শনিবার | ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:১৫
Logo
এই মুহূর্তে ::
শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (দ্বিতীয় পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দশম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বুদ্ধদেব গুহ-র ছোটগল্প ‘পহেলি পেয়ার’ ‘দক্ষিণী’ সংবর্ধনা জানাল সাইকেলদাদা ক্যানসারজয়ীকে : দিলীপ মজুমদার শিবনাথ শাস্ত্রী ও তাঁর রামতনু লাহিড়ী (প্রথম পর্ব) : বিশ্বজিৎ ঘোষ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (নবম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘তোমার নাম’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (অষ্টম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত-র ছোটগল্প ‘হাওয়া-বদল’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার প্রবোধিনী একাদশী ও হলদিয়ায় ইসকন মন্দির : রিঙ্কি সামন্ত সেনিয়া-মাইহার ঘরানার শুদ্ধতম প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা খাঁ : আবদুশ শাকুর নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘শুভ লাভ’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ভোটের আগে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি নানাদিকে মোড় ঘুরছে : তপন মল্লিক চৌধুরী সরকারি নিষেধাজ্ঞা, জমির চরম ক্ষতি ও জরিমানা জেনেও নাড়া পোড়ানো বন্ধে সচেতন নন চাষিরা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার আবুল বাশার-এর ছোটগল্প ‘কাফননামা’ কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ব্লকবাস্টার ‘আরাধনা’-র ৫৫ বছর — রাজেশ-শর্মিলা হিট-এর নেপথ্যে… : রিঙ্কি সামন্ত কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কখনও কারও সমালোচনা না করার দুর্লভ গুণ ছিল শ্যামলবাবুর : সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের আত্মীয়-স্বজন (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কাত্যায়নী ব্রত : রিঙ্কি সামন্ত নটখট ছট : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কেবল নৈহাটি, নাকি ‘কংশাল’দের বন্ধু হতে চাইছে সিপিএম : তপন মল্লিক চৌধুরী অমৃতা প্রীতম — প্রেম, প্রগতি ও বিদ্রোহের এক অনন্য কবি : রুবায়েৎ আমিন তবু মনে রেখো… : সন্দীপন বিশ্বাস অন্নকূট পূজা হল গোবর্ধন পূজার আরেকটি নাম : আলোক চ্যাটার্জী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

পশুপতি প্রসাদ মাহাত, হুদুর দুর্গা আর আমরা : বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৮৮৪ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২

হুদুরদুর্গার গপ্পটা শুরু করেছিলেন প্রয়াত নৃতাত্ত্বিক পশুপতিপ্রসাদ মাহাত — যারা আটের দশকের শেষে নয়ের দশকের শুরু থেকে তাকে চিনতেন, তাঁর সঙ্গ করেছেন তারা নিশ্চিতভাবে জানবেন — মারা যাওয়ার আগে অবদি তিনি এই তত্ত্ব নিয়ে লড়ে গেছেন; পশুপতিপ্রসাদ মাহাত নির্বাকাইজেশন তত্ত্বের জনক। বাংলা ইংরেজিতে বেশ কয়েকটা বই লিখেছেন।

তার লক্ষ্য ছিল হয়ত নতুন ঝাড়খণ্ড রাজ্যের শিক্ষা বা সংস্কৃতি মন্ত্রী হওয়া। সে সময় দলিত তত্ত্ব ফাটাফাটিভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে — হাজার হাজার বছর ধরে জনজাতির মানুষেরা নিপীড়িত, এই তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়ছে দাবানলের মত। সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তিনি নির্বাকাইজেশন তত্ত্বটি আবিষ্কার করেন এবং তার সঙ্গে হুদুরদুর্গা গপ্পটি জোড়েন। এই থিওরি আর প্র্যাকসিস নিয়ে তিনি বহুকাল লড়ে গেছেন। আটের দশকের শেষে নয়ের দশকের শুরুতে পশুপতি প্রসাদ মাহাত বিভিন্ন আলোচনা সভার উঠতি স্টার। ‘দ্য উইক’ পত্রিকায় শ্যামল গাঙ্গুলির ছোট ভাই তাপস গাঙ্গুলি তাঁকে ফাটফাটি কভার করছেন। সদ্য প্রয়াত বিজয়দাকে তাপসবাবু বললেন ঝাড়খণ্ডের কিশোর কুমার। পশুপতিদা আর তাপসদা, এই দুজনের সঙ্গে একসঙ্গে প্রথম ঘোরা সোমেন রায় মার্ফত বাংলার ঝাড়খণ্ডিবেল্টে ডাইনি কভার করতে গিয়ে। আমি নারায়ণ মাহাত Narayan Mahata ঝাড়গ্রামে সোমেনদার বাড়ি থাকি আর তিনটে জেলায় ঘুরি। ডাইনি নিয়ে নাটক গান ইত্যাদি করি। ভাল সংগঠন গড়ে উঠেছে। সোমেনদা লিডার। শহরে থাকা পশুপতিদার পিপি [পাবলিক প্রসিকিউটর] বোনকে ডাইনি দেগে দেওয়া হয়েছিল, এই নিয়ে ফাটাফাটি চলছে।

যে কোনও মিটিং, মিছিল, সেমিনারে তিনি গান গেয়ে, কেঁদেকেটে হুদুরদুর্গা উদাহরণ সহযোগে নির্বাকাইজেশনের তত্ত্ব উপস্থিত করতেন। প্রথম বক্তৃতায় নতুন শ্রোতার কাছে তিনি অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণীয়, শ্রোতাকে তিনি মন্ত্রমুগ্ধ করেন; দ্বিতীয় বক্তৃতা শোনা দারুন অভিজ্ঞতা – গানে গল্পে অসামান্য; দুটো বক্তৃতার পর তৃতীয় বক্তৃতা শোনা ঠিক আছে চলে যায় গোছের, কিন্তু পরের চতুর্থ পঞ্চম থেকে তিনি প্রেডিক্টেবল আর তার পরে স্রেফ বিরক্তিকর।

কিন্তু সমস্যা হল, তিনি সমস্ত প্রতিভা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়েও দলিতদের তাত্ত্বিক হতে পারলেন না, মন্ত্রীও হতে পারলেন না। তিনি যে তত্ত্বটা প্রসব করলেন, সেটি এখন বিজেপি আর মুসলমান বিরোধী ‘দলিত’ তাত্ত্বিকদের কাছে সোনা ফলাচ্ছে। এরকম নিপীড়নের হাতে গরম তত্ত্ব কোথায় আর পাওয়া যাবে বিশেষ করে, পূর্বাঞ্চলের কোনও শিক্ষিত দলিত এর আগে এ ধরণের কথাই বলেন নি। তিনি শেষ অবদি মমতাকে আঁকড়ে ধরেছিলেন, সেখানেও একটা দুটো কমিটিতে থাকা ছাড়া খুব একটা দাঁত ফোটাতে পারেন নি।

এই তত্ত্বটা বাংলার বিজেপির/সঙ্ঘীদের দলিত সেল পরোক্ষে লুফে নেয়। সত্যিই তাই। বাংলার দুর্গা নিয়ে সঙ্ঘীদের তীব্র অস্বস্তি আছে। উত্তর ভারতে নবদুর্গা বা শেরাবালি আর বাংলার সিংহবাহিনী দুটো আলাদা কিসিমের, চরিত্রের, তত্ত্বের। হিন্দিবেল্টে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালির দুর্গাপুজা নিয়ে গুলিগোলা চলেছে, মারাও গেছে বহু বাঙালি। গত কাল আসামে পুজো বন্ধ হয়েছে। ফলে হিন্দি বিজেপিওয়ালারা বাংলার দুর্গা নিয়ে যে অস্বস্তিতে ছিল সেটি কাটাতে তারা গত পাঁচ ছয় বছর ধরে কলকাতায় ভদ্রবিত্তকে টানতে বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে দুর্গা পুজো আর সমান্তরালভাবে ওবিসি সেলকে দিয়ে হুদুরদুর্গা পুজো নিয়ে লড়ে গেছে।

দুর্গা পুজোর লাইমলাইট মমতা কেড়ে নিয়েছেন বিসর্জনের কার্নিভ্যাল করে; ফলে বিজেপির বাংলায় দুর্গাপুজো মোটেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হল না। বাংলায় মমতা দুর্গাপুজো হতে দেন না, তারাই পুজো করছে, বহু তত্ত্বের মত বিজেপির এটাও পাবলিক খেল না। তাদের হাতে সবেধন নীলমণি হুদুরদুর্গা পড়ে রইল। কিন্তু বিধানসভা ভোটের ধ্বসের পরে বিজেপির সেই দুদিন নেই। দুর্গা পুজোর ইচ্ছেটাও গেছে আর হুদুর দুর্গাকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন দেওয়ার প্রণোদনা নেই।

কিন্তু নির্বাকাইজেশন তত্ত্ব প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে যতটা লেখালিখি, মাঠময়দানে ঘোরার প্রয়োজন ছিল সেটা পশুপতি মাহাত দেন নি। তাছাড়া ভদ্রতাত্ত্বিকদের থেকে তিনি স্বাভাবিকভাবে চরম উপেক্ষা পেয়েছেন। দলিত আন্দোলনও তাকে আপন করল না। ভদ্রবিত্তের সমস্তরকম ভাইসেস নিয়ে তিনি তখন যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছিলেন, হয়ত ভদ্রবিত্ততাই তার কাল হল।

আড়াই দশক বা তারও আগে পশুপতিপ্রসাদ মাহাত যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন, সেটির এখন মরণ দশা। তিনিও নেই, তার প্রডিজিরা সব মুখ লুকিয়েছে। তিনি ছিলেন ক্রিমিলেয়ার — আজ এই শব্দের দিন গিয়েছে — কেননা আজ প্রত্যেক দলিত নেতা যেহেতু ক্রিমিলেয়ার, তাই তারা সেই শব্দ ব্যবহার করে না। কিন্তু সেদিন ক্রিমিলেয়ার শন্দটা দলিত নেতারা খুব ঘৃণায় ব্যবহার করতেন। চাকরি করতে করতে তিনি পিএইচটি শেষ করেন। ডকটরেট উপাধি পাওয়ার পর পুরোনো সমস্ত অশোকস্তম্ভওয়ালা লেটারহেড ফেলে দিয়ে তিনি এন্থ্রোপলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নতুন লেটারহেডে ডক্টর পশুপতি মাহাত লেখা শুরু করলেন; তার পূর্বজরা ক্ষত্রিয় আন্দোলনের নেতা — ক্রিমিলেয়ার। আমরা বলতাম নুন ছাড়া তাঁর পরিবারকে কিছুই কিনে খেতে হয় নি। দলিত ক্রিমিলেয়ারের এক তাত্ত্বিকের পক্ষে যতদূর যাওয়ার ছিল, তিনি গেছেন। সমস্যা ছিল তার গায়ের রঙ আর তার ধারালো জিভ। তিনি কাউকেই রেয়াত করতেন বলে মনে হয় নি। তিনি রাষ্ট্রীয়, কর্পোরেট জ্ঞানচর্চা নির্ভর দলিত আন্দোলন আজ নতুইন পথ দেখছে; তিনি সে সময়ে নেই। নির্বাকাইজেশনের তাত্ত্বিক আজ আর উদ্ধৃত হন না। কেননা তার পরের সময় সব শূন্য।

পশুপতি প্রসাদ মাহাত

দুই

দুর্গাপুজায় অসুর-দুর্গার গপ্পোটা আবার জেগে উঠছে। হুদুরবাদীদের কাছে কিছু প্রশ্ন তুলছি সঙ্ঘী দেগে যাওয়ার আশংকা নিয়েই।

গপ্পটা হল অসুররাজাকে হত্যা করে দুর্গার মাধ্যমে আর্যরা রাজ্য দখল করেছিল। এই প্রসঙ্গে আমাদের কিছু কথা আছে। নিবেদন করি। বলা দরকার আজকে আর্যত্ব বলে যেটা বুঝি, সেটা আদতে একটা ইওরোপিয় সাম্রাজ্যিক ধারণা — সেটাকে অপ্রশ্নভাবে বহন করে নিয়ে চলেছি আমরা মধ্যবিত্তরা উপনিবেশের আজ্ঞায়।

১। হুদুর দুর্গার এই উচ্চবর্ণীয় ব্যাখ্যাটা আর কত দিন চলবে? তাহলে প্রশ্ন অসুরেরা আজকের মত সামন্তবাদী রাজা ছিল কী? রাজাকে খুন করে কি আদিবাসী রাজত্ব দখল নেওয়া যায়? তাহলে কি অসুর রাজ্যে শাসন ব্যাবস্থাটা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিল অসুর রাজাকে খুন করার পর তার অনুগামীরা/প্রজারা খুনিদের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাত করেন নি? প্রত্যাঘাত করলে তার প্রমান কোথায়? তাহলে কি অসুর রাজা অত্যাচারী ছিল? রাজাকে খুন করার পর জনগণ খুনিকেই রাজা হিসেবে মেনে নেয়?

কিন্তু আমরা তো জানি অসুর, সাঁওতাল, মুণ্ডা, হো ইত্যাদিরা সামাজিক গোষ্ঠী ছিল — আজও আছে — সর্বসম্মতিক্রমে রাজা বা মণ্ডল বা মাঝি নির্বাচিত হত — প্রতিযোগিতা ছিল না, আজও নেই। সাম্রাজ্য তাদের বিরুদ্ধে গেলে কি হয়, সেটা উলগুলান বা সাঁওতাল যুদ্ধ অথবা হাল আমলের সুনীল-রবীন এবং গোটা বীরভূমের সাঁওতাল সমাজ খাদান আন্দোলনে দেখিয়ে দিয়েছে।

নারায়ণ মাহাত

উচ্চবর্ণীয় বুদ্ধিজীবিরা মনে করেন দেশিয় রাজা মানেই ইওরোপিয় ম্যানর-সামন্তবাদী কিং। সেই জন্যে এই ধারনাটা আসে অসুরদের রাজাকে খুন করলে রাজত্ব দখল হয়। তাহলে তো সেটা আরেকটি ভারতীয় সামন্ততন্ত্র।

এই বর্ণনা আদতে সেই সাম্রাজ্যবাদী কেন্দ্রিভূত রাজ্যের ইওরপিয় ধারণা।

আমাদের কি অন্য কিছু ভাবতে হবে?

আমি নয়ের দশকে প্রায় অর্ধদশক সক্রিয়ভাবে ঝাড়গ্রামে ছিলাম। সেখানে আমি কী দেখেছি, কী দেখিনি সেটা ভবিষ্যতের জন্যে তোলা থাক।

২। তার অর্থ আর্য অর্থাত সাম্রাজ্যবাদীরা সর্বক্ষমতাসম্পন্ন, তারা যা চায় তাই করতে পারে। তাহলে ধরে নিতে হবে অনার্যরা বুদ্ধিহীন? এই ধুয়াটিইবা কত দিন চলবে? সাম্রাজ্য সব করতে পারে না বলেই তাকে ঘুরপথে নানান কাণ্ড পরিকল্পনা করে ঘটাতে হয় – এটাও মনে রাখা দরকার।

৩। দুর্গা কবে এই হত্যাটা ঘটিয়েছিল তার সময়ক্রম পাওয়া যাবে? সেটা বাংলা তথা উপমহাদেশিয় ইতিহাসের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারি। এই হত্যালীলার বর্ণনা আন্দোলকারীরা এত গ্রাফিক আর দৃঢ়ভাবে বলছেন যে এই সময়টির নথি থাকার থাকার কথা। দুর্গাপুজাই কবে শুরু হয়েছে? খুন আর পুজা শুরু হওয়া — এই দুটো ঘটনার মধ্যে সময় সম্বন্ধ কি?

৪। একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া দরকার নিজের সামাজিক দক্ষতা ভুলে, নিজের সমাজের জ্ঞানচর্চা ভুলে একলব্য শম্বুক রাজতন্ত্রের পায়ে পড়াকে ইনিয়ে বিনিয়ে গ্লোরিফাই করাটাও আসলে উপনিবেশিক প্রগতিবাদের খেলা। তেমনি হিন্দু মন্দিরে কেন আদিবাসীরা পুজো করতে পারবেন না সেটাও পরম্পরার সমাজকে প্রগতিশীলতার নামে হিন্দু ফোল্ডে নিয়ে আসার ঘোমটা পরা তাগিদ। কেন হুদুর দুর্গায় আমার আস্থা নেই সেটা ওপরে বলেছি কারন প্রগতিবাদী ইসলামোফোবিক ছোটোলোকফোবিক হিন্দুত্ববাদী সমাজ মূলত কেন্দ্রিভূত স্মৃতি থাকবন্দী আর উপনিবেশিক অর্থনৈতিক কাঠামো নির্ভর। সাঁওতাল সমাজ গড়নে পরিচালনায় আজও অনেক ক্ষেত্রে কৌমতার বিপুল স্থান রয়েছে। দুটো সমাজের গড়ন আলাদা। ভদ্রবিত্তের হুদুর দুর্গায় আহাউহু আদতে একটা উপনিবেশিক প্রচেষ্টা, সাঁওতাল সমাজের যতটুকু কৌমতা টিকে আছে তাকে ধ্বংস করার এবং সাম্রাজ্যবাদী বানানোর প্রক্রিয়া।

৫। মোদিরা সামনে ভাংগেন, প্রগতিশীলেরা ভেতর থেকে। সেটা আরও ভয়ংকর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন