা একটু কম। তাই শুধুমাত্র সরস্বতী-বিষ্ণুমূর্তি অদ্যাবধি পাওয়া যায় নি।

বৈকুণ্ঠে লক্ষ্মীঠাকরুণ নারায়ণের ঘর সংসার গোছান। ব্রত কথায় তিনি মর্ত্যের দরিদ্র ব্রাহ্মণের বাগানে ফুল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। শাস্তিস্বরূপ ব্রাহ্মণের সংসারে তিনি দাসীবৃত্তি করেন। এইসব কারণে তিনি বোধহয় তাঁর বোন মতান্তরে সতীনের থেকে আমাদের একটু বেশি আপন। প্রতি লক্ষ্মীবারে গেরস্তের ঘরে ঘরে পাঁচালির সুরে সুরে তাঁর আগমন। কোজাগরীর রাতে ঘরের সব আলো জ্বালিয়ে আমাদের তিনি জাগিয়ে রাখেন। পৌষ-ভাদ্র-চৈত্রে ধানের খুঁচিকে মা লক্ষ্মী সাজিয়ে, আল্পনা দিয়ে মনে মনে বলি,তুমি আমার ঘরে অচল থাকো।

সরস্বতী যেন সেই তুলনায় একটু দূরাগতা। বছরে একটিমাত্র দিন তাঁর জন্যে ধার্য। নৃত্যগীতপটিয়সী,সর্ববিদ্যাঅধিষ্ঠাত্রী দেবীকে বোধহয় আমরা একটু সম্ভ্রমের চোখেই দেখি। তিনি থাকেন মানুষের জ্ঞানে, মননে। ছাত্রদের পরীক্ষা পাসের ঠাকুর হয়ে।

এই সুযোগে কবি কালিদাস (বিক্রমোর্বশীয় কাব্য), অন্য গল্পকারেরাও দুই সতীনের ঝগড়া বাঁধিয়ে দেন। তাঁদের এই ঈর্ষাবিবাদের সূত্র ধরেই কি আমরা সাধারণ মানুষ সরস্বতীকে একটু আপন করে নিই! যেমন করে বারবার আমরা দেবতাকে প্রিয় করেছি!

যদিও বুদ্ধিমান মানুষ ও দূরদর্শী ভক্তদের চোখে সরস্বতী ও লক্ষ্মীর কোনো মৌলিক বিরোধ নেই। দুজনেই অপরূপা। প্রতিমা শিল্পে সমাদৃতা। সমান ক্ষমতাশালিনী। উপাসকরা দুই দেবীর কাছেই সমান প্রসাদ লাভ করতে পারেন। সংবৎসরপ্রদীপের প্রণেতা বলেছেন, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে লক্ষ্মী সরস্বতী দুই বোন তথা সতীনকে পুষ্প, ধূপ, দোয়াত, কলম দিয়ে পুজো করবে। শ্রী পঞ্চমী নামেই স্পষ্ট, এ তিথি সরস্বতীর সঙ্গে লক্ষ্মী পুজোর জন্যেও নির্দিষ্ট।

আমরা যে ঘরের মেয়েকে আদর করে একই সঙ্গে রূপে লক্ষ্মী, গুণে সরস্বতী বলতে ভালোবাসি!

তথ্যঋণ : প্রতিমা শিল্পে হিন্দু দেবদেবী, কল্যাণ কুমার দাশগুপ্ত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন