রাজ্যজুড়ে মৃত্যুমিছিল বন্ধ করতে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের অনুরোধ ডাক্তারবাবুরা কর্মবিরতি ছেড়ে কাজে যোগ দিন। শুক্রবার প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক সভার আয়োজন করে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।
স্বাস্থ্যদফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা রাজ্যজুড়ে ডাক্তারদের দীর্ঘ কর্মবিরতির জেরে চলে গিয়েছে ২৭টি প্রাণ।
২৭ জন! সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই এই অকালমৃত্যু প্রাপ্ত ২৭ জনের মধ্যে থেকে অনেক পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এদিনের সাংবাদিক সভায়। ছিলেন ১৪ বছরের মৃতা সঙ্গীতা আচার্য্যের বাবা সুজিত আচার্য্য, মৃতা ছন্দা দেবীর ছেলে সানি লাল, গর্ভবতী দুর্গা শীলের স্বামী হীরা শীল, মৃত সফিকুল ইসলামের ভাই আব্দুর রউফ, সফিকুল ইসলামের বাবা এবং তাঁর শিশুপুত্র, কোন্নগরের ২৮ বছরের মৃত বিক্রম ভট্টাচার্য্যের মা কবিতা দেবী, ৩৩ বছর বয়সি মৃত রাজীব দেবের বাবা স্বপন দেব এবং মামা রূপক চৌধুরী। তাঁরাই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন এবং নিজেদের বক্তব্য জানালেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের কারোর বক্তব্য ছিল ডাক্তাদের কর্মবিরতির কারণে, সুচিকিৎসা না পেয়ে, চিকিৎসার খোঁজে এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতাল যেতে গিয়ে মারা গিয়েছেন তাঁদের স্বজনরা।
এদিনের দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সাংবাদিক সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, প্রবীণ সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত, সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য, ডাক্তার সিদ্ধার্থ গুপ্ত, বর্ণালী মুখোপাধ্যায়, অনন্যা চক্রবর্তী, প্রবীণ বাম নেতা বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ও সমীর পুততুণ্ড, সমাজকর্মী সুষাণ রায়, সঙ্গীতশিল্পী সৈকত মিত্র, নাজমুল হক এবং অমিত কালি, সিদ্ধব্রত দাস, প্রদীপ্ত গুহঠাকুরতা, কবি প্রসূন ভৌমিক, অভিনেত্রী এবং পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, অরূপ শঙ্কর মৈত্র সহ অনান্যরা। প্রসঙ্গত, চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে বিনাচিকিৎসায় অথবা চিকিৎসার অবহেলার কারণে মৃত্যুমিছিলে যেসব প্রাণ অকালে চলে গিয়েছেন তাদের মধ্যে কোন্নগরের বাসিন্দা তরতাজা যুবক মৃত বিক্রম ভট্টাচার্যের মা এর বক্তব্য হাসপাতালে নিয়ে আসার পরও আড়াই ঘণ্টা তাঁর ছেলের চিকিৎসা হয়নি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অকালে মারা গিয়েছেন তাঁর ছেলে।
দুর্গা শীলের স্বামী হীরা শীলের বক্তব্য ছিল বিজেপির ‘নৈরাজ্য’ সৃষ্টিকারী অবরোধের শিকার হয়েছে তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী, কারোর বক্তব্য হাসপাতালে ভর্তি নিয়েও সঠিক চিকিৎসা না করায় পরিবারের একমাত্র রোজগেরে যুবক ঢলে পড়েছে মৃত্যুর কোলে। উল্লেখ্য, দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের প্রশ্ন, আর কত দিন সাধারণ এবং প্রান্তিক মানুষরা তাঁদের প্রাণ এভাবে হারাবেন? কত দিন বিনা চিকিৎসায় চলে যাবে অসুস্থ মানুষের প্রাণ? এই জন্যই কি ডাক্তারেরা শপথ নেন? যত দিন বাড়ছে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সংকট দেখা দিচ্ছে। বাড়ছে মৃত্যুমিছিল।