সোমবার | ২৮শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:০৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
মা কালী যখন মহালক্ষ্মী : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (দ্বিতীয় পর্ব) : শংকর মহাকাব্যে ভেড়ার উল্লেখ : অসিত দাস কাশীপুরে নয়, দক্ষিণেশ্বরেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছিলেন ছোট ভট্টাচার্য (প্রথম পর্ব) : শংকর রমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ও একাদশী পালনের নিয়মাবলী : রিঙ্কি সামন্ত আশাপূর্ণা দেবী-র ছোটগল্প ‘চাবি’ একে দানা-য় রক্ষা নেই তারওপর ডিভিসি-র ৪২ হাজার কিউসেক জল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (নবম পর্ব) : বিজয়া দেব চেতনার সমস্যা, সামাজিক অবকাঠামো এবং বলপ্রয়োগ : এরিক ফ্রম, অনুবাদ ফাতিন ইশরাক বারবার ভিলেন সেই বঙ্গোপসাগর : তপন মল্লিক চৌধুরী নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রাখাইন পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের উদ্যোগ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ‘দানা’ থেকে ভয় পাবেন না, সতর্ক থাকুন, মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুত : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সই বা বন্ধুত্ব স্থাপনের উৎসব সয়লা : রিঙ্কি সামন্ত প্রথম পাঠ — “নিশিপালনের প্রহরে” নিয়ে, দুয়েকটি কথা : সোনালি চন্দ বৃহন্নলার অন্তরসত্তা : নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী দুই দশক : শৈলেন মান্না ভরা বর্ষায় জলপ্রপাতের মুখোমুখি… : বিদিশি বসু দামোদর মাউজো-এর অনুবাদ গল্প ‘হরতাল’ বঙ্গে কুবেরের পূজা : অসিত দাস বাংলা সাহিত্যের দেবতারদের দেখা মেলে ওই ঘরেই : অশোক মজুমদার মালবাণকে ছুঁয়ে রূপোলী সমুদ্রসৈকতে : নন্দিনী অধিকরী মার্ক্সবাদ, মনোবিশ্লেষণ এবং বাস্তবতা : এরিক ফ্রম, অনুবাদ ফাতিন ইশরাক সাহিত্যের প্রাণপ্রবাহে নদী : মিল্টন বিশ্বাস এবার দুর্গা পুজোকেও ছাপিয়ে গেল রানাবাঁধের লক্ষ্মীপুজো : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় দেড় হাজার বছর প্রাচীন ঘোষগ্রামের লক্ষীকথা : রিঙ্কি সমন্ত হুতোমের সময় কলকাতার দুর্গোৎসব : অসিত দাস নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘বৈতালিক’ কোজাগরীর প্রার্থনা, বাঙালির লক্ষ্মীলাভ হোক : সন্দীপন বিশ্বাস তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের কাজ ভাবাদিঘিতে ফের জোর করে বন্ধ করা হলো : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর — অনেক বিদ্যাসাগর মাঝে তিনি একক : প্রলয় চক্রবর্তী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই মহাঅষ্টমীর আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

রমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ও একাদশী পালনের নিয়মাবলী : রিঙ্কি সামন্ত

রিঙ্কি সামন্ত / ৯৬ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

একদা মহারাজ যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণকে বললেন — হে জনার্দন! কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষ তিথিতে পালিত একাদশীর নাম কী এবং এই একাদশী ব্রত পালনের গুরুত্ব সম্পর্কে দয়া করে আমাকে বিস্তারিতভাবে জানান। তখন শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে মহারাজ! বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি অভিহিত হয়েছে শ্রীশ্রী রমা একাদশী তিথি হিসেবে। দীপাবলী থেকে চার দিন আগে এই একাদশী পালিত হয়। একাদশী দেবী তার একান্ত একনিষ্ঠ ও সত্যবাদী ভক্তের মনে রমা অর্থাৎ আনন্দরূপে অবস্থান করে দান করেন কৈবল্য। এই দেবীই শ্রীশ্রী রমা একাদশী নামে প্রসিদ্ধ লাভ করেছেন। এটিকে ‘রম্ভা একাদশী তিথি’ও বলা হয়ে থাকে।

এই ব্রত উপলক্ষে একটি ছোট্ট কাহিনী আছে। বরুণ, ইন্দ্র, কুবের প্রমুখের মিত্র বিষ্ণু ভক্ত মুচুকুন্দ ছিলেন মান্ধাতৃ রাজপুত্র। রাজা সর্বদা সত্য পথে চলতেন। তিনি ছিলেন সত্যপ্রতিজ্ঞ ও যথারীতি এই ব্রত পালন করতেন। কোন ভুলত্রুটি না হয় সেজন্য ব্রত শুরুর তিনদিন আগে থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে সকলকে সতর্ক করে দিতেন।

রাজার এক সুন্দরী, সুমতি কন্যা ছিলো চন্দ্রভাগা। যথাসময়ে চন্দ্রভাগার চন্দ্রসেনের পুত্র শোভনের সঙ্গে বিবাহ হয়। একবার রাজকন্যা চন্দ্রভাগা ও তার স্বামী শোভনের সঙ্গে দৈবক্রমে একাদশীর দিন বাপের বাড়ি মুচুকুন্দর রাজপ্রাসাদে উপস্থিত হলেন।

চন্দ্রভাগা লক্ষ্য করলেন তার স্বামী এতটা পথ অতিক্রান্ত করে এসে অনেকটাই ক্লান্ত এবং ক্ষুধার্থ। তিনি কখনোই ক্ষুধা সহ্য করতে পারেন না সেটি ভালোভাবেই জানতো চন্দ্রভাগা। কিন্তু পিতা ধর্মের পথে চলেন আর এটার জন্য একাদশীর দিন সমগ্র রাজ্য এমনকি পশু পক্ষীকে অব্দি অন্ন প্রদান করা হয় না।

চন্দ্রভাগা স্বামীকে জানালেন তিনি যদি উপবাসে না থাকেন তাহলে সমাজের কলঙ্ক রটবে। একমাত্র এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করতে বলল তার স্বামিকে। কিন্তু শোভন রাজি হলেন না। শরীর দুর্বল হওয়া সত্বেও ভক্তি ভরে শোভন উপবাস করলেন। দুর্ভাগ্যবশত পারনের দিন অর্থাৎ দ্বাদশী তিথিতে শোভন দেহরক্ষা করলেন। চন্দ্রভাগা দুঃখে ভেঙে পড়লেন। রাজা মুচুকুন্দ শোভনকে রীতিনীতি মেনে শ্রদ্ধার সহিত যথারীতি শ্রাদ্ধকার্য সম্পাদন করলেন।

এর কিছুদিন পর রাজপন্ডিত সোমনাথ শর্মা বেরলেন ভ্রমণে। বহু নগর উপযুক্ত পরিক্রমা করে রাজ্য ফেরার পথে মন্দরাচল পর্বতের শিখরে দেব পুরীতে উপস্থিত হন। ব্রাহ্মণ সহসা দেখতে পেলেন রত্নালঙ্কার দ্বারা আবৃত সিংহাসনে গন্ধর্ব এবং অপ্সরাগণ বিভিন্ন উপাচারে রাজাকে পুজো করছেন। বামদেব মুনির আশ্রমে রাজত্ব করছেন শোভন।

তারপর সোমনাথ শর্মা রাজ্যে পৌছে শোভনের স্ত্রী চন্দ্রভাগাকে সব কথা বললেন। ওই আশ্রমে থাকা ঋষির কৃপা এবং হরিবাসর ব্রত পালনের মাধ্যমে চন্দ্রভাগা দিব্য শরীর লাভ করে স্বামীর নিকট উপস্থিত হলেন। বহু বছর পর স্ত্রীকে দেখে আনন্দিত হলেন শোভন ।

তখন শোভন বললেন দেবী রমা একাদশীর একান্ত করুণা ও মঙ্গলময় প্রভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুর পর তাঁর বিষ্ণুলোক লাভ হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের বলেছেন, শ্রী শ্রী রমা একাদশী ব্রত পালন এবং পুণ্য কাহিনী শ্রবণ করলে মানুষের দেবলোক প্রাপ্তি হয়।

পঞ্চাং অনুসারে, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি ২৭ অক্টোবর রবিবার ভোর ৫ টা ২৩ মিনিটে শুরু হবে। একই সময়ে, এই তিথি ২৮ অক্টোবর সকাল ০৭ টা ৫০ মিনিট এ শেষ হবে। উদয়তিথি অনুসারে, ২৮ অক্টোবর সোমবার রমা একাদশীর উপবাস পালিত হবে। রমা একাদশীর পরের দিন অর্থাৎ ২৯ অক্টোবর সকাল ০৬ টা ৩১ মিনিট থেকে ১০ টা ৩১ মিনিট এর মধ্যে পারণ করা যেতে পারে।

রমা একাদশীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে কারণ এই একাদশী কার্তিক মাসে ঘটে। কার্তিক মাসকে ভগবানের বিষ্ণুর জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। এই একাদশীতে রমা অর্থাৎ লক্ষ্মীর স্বামী বিষ্ণুর পুজো করা হয়ে থাকে।

পুরাণ অনুযায়ী রমা একাদশী ব্রত বাড়িতে কামধেনু গোরু রাখার সমান শুভ ফল প্রদান করে। এই ব্রত পালন করলে সমৃদ্ধি ও সম্পন্নতা বৃদ্ধি পায়। রমা একাদশী ব্রত পালন করলে মা লক্ষ্মী সন্তুষ্ট হন। এ বছর রমা একাদশীর দিনে একাধিক শুভ সংযোগ তৈরি হয়েছে। রমা একাদশীর তারিখ ও শুভ যোগ করুন এখানে।

একাদশীতে ধান জাতীয় সকল প্রকার খাদ্য যেমন চাল মুড়ি চিরে সুজি পায়েস খিচুড়ি ইত্যাদি, গম জাতীয় খাদ্য আটা ময়দা সুজি রুটি বিস্কুট হরলিক্স ইত্যাদি, যব বা ভুট্টা জাতীয় খাদ্য ছাতু খৈ রুটি, সরষের তেল, সয়াবিন তেল, তিল তেল একাদশীতে গ্রহণ করা নিষেধ আছে।

রমা একাদশী তিথিতে বাড়িতে গঙ্গাজল ছিটিয়ে লক্ষ্মী-নারায়ণ পুজো করুন। সমর্থপক্ষে দশমীতে একাহার, একাদশীতে নিরাহার ও দ্বাদশীতে একাহার গ্রহণ করবেন। যদি তাতে অসমর্থ হন তবে একাদশীতে পঞ্চ রবিশস্য বর্জন করে ফলমুলাদি দিয়ে অনুকল্প গ্রহণের বিধান রয়েছে।

স্নান করার পর ঘর ও বিশেষ করে পূজা ঘরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করুন। ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিকে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করান।

বিষ্ণু ও লক্ষ্মীকে পদ্মবীজের পায়েসের ভোগ নিবেদন করুন। এতে তুলসী পাতা দিতে ভুলবেন না।

রমা একাদশীতে বাড়িতে একাক্ষী নারকেল আনা অত্যন্ত শুভ। এই নারকেলের পুজো করা শুভ ফলদায়ী। মনে করা হয় এই উপায়ে লক্ষ্মী ঘরে বাস করেন।

একাদশী পালনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল উপবাস করা নয় নিরন্তর শ্রী ভগবানের নাম স্মরণ মনন শ্রবণ কীর্তন মাধ্যমে অতিবাহিত করতে হয়। একাদশী পালনে পরনিন্দা পরচর্চা মিথ্যা ভাষণ ক্রোধ দুরাচারি স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।।

একাদশীর দিন ‘ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায়’ জপ করে সারাদিন কাটান। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে ভগবান বিষ্ণুর পূজা করুন এবং বিষ্ণু সহস্রনাম এবং শ্রী হরি স্তোত্রম পাঠ করুন।


আপনার মতামত লিখুন :

5 responses to “রমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ও একাদশী পালনের নিয়মাবলী : রিঙ্কি সামন্ত”

  1. Gargee rakshit says:

    অসাধারণ লেখা ❤️

  2. P k biswas says:

    ভারত ধার্মিক আচার আচরণের জন্য বিখ্যাত।ধর্ম
    মানুষের আচার আচরণকে ধারন করে পরিচালিত
    করে সৎপথে।তেত্রিশ কোটি দেবী দেবতার দেশে
    ব্রত কথা,উপবাস,অঞ্জলি নিবেদন ইত্যাদির দ্বারা
    ঈশ্বরের কাছাকাছি আসতে পারা যায় বলে বিশ্বাস
    সমস্ত ভারতবাসীদের।ব্রত উপবাস করা সকলের
    পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা।মূলত ভারতীয় নারীরাই
    এই সমস্ত আচরণের দায় দায়িত্ব বহন করে তার
    পরিবারের,সন্তান,স্বামীর মঙ্গল কামনায়।সুন্দর এ
    প্রতিবেদনে ম্যাডাম সামন্ত প্রভাবিত করতে সক্ষম
    হয়েছেন ধর্মপ্রাণা ভারতীয়দের।আসন্ন দীপিকা
    উৎসবের অগ্রিম প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।
    ধার্মিক গতিবিধির

  3. P k biswas says:

    ভারত ধার্মিক আচার আচরণের জন্য বিখ্যাত।ধর্ম
    মানুষের আচার আচরণকে ধারন করে পরিচালিত
    করে সৎপথে।তেত্রিশ কোটি দেবী দেবতার দেশে
    ব্রত কথা,উপবাস,অঞ্জলি নিবেদন ইত্যাদির দ্বারা
    ঈশ্বরের কাছাকাছি আসতে পারা যায় বলে বিশ্বাস
    সমস্ত ভারতবাসীদের।ব্রত উপবাস করা সকলের
    পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা।মূলত ভারতীয় নারীরাই
    এই সমস্ত আচরণের দায় দায়িত্ব বহন করে তার
    পরিবারের,সন্তান,স্বামীর মঙ্গল কামনায়।সুন্দর এ
    প্রতিবেদনে ম্যাডাম সামন্ত প্রভাবিত করতে সক্ষম
    হয়েছেন ধর্মপ্রাণা ভারতীয়দের।আসন্ন দীপিকা
    উৎসবের অগ্রিম প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন