কুম্ভ স্নানে যাওয়ার পথে হুগলির গোঘাটের ৩ বাসিন্দার মর্মান্তিক মৃত্যুর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল কংগ্রেসের জনদরদী নেতা মানস মজুমদার। গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক ও তৃণমূলের জননেতা মানস মজুমদার জানান, কুম্ভ স্নানে যাবার পথে ধানবাদে পথ দুর্ঘটনায় গোঘাটের ৩ বাসিন্দার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ধানবাদে নিহতদের সাতবাড়িয়ায় বাড়িতে রবিবার গিয়েছিলাম। সেই সঙ্গে আজ একই সঙ্গে ভাদুড়ে গাড়ির যে ড্রাইভার মারা গেছে ওনার বাড়িতেও গিয়েছিলাম। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে যা বলার বলে এসেছি। ভাদুরের গাড়ির চালক পরিবারটি অতি দুস্থ, মাটির বাড়ি রয়েছে এখনো বাড়ি হয়নি। একটা মাটির বাড়িতে চারটি পরিবার থাকে। সবার নামে আলাদা আলাদা করে রেকর্ড করানো আছে, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা পরিবারের কেউ পায় না বলে অনেকগুলো অভিযোগ জানিয়েছে।
রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ধানবাদ হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর জখম বিশ্বরূপ সাহা (৪৫) এবং সুদীপ সাহা(১৪) দুজনের সুষ্ঠু চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। এখন আইসিসিওতে দু’জনই ভর্তি আছেন। দুজনের বেটার ট্রিটমেন্টের সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। আর্থিক সহ সব রকম সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, উদ্দেশ্য ছিল কুম্ভস্নান। কিন্তু প্রয়াগরাজে পৌঁছনোর আগেই ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের কাছে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পশ্চিমবঙ্গের ছ’জনের। এর মধ্যে তিন জন পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার নলপা গ্রামের ও বাকি তিন জন হুগলির গোঘাট থানা এলাকার বাসিন্দা। গুরুতর জখম আরও তিন জনের চিকিৎসা চলছে ধানবাদের পাটলিপুত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে ধানবাদের কাছে রাজগঞ্জ সড়কে। ঘটনাস্থলেই মারা যান গড়বেতার প্রণব সাহা (৪২), তাঁর স্ত্রী শ্যামলী সাহা (৩৪)। পরে মারা যান প্রণবের শ্যালিকা গোঘাটের সাতবেড়িয়ার বাসিন্দা পিয়ালি সাহা (৩২) ও গাড়ির চালক গোঘাটের ভাদুরের শেখ রজব আলি (৪৬)। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় পিয়ালির মেয়ে আগমনী সাহা (৬) ও শ্যামলীর মেয়ে অন্বেষার (৫)।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন পিয়ালির স্বামী বছর তেতাল্লিশের বিশ্বরূপ এবং শ্যামলীর ছেলে বছর পনেরোর অমল। দুর্ঘটনার পরে সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে পরিবারগুলিকে সবরকম সাহায্য করতে বলা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে।” উল্লেখ্য, প্রণবের গাড়ি সারানোর গ্যারাজ ছিল। বিশ্বরূপ চাষবাস করতেন। সঙ্গে ট্রাক্টরের ব্যবসাও ছিল। ওই দুই পরিবারের তরফে গোঘাটের সাতবেরিয়ার বিশ্বরূপ দু’টি গাড়ি ভাড়া করেছিলেন।
গড়বেতা থেকে প্রণবরা বিশ্বরূপদের গোঘাটের বাড়িতে চলে এসেছিলেন শুক্রবার সকালেই। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ গোঘাট থেকে গাড়ি দু’টি রওনা দেয়। রাত দেড়টা নাগাদ ধানবাদের কাছে ঘটে দুর্ঘটনা। একটি গাড়ির সঙ্গে লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একটি বাস ও আরও কয়েকটি গাড়িও পিছন থেকে ধাক্কা মারে ওই গাড়িটিকে। সেটি দুমড়েমুচড়ে যায়।শনিবার ভোর ৪টা নাগাদ বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর আসে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে চালক-সহ ছিলেন ১১ জন। ওই গাড়িতে থাকলেও বেঁচে গিয়েছেন বিশ্বরূপের প্রতিবেশী রাহুল রায়।
একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন গড়বেতার নলপা গ্রাম।