শুক্রবার | ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:৩০
Logo
এই মুহূর্তে ::
মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত ওয়াকফ হিংসার জের কি মুর্শিদাবাদেই থেমে গিয়েছে : তপন মল্লিক চৌধুরী এক বাগদি মেয়ের লড়াই : দিলীপ মজুমদার এই সেনসরশিপের পিছনে কি মতাদর্শ থাকতে পারে : কল্পনা পাণ্ডে শিব কম্যুনিস্ট, বিষ্ণু ক্যাপিটেলিস্ট : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গায়ন’ থেকেই গাজন শব্দের সৃষ্টি : অসিত দাস কালাপুষ্প : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হোক বাঙালি-অস্মিতার প্রচারযাত্রা : দিলীপ মজুমদার মাইহার ঘরানার সম্রাট আলি আকবর খান (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত পেজফোর-এর নববর্ষ বিশেষ সংখ্যা ১৪৩২ প্রকাশিত হল সিন্ধিভাষায় দ্রাবিড় শব্দের ব্যবহার : অসিত দাস সিন্ধুসভ্যতার জীবজগতের গতিপ্রকৃতির মোটিফ : অসিত দাস হনুমান জয়ন্তীতে নিবেদন করুন ভগবানের প্রিয় নৈবেদ্য : রিঙ্কি সামন্ত গল্প লেখার গল্প : হাসান আজিজুল হক ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (শেষ পর্ব) : জমিল সৈয়দ চড়কপূজা কি আসলে ছিল চণ্ডকপূজা : অসিত দাস অরুণাচলের আপাতিনি : নন্দিনী অধিকারী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (সপ্তম পর্ব) : জমিল সৈয়দ শাহরিয়ার কবিরকে মুক্তি দিন : লুৎফর রহমান রিটন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (ষষ্ঠ পর্ব) : জমিল সৈয়দ ওয়াকফ সংশোধনী আইন এই সরকারের চরম মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ : তপন মল্লিক চৌধুরী ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (পঞ্চম পর্ব) : জমিল সৈয়দ যশোধরা — এক উপেক্ষিতা নারীর বিবর্তন আখ্যান : সসীমকুমার বাড়ৈ কলকাতার কাঁচাভেড়া-খেকো ফকির ও গড়ের মাঠ : অসিত দাস ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (চতুর্থ পর্ব) : জমিল সৈয়দ রামনবমী পালন এবং হুগলী চুঁচুড়ার শ্রীরামমন্দির : রিঙ্কি সামন্ত ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (তৃতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ মিয়ানমারে ভূমিকম্প — প্রতিবেশী দেশের জনগণের পাশে বাংলাদেশ : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন ওড়িশার হীরক ত্রিভুজ : ললিতগিরি, উদয়গিরি ও রত্নগিরি (দ্বিতীয় পর্ব) : জমিল সৈয়দ হুমায়ুন-এক স্মৃতি-এক আলাপ : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ২৫৫ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫

গ্রামে গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একটা সময় ঢেঁকি ছিল। ছিল বড়ো ঢেঁকশালও । ঠাকুমা, মা-কাকিমাদের পায়ের তালে তালে ঢেঁকির আওয়াজ শোনা যেত। ধান থেকে চাল, আর চাল থেকে চালগুঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। ঢেঁকি-ছাটা লাল চালের সুস্বাদু ভাত ও নানান রকম পিঠে আজও লোকমুখে শোনা যায়। তাই বয়স্কদের মুখে মুখে একটাই আফশোস ঢেঁকি নেই, সেই পিঠেও নেই। গ্রামীন সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার তাগিদও কারোর নেই।

প্রসঙ্গত, গাম-গঞ্জের ছোট ছোট ঘটনা আজও স্মৃতিতে রয়ে গিয়েছে। যতদিন যাচ্ছে সেই সমস্ত ঘটনাগুলি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিচ্ছে। আজকের প্রজন্মের কাছে ওই সমস্ত ঘটনা গল্প বলে মনে হচ্ছে। কয়েকটি ঘটনা যা আজকের সমাজের মহিলাদের কাছে বানানো গল্প বলে মনে হয়, সেগুলোর কথা তুলে ধরলে বোধহয় বিষয়টা আরও পরিষ্কার হবে। তাছাড়া তৎকালীন সমাজের চিত্রটাও ধরা পড়বে। উল্লেখ করতেই হয় ঢেঁকির কার্যকলাপ। একটা সময় প্রতি বাড়িতে ঢেঁকশাল ছিল। আর সেখানেই বসানো থাকত টেঁকি। মা-ঠাকুমা, দিদি, মাসিদের দেখতাম ঢেঁকিতে ধান ভাঙতে। চাল গুঁড়োতে। তালে তালে পা দিয়ে ঢেঁকিতে ছাঁটা হত ধান। সেই ধান থেকে লাল ছাপ মারা চাল বের হত। যখন ওই চালের ভাত হত, দেখতাম আলাদা সুগন্ধ প্রকাশ পেত। ছেলেমেয়েদের দেখতাম সেই সুস্বাদু ফ্যানা-ভাত খেয়ে স্কুল-কলেজে যেতে। এখন সেই চালও নেই, সুস্বাদু ভাতও নেই।

এখন আছে রাইসমিলের চকচকে চাল। পালিশ করা। উপরের লাল খোলাটুকুর চিহ্ন নেই। ফলে এর নাকি ফ্যানা-ভাত হয় না। হলেও মুখে রোচে না, রুচবেই বা কী করে! এখন যে কীটনাশক মাখানো ওষুধের গন্ধ গা থেকে যায়নি। তাই কষ্ট হয়। মনে মনে ভাবি কবে ফিরে পাব সেই ঢেঁকিছাঁটা চাল, গুঁড়ি। যা দিয়ে সুস্বাদু ফ্যানাভাত, পিঠে-পুলি তৈরি হবে। না! এ আশা মনেতেই রয়ে যায়। ঢেঁকিগুলো আর দেখতে পাই না। ঢেঁকশালও নেই। নেই নীলমণি, রাধা, শ্যামাদের মতো বউরা। যাঁরা অনায়াসে বাচ্চা ছেলে কোলে নিয়ে ঢেঁকিতে পা দিতে পারত। সেই দৃশ্যও আর দেখি না। তা হল মায়ের কোলেই বাচ্চা কাঁদছে। সেই বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নীলমণিদের মতো বউয়েরা জামা খুলে বুকের দুধ টানার জন্য সুযোগ করে দিয়েছে। বাচ্চা দুধ খাচ্ছে, নীলমণি আদর করে, সোহাগ করে বাচ্চার আশা মেটাচ্ছে, আর অপরদিকে রাতে সোয়ামীকে খুশি করতে পিঠের গুঁড়ি তৈরি করছেন। সন্ধ্যা হলে সোয়ামী মাঠ থেকে বাড়ি ফিরবে। তারপর নীলমণি পিঠে করতে বসবে। লম্ফ জ্বেলে। কাঠের আগুনে পিঠে হবে। সেই দৃশ্য আজ অতীত।

আরও একটি ঘটনা উল্লেখ না করে পারছি না। তা হল ঘরে ঘরে পাথরের যাঁতা। যা দিয়ে ডাল শস্য, তিল ভাঙা হয়। আজ আর দেখি না। সে দিনটার কথা আজও মনে পড়ে, যখন দেখতাম হাবুর মা অদ্ভুত কায়দায় হাতের আঙুল দিয়ে তিলের খোসা ছাড়াচ্ছেন, কিংবা খেসারি, মটর, ছোলা, মুসুর, কড়াইয়ের খোসাও ছাড়াচ্ছেন উবু হয়ে। হাবুর মা জানে, কত পাক ঘোরালে তবেই খোসা ছাড়বে। দেখতাম প্রতি ঘরে হাবুর মতো মায়েরা আছেন। ডাল, ডালের বড়ি, তিল ভাজা, তিলের নাড়ু, তিল পোস্ত খাওয়া হত। এখন সেগুলি দোকান থেকে পাই। কিন্তু পাই না সেই স্বাদ। হারিয়ে গেছে হাবুর মতো মায়েরা। এখন অত্যাধুনিক প্রজন্মের মায়েরা আছেন, কিন্তু যাঁতায় পাক দিতে জানেন না। এঁরা জানেন দোকান থেকে প্যাকেট করা খাবার। কষ্ট নেই এঁদের। এঁদের দেখি আর ভাবি সেই দিন কী আর ফিরে আসবে না? অপেক্ষায় আছি সেই স্বাদ, অনুভূতি, পরশের ছোঁয়া পাব বলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন