মঙ্গলবার | ১লা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:২৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
রাঁধুনীর বিস্ময় উন্মোচন — উপকারীতার জগৎ-সহ বাঙালির সম্পূর্ণ মশলা : রিঙ্কি সামন্ত রামনবমীর দোল : অসিত দাস মহারাষ্ট্রে নববর্ষের সূচনা ‘গুড়ি পড়বা’ : রিঙ্কি সামন্ত আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ও রোহিঙ্গা সংকটে অগ্রগতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন এথেন্সের অ্যাগনোডাইস — ইতিহাসের প্রথম মহিলা চিকিৎসক : রিঙ্কি সামন্ত সন্‌জীদা খাতুন — আমার শিক্ষক : ড. মিল্টন বিশ্বাস হিমঘরগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু মজুত, সস্তা হতে পারে বাজার দর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল : সুশীল চৌধুরী (৫৮ নং কিস্তি), অনুবাদ : বিশ্বেন্দু নন্দ

বিশ্বেন্দু নন্দ / ১৮০ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩

ট্রেড এন্ড কমার্সিয়াল অর্গানিজেশন ইন বেঙ্গল ১৬৫০-১৭২০, উইথ স্পেশাল রেফারেন্স টু দ্য ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি

ষষ্ঠ অধ্যায়

চিনি, সুতো এবং অন্যান্য রপ্তানি পণ্য

এছাড়াও কোম্পানি ক্যালকো আমদানি নিয়েও নিজের রক্ষণ সাজাতে তৈরি হল, তারা বলল ক্যালিকো খুবই কাজের পণ্য, ফরাসী ডাচ বা ফ্লান্ডার্স লিনেন যে কাজ করে এটাও সেই ধরণের কাজ করে। তাদের আরও বক্তব্য ছিল, এই পণ্য আমদানিতে জাতি শুধু ৩ লক্ষ পাউন্ড বাঁচায় তাই নয়, ভারত থেকে এই পণ্য আমদানির ফলে প্রতিবেশী দেশগুলি, যাদের আমরা ভয় করি, তারাও ধনী হয় না (প্যাপিলন, দ্য ইস্ট ইন্ডিয়া ট্রেড আ মোস্ট প্রফিটেবল ট্রেড টু দ্য কিংডম, ১০)। ১৭০০ সালের আইনে বাংলা থেকে আমদানি করা কোরা রেশম এবং সুতি আর রেশম সুতোয় মেলানোমেশানো কাপড় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে, কোম্পানি সাদা ক্যালিকো এবং মসলিন আমদানি করতে থাকে যেগুলি ইংলন্ডে ছাপানো হতে থাকে। এই আইন বাঙলার কুঠিয়ালদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তারা কর্তাদের ১৭০২তে লিখলেন, সব সাদা পণ্য ইংলন্ডে এত শস্তা দরে বিক্রি হয়, এবং সুতি আর রেশম পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে, এতে আমাদের বিপুল ক্ষতি হবে, আমরা কর্তাদের থেকে কাপড়ে বিনিয়োগের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকলাম (ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, কলকাতা, খণ্ড ৮, ২ অংশ, ১৪৯)।

আইনটা খুব বড়ভাবে বাঙলার রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলল না, শুধু আশেপাশের কয়েক বছর হাল্কা ধাক্কা দিল মাত্র। আইনটা যেহেতু কার্যকর হল না, ১৭২০ সালে আরও একটা আইন বানানো হল যাতে ইংলন্ডে ক্যালিকো পরা আর ছাপানো আরও কড়াভাবে নিষিদ্ধ করা হল। কিন্তু একটা ছাড় ছিল – নিষিদ্ধ পণ্য ইংলন্ডে আনার একটাই শর্ত দেওয়া হল এগুলি ইংলন্ডে বিক্রি না করে সব কটাই রপ্তানি করে দিতে হবে। এর ফলে ১৭২০র পরে বাংলা থেকে সুতি আর রেশম টুকরো কাপড়ের রপ্তানি নতুন করে জীবন লাভ করে (এস ভট্টাচার্য, প্রাগুক্ত, ১৫৮-৫৯)।

সরবরাহের দিক থেকে দেখতে গেলে প্রতিযোগিতা ত্রিভূজাকৃতি ছিল — মূলত ডাচ ব্রিটিশ আর দেশিয় বণিকদের মধ্যে। বাংলার কাপড় উতপাদনের মূল কেন্দ্রগুলি ছিল কাশিমবাজার, ঢাকা, মালদা, হুগলী, বালেশ্বর, পাটনা, যে সব বাজারে মূলত দেশিয় বণিকেরা ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি বাংলায় আসার বহুকাল আগে থেকে তাঁতিদের কাপড় কেনে।

বাংলার কোন ভৌগোলিক এলাকা থেকে কোম্পানি কত পরিমান টুকরোকাপড়ের বরাত দেয়

এলাকা                   ১৬৮১র নভেম্বর বরাত             ১৬৮২-র আগস্টের বরাত               ১৬৮৩-র ডিসেম্বর বরাত

কাশিমবাজার            ৮৪,১০০টি                                     ২,২২,৬০০টি + ২০ বেল                      ২,০৮,০০০টি + ২০বেল

হুগলী                        ২৩,৫০০টি                                     ১,১০,২০০টি +  ২০ বেল                     ১,৫৮,৩০০টি + ২০ বেল

বালেশ্বর                    ৭২,৫০০টি                                      ১,৬২,০০০টি + ১৬ বেল                     ১,৫৮,০০০টি + ১৬বেল

ঢাকা                         ২১,৩০০টি                                     ৮১,৫০০টি + ১২ বেল                        ৭১,৫০০টি + ১২ বেল

মালদা                      ২৭,৮০০টি                                      ৮৬,৫০০টি + ২০ বেল                       ৮৬,৫০০টি + ২০ বেল

মোট                        ২,২৯,২০০টি                                    ৬,৬২,৮০০টি + ৬৮ বেল                 ৬,৮২,৩০০ + ৬৮ বেল

সূত্র ডিবি, ৮৯ এবং ৯০ খণ্ড

মালদায় ব্রিটিশেরা কুঠি তৈরির বেশ কিছু বছর আগে ১৬৭৬ সালে রিচার্ড এডওয়ার্ডস সমীক্ষা করে জানিয়েছিলেন, এই বাজারে মূল ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আগরা, গুজরাট এবং বেনারসের বণিকদের কুঠিয়ালেরা যারা বছরে ১৫ থেকে ২৫টি পাটেলাভরা কাপড় রপ্তানি করে (চ্যাপটা তলাওয়ালা মালবাহী নৌকো), এর মধ্যে মধ্যমানের খাসা, মলমল… সব ধরণের মণ্ডিল আর এলাইচি কাপড় ছিল। পণ্য ভর্তি করলে পাটোলার মূল দাঁড়াত ১ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক কোরা রেশম এবং উল্লিখিত কাপড়। এছাড়াও এখান থেকে ঢাকায় যেত প্রতিবছর তিন লক্ষ টাকার কাপড় শুধু এলাইচি এবং মোটা কাপড় ব্যবসায় এবং একই পরিমানে ব্যবসা করত রাজমহল এবং মুর্শিদাবাদ এবং তার নিচের অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ীরা (মাস্টার্স ডায়েরি, প্রাগুক্ত, খণ্ড ১, ৩৯৯-৪০০; ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, মিসলেনি, খণ্ড ১৪, ৩৩৪-৩৬)। স্বাভাবিক যে ডাচ কোম্পানি ছাড়াও দেশিয় ব্যবসায়ীরা ব্রিটিশদের প্রতিটি এলাকায় বিপুল প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দেয়। এই ত্রিভূজ প্রতিযোগিতা কিভাবে সে সময়ের পণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলেছিল সেটা আন্দাজ করা মুশকিল (তিনি এই বইটির ২০ বছর পরে লেখা ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইনে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, ইওরোপিয়দের বাণিজ্যকর্ম দেশিয় বাজারের দামে খুব বেশি প্রভাব ফেলে নি)। তবে অর্থনীতির সাধারণ নিয়মে বলা যায় যে, যতবেশি প্রতিযোগী হবে তত দাম বাড়বে। জানা যাচ্ছে যে, ১৬৭৬ সালে মালদার বাজারে ব্রিটিশদের আগে আসা ডাচেরা অনেক শস্তায় মসলিন কিনত। ১০ গজ x ১.২৫ গজ যে কাপড়ের দাম ছিল ৬ থেকে ১০ টাকা সেটা স্ট্রেশ্যাম মাস্টারের সময়ে বেড়ে হয়েছিল ৯ থেকে ১৫ টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পায় (মাস্টার্স দায়েরি, প্রাগুক্ত, খণ্ড ১, ১৩৯, ৩৯৯; ফ্রাক্ট্রি রেকর্ডস, মিসলেনি, ১৪ খণ্ড, ৩৩৫-৩৬)।

কিন্তু বিপুল চাহিদা থাকলেও কোনও কোনও বাজারে তাঁতিদের সংখ্যা বেশি হলে পণ্যের দাম কমে যেত। ১৬৭৬-এ ম্যাথায়াস ভিনসেন্টএর সমীক্ষায় প্রকাশ পায় যে কাশিমবাজারের কুঠি স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই কিছু তাঁতি সেখানে বাস করতে চলে আসে, তাতে তাফেতার দাম বেশ কমে যায়। ভিন্সেন্টের সমীক্ষা অনুযায়ী ১২/১৩ বছর আগে যে তাফেতার দাম ছিল ১৫টাকা, সেটি তৈরি করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার দাম এখন ৬ টাকায় নেমে এসেছে। এর অর্থ দাম কমেছে প্রায় ৫০%(মাস্টার্স ডায়েরি, প্রাগুক্ত, খণ্ড ১, ১৩৯; খণ্ড ২, ১১; ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, মিসলেনি, খণ্ড ১৪, ৩২৭-২৮)। তবে অন্যান্য প্রতিযোগীর উপস্থিতিতে পণ্যের দাম যে বাড়ছে সে অভিযোগ পাচ্ছি ব্রিটিশ কুঠিয়ালদের থেকে নিয়মিত। কোম্পানির খাতা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে পরিষ্কার যে অধিকাংশ সময়ে ব্রিটিশদের তত্ত্বাবধানে থাকা তাঁতিদের লোভ দেখিয়ে ফুসলে নিয়ে যেত ডাচেরা (সুপ্রা, অধ্যায় ৫, II)। ১৬৮৪ সালে ব্রিটিশ কোম্পানির ঢাকা কুঠিয়ালেরা আশংকা প্রকাশ করে বলে যে তিন কোম্পানি ব্যবসায়ী মথুরাদাস, রঘুনাথ এবং রামনারায়ন ঢাকার কাপড়ের বাজারে বহু দালাল পাঠানোর জন্যে তাঁতিরা কাপড়ের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে (ফ্যাক্ট্রি রেকর্ডস, হুগলী, ১০ খণ্ড, ২০৭)। পুরোনো এবং নতুন কোম্পানির তীব্র প্রতিযোগিতার জন্যেও অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে পণ্যের দাম বেড়েছে। নতুন কোম্পানির কুঠিয়ালের ১৭০০ সালে লিখলেন, আড়ঙের আশেপাশে অঞ্চলের এবং তার বাইরেও যে সব পণ্য তারা ব্যবহার করেন, সেগুলির দাম বেড়েছে বহুগুণ। তবে এটা আমরা জেনেছি জাহাজ ছাড়ার যত সময় এগিয়ে আসে, যত পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকে, তত সওদাগরদের গদিতে পণ্যের দাম চড়তে থাকে (ওসি, সংখ্যা ১৭২০, ৫৮ খণ্ড)। ভারতীয় দালাল-ব্যবসায়ীদের কাতা কাপড়ের ব্যবসা খুব লাভের পরিগণিত হত, সেই বাজারটা তাদের ধরা ছিল এবং আমাদের আলোচ্য সময়ে স্রফেরাও বড়ভাবে কাতা কাপড়ের ব্যবসায় ঢুকে পড়ে (ডিবি, ৩ ফেব, ১৭২০, ১০০ খণ্ড, ২২২)। (চলবে)


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


StatCounter - Free Web Tracker and Counter StatCounter - Free Web Tracker and Counter