শুক্রবার | ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:১৭
Logo
এই মুহূর্তে ::
জিবিএস নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই, মত চিকিৎসকদের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিন্যাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছেন গল্পকার অনিশ্চয় চক্রবর্তী : পুরুষোত্তম সিংহ বিমল কর-এর ছোটগল্প ‘খিল’ মৌনী অমাবস্যায় তৃতীয় শাহি স্নান : রিঙ্কি সামন্ত ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় টাকা মাটি, মাটি টাকা : দিলীপ মজুমদার মির্জা নাথানের চোখে বাংলার ভুঁইয়াদের হাতি : মাহবুব আলম ভিয়েতনামের গল্প (অষ্টম পর্ব) : বিজয়া দেব ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত “কপোতাক্ষ নদ”-এর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত : আসমা অন্বেষা কৃষ্ণনগরে সর্বধর্ম ভ্রাতৃত্ব সমাবেশ : ড. দীপাঞ্জন দে চোখের ক্যানসার থেকে সাবধান! দিন দিন বাড়ছে, আগাম সতর্কতা জরুরি : ডা. তনুশ্রী চক্রবর্তী রাখাইন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বিদ্বজ্জনসমাজ ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কবিয়ালের প্রেত : অসিত দাস ষষ্ঠীলা একাদশী বা ষটতিলা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত একদা বিরুদ্ধরাই আজ নেতাজির স্তুতিগানে সরব : সন্দীপন বিশ্বাস জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পদবি ঠাকুর থেকে Tagore হওয়ার নেপথ্যকাহিনী : অসিত দাস সুভাষের সুবাসে এখনও ম ম করছে ডালহৌসি শহরের বাতাস — এ এক তীর্থক্ষেত্র : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী তারাভরা তারানাথ (১৮১২-১৮৮৫) : নন্দিনী অধিকারী ‘জাওয়ানি জানেমান হাসিনা দিলরুবা’র একাকিত্বের কাহিনী (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত জোটে ব্রাত্য কংগ্রেস কি দিল্লি ভোটের পর আরও গুরুত্ব হারাবে : তপন মল্লিক চৌধুরী খালাসিটোলা, রবীন্দ্রনাথ ও পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস পীযূষ পাঠ প্রস্তাব : ড. পুরুষোত্তম সিংহ চর্যাপদে সমাজচিত্র : নুরুল আমিন রোকন বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (শেষ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ‘প্রাগৈতিহাসিক’-এর অনন্য লেখক মানিক : ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (একাদশ পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভেটকি থেকে ইলিশ, চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, হুগলির মাছের মেলায় শুধুই মাছ : রিঙ্কি সামন্ত দিল্লি বিধানসভায় কি বিজেপির হারের পুনরাবৃত্তি ঘটবে : তপন মল্লিক চৌধুরী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রাখাইন — বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই পৌষ পার্বণ ও মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

রবীন্দ্রনাথ ও মুসলমান সমাজ (তৃতীব পর্ব) : দিলীপ মজুমদার

দিলীপ মজুমদার / ৩০৩ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৩

পূর্ববাংলার রবীন্দ্র সংবর্ধনায় মুসলমানরা

কলকাতার লাটভবনে রবীন্দ্রনাথকে আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ১৯১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি। কিন্তু তার ২৫ দিন আগে তিনি তাঁর প্রজাদের কাছ থেকে একটি মানপত্র পেয়েছিলেন। এই প্রজারা ছিল পূর্ব বাংলার কালীগ্রাম পরগণার। এই মানপত্রটিকে রবীন্দ্রনাথের জীবনে প্রথম মানপত্র বলা যেতে পারত, যদি না রবীন্দ্র জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় আর একটি তথ্য দিতেন। প্রভাতকুমারের বই থেকে আমরা জানতে পারি ১৯০১ সালের ১৭ জুলাই মজফফরপুরের প্রবাসী বাঙালি সম্প্রদায় রবীন্দ্র-সংবর্ধনা উপলক্ষে একটি মানপত্র প্রদান করেন। রাজশাহির কালীগ্রাম পরগণার হিন্দু-মুসলমান প্রজাদের মানপত্রটিকে আমরা পুর্ববাংলার প্রথম মানপত্র বলতে পারি।

১৯৩৭ সালে আবার কালীগ্রাম পরগণার সদর পতিসরে কাছারি প্রাঙ্গণে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে মোহাম্মদ কফিলদ্দিন আকন্দ মানপত্র পাঠ করেন। এই সভায় রবীন্দ্রনাথ বলেন তাঁর ইচ্ছা ছিল — ‘সব ছেড়ে দিয়ে তোমাদের সঙ্গে তোমাদের মতোই সহজ হয়ে জীবনটা কাটিয়ে দেব। কী করে বাঁচতে হবে তোমাদের সঙ্গে মিলে সেই সাধনা করব, কিন্তু আমার এই বয়েসে তা হবার নয়’। এই সভায় রবীন্দ্রনাথকে দুটি আবেদনপত্র দেওয়া হব। প্রথম আবেদনপত্রটি দেন শিলাইদহ কাছারির কর্মচারিবৃন্দ, দ্বিতীয়টি দেন চর কালোয়ার ‘অনুগত ক্ষুব্ধ প্রজা; জেহেরালি বিশ্বাস। দ্বিতীয় আবেদনপত্রের শেষে যে চারটি সমস্যার উল্লেখ করা হয়েছে, তা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

“১] গৃহস্থেরা সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলিয়া মাঠে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটে। তবু তাহাদিগকে দু-মুঠো ভাতের জন্য পরের দ্বারস্থ হইতে হয়। কিরূপে তাদের এই দুরবস্থা দূর হইতে পারে এই সভায় তাহার সৎ উপদেশ প্রার্থনা করে। ২] দেশ থেকে হাজার হাজার মণ শস্য সস্তাদরে বিদেশে চলিয়া যাচ্ছে, আর বিদেশ থেকে যা আসছে, তাহাদিগকে অতিরিক্ত মূল্যে কিনিতে হচ্ছে। তার প্রতিকারের উপায় কি, এ সভায় তার সৎ উপদেশ প্রার্থনা করে। ৩] বর্তমানে দেশের যেরূপ অবস্থা হইয়াছে তাহাতে প্রত্যেকের কি কি করা কর্তব্য এ সভায় তাহার সৎ উপদেশ প্রার্থনা করে। ৪] দেশের গরিবের ছেলে উপযুক্ত লেখাপড়া শিখে সহায় অভাবে জীবনে উন্নতির দিকে যাইতে পারে না বলিয়া ক্রমে ক্রমে অকর্মণ্য হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কি করা কর্তব্য এ সভায় তাহার সৎ উপদেশ প্রার্থনা করে।”

১৯১৯ সালে রবীন্দ্রনাথ সিলেটে আসেন। তখন সৈয়দ মুর্তাজা আলি ছিলেন নবম শ্রেণির ছাত্র। তিনি তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন, — ‘সিলেট শহরে পৌঁছিলে কবিকে রাজোচিত সম্বর্ধনা করা হয়। খানবাহাদুর আবদুল মজিদ, মৌলবি আবদুল করিম, রায়বাহাদুর সুখময় চৌধুরী, রায়বাহাদুর প্রমোদচন্দ্র দত্ত প্রমুখ জননেতা তাঁকে রেল স্টেশনে অভ্যর্থনা করেন। চাঁদনি ঘাটে সিলেটের বনিয়াদি জমিদার পরিবারের — মজুমদার বাড়ি, কাজি বাড়ি (এহিয়া ভিলা) ও দস্তিদার বাড়ির প্রতিনিধিরা ঘোড়ায় চড়ে এসে কবিকে সম্বর্ধনা করেন। কবি মৌলবি আবদুল করিমকে নিয়ে বসেন এক সুসজ্জিত ফিটন গাড়িতে….। ‘৬ নভেম্বর রতনমণি টাউন হলে রবীন্দ্রনাথকে যে সংবর্ধনা জানানো হয়, মুর্তজা আলি সে সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সেখানে জেলার সর্বাগ্রগণ্য জননেতা সৈয়দ আবদুল মজিদ কবিকে অভিনন্দন করেন উর্দু ভাষায়। তখনও সিলেটের মুসলমানরা তুরানের খাব দেখেছেন। বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কবিকে অভিনন্দনের জন্য সিলেটি মুসলমানরা তখনও বাংলা ভাষার উপযোগিতা সম্বন্ধে বোধহয় সন্দিহান ছিলেন। ….’

এই অনুষ্ঠানে অভিনন্দনের উত্তর রবীন্দ্রনাথ তাঁর দীর্ঘ ভাষণে ‘বাঙালির সাধনা’ সম্পর্কে বলেছিলেন। সেই ভাষণে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কে কবির বক্তব্য : ‘বাঙালির শক্তি যদি সৃষ্টিশক্তি হয়, যদি আত্মোৎসর্জ্জনের শক্তিই হয়, তা হলেই নানা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন জাতির উগ্রবিরোধের সমাধান করে এক বিরাট সত্তা গড়ে তুলতে পারবে। এই যে এ জিলায় হিন্দু-মুসলমান পাশাপাশি বাস করছে, এরা বাঙালি জাতি রচনার বিচ্ছিন্ন উপকরণভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধ। সেই বিচ্ছেদ যতদিন থাকবে অর্থাৎ যতদিন তাদের মধ্যে সৃষ্টিতত্ত্বের অভাব থাকবে ততদিন তারা পরস্পরকে আঘাত করবে। নিজ নিজ সম্প্রদায়ের অ্হংকারকে উগ্র করে তুলে, পার্থক্যকে সর্বতোভাবে দুর্লঙ্ঘ্য করে দিয়ে এই বিচিত্র শক্তিপুঞ্জের বিরুদ্ধতার সমাধান হবে না। কেবলমাত্র আত্মত্যাগের যে নম্রতা, যে আনন্দ তার দ্বারাই এই মহৎ সাধনা সফল হতে পারে ….’।

এখানে সুনামগঞ্জের মরমি কবি হাসন রাজার বা দেওয়ান হাসন রাজা চৌধুরীর কথা জানতে পারেন রবীন্দ্রনাথ। হাসন রাজার প্রকৃত নাম অহিদুর রাজা (১৮৫৪-১৯২২)। হাসনের একটি গীতিগ্রন্থ কবির হস্তগত হয়। গীতিগ্রন্থটির নাম ‘হাছন-উদাস’। এটি সিলেটের অঞ্চলিকভাষায় রচিত। হাসন রাজা ছিলেন জমিদার বংশের মানুষ। তাঁর যৌবন অতিবাহিত হয় ভোগবিলাসে। তারপরে যে কোন কারণে মনে বৈরাগ্যভাব সঞ্চারিত হয়। তাঁর গানে আছে—

লোকে বলে বলেরে, ঘরবাড়ি ভালা নায় আমার

কি ঘর বানাইমু আমি, শূন্যেরই মাঝার

ভালা করি ঘর বানাইয়া কয় দিন থাকমু আর

আয়না দিয়া চাইয়া দেখি পাকনা চুল আমার।

তারপর হাসন মরমি তত্ত্বের দিকে ঝুঁকে পড়লেন। বাঁধতে লাগলেন গান। ঈশ্বরের প্রতি অনুরক্তি, জগৎ ও জীবনের অনিত্যতা -এসবই তাঁর গানের মুখ্য বিষয়। মরমি সাধকরা ভেদবুদ্ধিকে পরিহার করেন, সম্প্রদায়গত ধর্মের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করেন। তাই হাসনের গানে আল্লা যেমন আছেন . তেমনি আছেন শ্রীহরি। তাঁকে পুরোপুরি সুফি সাধক বলা যায় না। যদিও সুফিতত্ত্বের মূল কথা তাঁর গানে প্রতিফলিত। নিজেকে তিনি ‘বাউল’ বলেছেন। কত গান হাসন লিখেছিলেন তার সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা যায় নি। ‘হাছন উদাস’ বইতে ২০৬টি গান সংকলিত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ১৯২৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর ‘ইণ্ডিয়ান ফিলজফিক্যাল কংগ্রেসে’-এর প্রথম অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে হাছন রাজার দুটি গানের অংশ বিশেষ উদ্ধৃত করেন। ‘মর্ডান রিভিয়ু’-এর মতো ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের পূর্বোক্ত ভাষণের সঙ্গে হাছন রাজা সম্বন্ধে যে মন্তব্য প্রকাশিত হয়, তা এই রকম :

“পূর্ববঙ্গের এক গ্রাম্য কবির (হাছন রাজা) গানে দর্শনের একটি বড় তত্ত্ব পাই, সেটি এই যে . ব্যক্তিস্বরূপের সহিত সম্বন্ধ সূত্রেই বিশ্ব সত্য। তিনি গাহিলেন —

মম আঁখি হইতে পয়দা আসমান জমিন

শরীরে করিল পয়দা শক্ত আর নরম

আর পয়দা করিয়াছে ঠাণ্ডা আর গরম

নাকে পয়দা করিয়াছে খুসবয় বদবয়।

“এই সাধক কবি দেখিতেছেন যে, শাশ্বত পুরুষ তাঁহারই ভিতর হইতে বাহির হইয়া তাঁহার নয়নপথে আবির্ভূত হইলেন। বৈদিক ঋষিও এমনইভাবে বলিয়াছেন যে, যে পুরুষ তাঁহার মধ্যে তিনিই আদিত্যমণ্ডলে অধিষ্ঠিত।” ১৯৩০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে হিবার্ট লেকচারেও রবীন্দ্রনাথ হাছন রাজার গানের উল্লেখ করেছিলেন।

১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ঢাকা আসেন। এখানে অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে মুসলিম হল ছাত্র সংসদও তাঁকে সংবর্ধনা জানায়। নর্থব্রুক হলে (লালকুঠি) হিন্দু ও মুসলমান সমবেতভাবে রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনা জানিয়ে যে মানপত্র দেয় তাতে লেখা ছিল : ‘প্রাচীন -ইতিহাস-বিশ্রুত, হিন্দু- মোসলেমের শতকীর্তিবিভূষিত, শিল্পকলা-প্রসিদ্ধ ঢাকা নগরীর অধিবাসী আমরা, তোমাকে সাদর অভিনন্দিত করিতেছি।’ ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল নবাব বাড়িতে (আহসান মঞ্জিল) ঢাকার বিশিষ্ট মুসলমানরা কবিকে এক চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানান। জগন্নাথ হলে কবিকে সংবর্ধনা জানানো হয়, রবীন্দ্রনাথ তার উত্তরে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার মধ্যে হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যের প্রশ্ন ছিল। ‘দ্য মুসলমান’ পত্রিকার প্রতিবেদনে আছে, “Speaking on the salvation of the poet referred to village reorganization, which was essential to promote the cause of the country . The village life, the poet said, was characteristic of eastern countries, the civilization of which was practically based on village life. As some villages were re- organized all differences between Hindus and Mahomedans would disappear, and all dissentions between the two communities countered round one principal factor, namely economic pressure. No unity could possible by settlement of particular questions, but it was possible only by solution of the general economic problems of the country।”

১০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মুসলিম হলে সংবর্ধনা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন। কবিকে যে মানপত্র দেওয়া হয়, তা রচনা করেন আবুল হোসেন। আর মানপত্রটি পাঠ করেন ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি সুলতান উদ্দিন আহমদ। মুসলিম হল ছাত্র সংসদ রবীন্দ্রনাথকে আজীবন সদস্যরূপে বরণ করে নেয়। এই সময়ে মুসলিম হলের প্রভোস্ট ছিলেন স্যার এ.এফ.রহমান। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে এই রহমানসাহেব যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন সেই সময়ে, ১৯৩৬ সালের ২৯ জুলাই. রবীন্দ্রনাথকে ডি.লিট উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আনিসুজ্জামানের ‘ মুসলিম বাংলা সাময়িকপত্র’ বইতে মুসলিম হলে রবীন্দ্রনাথের ভাষণের কিছু অংশ : ‘পাশ্চাত্য দেশে আমি মানবের কবি বলে সমাদৃত। তার কারণ কোন সম্প্রদায়বিশেষের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে আমি কোন কাজ করি নি।। … ভারতের বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ ও পরস্পরের বিচ্ছেদ দেখে নিতান্ত দুঃখিত, মর্মাহত, লজ্জিত হই। ধর্মে ধর্মে বিরোধ হতে পারে না। কারণ ধর্ম হল মিলনের সেতু আর অধর্ম বিরোধের।’

১৪ ফেব্রুয়ারি অপূর্বকুমার চন্দের বাসভবনে রবীন্দ্রনাথ এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে কাজি আবদুল ওদুদ, আবুল ফজল, বুদ্ধদেব বসু প্রভৃতির সঙ্গে মিলিত হন। ১৫ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের এক অনুষ্ঠানে কবি জানান যে পূর্ববঙ্গের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা চিরদিনের। —“ পূর্ববঙ্গের শ্যামলক্ষেত্রের মধ্যে বঙ্গমাতার একটি পীঠস্থান আছে, কিন্তু দেবীকে সহজে দেখিতে পাওয়া যায় না। … দেশমাতার পূজাবেদির সম্মুখে ঈর্ষা, অশুচি ও বিদ্বেষ জর্জরিত হইতেছে বলিয়া তাঁহার পরিপূর্ণতা আবরণ ভেদ করিয়া প্রকাশিত হইতেছে না।‘

ঋণ

রবীন্দ্রবিশ্বে পূর্ববঙ্গ / গোলাম মুরশিদ। সাময়িকপত্রে রবীন্দ্র প্রসঙ্গ / মোহাম্মদ আবদুল কাইউম। ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ / গোপালচন্দ্র রায়। রেখাচিত্র / আবুল ফজল। বাংলাদেশে রবীন্দ্র সংবর্ধনা / ভুঁইয়া ইকবাল।

লেখক সিনিয়র ফেলোশিপপ্রাপ্ত গবেষক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন