বুধবার | ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৪:২০
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস মহাকুম্ভ উপলক্ষে এবার যে জনপ্লাবন দেখা যাচ্ছে, তা এককথায় অভূতপূর্ব : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ছোটগল্প ‘আখের রস’ নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সরস্বতী দিদিমণি’ মহাকুম্ভ থেকে মহাদুর্ঘটনা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা খুঁজছে মাটির নিরাপত্তা : রিঙ্কি সামন্ত জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিকন্যা অরুণা আসফ আলি : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়

জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় / ৬৭৬ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০২১

সাম্প্রতিককালে জীবিত মানুষকে মৃত বলে ঘোষণার কথা সংবাদ দৈনিকে অনেকেই  পড়েছেন। এমনকি তাঁর মৃত্যুর পর পারিবারিক আচার অনুষ্ঠানের কথাও দেখা গিয়েছে। কিন্তু এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল ৯৩ বছর আগে, এই শহরের এক শিক্ষিত অভিজাত পরিবারে। একটি ১৯ বছরের মেয়েকে তাঁর কাকা মৃত বলে ঘোষণা করে শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছিল। বরিশালের ব্রাহ্ম পরিবারের অধ্যাপক নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর দাদা উপেন্দ্রনাথের কন্যা অরুণাকে আত্মীয় বন্ধুদের কাছে মৃতা ঘোষণা করে শ্রাদ্ধের আয়োজন করে। নগেন্দ্রনাথ  ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট মেয়ে মীরার স্বামী।

জীবিত অরুণাকে মৃত ঘোষবণার কারণ অরুণা তাঁর থেকে ২৩ বছরের বড় এক মুসলিম আইনজীবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী আসফ আলীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহেরু, সরোজিনী নাইডু, সি রাজাগোপাল আচারিয়া, মাওলানা আবুল কালাম আজাদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীরা।

অরুণার লেখাপড়া শুরু লাহোরে, পরে নৈনিতালের অল সেইন্ট কলেজ থেকে স্নাতক হন। তারপর কলকাতার গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। ইতিমধ্যে এলাহাবাদে অরুণার সঙ্গে পরিচয় হয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা আসফ আলীর। তারপরেই ১৯২৮ সালে তিনি তাঁর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ব্রিটিশ সরকার ‘লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা’র বিচার শুরু করলে, ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্তের হয়ে সওয়াল করেন আসফ আলী।

বিয়ের পরই অরুণা সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। লবণ আইন অমান্য আন্দোলনের সময় প্রথম বারের জন্য কারাবন্দী হন। ১৯৩১ সালে গান্ধী আরউইন চুক্তি অনুযায়ী সবাই ছাড়া পেলেও অরুণাকে ছাড়া হয়না। অন্যান্য মহিলা জেলবন্দীরাও তাঁর মুক্তির দাবিতে জেল থেকে বেরুতে অস্বীকার করে। গান্ধীজির হস্তক্ষেপে শেষমেশ ছাড়া পেলেন তবে বছর না ঘুরতেই আবার তাঁকে আটক করে তিহার জেলে বন্দী রাখা হলো। জেলে রাজনৈতিক বন্দীদের দুঃসহ অবস্থা দেখে শুরু করেন আমরণ অনশন। দশদিন পর অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয় তাঁর দাবি মেনে নিতে। তবে অরুনাকে বদলি করা হয় আম্বালা কারাগারে এবং সেখানে তাঁকে নির্জন সেলে রাখা হয়। ছাড়া পাবার পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে পড়াশোনা ও লেখালেখি তে মনোনিবেশ করেন।

বিয়াল্লিশে ভারত ছাড়ো আন্দোলন পরবতী সময়ে অরুণা কখনো জেলে কখনো আত্মগোপনে চলে গেলেও বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকেন। যৌথভাবে মাসিক’ ইনকিলাব’ পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৪৪ সালে ইনকিলাব পত্রিকায় অরুণা লেখেন ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম সহিংস হবে, নাকি অহিংস’—এ নিয়ে বিতর্কের সময় এটা না। আমি চাই-ক্রান্তিকালের এই সন্ধিক্ষণে দেশের সব মানুষ স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ুক।’

ব্রিটিশ সরকার অরুণার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে, তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। অবশেষে ১৯৪৬ সালের ২৬ জানুয়ারি ব্রিটিশ সরকার তাঁর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রদ করলে, অরুণা আত্মসমর্পণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কংগ্রেসের সাথে তাঁর দুরত্ব বাড়ে। যোগ দেন রামমনোহর লোহিয়ার সোস্যালিষ্ট পার্টিতে এবং ১৯৫০ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় বিশ্বাস রাখতেন যদিও ষাটের দশকের পর থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসেননি। ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সুসম্পর্ক থাকলেও জরুরী অবস্থার কঠোর সমালোচনা করেছেন।

দেশ-বিদেশ থেকে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। পরে অরুণা আসফ আলী কংগ্রেসের প্রতি আস্থা হারিয়ে সমাজবাদী দলে যোগদান করেন। ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর তিনি গরিব জনসাধারণের সঙ্গে মিলে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দাবিতে অরুণার অবদান চিরস্মরণীয়। ১৯৫৫ সালে তাঁকে ‘নেহেরু পুরস্কারে’ সম্মানিত করা হয়। ১৯৫৮ সালে তিনি দিল্লির প্রথম নারী মেয়র হন।

সমাজে প্রগতি আর শান্তি আনতে ১৯৬৪ সালে অরুণা আসফ আলীকে লেনিন শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর তিনি একটি বই লেখেন ‘ওয়ার্ড অব ফ্রিডম’। অরুণা আসফ আলীর জ্ঞান ও দেশের প্রতি তাঁর অবদানের জন্য ১৯৯১ সালে জওহরলাল নেহরু পুরস্কার এবং ১৯৯২ সালে ‘পদ্মবিভূষণ পুরস্কার’-এ সম্মানিত করা হয়। ১৯৯৭ সালে ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘ভারতরত্ন’–এ ভূষিত করা হয় তাঁকে। ওই উপলক্ষে ভারত সরকার একটি ডাকটিকিটও প্রকাশ করে। কিন্তু তার আগেই ১৯৯৬ সালের ২৯ জুলাই মৃত্যু হয় বিয়াল্লিশের যুগান্তকারী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে নেতৃত্বের পুরোধা ‘ঝাঁসির রানি লক্ষীবাঈ’-এর উত্তরসূরি অরুণা আসফ আলীর।


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিকন্যা অরুণা আসফ আলি : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়”

  1. অমরনাথ মন্ডল says:

    ভাল লাগল লেখাটি। 🙂

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন