রবিবার | ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:০৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (দ্বিতীয় পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস রবীন্দ্রনাথের চার্লি — প্রতীচীর তীর্থ হতে (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত রবীন্দ্রনাথের ইরান যাত্রা : অভিজিৎ ব্যানার্জি ঠাকুরকে ঠাকুর না বানিয়ে আসুন একটু চেনার চেষ্টা করি : দিলীপ মজুমদার যুদ্ধ দারিদ্র কিংবা বেকারত্বের বিরুদ্ধে নয় তাই অশ্লীল উন্মত্ত উল্লাস : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী ও শান্তিনিকেতন : প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বাঙালী রবীন্দ্রনাথ : সৈয়দ মুজতবা আলী অনেক দূর পর্যন্ত ভেবেছিলেন আমাদের ঠাকুর : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথের প্রথম ইংরেজি জীবনী : সুব্রত কুমার দাস চল্লিশের রাজনৈতিক বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায় (প্রথম পর্ব) : সুব্রত কুমার দাস শুক্লাম্বর দিঘী, বিশ্বাস করে দিঘীর কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায় : মুন দাশ মোহিনী একাদশীর ব্রতকথা ও মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত নিজের আংশিক বর্ণান্ধতা নিয়ে কবিগুরুর স্বীকারোক্তি : অসিত দাস ঝকঝকে ও মজবুত দাঁতের জন্য ভিটামিন : ডাঃ পিয়ালী চ্যাটার্জী (ব্যানার্জী) সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা : লুৎফর রহমান রিটন সংস্কৃতি জগতের এক নক্ষত্রের নাম বসন্ত চৌধুরী : রিঙ্কি সামন্ত আংশিক বর্ণান্ধতাজনিত হীনম্মন্যতাই রবীন্দ্রনাথের স্কুল ছাড়ার কারণ : অসিত দাস পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী : তপন মল্লিক চৌধুরী সাত্যকি হালদার-এর ছোটগল্প ‘ডেলিভারি বয়’ নব নব রূপে এস প্রাণে : মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য ভারতের সংবিধান লেখার সেই ঝর্না কলমটা… : দিলীপ মজুমদার গীতা রাজনৈতিক অস্ত্র নয়, ভারতাত্মার মর্মকথা : সন্দীপন বিশ্বাস সিন্ধুসভ্যতা ও সুমেরীয় সভ্যতায় কস্তুরীর ভূমিকা : অসিত দাস রবি ঠাকুর ও তাঁর জ্যোতিদাদা : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী তরল সোনা খ্যাত আগর-আতর অগুরু : রিঙ্কি সামন্ত নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সাদা-কালো রীল’ গঙ্গার জন্য লড়াই, স্বার্থান্বেষীদের ক্রোধের শিকার সাধুরা : দিলীপ মজুমদার সিন্ধুসভ্যতার প্রধান মহার্ঘ রপ্তানিদ্রব্য কস্তুরী : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক করিডোর : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

১২ বছর পর আরামবাগে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্বের সয়লা উৎসব জমজমাট : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ২৬৫ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

১২ বছর পর আবার শোলার মালা হাতে অচেনা অজানা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব। ঘরে ঘরে আত্মীয় স্বজনের ভিড়। হাজার হাজার মানুষের বন্ধুত্বের মেলবন্ধনে মুখর তিনটি গ্ৰাম। ১৯ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল আরামবাগের উত্তর বাদলকোনা, দক্ষিণ বাদলকোনা ও নির্ভয়পুর গ্ৰামে শুরু হয়েছে সই ও স্যাঙাত পাঠানোর প্রাচীন পর্ব। এক কথায় সয়েলা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে মনসা পূজা, বাউল গান ও যাত্রাপালা শুরু হয়েছে। মূল লক্ষ্য একটাই অচেনা অজানার সঙ্গে শোলার মালা পরিয়ে বন্ধুত্ব পাতানোর সুযোগ। যা চিরকাল বন্ধুত্বের বন্ধনে অটুট থাকবে। এই প্রথা আজও চলে আসছে। তবে ১২ বছর অন্তর এই উৎসবকে ঘিরে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষায় থাকেন।

প্রসঙ্গত, সয়লা উৎসব বা সই স্যাঙাত উৎসব হল একটি সামাজিক অনুষ্ঠান যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ একে অপরের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। এই উৎসবে মেয়েরা “সই” (সখী) এবং ছেলেরা “স্যাঙাত” হিসাবে বন্ধুত্বের বন্ধন তৈরি করে। এই উৎসব আরামবাগ ছাড়াও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন গ্রামে ‘অনুষ্ঠিত হয়। বন্ধু পাঠানোর মূল মন্ত্র হল — ‘কথা দিলাম সুখে-দুঃখে পাশে থাকব’।

প্রায় ২৫০ বছর পরেও অম্লান আরামবাগের বন্ধু পাতানোর এই উৎসব। নিজের পছন্দমতো বন্ধু খুঁজে তাঁর সঙ্গে সই পাতান গ্রামের আট থেকে আশি। পছন্দের সাথী’র গলায় মালা পরিয়ে ডালা বদল করে লোকায়ত মন্ত্রের মাধ্যমে সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার শপথ নেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, আরামবাগের তিনটি গ্ৰামে স্থানীয়েরা একে বলেন ‘সয়লা উৎসব’। যে উৎসবে একে অপরের গলায় মালা পরিয়ে সই পাতিয়ে শপথ নেন দু’জন মানুষ। হাতে হাত রেখে প্রতিশ্রুতি দেন সুখে-দুঃখে, আনন্দে-বিষাদে, সব সময়ে একে অপরের পাশে থাকার। এখানে ১২ বছর অন্তর সয়লা উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রস্তুতি শুরু হয় এক মাস আগে। এক মাস ধরে গ্রামের সমস্ত মন্দিরে গিয়ে পান-সুপুরি দিয়ে দেবদেবীকে আমন্ত্রণ জানান গ্রামবাসীরা। সয়লা উৎসবের দিন শোভাযাত্রা করে গ্রামের সমস্ত দেবদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় সয়লার মাঠে। সেখানে পুজোআচ্চার পর শুরু হয় বন্ধুত্ব পাতানোর উৎসব। নিজের পছন্দমতো বন্ধু খুঁজে তাঁর সঙ্গে সই পাতানো হয়। ‘পছন্দের সাথী’র গলায় মালা পরিয়ে ডালা বদল করে বিশেষ লোকায়ত মন্ত্রের সাহায্যে সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার শপথ নেন তাঁরা। শনিবার সয়লার মাঠে আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হল সেই উৎসব। দিনভর সই পাতানোর সেই উৎসব চলল। এখানকার বাসিন্দা জয়দেব সোম, রিক্তা পাল বলেন, “এই উৎসব আমাদের এলাকার প্রতিটি গামের কাছে গর্বের। আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি।” আরও বলেন, “এই উৎসব এলেই জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পুরুষেরা পুরুষ বন্ধু এবং মহিলারা মহিলা বন্ধু খুঁজে সই পাতান। সেই সই সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার শপথ নেন। অনেকে পুরনো বন্ধুকেই সই পাতিয়ে ঝালিয়ে নেন বন্ধুত্ব।”

“উপরে খই, নিচে দই তুমি আমার জন্মের সই”। এভাবেই মুখরিত হল উৎসব প্রাঙ্গন। প্রতিবারের মতো এবারেও ‘সহেলা’ (সয়লা) মেলা বসেছে।

প্রসঙ্গত, মনসা পূজার মধ্য দিয়ে নিজেদের মধ্যে বন্ধন অটুট করার উৎসব এই ‘সহেলী’ বা ‘সহেলা’ বা চলতি কথায় ‘সয়লা’। এই “সই পাতানি” একসময় বাংলার অন্যতম সুন্দর উৎসব ছিল। শুধু মেয়েতে-মেয়েতে নয়, পুরুষে পুরুষেও সখ্য (স্যাঙাত) পাতানো হত। তাতে পরস্পরের সুখে দুঃখে আজীবন ভাগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা হত। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া’য় থাকা ‘ফ্রেন্ড’-এর চেয়ে এ বন্ধুত্বের আয়ু অনেকগুণ বেশি। তাই সয়েলা উৎসব আজও আরামবাগে অটুট।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন