বছরদুয়েক পূর্বের কথা। হঠাৎ করে কলকাতার নামজাদা পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের ফোন আসে। তাতে বছরতিনেক পূর্বে পাঠানো এক প্রবন্ধে একটি তথ্যগত ভুলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সেই সম্পাদক। আমি তাঁকে বলি আমরা তো তাই জানি। আসলে আমি লিখেছি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর প্রথম উপন্যাস Rajmohan’s Wife (১৮৬৪) সম্পূর্ণ করেননি। সম্পাদকমশাই আমার মৃদু প্রতিবাদে তৎক্ষণাৎ যাঁকে ফোন করে বিষয়টি নিরসন করতে চেয়েছিলেন, তিনি অলোক রায় (১৯৩৬-২০১৯), উনিশ শতকচর্চায় স্বনামধন্য মনস্বী গবেষক ও প্রাবন্ধিক। তার মধ্যেই তিনি চলে গেলেন। উনিশ শতকের ঠিকানার জন্য আর তাঁকে আর পাওয়া যাবে না। বঙ্গীয় বিদ্যাচর্চায় তাঁর প্রায় অবাধ বিচরণ থাকলেও উনিশ শতকের ইতিহাসচর্চায় তাঁর আত্মপরিচয় নানাভাবে বিকাশিত হয়েছে। পারিবারিকসূত্রেও ইতিহাসচর্চায় আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর পিতা নৃপেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরী রীতিমতো ইতিহাসচর্চা করেছেন। তাঁর মাতামহ প্রখ্যাত জীবনীকার মন্মথ ঘোষের প্রেরণাতেই তাঁর ইতিহাসযাপন সক্রিয়তা লাভ করে।
অন্যদিকে অলোক রায় আবার বিশিষ্ট মননশীল লেখক শিবনারায়ণ রায়ের ভ্রাতুষ্পুত্র। সেদিক থেকে তাঁর বিগত শতকের হাতছানিতে মননশীল হয়ে ওঠাটা ছিল সময়ের অপেক্ষামাত্র। সেক্ষেত্রে তাঁর স্কটিশ চার্চ কলেজে সুদীর্ঘকাল (১৯৬০ শুরু এবং ১৯৯৮-এ অবসর গ্রহণের পরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে এমিরিটাস প্রফেসর পদে মনোনীত করেছিলেন।) ধরে অধ্যাপনায় কলকাতাকেন্দ্রিক স্থিতিশীল জীবনও তাঁকে গবেষণা সনিষ্ঠ করে তুলেছিল। অবশ্য তিনি কর্মজীবনের সূচনা স্বল্পকালের জন্য মেদিনীপুরের ঘাটালে স্কুলের শিক্ষকতাও করেছিলেন এবং মাঝে মাসকয়েকের (১৯৬৬-এর জানুয়ারি থেকে জুলাই) জন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তাছাড়া আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়িয়েছেন। অন্যদিকে আলেকজাণ্ডার ডাফ প্রতিষ্ঠিত স্কটিশ চার্চ স্কুল-কলেজেই অলোক রায় বেড়ে ওঠেন এবং নিজেকে গড়ে তোলেন। অধ্যাপক হিসাবে সেখানেই ফিরে এসে তিনি স্বকীয় গবেষণায় নিজেকে ক্রমশ মেলে ধরেছেন।
বাঙালির জীবনে পালাবদলের ক্ষেত্রে উনিশ শতকের বনেদি ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাশ্চাত্য শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রভাবে উনিশ শতকের বাংলায় যেভাবে পরিবর্তনের সোপানে আধুনিকতার পরিসর সক্রিয় হয়ে উঠেছিল, তা আপনাতেই উৎকর্ষবোধে বাঙালিমানসে নবজাগরণের রূপ লাভ করে। সুদীর্ঘকাল পরে মধ্যযুগীয় চেতনার অবসানে উনিশ শতকীয় নবচেতনার আলো নানাক্ষেত্রে নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষা-সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য, সমাজ-ধর্ম-রাজনীতি প্রভৃতিতে প্রভাব বিস্তার করে। অন্যদিকে তার সাফল্যের খতিয়ানের পাশে ব্যর্থতার আধারও চর্চার অবকাশ তৈরি করে। বিশ শতকের এসে তার মূল্যায়নে এজন্য নানারৈখিক বিতর্ক-প্রতর্ক প্রকট হয়ে ওঠে। সেখানে কলকাতাকেন্দ্রিকতায় তা যেমন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে, তেমনই ইতালির সঙ্গে তার প্রতিতুলনার অবকাশ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে স্বীকারে-অস্বীকারে উনিশ শতকীয় নবজাগরণের প্রকৃতি বিশ শতকের মননেও সজীবতা লাভ করে। উনিশ শতকের ইতিহাস তার বিশেষত্বেই প্রাসঙ্গিকতায় ফিরে আসে। সেই ইতিহাসচর্চায় অলোক রায় উত্তরসূরি থেকে আলোকদিশারি হয়ে ওঠেন। তাঁর গবেষণা ভাবনাতেই তার পরিচয় বর্তমান।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এ পাশ করেই তিনি প্রমথনাথ বিশীর অধীনে ‘রেনেশাঁস ও বাঙালি সমাজমন’ বিষয়ে গবেষণা শুরু করবেন ভেবেছিলেন। শেষে রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্তের পরামর্শে রেনেশাঁসের পটভূমিতে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রের উপরে গবেষণা করেন। তারই ফসল তাঁর ‘রাজেন্দ্রলাল মিত্র’ (১৯৬৯) বইটি। বহুমুখী প্রতিভাবান তথা উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণে অবিসংবাদী অবদানের অধিকারী রাজেন্দ্রলাল মিত্রকে অলোক রায় নতুন করে চিনিয়ে দেন। অবশ্য তার পূর্বে তাঁর ‘প্রবন্ধকার বঙ্কিমচন্দ্র ও ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি সমাজ মন’ (১৯৬৭) বইটি প্রকাশিত হয়। এভাবে তাঁর উনিশ শতক চর্চা এগিয়ে চলে। তাঁর গবেষণার ভরকেন্দ্রই হয়ে ওঠে উনিশ শতক। লেখার মধ্যে তা ক্রমে প্রকাশিত হয়। এভাবে অলোক রায়ের স্বকীয় মনীষার অনন্য ফসল ‘আলেকজান্ডার ডাফ ও অনুগামী কয়েকজন’ (১৯৮০), ‘বাঙালি কবির কাব্য চিন্তা : উনিশ শতক’ (১৯৮১), ‘শাশ্বত কলকাতা : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’ (১৯৮৯), ‘উনিশ শতক’ (১৯৯৫) থেকে ‘উনিশ শতকে নবজাগরণ/ স্বরূপ সন্ধান’ (২০১৯) পর্যন্ত তার বিস্তৃত বিস্তার লাভ করে। শুধু তাই নয়, অলোক রায় তাঁর উনিশ শতক চর্চাকে গবেষণা পত্রিকা ‘Nineteenth Century Studies’র (১৯৭৩-৭৫), ‘Counterpoint’ (১৯৯৭-৯৮) প্রভৃতির সম্পাদনার মাধ্যমেও প্রকট করে তোলেন। সেক্ষেত্রে তাঁর আত্মপরিচয় শুধু প্রতিষ্ঠাই পায়নি, উল্টে বিপত্তিকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সুদীর্ঘকাল উনিশ শতকের চর্চায় নিজেকে সঁপে দেওয়ায় তাঁর পরিচয়েও সীমাবদ্ধতাও এসে যায়।
অলোক রায় তাঁর মননশীল চর্চাকে বিশ শতকেও ছড়িয়ে দেন। সেখানে উনিশ শতকের মতো ক্রমে বিশ শতকের পরিসরেও নিজেকে বিস্তার করেন। বিশ শতকের কবিতা নিয়ে তিনি যেমন আলোকপাত করেছেন ‘সন্ধিক্ষণের কবিতা’কে (২০০২), তেমনই বিশ শতকের চর্চাকেও ‘বিশ শতক’ (২০১৩)-এর মধ্যে তুলেধরেছেন। শুধু তাই নয়, বিশ শতকের বাংলা কথাসাহিত্য নিয়ে ‘কথাসাহিত্যজিজ্ঞাসা’ (১৯৯২), একশ বছরের ছোটগল্প নিয়ে তাঁর ‘ছোটগল্পে স্বদেশ-স্বজন’ (২০১০) প্রভৃতিতে তাঁর বিশ শতকের চর্চার পরিচয় প্রতীয়মান। শুধু তাই নয়, অলোক রায় তাঁর বিদ্যাচর্চাকে নানাভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেনে। সেখানে তাঁর মননের বহুমুখী বিস্তার বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। তাঁর প্রথম বই ‘যতীন্দ্রমোহন বাগচী : কবি ও কাব্য’ (১৯৬৪) থেকে ‘ধূর্জটিপ্রসাদ : জীবন ও গ্রন্থপঞ্জী’, ‘বাংলা উপন্যাস : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ (২০০০), ‘তারাশঙ্কর দেশকাল’ (১৯৯৮), ‘কালান্তরের কথাকার তারাশঙ্কর’ (২০০৯) প্রভৃতির মতো বিচিত্র বিষয়ে অসংখ্য বই ছাড়াও মন্মথ ঘোষ, কালিদাস রায়, দিলীপ রায়, সুকুমার সেন প্রমুখের জীবনীরচনা করে বাংলার বিদ্যাচর্চার বনেদিয়ানাকে সম্প্রসারিত করেছেন। সেইসঙ্গে অসংখ্য বই সম্পাদনা করে বিদ্যানুরাগীদের শ্রদ্ধা আদায় করে নিয়েছেন অবলীলায়। তাঁর সম্পাদিত ‘সাহিত্যকোষ : নাটক’(১৯৬৪), ‘সাহিত্যকোষ : কথাসাহিত্য’ (১৯৬৭) বইদুটি পরিমার্জন ও পরিবর্ধনের মাধ্যমে আজও বহালতবিয়তে। সেদিক থেকে অলোক রায় তাঁর মনীষার ব্যাপ্তিতেই বঙ্গবিদ্যাচর্চায় আসনে অভিভাবকের আসনে শ্রদ্ধাসীন হয়েছিলেন। অন্যদিকে উনিশ শতকের চর্চায় বনেদি আভিজাত্য গড়ে তোলায় তাঁর আত্মপরিচয় তাতে আবর্তিত হওয়ার অবকাশে তাঁর বহুধাবিস্তৃত মনীষার পরিচয় সেভাবে নিবিড় হয়ে ওঠেনি। অথচ তাঁর অবকাশ ছিল।
অলোক রায়ের ‘বিশ শতক’ বইটির সমালোচনায় তাঁরই সমকালীন স্বনামধন্য গবেষক-প্রাবন্ধিক বারিদবরণ ঘোষ অকপটে জানিয়েছেন (‘বুদ্ধিমুক্তির সঙ্গে মানবমুক্তির বন্ধন’, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৫ জুন ২০১১) : ‘বেশ কয়েক বছরআগে অধ্যাপক অলোক রায় রচিত কয়েকটি বই পড়ার-ভাবার সুবাদে যখন এমনতর একটা ভাবনা আক্রমণ করেছিল যে, অধ্যাপক রায় উনিশ শতক নিয়ে যতখানি ভাবনা করেন, সাম্প্রতকাল নিয়ে ততখানি নয়। কথাটা সাহসভরে বলতে পারা যাচ্ছিল না, কারণ ইতস্তত তাঁর কয়েকটি প্রবন্ধের বিষয় দেখা গেল বিশ শতক কেন্দ্রিক। সব লেখা চোখে পড়ে না বিভিন্ন কারণে। এ হেন সময়ে গোটা বিশ শতক নামে তাঁর একখানি বই পড়ার অবকাশ ঘটে গেল।’ আর সেই বইটি সম্পর্কে সমালোচকের সুদৃঢ় অভিমত, ‘‘বিশ শতক’ শব্দটি সাধারণ অর্থে তিনি প্রয়োগ করেছেন কালের নিরিখে, কিন্তু মেজাজে আর মর্জিতে এরা বাস্তবিকই বিশ শতকের।’ সেক্ষেত্রে উনিশ শতক ও বিশ শতকের চর্চায় অলোক রায়ের ভূমিকা উনিশ-বিশ হলেও তাঁর আত্মপরিচয়ের সোপানে উনিশই শুধু অগ্রজের স্বাতন্ত্র্যে নয়, অভিভাবকের আসনেও সমাসীন হয়েছে। উনিশ শতকের ইতিহাসচর্চায় তাঁর গভীর তন্বিষ্ঠা ও অভিনব মূল্যায়ন প্রকৃতি গুণীজনের শ্রদ্ধা আদায় করেছে। সেখানে রমেশ্চন্দ্র মজুমদার, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় থেকে শঙ্খ ঘোষ সকলেই রয়েছেন। স্থান-কাল-পাত্রের ত্রিবেণীসঙ্গমে অলোক রায়ের ইতিহাসচর্চা সেদিক থেকে মূল্যায়নের অভিমুখটিকেই তীব্র আবেদনক্ষম করে তুলেছে। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস নিয়ে গড়ে ওঠা ধারণার মধ্যেই তা প্রতীয়মান হয়ে ওঠে।
সাধারণত ইতিহাসচর্চায় ঘটনার ধারাবাহিক বিবরণ ও তার প্রভাবের বিষয়টিই প্রাধান্য লাভ করে। বিষয়ই সেখানে বড় হয়ে ওঠে, তথ্যই প্রাধান্য লাভ করে। অথচ সেখানে তথ্যের মধ্যে তত্বের ফাঁক থেকে যায়। সেই আধারে তার মূল্যায়নের দৃষ্টিভঙ্গি ভেদে আপেক্ষিকতাও স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। বিশ শতকে এসে উনিশ শতকের নবজাগরণের মূল্যায়নের পরিচয়ে তা প্রকট মনে হয়। সেক্ষেত্রে অলোক রায় যুগের প্রবণতা বা সমাজ ও মনের প্রভাব বিষয়ে আমাদের সচেতন করে তোলেন। এজন্য তাঁর উনিশ শতকের ইতিহাসচর্চায় দেশকালের পটভূমিকায় কৃতী জনমানসের পরিচয়ও নিবিড় হয়ে এসেছে। তারফলে তাঁর চর্চা শুধুমাত্র ইতিহাসকেন্দ্রিক নয়, তার সঙ্গে ঐতিহাসিক কৃতী মানুষের সহাবস্থানে ঐকান্তিক হয়ে উঠেছে। যুগের প্রবণতা কীভাবে ব্যক্তিমানসের প্রভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে, সে-বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টির অভাব হলে ইতিহাসের প্রকৃত মূল্যায়নের অভাব স্বাভাবিকতা লাভ করে। সেদিক থেকে উনিশ শতকের প্রগতিশীল বনাম রক্ষণশীলের স্ববিরোধী প্রকৃতিতে যুগের প্রবণতাকে অস্বীকার করা যায় না। সেখানে মানসিক প্রবণতার অভাববোধে ইতিহাসের মূল্যায়নে ফাঁক ও ফাঁকি অনিবার্য হয়ে ওঠে। এজন্য অলোক রায় ঐতিহাসিক কৃতীদের মধ্য দিয়েই ইতিহাসকে বুঝতে ও বোঝাতে সক্রিয় হয়েছিলেন। মননের প্রবণতার ফাঁকে কত ধারণাই ভ্রান্তিবিলাসের অবকাশ তৈরি করে, তার পরিচয় বঙ্কিমচন্দ্রের ইংরেজি উপন্যাস নিয়ে সহজবোধ্য মনে হয়। সেই উপন্যাসটি ১৯৬৪-তে কিশোরীচাঁদ মিত্র সম্পাদিত সাপ্তাহিক পত্রিকা Indian Field-এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
বঙ্কিমচন্দ্র বাংলায় তাঁর অনুবাদও শুরু করেছিলেন, কিন্তু তা অসমাপ্ত থেকে যায়। পরবর্তীতে তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘বারিবাহিনী’ উপন্যাসে সেটুকু সংযোজন করেছিলেন। অবশ্য সজনীকান্ত দাস বঙ্কিমচন্দ্রের শতবার্ষিক উৎসব উপলক্ষ্যে উপন্যাসটিকে ‘রাজমোহনের স্ত্রী’ নামে অনুবাদের মাধ্যমে প্রকাশের আলোতে আনেন। অন্যদিকে ১৯৬৫-তে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দুর্গেশনন্দিনী’র প্রথম উপন্যাসের আলোয় তাঁর ইংরেজি উপন্যাসপ্রয়াস আপনাতেই নিষ্প্রভ হয়ে ওঠে। আর তার বাংলায় অনুবাদের অপূর্ণতাবোধই সেক্ষেত্রে অসমাপ্ত প্রকৃতিকে সবুজ করে তোলে। অথচ উপন্যাসটি সমাপ্ত করেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। মননের এই প্রবণতায় ভ্রান্তিবোধের অন্তরায়গুলিকে আন্তরিক করে অলোক রায় তাঁর উনিশ শতকের চর্চায় নবদিগন্তের সূচনা করেছিলেন যেখানে গবেষকের অন্তর্দৃষ্টিকে ডুবরি বানিয়ে মানসসাগর থেকে রত্নাদি আহরণ করে প্রাবন্ধিকের মননশীল ছাঁচে অলঙ্কার তৈরিতে আজীবন সক্রিয় ছিলেন। তাঁর অবর্তমানে সেই অলঙ্কারগুলিই আমাদের ঠিকানা, আমাদের আশ্রয়।
লেখক : প্রফেসর, বাংলা বিভাগ, সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়, পুরুলিয়া-৭২৩১০৪।
অত্যন্ত তথ্য সমৃদ্ধ। সমৃদ্ধ হলাম।
আসলে আপনি বাংলা সাহিত্যের বিশ্বকোষ।
শুভেচ্ছা।