চাষে ব্যবহৃত ১২ রকমের কীটনাশক (Pesticides) ওষুধ অর্থাৎ কৃষি-বিষের ওপর আনা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে। চাষিরাও ফসলে সেগুলো ব্যবহার করছেন।
এরফলে পরিবেশবান্ধব না হওয়ার কারণে মাটির ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া পরিবেশে বন্ধুপোকা নাশ হওয়ার কারণে চিন্তিত কৃষিবিজ্ঞানীরা। বাজারে এগুলি লাল চিহ্নযুক্ত বা ভয়ঙ্কর বিষ হিসাবে পরিচিত। আরামবাগ মহকুমার কৃষি আধিকারিক বিকাশ দে জানান, সরকারিভাবে জেলা কৃষি দফতরের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ওই সমস্ত কীটনাশক ব্যবহারের। এগুলি প্রতিটি ব্লকের কৃষি অধিকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৮টি কৃষি-বিষের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর এনিয়েই প্রতিটি কৃষি-বিষের দোকানে পাঠানো হচ্ছে বিজ্ঞপ্তি। যদি এই বিষ বিক্রির অভিযোগ ওঠে তাহলে জুটতে পারে কঠোরতম শাস্তি ওই দোকানদারের।
কৃষিদপ্তর সূত্রের খবর, যে ১৮টি কৃষি-বিষ চিহ্নিত হয়েছে সেগুলি হলো, বেনোমিল (Benomyl), কার্বারিল (carbaryl), ডায়াজিনন (diazinon), ফেনারিমল (phenarimol), ফেনথিয়ন (fenthion), লিনিউরন (linneuron), মিথক্সি ইথাইল (methoxy ethyl), মারকারি ক্লোরাইড (mercury chloride), মিথাইল প্যারাথিয়ন (methyl parathion), সোডিয়াম সায়োনাইড (sodium cyanide), ট্রাইডিমর্ফ (tridimorph), ট্রাই ফ্লুরালিন (trifluralin) ইত্যাদি। এগুলি বাজারে লালচিহ্ন যুক্ত ভয়ঙ্কর বিষ পর্যায়ের কীটনাশক ওষুধ। তবে হলুদ চিহ্ন যুক্ত খুব বিষাক্ত গোত্রিয় ৬টি ওষুধ আর তৈরি করা যাবে না। এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেগুলি হল — এলাক্লোর (Elachlor), ডাইক্লোরোভস (dichlorvos), ফোরেট (phorate), ফসফোমিডন (phosphomidone), ট্রায়াজোফস (triazophos) ও টাই ক্লোরোফোন (tichlorophon)। হুগলি জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে এই সমস্ত ছত্রাকনাশক ওষুধগুলি পরিবেশে অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য ও কেন্দ্রসরকার পরিবেশ সুস্থ রাখার জন্যই এই ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে। প্রসঙ্গত, এই সমস্ত কৃষি-বিষগুলি বাজারে কৃষকদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত নাম। তাই এই কৃষি-বিষের ব্যবহারের ক্ষতির দিকগুলি নিয়ে ব্লক কৃষিদফতর যেমন নানাভাবে কৃষকদের সচেতন করছে, পাশাপাশি কৃষি-দফতরের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবিরেও আলোচনা হচ্ছে ক্ষতির দিকগুলি নিয়ে। সুস্থ সমাজ গড়তে এবং মাটির গুণমান ভালো রাখার উদ্দেশ্যেই এই অভিনব উদ্যোগ বলে জানা গেছে।