মঙ্গলবার | ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:৫৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়-এর ছোটগল্প ‘প্রাতঃভ্রমণ’ বন্যায় পুনর্জীবন বেহুলার : রিঙ্কি সামন্ত গরানহাটা কি ছিল ভেড়ার হাট : অসিত দাস ডিভিসি-র ছাড়া জলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ নাজেহাল, দায় কার : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সুধীর চক্রবর্তী মুক্তধারা ভাষণমালা : দীপাঞ্জন দে বোর্হেসের গোলকধাঁধা : অশ্রুকুমার সিকদার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের দুর্গোৎসব : রিঙ্কি সামন্ত মর্ত্যে দুর্গাপূজার সেকাল ও একাল : অসিত দাস বই-বাই : নবনীতা দেব সেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘প্রবাসী’ ম্যান মেড নয় ডিভিসি-র পরিকল্পনা আর রূপায়নে গলদ : তপন মল্লিক চৌধুরী রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে রাখাইনে সেইফ জোন তৈরি করা আবশ্যক : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ফলের নামটি পাকা কলা : রিঙ্কি সামন্ত বই-বাই : নবনীতা দেব সেন হেমচন্দ্র বাগচীর ১২০তম জন্মবর্ষ : দীপাঞ্জন দে নিম্ন চাপের অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত আরামবাগ : দেবাশিস শেঠ আরামবাগে ভয়াবহ বন্যা, দুর্যোগের পদধ্বনি, ক্ষোভ জনমানসে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন মেয়েদের ক্ষমতায়নের পক্ষেও আওয়াজ তুলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী কবি দেবদাস আচার্য-র কবিতাজগৎ — বহমান পৃথিবীর জীবনপ্রবাহ, চেতনাপ্রবাহ : অমৃতাভ দে মনসার নাম কেন ঢেলাফেলা : অসিত দাস ভোও.. ও ..ও.. কাট্টা…! ভো… কাট্টা…! : বিজয় চৌধুরী দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা : সন্দীপন বিশ্বাস নারীবেশী পুরুষ অভিনেতা শঙ্করকে সামাজিক ট্যাবুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় না : বিশ্বেন্দু নন্দ সাসারামের রোহতাসগড়, বৃহতের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ : নন্দিনী অধিকারী জমিদার রবীন্দ্রনাথ : আহমাদ ইশতিয়াক আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর, এবারও অধরা রইলো আলোচনা : সুমিত ভট্টাচার্য জগদীশ গুপ্তের গল্প, কিছু আলোকপাত (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব চাষির দুঃখের ঘরে সাপের বাসা, আজও রেহাই নেই ছোবলের হাত থেকে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় সল্টলেক তথা লবণহ্রদই কি কুচিনান : অসিত দাস পদ্মা বা পার্শ্বপরিবর্তনী একাদশী ব্রতকথা : রিঙ্কি সামন্ত
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে সকল বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ কৌশিকী অমাবস্যার-র আন্তরিক প্রীতি, শুভেচ্ছা, ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

আহা, এমন যদি হত? : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ২৮৩ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩

চন্দ্রযান-৩ যেদিন চাঁদের মাটি স্পর্শ করে সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিদেশে। তিনি গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে। জোহানেসবার্গ থেকে তিনি অবশ্য ভার্চুয়াল মাধ্যমে চন্দ্রযানের চন্দ্রে অবতরণের দৃশ্য দেখেন। তারপরে বিদেশে তিনি ভারতের ডঙ্কা বাজান। খুব স্বাভাবিক। কারণ চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য কম নয়। চাঁদের যে মেরুতে অন্য কোন দেশের চন্দ্রযান অবতরণ করে নি, সেখানে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩।

দেশে ফিরে দিল্লি না গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সোজা চলে আসেন বেঙ্গালুরুতে। রোড শো করে তিনি আসেন ইসরোর টেলিমেট্রি ট্র্যাকিং অ্যাণ্ড কম্যাণ্ড নেটওয়ার্ক মিশন কন্ট্রোল কমপ্লেক্সে। তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সংস্থার চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রযান-৩-এর নেপথ্য কাহিনি ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং বার বার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তারপর ‘জয় বিজ্ঞান’ ধ্বনি তুলে তিনি চাঁদের জমির নামকরণ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের বিক্রম ল্যাণ্ডার চাঁদের যে অংশে নেমেছে সে ছবি আমি দেখেছি। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবার চাঁদের ওই অংশে কোন দেশ পা ফেলতে পারল। আর সেই ছবি গোটা বিশ্ববাসী দেখেছে। চন্দ্রযান-৩ কেবল ভারতের নয়, মানব সভ্যতার সাফল্য। চাঁদের যে মাটির যে অংশে বিক্রমল্যাণ্ডার অবতরণ করেছিল, সেই অংশের নাম হবে ‘শিবশক্তি’।”

‘শিবশক্তি’ নামকরণের কারণও ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “শিব নামের মধ্যে মানব সভ্যতার কল্যাণের সংকল্প রয়েছে। আর শক্তির মাধ্যমে ওই সংকল্প পূরণ করার সাহস তৈরি হবে আমাদের মধ্যে। হিমালয় থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত যুক্ত থাকার অনুভূতি যোগাবে চাঁদের শিবশক্তি পয়েন্ট। যে মনোযোগ দিয়ে আমরা কর্তব্য পালন করি, বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা এবং বিচারে অগ্রগতি লাভ করি আর কল্যাণমূলক সংকল্প নিই, সে ক্ষেত্রে এই শক্তির প্রয়োজন রয়েছে আমাদের। দেশের নারীশক্তিও এই চন্দ্রাভিযানে বিশাল ভূমিকা নিয়েছে। চাঁদের এই শিবশক্তি পয়েন্ট ভারতের সেই মহিলা শক্তির প্রতীক হয়ে থাকবে।”

এই সময়ে ইসরোর বেশ কিছু তরুণ বিজ্ঞানী চেয়ারম্যান এস সোমনাথের কাছে উপস্থিত হলেন একটা অনুরোধ নিয়ে। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি ঘরোয়া আলোচনার আয়োজন করেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান সে বৈঠকে বসতে অনুরোধ করেন। রাজি হয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী।

মিশন কমপ্লেক্সের কাছেই ছিল একটি বিশাল হলঘর। সেখানেই বসল বৈঠক। চা-পানের পরে একজন বিজ্ঞানী উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, স্যার —

তাঁকে থামিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন, এসব আংরেজি শব্দ নয়, তুমি আমাকে প্রধানমন্ত্রীজি বা মোদিজি বলতে পারো। কি বলছিলে যেন?

বিজ্ঞানী বললেন, আপনি দেশ-বিদেশ ঘুরতে খুব ভালোবাসেন, না! সারা পৃথিবী প্রায় ঘুরে ফেলেছেন মনে হয়।

প্রধানমন্ত্রী মৃদু হেসে বলেন, ঘুরতে ভালোবাসি ঠিকই। তবে এসব ঘোরা রাষ্ট্রের প্রয়োজনে।

আর একজন বিজ্ঞানী বললেন, আপনার কোন পরিবার নেই। আপনি একা। নিঃসঙ্গতা লাগে না আপনার?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিসের নিঃসঙ্গতা? সারা দেশেই আমার ঘর। কিন্তু এসব ব্যক্তিগত কথা কেন, তোমরা চন্দ্রবিজয়ের কথা বলো, বিজ্ঞানের কথা বলো। আমি এবং আমার সরকার তোমাদের পাশে আছি। আমাদের আমলেই অসম্ভব সম্ভব হল। ২০১৯-এ ব্যর্থ হয়েছিলাম আমরা, বড় কষ্ট হয়েছিল, আজ আমরা সফল।

তামিলনাড়ুর একজন তরুণ বিজ্ঞানী বললেন, আমার অনুরোধ চন্দ্রযানের এই সাফল্যকে সামনের নির্বাচনে ব্যবহার করবেন না।

অবাক হলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, করব না! বলো কি! এটা যে এখন আমার তরুপের তাস। একের পর এক সমস্যা আসছে। আজ মণিপুর তো কাল হরিয়ানা, তার উপর সুপ্রিম কোর্টের সিজিআই, তার উপর ঘরভেদী বিভীষণেরা। তার উপর নাগপুর আর গোরক্ষপুর লবি। সামনের নির্বাচনে চন্দ্রাভিযানের সাফল্য ব্যবহার করতেই হবে।

গুজরাটের এক তরুণ বিজ্ঞানী উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, মোদিজি, আমাদের এই ইসরোর একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে। আপনাকে একটু স্মরণ করিয়ে দিই। মহাকাশ গবেষণার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাই-এর অনুরোধে ১৯৬২ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু পরমাণু শক্তিবিভাগের (ডি.এই) অধীনে ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি ফর স্পেস রিসার্চ (ইনকোসপার) প্রতিষ্ঠা করেন। ডি এইর মধ্যে ইনকোসপার বিকশিত হয়ে ১৯৬৯ সালে তৈরি হয় ইসরো। এবার ১৯৭২ সালের কথা। এই সালে ভারত সরকার মহাকাশ কমিশন ও মহাকাশ বিভাগ (ডস) গঠন করেন। ইসরোকে ডসের অধীনস্থ করা হয়। মহাকাশ প্রযুক্তি ও জ্যোতির্বিজ্ঞান-এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ডসের দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতের মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রম গতিবেগ লাভ করে। ভারত প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করে, যার নাম আর্যভট্ট। এটি উৎক্ষেপণ করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৯ এপ্রিল, অবশ্য সোবিয়েত ইউনিয়নের দ্বারা। এবার ১৯৮০ সালের কথা। এই সালে ইসরো এস এল ভি-৩ রকেটের সাহায্যে যে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে তার নাম আর এস-১।

মোদিজির মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল তিনি অসন্তুষ্ট হচ্ছেন। কোন ঋদ্ধিযুক্ত পুরুষ যে পরের প্রশংসা শুনতে ভালোবাসেন না, সে কথা বলে গেছেন দীনেশচন্দ্র সেন মহাশয় তাঁর ‘রামা্য়ণী কথা’ বইতে রামচন্দ্র প্রসঙ্গে। মোদিজি তাই বক্তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, এই ঘরোয়া বৈঠকে ইতিহাসের কচকচি ভালো লাগছে না।

তখন বাংলার এক বিজ্ঞানী বললেন, প্রধানমন্ত্রীজি, আমার একটা প্রশ্ন ছিল।

মোদিজি রুমাল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বললেন, বলে ফেলো।

— আপনি চাঁদের জমির নামকরণ করার আগে ‘জয় বিজ্ঞান’ ধ্বনি দিয়েছিলেন। কেন এ রকম ধ্বনি দিয়েছিলেন ?

মোদিজি বললেন, বারে, দেব না! বিজ্ঞানের জন্যই তো এ অসম্ভব সম্ভব হয়েছে।

–তাহলে আপনি আধুনিক বিজ্ঞান মানেন ?

— মানব না কেন! এসব কি বলছ তুমি ?

— কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আপনি ও আপনার দলের সদস্যরা বলে চলেছেন যে আধুনিক বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার না কি আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রে আছে। এমন কি বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০২তম অধিবেশনে ক্যাপ্টেন আনন্দ জে বোদাস বলেছেন সাত হাজার বছর আগে মহর্ষি ভরদ্বাজ না কি তাঁর ‘বৈমানিক শাস্ত্র’ বইতে এমন বিমানের কথা উল্লেখ করে গেছেন। সে বিমান শুধু একদেশ থেকে অন্য দেশ নয়, এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে পাড়ি দিতে পারত। সে বিমানের প্রযুক্তি এমনই ছিল যে মাঝ আকাশে বিমানকে স্থিরভাবে ভাসিয়ে রাখা যেত। এই বিমানে গোরু বা হাতির মূত্রকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হত।

বিজ্ঞানীর কথা শুনতে শুনতে মোদিজির মুখের রেখা কঠোর হয়ে উঠল। কিন্তু এই রকম পরিবেশে ক্রোধ প্রকাশ করা ঠিক হবে না বলে তিনি চুপ করে বসে রইলেন। এদিকে গোরুর কথা শুনে ওড়িশার এক তরুণ বিজ্ঞানী হাসতে হাসতে বলে বসলেন, গোরুকে নিয়ে বোধহয় আপনাদের অবসেশন আছে। আপনারা বলে বেড়ান গোরুর দুধে সোনা আছে, গোরুর মূত্র পান করলে করোনা পালাতে পথ পায় না, গোরু অক্সিজেন গ্রহণ করে আবার অক্সিজেন ত্যাগ করে, বাড়ির দেওয়ালে গোবর লেপে রাখলে ভূমিকম্পের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

হাসির রোল উঠল সভায়। এ যে ব্যঙ্গের হাসি সেটা মোদিজি বুঝতে পারলেন। রাগে তাঁর শরীর জ্বলতে লাগল। মনে মনে ঠিক করলেন এই ছোকরাগুলোর খোঁজ-খবর নিতে হবে। তারপর লাগিয়ে দিতে হবে ইডি বা সিবিআইকে। কিন্তু সেটা প্রকাশ না করে তিনি বিজ্ঞানীদের হাসিতে যোগ দিলেন, তার মানে নিজেও হাসতে লাগলেন। পেছনের দিক থেকে কে যেন বলে উঠল, আরে আমাদের মোদিজিও কম যান না; তিনি বলেছেন প্রাচীন ভারতে নাকি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ছিল, ছিল প্লাস্টিক সার্জারি। মোমবাতি জ্বালিয়ে করোনার হৃদপিণ্ড ফাটিয়ে দেবার বিধানও তিনি দিয়েছিলেন।

দিল্লির এক তরুণ বিজ্ঞানী বললেন, মোদিজি, একটি নামকরা ইংরেজি সংবাদপত্র আপনাদের কয়েকজনকে ‘সায়েন্স লরিয়েট’ উপাধি দিয়েছে।

এবার প্রধানমন্ত্রী উৎসাহী হয়ে উঠলেন। বললেন, তাই না কি? কে কে আছে সেই তালিকায় ?

—আপনি তো আছেনই। এছাড়া আছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্তকুমার হেগড়ে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্রকুমার সিং, উত্তরপ্রদেশের ভাজপা নেতা রঞ্জিৎ শ্রীবাস্তব, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিং, ভোপালের ভাজপা সাংসদ প্রগ্গা ঠাকুর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।

বৈজ্ঞানিকদের রগড়টা বুঝতে পারলেন মোদিজি। ধনখড় বলেছিলেন অর্জুনের তিরে অ্যাটমিক শক্তি ছিল, বিপ্লব বলেছিলেন প্রাচীন ভারতে স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ইন্টারনেট ছিল, গোরুর অক্সিজেন গ্রহণ ও অক্সিজেন ত্যাগের কথা বলেছিলেন ত্রিবেন্দ্র সিং, সত্যপাল সিং ডারইউনের বিবর্তনবাদকে পাঠ্য থেকে বাদ দিতে বলেছিলেন, প্রগ্গা বলেছিলেন গোরুর মূত্র পান করে তাঁর না কি ক্যানসার সেরে গেছে, হর্ষবর্ধন বলেছিলেন বেদের থিয়োরি আইনস্টাইনের থিয়োরি অব রিলেটিভিটির চেয়ে অনেক ভালো আর অনেক শক্তিশালী। এসব নিয়ে রগড়ে মেতেছে ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কি করা যাবে এখন! কি করে বেরোনো যাবে এই চক্রব্যূহ থেকে?

মোদিজি যখন এইসব ভাবছেন, তখন কর্নাটকের এক বৈজ্ঞানিক বলে বসলেন, জানি আপনি নামকরণ করতে খুব ভালোবাসেন। দেশের নানা জায়গার মুসলমানি বা খ্রিস্টানি নাম বদলে আপনি হিন্দু নাম করেন। কিন্তু চাঁদের জমির ‘শিবশক্তি’ নামটা ঠিক হয় নি। এতে অন্য দেশের কাছে ভুল বার্তা যাবে।

মোদিজি প্রশ্ন করলেন, কেন ?

—এ নাম আপনি হিন্দু শাস্ত্র থেকে নিয়েছেন। অন্য দেশের লোক ভাববে আপনি চাঁদেও হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এই নাম দিয়েছেন।

এর মধ্যে বাঙালি বিজ্ঞানীটি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। তিনি মোদিজির দিকে তাকিয়ে বললেন, আমার অনুরোধ এসব অপবিজ্ঞানের খেলা এবার বন্ধ করুন। আপনি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই।

মোদিজি ঘাড় নাড়লেন। বাঙালি বিজ্ঞানী বললেন, মেঘনাদ সাহার জীবনের একটা গল্প বলি শুনুন। ঢাকা শহরের এক উকিল তাঁর গবেষণার বিষয় জানতে চাইলে মেঘনাদ সাহা তা বিবৃত করেন। সব শুনে উকিলটি বলেন যে এই গবেষণার মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই, কারণ এ সমস্ত বেদে আছে। তখন ড. সাহা জানতে চান বিজ্ঞানের তত্ত্ব বেদের কোন অংশে আছে। উত্তরে উকিলটি বলেন যে তিনি বেদ পড়েন নি, তবে তাঁর বিশ্বাস বেদে সবই আছে। এর পর মেঘনাদ সাহা কয়েক বৎসর ধরে বেদ, উপনিষদ, পুরাণ পড়তে থাকেন মনোযোগ দিয়ে। কিন্তু তন্ন তন্ন করে খুঁজে এ সবের মধ্যে বিজ্ঞানের মূল তত্ত্ব দেখতে পান নি।

এ পর্যন্ত বলে বাঙালি বিজ্ঞানীটি বললেন, আপনারা হলেন সেই উকিলের উত্তরসূরী।

মোদিজি দেখলেন বিপদ ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে।

তিনি বললেন, এ সবই জুমলা। রাজনীতিকদের এ রকম জুমলা করতেই হয়।

এরপর মোদিজি চারদিকে তাকিয়ে দেখে বললেন, এখানে সি সি টিভি নেই তো! আপনারা স্মার্ট ফোনে ভিডিয়ো করে রাখেন নি তো!

পেছনের সারির এক বৈজ্ঞানিক বললেন, না, না এসব ভয় পাবেন না। তবে এরপর অপবিজ্ঞান ছড়াতে গিয়ে যেন ভয় পান।

[প্রধানমন্ত্রী ইসরোতে গিয়েছিলেন, চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছিলেন। এগুলি বাস্তব। কিন্তু তরুণ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক কাল্পনিক]


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন