সোমবার | ২৮শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:৫৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
মা কালী যখন মহালক্ষ্মী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (দ্বিতীয় পর্ব) : শংকর মহাকাব্যে ভেড়ার উল্লেখ : অসিত দাস কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (প্রথম পর্ব) : শংকর রমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ও একাদশী পালনের নিয়মাবলী : রিঙ্কি সামন্ত আশাপূর্ণা দেবী-র ছোটগল্প ‘চাবি’ একে দানা-য় রক্ষা নেই তারওপর ডিভিসি-র ৪২ হাজার কিউসেক জল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (নবম পর্ব) : বিজয়া দেব চেতনার সমস্যা, সামাজিক অবকাঠামো এবং বলপ্রয়োগ : এরিক ফ্রম, অনুবাদ ফাতিন ইশরাক বারবার ভিলেন সেই বঙ্গোপসাগর : তপন মল্লিক চৌধুরী নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রাখাইন পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ‘দানা’ থেকে ভয় পাবেন না, সতর্ক থাকুন, মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুত : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সই বা বন্ধুত্ব স্থাপনের উৎসব সয়লা : রিঙ্কি সামন্ত প্রথম পাঠ — “নিশিপালনের প্রহরে” নিয়ে, দুয়েকটি কথা : সোনালি চন্দ বৃহন্নলার অন্তরসত্তা : নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী দুই দশক : শৈলেন মান্না ভরা বর্ষায় জলপ্রপাতের মুখোমুখি… : বিদিশি বসু দামোদর মাউজো-এর অনুবাদ গল্প ‘হরতাল’ বঙ্গে কুবেরের পূজা : অসিত দাস বাংলা সাহিত্যের দেবতারদের দেখা মেলে ওই ঘরেই : অশোক মজুমদার মালবাণকে ছুঁয়ে রূপোলী সমুদ্রসৈকতে : নন্দিনী অধিকরী মার্ক্সবাদ, মনোবিশ্লেষণ এবং বাস্তবতা : এরিক ফ্রম, অনুবাদ ফাতিন ইশরাক সাহিত্যের প্রাণপ্রবাহে নদী : মিল্টন বিশ্বাস এবার দুর্গা পুজোকেও ছাপিয়ে গেল রানাবাঁধের লক্ষ্মীপুজো : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় দেড় হাজার বছর প্রাচীন ঘোষগ্রামের লক্ষীকথা : রিঙ্কি সমন্ত হুতোমের সময় কলকাতার দুর্গোৎসব : অসিত দাস নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘বৈতালিক’ কোজাগরীর প্রার্থনা, বাঙালির লক্ষ্মীলাভ হোক : সন্দীপন বিশ্বাস তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ ভাবাদিঘিতে ফের জোর করে বন্ধ করা হলো : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর — অনেক বিদ্যাসাগর মাঝে তিনি একক : প্রলয় চক্রবর্তী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই মহাঅষ্টমীর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

মুঘল তাঁবু, শিবির আকার এবং অন্যান্য : বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ৩১৬ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

মুঘল বাহিনী আকার

Thus, in 1650 [শাহজাহানের আমলে], the imperial camp probably contained about 320,000 persons. Although this is a rough estimate, with an error of perhaps 10 to 20 percent on either side, it is buttressed by contemporary evidence. Two European observers reported 50,000-60,000 horsemen in Aurangzeb’s camp in the late eighteenth century and Careri estimated its circumference at thirty miles. In addition, Francois Bernier estimated the population of Shahjahan’s great camp at 300,000-400,000 [১৬৫০-এ ১০-২০ শতাংশ বাড়া কমা ধরে নিয়ে শাহী শিবিরে ৩ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ থাকত। বার্নিয়ে কারেরি বলেছেন আওরঙ্গজেবের সময়ে শতাব্দ শেষে, শাহী বাহিনীতে শুধু ঘোড়সওয়ার ছিল ৫০-৬০ হাজার; বার্নিয়ে বলছেন শাহজাহানের শিবিরে ৩-৪ লক্ষ মানুষ থাকত] — স্টিফেন ব্লেক, শাহজাহানাবাদ

বাহিনীর সঙ্গে জেনানার মহিলারা

রাজধানী থেকে বের হওয়া প্রত্যেক শাহী যাত্রাতেই সম্রাট এবং প্রধান অভিজাতর সঙ্গে সঙ্গে তাদের জেনানাসহ [আপনাদের ভাষায় হারেম] বিশাল পরিবার অংশ নিতেন। যুদ্ধের দিনটিতে মহিলাদের কিছু হাতিতে চড়িয়ে নির্দিষ্ট একটি বাহিনী মার্ফত তাঁবুর পিছনে নিরাপত্তা বিধান করা হত। এই বাহিনী অভিজাত এবং সম্রাটের তাঁবুর আশেপাশেই থাকত। ‘শিবির যেখানেই পড়বে, সেটাই আমাদের রাজধানী’ এই মোঙ্গল সূত্রেই হারেমকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরার পরিকল্পনা। ছোট ছোট যুদ্ধেও জেনানা মহল নিয়ে বেরোবার প্রথা মেনে চলা হত। উদাহরণস্বরূপ, প্রখ্যাত আমলা ভয়াবহ গাজিউদিন খান ইমাদউলমুলক, ষোল বছরে ঊজির পদে বৃত হন, তার ৫ থেকে ২০ বছর বয়স হওয়ার আগেই দুজন সম্রাটকে পদচ্যুত করেন। এই মানুষটা মামাদাদু কামারউদ্দিন খানের শিবিরে জন্মেছেন, মহম্মদ শাহর উজির কামারউদ্দিন তখন মালবে মারাঠাদের বিরুদ্ধে অভিযানে যাচ্ছিলেন। হায়দারাবাদের নিজামের তার প্রাসাদের মহিলাদের প্রতি এতই দুর্বলতা ছিল যে ১৭৬৮ তে লেখা হচ্ছে ‘তিনি যেখানেই যেতেন, তার সঙ্গে তার পছন্দসই স্ত্রীরা সঙ্গে নিয়ে যেতেন’। নিজাম আলি ব্যতক্রমী ছিলেন না, তিনি বহুকালের মুঘল সেনাপতিদের প্রথা অনুসরণ করছিলেন।

বার্নিয়ের হিসেবে পাঞ্জাবে আওরঙ্গজেবের শিবিরে ১ লক্ষ ঘোড়া, ৩ লক্ষ পশু ছিল আর ৩-৪ লক্ষ মানুষ ছিল। অঙ্কটা কিন্তু বাড়াবাড়ি নয়, কিন্তু বাহিনীর অঙ্কটা যদি অর্ধেকও হয়, তাহলেও বিশালকায়। গোটা দিল্লি আগরার সমগ্র জনসংখ্যাই মুঘল বাহিনীতে কাজ করত। স্টিফেন ব্লেক বলছেন মুঘল বাহিনীর যে কোনও যুদ্ধ অভিযানে যাওয়ার অর্থই ছিল শহর বেবাক প্রায়জনশূন্য হয়ে যাওয়া। ইতালিয় অভিযাত্রী জিওভানি ফ্রান্সিসকো জেমিলি কারেরি (১৬৫১-১৭২৫) দক্ষিণে[আপনাদের ভাষায় দাক্ষিণাত্যে] গালালার মুঘল তাঁবুতে ৬০ হাজার ঘোড়া, ১ লক্ষ পদাতিক, ৫০ হাজার উট, ৩ হাজার হাতি দেখেছেন। মুঘল বাহিনীর সঙ্গে তাদের সেবা দেওয়ার জন্যে থাকতে হত বিপুল পরিমান অসামরিক সহায়ক বাহিনী। যারা এই বিপুল বাহিনীকে নানান ধরণের সেবা দিত — না হলে বাহিনীর চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ত। সব মিলিয়ে শিবিরে সারাক্ষণ ৫ লক্ষ মানুষ থাকত। শিবিরে থাকা মানুষের দৈনন্দিনের বিশাল চাহিদা মেটাতে শিবিরজুড়ে ২৫০টা বাজার বসত।

দোতলা তাঁবু

কারেরি মুঘল বাহিনীকে ৩০ মাইল জোড়া চলন্ত শহরের সঙ্গে তুলনা করছেন। প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের জন্যে যে বিশাল শিবরটা পাতা হল, এবং সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেই বাজার চালাবার জন্যে যে রসদ জোগাড় করার দরকার হল, সেই কাজ সমাধা করার জন্যে কমকরে ৫০,০০০ ঘোড়া, উট এবং ষাঁড় বাহিত বাহিনী [ব্রিটিশদের ভাষায় বুলক ট্রেন] প্রয়োজন হত, বিশেষ করে শিবির পাতার আগে ছিল তাদের কাজ।

শিবির পাতার সরঞ্জাম অকুস্থলে অনেক গেই চলে যেত। যুদ্ধে যাওয়ার চাগাড় না থাকলে সাধারণভাবে মুঘল বাহিনী দিনে খুব বেশি হলে ১৬ কিমি চলতে পারত। বাহিনীর বহু আগে রাজকীয় মধ্যস্থ, রসদ বিষয়ে খোঁজখবর করা মানুষ, এবং শ্রমিক পাঠানো হত সেতু তৈরি করা, রাস্তা তৈরি করা, বাধা সরানো, শিবিরের উপযুক্ত জায়গা দেখা, শিবির পাতা, খাবারদাবার জোগাড় করা, বিপুল মানুষের জন্যে রান্নার ব্যবস্থা করা এবং স্থানীয় শাসকের সাহায্য চাওয়া ইত্যাদি কাজের উদ্দেশ্যে। শিবির পাতার জন্যে ২০০০ মানুষের অগুয়ান বাহিনী [যাদের উত্তরপ্রজন্ম আগুরিরা আজও হুগলী, হাওড়া বর্ধমান জুড়ে বাংলায় আছেন] যেত। তাদের হাত দিয়ে তাঁবুর দুটো করে সেট পাঠানো হত। প্রথমটা যেত দ্বিতীয় অকুস্থলে শিবির তৈরি করতে। অন্য একটা দল চলত সম্রাটের বাহিনীর সঙ্গে একই পরিমান তাঁবু শহরের সরঞ্জাম নিয়ে, যদি রাস্তায় কোথাও কিছুটা থামতে হয় বা রাত কাটাতে হয়। সম্রাটের বাহিনীর সঙ্গে যারা চলত তাদের বলা হত piche-kanesor। সাম্রাজ্যের ভাণ্ডার থেকে নানান বিশেষ খাদ্য পণ্য বয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং গুদাম মালিকদের থেকেও দৈনন্দিন বিপুল পরিমান নানান রসদ জোগাড় করতে হত।

রুবি লাল, এম্প্রেস — দ্য এসটনিশিং রেইন অব নুরজাহানএ বলছেন রাজধানীর বাইরের জাহাঙ্গিরের আম-দরবারের (বাবা আকবরের তাঁবুর মতই) তাঁবুগুলির মধ্যে মূল পাদশাহের তাঁবুতে থাকত তালা-চাবি দেওয়া দরজাওয়ালা ১০০০টা কার্পেট পাতা ৭২টা ঘর। শুধু বাদশাহী বিপুল বিশাল তাঁবু খাঁটাতে ৩৫০ গজ ছড়ানো কাছি লাগত, প্রতি ৩ গজ অন্তর কাছি মাটিতে বাঁধা হত। যে বাহিনী বা লস্করের [শিবির] যে ছাউনি পড়ত তার দৈর্ঘ ছিল তিন মাইল। Jahangir’s travelling [Hall of Private Audience was similar to that of his father, described in the Akbarnama, which contained 72 rooms decorated with 1,000 carpets, and had proper doors with locks. The structure was held up by ropes that stretched 350 yards and were fastened to poles set 3 yards apart.]

তাঁবুর আরও কিছু প্রকারভেদ

১০ হাজার মানুষ একসঙ্গে বসার মত বড় তাঁবু বারাঘ। তাঁবু খাটাতে ১০০০ ফারাসেকে এক সপ্তাহ শ্রম দিতে হত। সোনা রূপো, ভেলভেটের নকসা ছাড়া এধরণের সাধারণ তাঁবুর দাম পড়ত ১০,০০০ টাকা।

ছুবিন রাওতি হল ১০টা কাঠের স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা কাঠের তাঁবু। দুটো লম্বা বিম যার ওপর একটা আড়াআড়ি কাঠের বিম ফেলা হত। স্তম্ভগুলো খাড়া দাঁড়িয়ে থাকার জন্যে এবং তার সঙ্গে অন্যান্য বিম আটকানোর জন্যে বিমগুলির ওপরে এবং নিচে ত্রিভুজাকৃতি সাপোর্ট খণ্ড দাসা আটকানো থাকত। একটি বিমে লাগানো দাসার সঙ্গে বিম লাগিয়ে অন্য বিমের দাসার ওপরে আড়াআড়িভাবে ফেলা হত। এগুলো ক্ল্যাম্প, নাট আর বল্টু দিয়ে আটকানো হত। তার ওপরে অলঙ্করণ হত। একটা বা দুটো মুখোমুখি দরজা থাকত। নিচের দাসাটি একটি উঁচু কাঠের তক্তার পাটাতনের ওপর বসানো হত। মেঝে, দেওয়াল আর ছাদে ম্যাট লাগানো হত, তার ওপরে ব্রোকেড, ভেলভেট আর বাইরের অংশটা কস্তা রঙের হত। এগুলো দেওয়ালের সঙ্গে জোড়া থাকত প্রায় অদৃশ্য রেশমের সুতো দিয়ে।

বয়ে নিয়ে যাওয়া কাঠের তাঁবু দোতলা হত নাম ছিল দোআশিয়াঁ-মঞ্জিল। কাঠের উঁচু পাটাতনে ৬ গজি দৈর্ঘের ১৮টা থামের ওপর দোতলা তাঁবুর একতলা দাঁড় করানো হত। দোতলার জন্যে একতলার ওপরে ৪ কিউবিট দৈর্ঘের স্তম্ভ দাঁড় করিয়ে নাট ও বল্টু দিয়ে আটকিয়ে দোতলার কাঠামো তৈরি হত। এটা সম্রাটের শোয়ার, নামাজ পড়া এবং সকালের ঝরোখা দর্শন দেওয়ার ঘর।

আর ছিল সরপর্দা — বয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এমন পর্দা। মোটা ক্যানভাস কাপড়ে তৈরি। এটা আকবরের সময় থেকেই চলে আসছে। মুঘল সাম্রাজ্যের শেষের দিকে  কাঠের পর্দার নাম হয় গুলাবর। এগুলিকে চামড়ার স্ট্র্যাপ দিয়ে আটকানো হয়। এর ওপরে লাল রঙের কাপড় চাপানো হত আর আটকানো হত দড়ি দিয়ে। গুলাবর ছিল ন্যুনতম ১০০ গজের চৌকো তাঁবু ঘেরাটোপ। আরও অনেক বড় গুলাবরও তৈরি হত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন