বৃহস্পতিবার | ২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:৫৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস প্রাণগৌরাঙ্গের প্রিয় পঞ্চব্যঞ্জন : রিঙ্কি সামন্ত ‘দ্য স্টোরিটেলার’ — শিল্প এবং বাজারের মধ্যে দ্বন্দ্ব : কল্পনা পান্ডে অপুষ্টি আর দারিদ্রতা ঢাকতে সরকার আর্থিক উন্নয়নের পরিসংখ্যান আওড়ায় : তপন মল্লিক চৌধুরী দোহলী মানে অশোকবৃক্ষ, তা থেকেই দোল ও হোলি : অসিত দাস সিনেমা প্রেমীদের হোলির গান : রিঙ্কি সামন্ত দোলের আগের দিনের চাঁচর নিয়ে চাঁচাছোলা কথা : অসিত দাস খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল — দোলা লাগল কি : দিলীপ মজুমদার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত সিঙেরকোণ-এর রাধাকান্ত এখনও এখানে ব্যাচেলর : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত বাজারে ভেজাল ওষুধের রমরমা দায় কার : তপন মল্লিক চৌধুরী বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘কুড়কুড়ে ছাতুতে’ ক্যানসার নিকেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বোলপুর কি সত্যিই বলিপুর : অসিত দাস রাখাইন পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের উপর প্রভাব : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন অসুখী রাজকন্যাদের লড়াইয়ের গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বিশ্ব থেকে ক্যানসারকে নির্মূল করতে গবেষণায় একের পর এক সাফল্য রূপায়ণের : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কল্পনার ডানায় বাস্তবের রূপকথা : পুরুষোত্তম সিংহ হাইকোর্টের রায়ে ভাবাদিঘীতে তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরুর নির্দেশ : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমছে, সঙ্কটে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল : তপন মল্লিক চৌধুরী ফল্গু নদীর তীরে একটি ছোট শহর এই বুদ্ধগয়া : বিজয় চৌধুরী শাহিস্নান নয়, আদতে কথাটি ছিল সহিস্নান : অসিত দাস মৈত্রেয়ী ব্যানার্জি-র ভূতের গল্পো ‘হোমস্টে’ রহস্য ঘেরা বলিউডের নক্ষত্রপতন : রিঙ্কি সামন্ত বাঁকুড়ার দু-দিন ব্যাপী দেশীয় বীজ মেলায় দেশজ বীজের অভূতপূর্ব সম্ভার পেজফোর-এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ২০২৫
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ঢেঁকি নেই, নেই ঢেঁকিশাল, গ্রামের মানুষের কাছে আজ ইতিহাস : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়

মোহন গঙ্গোপাধ্যায় / ১৯৪ জন পড়েছেন
আপডেট মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫

গ্রামে গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একটা সময় ঢেঁকি ছিল। ছিল বড়ো ঢেঁকশালও । ঠাকুমা, মা-কাকিমাদের পায়ের তালে তালে ঢেঁকির আওয়াজ শোনা যেত। ধান থেকে চাল, আর চাল থেকে চালগুঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। ঢেঁকি-ছাটা লাল চালের সুস্বাদু ভাত ও নানান রকম পিঠে আজও লোকমুখে শোনা যায়। তাই বয়স্কদের মুখে মুখে একটাই আফশোস ঢেঁকি নেই, সেই পিঠেও নেই। গ্রামীন সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার তাগিদও কারোর নেই।

প্রসঙ্গত, গাম-গঞ্জের ছোট ছোট ঘটনা আজও স্মৃতিতে রয়ে গিয়েছে। যতদিন যাচ্ছে সেই সমস্ত ঘটনাগুলি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিচ্ছে। আজকের প্রজন্মের কাছে ওই সমস্ত ঘটনা গল্প বলে মনে হচ্ছে। কয়েকটি ঘটনা যা আজকের সমাজের মহিলাদের কাছে বানানো গল্প বলে মনে হয়, সেগুলোর কথা তুলে ধরলে বোধহয় বিষয়টা আরও পরিষ্কার হবে। তাছাড়া তৎকালীন সমাজের চিত্রটাও ধরা পড়বে। উল্লেখ করতেই হয় ঢেঁকির কার্যকলাপ। একটা সময় প্রতি বাড়িতে ঢেঁকশাল ছিল। আর সেখানেই বসানো থাকত টেঁকি। মা-ঠাকুমা, দিদি, মাসিদের দেখতাম ঢেঁকিতে ধান ভাঙতে। চাল গুঁড়োতে। তালে তালে পা দিয়ে ঢেঁকিতে ছাঁটা হত ধান। সেই ধান থেকে লাল ছাপ মারা চাল বের হত। যখন ওই চালের ভাত হত, দেখতাম আলাদা সুগন্ধ প্রকাশ পেত। ছেলেমেয়েদের দেখতাম সেই সুস্বাদু ফ্যানা-ভাত খেয়ে স্কুল-কলেজে যেতে। এখন সেই চালও নেই, সুস্বাদু ভাতও নেই।

এখন আছে রাইসমিলের চকচকে চাল। পালিশ করা। উপরের লাল খোলাটুকুর চিহ্ন নেই। ফলে এর নাকি ফ্যানা-ভাত হয় না। হলেও মুখে রোচে না, রুচবেই বা কী করে! এখন যে কীটনাশক মাখানো ওষুধের গন্ধ গা থেকে যায়নি। তাই কষ্ট হয়। মনে মনে ভাবি কবে ফিরে পাব সেই ঢেঁকিছাঁটা চাল, গুঁড়ি। যা দিয়ে সুস্বাদু ফ্যানাভাত, পিঠে-পুলি তৈরি হবে। না! এ আশা মনেতেই রয়ে যায়। ঢেঁকিগুলো আর দেখতে পাই না। ঢেঁকশালও নেই। নেই নীলমণি, রাধা, শ্যামাদের মতো বউরা। যাঁরা অনায়াসে বাচ্চা ছেলে কোলে নিয়ে ঢেঁকিতে পা দিতে পারত। সেই দৃশ্যও আর দেখি না। তা হল মায়ের কোলেই বাচ্চা কাঁদছে। সেই বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নীলমণিদের মতো বউয়েরা জামা খুলে বুকের দুধ টানার জন্য সুযোগ করে দিয়েছে। বাচ্চা দুধ খাচ্ছে, নীলমণি আদর করে, সোহাগ করে বাচ্চার আশা মেটাচ্ছে, আর অপরদিকে রাতে সোয়ামীকে খুশি করতে পিঠের গুঁড়ি তৈরি করছেন। সন্ধ্যা হলে সোয়ামী মাঠ থেকে বাড়ি ফিরবে। তারপর নীলমণি পিঠে করতে বসবে। লম্ফ জ্বেলে। কাঠের আগুনে পিঠে হবে। সেই দৃশ্য আজ অতীত।

আরও একটি ঘটনা উল্লেখ না করে পারছি না। তা হল ঘরে ঘরে পাথরের যাঁতা। যা দিয়ে ডাল শস্য, তিল ভাঙা হয়। আজ আর দেখি না। সে দিনটার কথা আজও মনে পড়ে, যখন দেখতাম হাবুর মা অদ্ভুত কায়দায় হাতের আঙুল দিয়ে তিলের খোসা ছাড়াচ্ছেন, কিংবা খেসারি, মটর, ছোলা, মুসুর, কড়াইয়ের খোসাও ছাড়াচ্ছেন উবু হয়ে। হাবুর মা জানে, কত পাক ঘোরালে তবেই খোসা ছাড়বে। দেখতাম প্রতি ঘরে হাবুর মতো মায়েরা আছেন। ডাল, ডালের বড়ি, তিল ভাজা, তিলের নাড়ু, তিল পোস্ত খাওয়া হত। এখন সেগুলি দোকান থেকে পাই। কিন্তু পাই না সেই স্বাদ। হারিয়ে গেছে হাবুর মতো মায়েরা। এখন অত্যাধুনিক প্রজন্মের মায়েরা আছেন, কিন্তু যাঁতায় পাক দিতে জানেন না। এঁরা জানেন দোকান থেকে প্যাকেট করা খাবার। কষ্ট নেই এঁদের। এঁদের দেখি আর ভাবি সেই দিন কী আর ফিরে আসবে না? অপেক্ষায় আছি সেই স্বাদ, অনুভূতি, পরশের ছোঁয়া পাব বলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন