বৃহস্পতিবার | ৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৫২
Logo
এই মুহূর্তে ::
জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার মির্জা নাথানের চোখে বাংলার ভুঁইয়াদের হাতি : মাহবুব আলম ভিয়েতনামের গল্প (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত “কপোতাক্ষ নদ”-এর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত : আসমা অন্বেষা কৃষ্ণনগরে সর্বধর্ম ভ্রাতৃত্ব সমাবেশ : ড. দীপাঞ্জন দে চোখের ক্যানসার থেকে সাবধান! দিন দিন বাড়ছে, আগাম সতর্কতা জরুরি : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী রাখাইন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বিদ্বজ্জনসমাজ ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কবিয়ালের প্রেত : অসিত দাস ষষ্ঠীলা একাদশী বা ষটতিলা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত একদা বিরুদ্ধরাই আজ নেতাজির স্তুতিগানে সরব : সন্দীপন বিশ্বাস জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পদবি ঠাকুর থেকে Tagore হওয়ার নেপথ্যকাহিনী : অসিত দাস সুভাষের সুবাসে এখনও ম ম করছে ডালহৌসি শহরের বাতাস — এ এক তীর্থক্ষেত্র : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী তারাভরা তারানাথ (১৮১২-১৮৮৫) : নন্দিনী অধিকারী ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত জোটে ব্রাত্য কংগ্রেস কি দিল্লি ভোটের পর আরও গুরুত্ব হারাবে : তপন মল্লিক চৌধুরী খালাসিটোলা, রবীন্দ্রনাথ ও পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস পীযূষ পাঠ প্রস্তাব : ড. পুরুষোত্তম সিংহ চর্যাপদে সমাজচিত্র : নুরুল আমিন রোকন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ২৯ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫

গ্রামে গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একটা সময় ঢেঁকি ছিল। ছিল বড়ো ঢেঁকশালও । ঠাকুমা, মা-কাকিমাদের পায়ের তালে তালে ঢেঁকির আওয়াজ শোনা যেত। ধান থেকে চাল, আর চাল থেকে চালগুঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। ঢেঁকি-ছাটা লাল চালের সুস্বাদু ভাত ও নানান রকম পিঠে আজও লোকমুখে শোনা যায়। তাই বয়স্কদের মুখে মুখে একটাই আফশোস ঢেঁকি নেই, সেই পিঠেও নেই। গ্রামীন সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার তাগিদও কারোর নেই।

প্রসঙ্গত, গাম-গঞ্জের ছোট ছোট ঘটনা আজও স্মৃতিতে রয়ে গিয়েছে। যতদিন যাচ্ছে সেই সমস্ত ঘটনাগুলি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিচ্ছে। আজকের প্রজন্মের কাছে ওই সমস্ত ঘটনা গল্প বলে মনে হচ্ছে। কয়েকটি ঘটনা যা আজকের সমাজের মহিলাদের কাছে বানানো গল্প বলে মনে হয়, সেগুলোর কথা তুলে ধরলে বোধহয় বিষয়টা আরও পরিষ্কার হবে। তাছাড়া তৎকালীন সমাজের চিত্রটাও ধরা পড়বে। উল্লেখ করতেই হয় ঢেঁকির কার্যকলাপ। একটা সময় প্রতি বাড়িতে ঢেঁকশাল ছিল। আর সেখানেই বসানো থাকত টেঁকি। মা-ঠাকুমা, দিদি, মাসিদের দেখতাম ঢেঁকিতে ধান ভাঙতে। চাল গুঁড়োতে। তালে তালে পা দিয়ে ঢেঁকিতে ছাঁটা হত ধান। সেই ধান থেকে লাল ছাপ মারা চাল বের হত। যখন ওই চালের ভাত হত, দেখতাম আলাদা সুগন্ধ প্রকাশ পেত। ছেলেমেয়েদের দেখতাম সেই সুস্বাদু ফ্যানা-ভাত খেয়ে স্কুল-কলেজে যেতে। এখন সেই চালও নেই, সুস্বাদু ভাতও নেই।

এখন আছে রাইসমিলের চকচকে চাল। পালিশ করা। উপরের লাল খোলাটুকুর চিহ্ন নেই। ফলে এর নাকি ফ্যানা-ভাত হয় না। হলেও মুখে রোচে না, রুচবেই বা কী করে! এখন যে কীটনাশক মাখানো ওষুধের গন্ধ গা থেকে যায়নি। তাই কষ্ট হয়। মনে মনে ভাবি কবে ফিরে পাব সেই ঢেঁকিছাঁটা চাল, গুঁড়ি। যা দিয়ে সুস্বাদু ফ্যানাভাত, পিঠে-পুলি তৈরি হবে। না! এ আশা মনেতেই রয়ে যায়। ঢেঁকিগুলো আর দেখতে পাই না। ঢেঁকশালও নেই। নেই নীলমণি, রাধা, শ্যামাদের মতো বউরা। যাঁরা অনায়াসে বাচ্চা ছেলে কোলে নিয়ে ঢেঁকিতে পা দিতে পারত। সেই দৃশ্যও আর দেখি না। তা হল মায়ের কোলেই বাচ্চা কাঁদছে। সেই বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নীলমণিদের মতো বউয়েরা জামা খুলে বুকের দুধ টানার জন্য সুযোগ করে দিয়েছে। বাচ্চা দুধ খাচ্ছে, নীলমণি আদর করে, সোহাগ করে বাচ্চার আশা মেটাচ্ছে, আর অপরদিকে রাতে সোয়ামীকে খুশি করতে পিঠের গুঁড়ি তৈরি করছেন। সন্ধ্যা হলে সোয়ামী মাঠ থেকে বাড়ি ফিরবে। তারপর নীলমণি পিঠে করতে বসবে। লম্ফ জ্বেলে। কাঠের আগুনে পিঠে হবে। সেই দৃশ্য আজ অতীত।

আরও একটি ঘটনা উল্লেখ না করে পারছি না। তা হল ঘরে ঘরে পাথরের যাঁতা। যা দিয়ে ডাল শস্য, তিল ভাঙা হয়। আজ আর দেখি না। সে দিনটার কথা আজও মনে পড়ে, যখন দেখতাম হাবুর মা অদ্ভুত কায়দায় হাতের আঙুল দিয়ে তিলের খোসা ছাড়াচ্ছেন, কিংবা খেসারি, মটর, ছোলা, মুসুর, কড়াইয়ের খোসাও ছাড়াচ্ছেন উবু হয়ে। হাবুর মা জানে, কত পাক ঘোরালে তবেই খোসা ছাড়বে। দেখতাম প্রতি ঘরে হাবুর মতো মায়েরা আছেন। ডাল, ডালের বড়ি, তিল ভাজা, তিলের নাড়ু, তিল পোস্ত খাওয়া হত। এখন সেগুলি দোকান থেকে পাই। কিন্তু পাই না সেই স্বাদ। হারিয়ে গেছে হাবুর মতো মায়েরা। এখন অত্যাধুনিক প্রজন্মের মায়েরা আছেন, কিন্তু যাঁতায় পাক দিতে জানেন না। এঁরা জানেন দোকান থেকে প্যাকেট করা খাবার। কষ্ট নেই এঁদের। এঁদের দেখি আর ভাবি সেই দিন কী আর ফিরে আসবে না? অপেক্ষায় আছি সেই স্বাদ, অনুভূতি, পরশের ছোঁয়া পাব বলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন