মহান মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু-মুসলিম সবাই বুকের তাজা রক্ত বিসর্জন এবং মা-বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে লাল-সবুজের একটি দেশ — বাংলাদেশ। এখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধর্মের লোকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন, যে যার ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারছেন।বর্তমান সরকার অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এজন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ না করার জন্য সকল সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যদিকে এ দেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে।বরং সংখ্যালঘু তারাই যারা সে সময় পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছে। আমরা সবাই বাঙালি এটাই আমাদের পরিচয়।
প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের ৭ মার্চ-এর অমৃতবাণীর ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই বাংলায় হিন্দু-মুসলিম, বাঙালি-অবাঙালি যারা আছে তাঁরা আমাদের ভাই। তাঁদের রক্ষার ভার আমার আপনার উপরে। আমাদের যেন বদনাম না হয়।’বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশনা ধারণ করে রাষ্ট্রপরিচালনা করছেন জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি প্রতিটি সভায় স্মরণ করিয়ে দেন, এই দেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। বলেছেন, ‘কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে খ্রিষ্টান- তা দেখে সেবা করি না আমরা। সব রক্তের রং লাল। মুক্তিযুদ্ধে সবার রক্ত মিশে গেছে এক স্রোতে। তাই এ দেশ সবার। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার নিয়ে বাঁচবে।’ একারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপরই আস্থা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের।
দুই.
সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে শেখ হাসিনা সরকার। সুখে-দুঃখে সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে ছিলাম এবং আগামীতেও থাকব — এই প্রত্যাশায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। যেখানে হিন্দু-মুসলিমসহ সবাই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাস করবে। সেই লক্ষ্যে নেত্রীর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছেন অন্যরা।
এজন্য ২০১৯ সালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছিলেন, ‘‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানের এই সুন্দর বাংলাদেশকে আমরা ভাবতে চাই বাঙালির বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। তার সময় এ দেশের সব ধর্মের মানুষ সম্পূর্ণ সম্প্রীতির বন্ধনে তাদের স্ব-স্ব ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছেন। তিনি আরো বলেছিলেন, সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে না থাকলে মানবতা বিপন্ন হয়ে যাবে; শেখ হাসিনার সরকার আছে বিধায় সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই আজ সচিব, পুলিশের বড় কর্মকর্তা থেকে প্রশাসনের উচ্চ থেকে নিম্ন পর্যায়ের বিভিন্ন পদে অধিষ্ট আছেন। এদেশ সবার, তাই সবার সমান অধিকার; ফলে আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।’’
রাজধানীর দয়াগঞ্জের জাতীয় শিব মন্দির প্রাঙ্গণে এক ধর্মীয় সম্প্রীতি সমাবেশে ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
বাংলাদেশে একটি কথা প্রচলিত আছে যে — ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। বাংলাদেশের ইতিহাসও তাই বলছে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিরাপদে থাকেন, নির্বিঘ্নে ও উৎসবের সাথে ধর্মীয় আচার পালন করেন।পত্রিকায় প্রকাশিত সূত্র অনুসারে, এই ভোটাররা অনেক আসনের জয়-পরাজয় পাল্টে দিতে পারেন। কারণ চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬.৬৫ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ১৩.৫ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ১২.৯৮ শতাংশ ও খুলনা বিভাগে ১১.৫ শতাংশ সনাতম ধর্ম বিশ্বাসীদের বসবাস। আর ঢাকা বিভাগে ৪.৯৭ শতাংশ ও রাজশাহী বিভাগে ৫.৮৫ শতাংশ। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় বা নির্যাতন করে এলাকা ছাড়া করতে পারলে সবচেয়ে লাভবান হবে আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তি। একারণেই মাঝে মধ্যে মাথা চাড়া দিয়ে উঠে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সহিংসতার কথা আমরা কেউ ভুলে যাই নি। ওই সময় ১৪ হাজার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন ৫ হাজার ৫৭১টি অভিযোগের তথ্য প্রমাণ খুঁজে পান। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ৩৫৫টি। ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ গুরুতর অপরাধের ৩ হাজার ২৭০টি ঘটনা চিহ্নিত করা হয়। ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর অবধি আওয়ামী লীগ বিরোধীরা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের উপর এদেশ থেকে বিতাড়িত করার জন্য নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে।
অথচ ২০২৩ সালের গবেষণা বলছে, বর্তমানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো আছে। গতবছর ১৩ জুলাই ঢাকায় ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি: সমস্যা এবং উত্তরণ’ বিষয়ে এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপলের (এলকপ) পক্ষ থেকে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয় ‘সংখ্যালঘুরা তুলনামূলক শেখ হাসিনা সরকারের আমলে অনেক ভালো অবস্থানে আছেন।’ শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই নয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের শিক্ষা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। এর মাধ্যমে ধর্মীয় সংখ্যালঘু শিশু ও বয়স্করা মন্দির ভিত্তিক লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তীর্থযাত্রা ও ধর্মীয় পণ্ডিতদের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মন্দির, উপাসনালয় নির্মাণ ও সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। (সূত্র- মিডিয়াকর্মী বিপ্লব কুমার পাল)
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর দীর্ঘ ৬০ বছরের পুরানো সমস্যা মিটিয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরকে দেড় বিঘা জমি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি মালিকানা দেওয়ার ক্ষেত্রে হেবা আইনের নিয়মমাফিক নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে সম্পত্তি হস্তান্তর করার সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে। হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রি আইন; শত্রু সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন করা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের স্থায়ী আমানত ২১ কোটি টাকা হতে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের জন্য হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ হতে অনুদান সহায়তা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সারা দেশে ৭ হাজার ৪০০টি মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতি বছর ২ লাখ ২ হাজার জনকে প্রাক-প্রাথমিক, বয়স্ক ও ধর্মীয় গ্রন্থ গীতা শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১৩ হাজার ৮০৮টি মন্দিরের সংস্কার আর উন্নয়ন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ২১৮ কোটি টাকা। ৮৮৯টি হিন্দু শ্মশানের অনুকূলে ৩৩ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ৪ হাজার ২০৩ জন অসচ্ছল ও দুস্থ হিন্দু ব্যক্তির অনুকূলে ৬৬ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হয়েছে। ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মোট ১৫৮টি মন্দির ও শ্মশান সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের উন্নয়নে আরও ১০ কোটি টাকার উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। জনৈক গবেষক লিখেছেন, ‘‘ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ইতিহাস একসময় সুখকর ছিল না। পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরও বি়ভিন্ন সময়কালে বারবার দুর্বৃত্তদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। পাকিস্তান সৃষ্টির পরই ১৯৫০ সালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হামলা হয়, স্বর্ণালংকার লুট হয়। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের শাসনামলের শুরু এবং ১৯৬৪ সালের দাঙ্গার পর বেশ কিছুটা সময় মন্দিরে পূজা অর্চনা বন্ধ থাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মন্দিরটি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মন্দিরের অর্ধেকের বেশি ভবন ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। প্রধান ভবনটি দখল করে পাক হানাদার বাহিনী গোলাবারুদ রাখার গুদামে পরিণত করে।বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ঢাকেশ্বরীতে হারানো গৌরব ফিরে আসে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আনন্দের সাথে পূজা অর্চনা শুরু করে। কিন্তু জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের পরই ১৯৭৫ সালের ২৫ নভেম্বর মন্দিরে আবারও হামলা চালানো হয়। সামরিক শাসনামলে ১৯৮৩ সালে মন্দির লুট ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ১৯৯০ সালে এরশাদের আমল ও ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়ার আমলে ঢাকেশ্বরী মন্দির সহ সারা দেশে মন্দিরে হামলা সহ আগুন দেয়া হয়। একই ঘটনা ঘটে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর। তখন জগন্নাথ হলের ছাত্রলীগের নেতারা সাধারণ ছাত্রদের সাথে নিয়ে প্রায়শই মন্দির পাহারা দিতো। প্রতিটি সময়ই সহযোগিতার হাত নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা।’’
তিন.
গত বছর (২০২৩) ২২ অক্টোবর দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে ছিল এবং আছে। “আমাদের স্লোগান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সবাই আমরা ঠিকই এভাবে উৎসব পালন করে যাচ্ছি।’’ তিনি সেসময় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। ‘৯২, ২০০১ ও তার আগে বার বার আঘাত এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আপনাদের পাশে ছিল, পাশে আছে।“আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন করেন, সেটাই আমরা চাই।” গতবছর (২০২৩)সাড়া দেশে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে।ওই বছর ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বেশি আপন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘ভুলভ্রান্তি আমাদের থাকতে পারে। কিন্তু এ দেশে বঙ্গবন্ধু, এরপর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা; এঁদের চেয়ে অন্য কেউ আপনাদের বেশি আপনজন, এটা আমি মনে করি না। আপনাদের সব দুঃখ–কষ্টে শেখ হাসিনার উদ্বেগ, বিচলিত হওয়া ও সহানুভূতিশীল হওয়ার যে মানসিকতা, সেটা আমরা খুব কাছ থেকে অনুভব করি।’
চার.
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য হলো-সব ধর্মের, সকল বিশ্বাসীর মিলে মিশে থাকার ঐতিহ্য। এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রীতির বন্ধনে জীবন-যাপন করে। জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি এই সম্প্রীতি রক্ষার রাজনীতি। এজন্য তিনি বলেছেন, ‘আপনারা নিরাপদে যার যার ধর্ম পালন করবেন। কারা সংখ্যায় বেশি, কারা কম, সেটা বড় কথা নয়। যে যার ধর্ম উৎসবের সঙ্গে স্বাধীন ভাবে পালন করবেন। সেটা নিশ্চিত করা নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রত্যাশার এই তীব্রতা শেখ হাসিনার মানবতাবোধ থেকে উৎসারিত। তাঁর রাজনীতিচিন্তার অন্যতম স্তম্ভও এটি। তিনি যেন নজরুলের মতোই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘ইসলাম ধর্ম কোনো অন্য ধর্মাবলম্বীকে আঘাত করিতে আদেশ দেন নাই। ইসলামের মূলনীতি সহনশীলতা। পরম সহনশীলতার অভাবে অশিক্ষিত প্রচারকদের প্রভাবে আমাদের ধর্ম বিকৃতির চরম সীমায় গিয়া পৌঁছিয়াছে।’ কবির মতো শেখ হাসিনাও জানেন, ‘মানুষকে মানুষের সম্মান দিতে যদি না পারেন, তবে বৃথাই আপনি মুসলিম।’ তবু ধর্ম নিয়ে, ইসলাম নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার থেমে নেই। অপপ্রচার মোকাবেলার জন্য শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে-তাহলেই সম্প্রীতির বাংলাদেশ টেকসই হবে।
লেখক : ড. মিল্টন বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু গবেষক, বিশিষ্ট লেখক, কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম এবং অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, email-writermiltonbiswas@gmail.com