রবিবার | ৩০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ও রোহিঙ্গা সংকটে অগ্রগতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন এথেন্সের অ্যাগনোডাইস — ইতিহাসের প্রথম মহিলা চিকিৎসক : রিঙ্কি সামন্ত সন্‌জীদা খাতুন — আমার শিক্ষক : ড. মিল্টন বিশ্বাস হিমঘরগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু মজুত, সস্তা হতে পারে বাজার দর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস প্রাণগৌরাঙ্গের প্রিয় পঞ্চব্যঞ্জন : রিঙ্কি সামন্ত ‘দ্য স্টোরিটেলার’ — শিল্প এবং বাজারের মধ্যে দ্বন্দ্ব : কল্পনা পান্ডে অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী দোহলী মানে অশোকবৃক্ষ, তা থেকেই দোল ও হোলি : অসিত দাস সিনেমা প্রেমীদের হোলির গান : রিঙ্কি সামন্ত দোলের আগের দিনের চাঁচর নিয়ে চাঁচাছোলা কথা : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

বেঁচে থাকুক বেণী পুতুল নাচ

পেজ ফোর, বিশেষ প্রতিনিধি / ১৪৮১ জন পড়েছেন
আপডেট সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১

পুতুল নাচ ভারতের এক জনপ্রিয় ও প্রাচীন ফোক পারফর্মেন্স। ঋক বেদ থেকে শুরু করে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে আমরা এই পুতুল নাচের উল্লেখ পাচ্ছি। এই পুতুলের পা নেই। হাতে দস্তানা বা ঘাগরা পরে আঙুলের নাড়াচাড়ায় দুটি পুতুলের কথোপকথন, নাচ, গান, ঝগড়া সবকিছু ফুটিয়ে তোলেন বেণী পুতুল শিল্পীরা। অতীতে এরা গ্রামে গ্রামে পুতুল বিক্রি করে বেড়াতেন। এখনও গ্রাম ও শহরের বহু মানুষ ঘরের দেওয়ালে বেণী পুতুল সাজিয়ে রাখেন। সেদিক থেকে বিচার করলে এই পুতুল একটা চমৎকার ঘর সাজানোর জিনিসও বটে।

আঙুল ও হাতের কারসাজিতে পুতুল নাচানোর সঙ্গে সঙ্গে শিল্পীরা “ও খেঁদি নাচবি খেঁদি রসের বিনোদিয়া” জাতীয় নানা ধরণের গান করেন এরা। তরজা জাতীয় গান ও নাটকীয় সংলাপ এই পুতুল নাচের বৈশিষ্ট্য।

পুতুলের মাথা ও হাত একটা বাঁশের লাঠির মাথার ওপরে থাকে। লাঠির নীচে থাকে ছিদ্র, সেই ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সুতোর সাহায্যে এরা পুতুল নাচান। পুতুল নাচাতে তারা মূলত ব্যবহার করেন মধ্যমা ও বুড়ো আঙুল। বেণী পুতুল তৈরি হয় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে। তালের আঁটি ও মাটি দিয়ে তৈরি হয় মুখ। শিল্পীদের হাতে বাধা থাকে ঘুঙুর। সেই ঘুঙুর বাজিয়ে শিল্পীরা গান করেন। পুতুলের চরিত্র অনুযায়ী সাজপোশাক তৈরি হয়। বেণী পুতুল লোকপ্রযুক্তির একটা বড় উদাহরণ। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত অরবিন্দ ঘড়াই বেণী পুতুল নাচের এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশভাগের আগে বাংলাদেশের বগুড়া এবং রাজশাহী জেলায় এই পুতুলের উদ্ভব। এরপর এই শিল্পীরা ছড়িয়ে পড়েন নদীয়ার রাণাঘাটে, সুন্দরবন এলাকায় এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক অঞ্চলে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু গ্রামে একসময় এই পুতুল নাচের শিল্পীদের দেখা পাওয়া যেত। এখন এরা মূলত থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেরিয়ার রাধাপুর, বাতেন্দা, ভূপতিনগরের পদ্মতামুলি, ভগবানপুরের খেজুরিয়া, বাসুদেববেড়িয়া, রসুলপুর, বৃন্দাবনচক এবং ঘোলাবার গ্রামে একসময় বহু বেণী পুতুল শিল্পী বাস করলেও এখন তাদের অনেকে অন্য জীবিকায় সরে গেছেন। পদ্মতামুলি গ্রামে এখনও এই শিল্পীরা সক্রিয়। পদ্মতামুলির বেণী পুতুল শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন বসন্ত কুমার ঘড়াই, শ্রীমন্ত ঘড়াই, পরশুরাম ঘড়াই, রামকৃষ্ণ ঘড়াই, অরবিন্দ ঘড়াই, অমল ঘড়াই, সুচিত্রা ঘড়াই এবং প্রতীক ঘড়াই প্রমুখ শিল্পীরা। এরা এখনও এই পুতুল নাচ দেখান। পদ্মতামুলি বেণী পুতুল শিল্পীদের গ্রাম হিসেবে পরিচিত।

পদবী বলছে এরা হাড়ি সম্প্রদায়ের মানুষ। দলিত সম্প্রদায়ের এই মানুষরা থাকেন হরিজন পল্লীতে। এদের অনেকেই আগে ছিলেন পালকি বেহারা। একসময় এই গ্রামে ৭০/৮০টি পরিবার এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দারিদ্র এবং কাজের সুযোগ না থাকায় অনেকে পেশা ছেড়েছেন। সুযোগ পেলেই আবার তারা এই পুতুল নাচে ফিরতে চান। অভাবের তাড়নায় শিল্পীদের অনেকেই এখন ছুতোর মিস্ত্রী, দিনমজুর, রিকশ চালানোর কাজ করেন। এই গ্রামের সেরা শিল্পী বসন্ত কুমার ঘড়াইয়েরও রয়েছে একটা মুদির দোকান।

বেণী পুতুলের একটা বৈশিস্ট্য হল, এর মবিলিটি বা পরিবহণ যোগ্যতা। যেকোন জায়গায়, যেকোন পরিবেশে খোলা আকাশের নিচে এই গ্লাভ পাপেটের শিল্পীরা অনুষ্ঠান করেন। সারা পৃথিবীতেই এই পাপেট খুব জনপ্রিয়। নাটক, বিজ্ঞাপন, প্রচার, রিয়্যালিটি শো সব জায়গায় বেণী পুতুলের ব্যবহার বাড়লেও এখানে স্রেফ ভাবনা ও উদ্যোগের অভাবে এই পুতুল নাচ বিপন্ন।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বেণী পুতুল শিল্পীরা এখন অনেকটা রড পাপেটের স্টাইলে ছোট ছোট নাটক দেখাচ্ছেন। তাদের পুরনো তাৎক্ষণিক সংলাপ রচনা ও গান বাধার দক্ষতা চর্চার অভাবে কমছে। গ্রাম্য সংলাপে জায়গা নিয়েছে প্রসেনজিৎ- ঋতুপর্ণার ঝগড়া। স্থানীয় লোকশিল্পীরা এই পুতুল নাচ নিয়ে জীবিকা করতে চান কিন্তু তারা কীভাবে এগোবেন, কীভাবেই বা অবিকৃত থাকবে এই পুতুল নাচ সেটা একটা বড় সমস্যা।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন