শুক্রবার | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:২৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ভিনেশ ফোগাট আপসহীন এক প্রতিবাদী মুখ : তপন মল্লিক চৌধুরী

তপন মল্লিক চৌধুরী / ৫১৯ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪

সোনার মেডেল গলায় ঝুলিয়ে দেশে ফিরলেও তাঁর গলায় ফুলের মালা পরিয়ে তাঁকে সংবর্ধনা জানিয়েছে অনুরাগীরা। দিল্লি বিমানবন্দরে পা রাখার পরই তাঁকে ঘিরে উপচে পড়ে ভিড়। সংবর্ধনা জানাতে এগিয়ে আসে বহু মানুষ। এমন দৃশ্য দেখে তিনি সেই মুহূর্তে যথেষ্ট আবেগপ্রবণ হয়েও পড়েছিলেন। হওয়ারই কথা কারণ, প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে কুস্তির ফাইনালে উঠে ইতিহাস লিখেছিলেন কুস্তিগীর ভিনেশ ফোগাট। কিন্তু স্বপ্নের আর একটি মাত্র ধাপ পেরোনোর আগেই সেই স্বপ্ন ভেঙে চুড়মার হয়ে যায়। ফাইনালের সকালে যখন ভিনেশের ওজন মাপা হয়, তখন দেখা যায় তাঁর ওজন ১০০ গ্রাম বেশি রয়েছে। সেই কারণে তারকা কুস্তিগীরকে ফাইনালে বাতিল ঘোষণা করা হয়! এই খবর মেনে নিতে পারেননি কেউই। এমনকী এরপর বিচার চেয়ে ভিনেশ কোর্ট অফ আরবিট্রেশন ফর স্পোর্ট ওরফে সিএএসের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিনেশের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। যদিও সিএসএ-র রায়ের বিস্তারিত এই মাসের শেষের দিকে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অলিম্পিক শেষে প্যারিস থেকে দেশে ফিরে অভ্যর্থনা দেখার পর খুব স্বাভাবিকভাবে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে ভিনেশ শেষপর্যন্ত কেঁদেই ফেললেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই বলেন, “আমাকে ওরা সোনার পদক দেয়নি তো কী হয়েছে। ভারতে ফিরে আমি যে সম্মান এবং ভালোবাসা পেয়েছি, সেটা হাজার সোনার পদকের সমান।২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে ভারতীয় কুস্তিগীর ভিনেশ ফোগাট মহিলাদের ৫০ কেজি বিভাগে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রথম ম্যাচেই তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে পরাস্ত করেছিলেন। এরপর টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমি ফাইনাল ম্যাচেচে বিপুলভাবে জয়লাভ করে ফাইনাল ম্যাচের অংশ নেওয়ার জন্য মনোনীত হন। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচের দিন সকালবেলা তাঁর শারীরিক ওজন ১০০ গ্রাম বেশি হওয়ায় তাঁকে সেই ইভেন্টে ‘অযোগ্য’ বলে ঘোষণা করা হয়।

প্যারিস অলিম্পিক থেকে তাঁর হাত ধরেই আসবে প্রথম সোনা, স্বপ্ন দেখেছিল ১৪০ কোটি মানুষের দেশ ভারত। চলতি অলিম্পিকের আসরে ৫০ কেজি কুস্তি বিভাগে ভিনেশ ফোগাট সোনা উপহার দেবে এই আশাতেই ছিলেন তিনি, সেই সঙ্গে বুক বেঁধেছিল দেশবাসী। কিন্তু মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন সব আশা তছনছ করে দিয়েছে। যে সোনার মেয়ে প্রতিযোগিতার শুরু থেকে একের পর এক সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে হেলায় পরাজিত করে ফাইনালে উঠেছিল সে কিনা মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় ফাইনাল ম্যাচে নামার আগেই গোটা প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেল। কেবল তাই নয়, তাঁর প্রাপ্য ব্রোঞ্জ পদকটিও কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর কাছ থেকে। এই ঘটনাটিকে কি বলা যায় অভূতপূর্ব নাকি অবিশ্বাস্য ঘটনা। অলিম্পিকের ইতিহাসে অতীতে কোনোদিন এমন ঘটনা কী ঘটেছে যা ভিনেশ ফোগাটের সঙ্গে ঘটল?

একটি কথা আমাদের সকলেরই মনে রাখা দরকার যে ভিনেশ ফোগাট নিছক একজন কুস্তিগির বা অলিম্পিক প্রতিযোগী নন। আমাদের দেশে ঠিক এই সময়ে মেয়েদের উপর যে অন্যায় অত্যাচার ও নির্যাতনের ঘটনা একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে লাগাতার ভাবে, তার বিরুদ্ধে ভিনেশ ফোগাট আপসহীন এক প্রতিবাদী মুখ। যে মুখ দেশের শাসকের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার অদম্য সাহসের প্রতীক। দেশের মহিলা কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে খোদ কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দিনের পর দিন যে শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তার বিরুদ্ধে কুস্তিগিরদের প্রতিবাদী আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন এই ভিনেশ ফোগাট । ব্রিজভূষণ বি‍‌জেপির প্রভাবশালী নেতা এবং সাংসদ হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে রীতিমতো সাহসের দরকার হয়। সেই সাহস দেখিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে মোদী সরকার তাদের নিজেদের দলের নেতা ও সাংসদের বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা নিতে নারাজ ছিল। এমনকি বিশ্বের দরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা বহু পদকজয়ী কুস্তিগিরদের বহু আবেদন নিবেদনেও সরকারের টনক নড়েনি। পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ব্রিজভূষণকে কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকেও সরানো হয়নি । অর্থাৎ প্রকারন্তরে কুস্তিগিরদের অভিযোগ অস্বীকার করে নির্যাতনকারী ব্রিজভূষণের পক্ষেই দাঁড়িয়েছিলেন দেশের প্রধান্মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার সরকার।

মোদী সরকারের কাছ থেকে কোনো সুবিচার না পেয়ে ভিনেশ ও তার সঙ্গীরা দিল্লির যন্তরমন্তরে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভ চলাকালীন ঘটা করে মহাসমারোহে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর পুলিশ বিক্ষোভরত ভিনেশদের লাঠিপেটা করে অত্যন্ত জঘন্য কায়দায় তাঁদের তুলে নিয়ে যায়। মহিলা কুস্তিগিররা কিন্তু আজও সুবিচার পায়নি। অথচ অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ বহাল তবিয়তে বিজেপির ছত্রছায়ায় বুক ফুলিয়ে ঘুরছেন। আর ভিনেশ যখন অলিম্পিক থেকে ছিটকে গেলেন অথবা তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল তখন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সকলে তাঁকে সান্ত্বনা দিতে ময়দানে নেমে পড়লেন। অথচ ভিনেশরা যখন নির্যাতন-শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে সঙ্গত লড়াই করছিলেন যাচ্ছিলেন মন্ত্রী বা দেশনায়কের তখন একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। বরং বিজেপির নেতারা মহিলা কুস্তিগিরদের অসম্মান করেছেন, কুৎসিত ইঙ্গিত করেছেন, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন।

প্যারিস অলিম্পিকে ভিনেশের লড়াই দেখে হঠাৎ করে তাঁদের দরদ উথলে উঠলো কেন? অনেকেই এই দরদের পিছনে অস্বাভাবিক কিছু আন্দাজ করছেন। কেউ কেউ এর পেছনে ষড়যন্ত্রের গন্ধও পাচ্ছেন। কিন্তু ভোলা যাবে না সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য মহিলা কুস্তিগিরদের চরম মূল্য দিতে হয়েছে। হেনস্থা হতে হয়েছে, পুলিশ তাদের নিদারুনভাবে টানা হ্যাচড়া করেছে।এছাড়াও একটা গুরুতর প্রশ্ন উঠছে, ভারতীয় প্রতিযোগীদের জন্য ডাক্তারদের বিরাট টিম আছে। তাদেরই দায়িত্ব ছিল ভিনেশের ওজন ৫০ কেজিতে সীমাবদ্ধ করে রাখা। কিন্তু কেন সেটা সম্ভব হয়নি? কেউই এর সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। যথাযথ তদন্ত কী করেয়া হয়েছে? সেটাও তো দরকার, নাকি আলগা দরদ দেখিয়ে সত্যকে আড়াল করাটাই সবথেকে জরুরী।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন