শিক্ষক দিবসের আগের দিন সন্ধ্যায় ভাইপোকে নিয়ে কলম কিনতে বেরিয়ে খেয়াল করলাম, খাতা কলমের দোকানগুলিতে চোখে পড়ার মতোই ভিড়। শিক্ষকদের জন্য কলম, ডায়েরি ইত্যাদি উপহার কেনার জন্যই মূলত নানা বয়সের লোকজন লাইনে দাঁড়িয়েছেন। খুব ভালো কথা। সেই সমস্ত উপহার পৌঁছে যাক সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে। এভাবেই শিক্ষক সমাজ ও ছাত্র সমাজের বন্ধন দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হোক। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় এক সুতোয় বাঁধা পড়ুক আগামীর সমাজ ও সমাজ গঠনের কারিগরেরা। একসঙ্গে একাত্ম হয়ে উঠি বাবা-মা, কাকা-কাকিমা, দাদু-ঠাকুমা মতো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গেও।
পাশাপাশি, আসুন না একটু অন্যভাবে দেখি শিক্ষার ব্যাপারটা। সময় আমাদের অনেক বড় কিছু শেখাতে সাহায্য করে। এই ধরুন না এই লেখাটিও ঠিক সময়ে সম্পাদকের কাছে না পৌঁছে দিতে পারলে এই লেখা গুরুত্বহীন। ভাবুন দুই সেকেন্ড এর এদিক ওদিক হলেই সূর্য কুমার যাদবের হাত থেকে ক্যাচ বেরিয়ে যেতে পারতো। ভারত চব্বিশের বিশ্বকাপ হেরেও যেতে পারতো। সেসব হয়নি টাইমিং ঠিক ছিল বলে। আবার টাইমিং এর জন্যই আমরা পথে ঘাটে দুর্ঘটনার কবলে পড়ি বা দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাই। তাই সময়ের যে শিক্ষা তাকে গুরুত্ব দিতেই হবে।
এবার একটু জীবনের শিক্ষক হিসেবে পরিস্থিতিকে দেখা যাক। জীবনে পরিণত হতে গেলে পরিস্থিতির প্রভাব কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। পরিস্থিতির মোক্ষম দাওয়ায়েই আমরা ঠেকে ঠেকে শিখি। পরিস্থিতি এমন একটা পরিসর যা রাতারাতি একজন কুঁড়ে মানুষকে করে তুলতে পারে সুপার অ্যাকটিভ। একজন খারাপ মানুষ কে ভালো মানুষ। একজন বোকাকে বুদ্ধিমান। তাই মাথা নোয়াতেই হবে পরিস্থিতি নামক শিক্ষকের কাছেও।
আসুন এই শিক্ষক দিবসে, প্রথাগত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রণাম জানানোর পাশাপাশি কুর্ণিশ জানাই সময়ের শিক্ষাকে, পরিস্থিতির শিক্ষাকে। আজ সম্মান জানাই সেই অটোওয়ালাকে যিনি শিখিয়েছিলেন সততার মূল্য। সম্মান জানাই সেই ডেলিভারি বয়কে যিনি শিখিয়েছিলেন শ্রমের মূল্য। সম্মান জানাই সেই কাজের দিদিকে যিনি দিয়েছিলেন মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাঠ। সম্মান জানাই সেই রাস্তার কুকুরটিকে যার কাছে প্রথম শিখেছিলেন লড়াই করে বাঁচার নামই জীবন। আসুন।
খুব ভালো হয়েছে লেখাটা
ভালো লাগলো।