সোমবার | ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:১৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (নবম পর্ব) : আবদুশ শাকুর সপ্তাহে একদিন উপবাস করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো : অনুপম পাল অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত’র ভাষা : ড. হান্স্ হার্ডার সবগুলো গল্পেই বিজয়ার নিজস্ব সিগনেচার স্টাইলের ছাপ রয়েছে : ড. শ্যামলী কর ভাওয়াল কচুর কচকচানি : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (অষ্টম পর্ব) : আবদুশ শাকুর রামলোচন ঠাকুরের উইল ও দ্বারকানাথের ধনপ্রাপ্তি : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (সপ্তম পর্ব) : আবদুশ শাকুর যে শিক্ষকের অভাবে ‘বিবেক’ জাগ্রত হয় না : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (সপ্তম পর্ব) : বিজয়া দেব বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (ষষ্ঠ পর্ব) : আবদুশ শাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটেই নিশ্চিত হচ্ছে বিজেপি বিরোধি জোটের ভাঙন : তপন মল্লিক চৌধুরী দ্বারকানাথ ঠাকুরের গানের চর্চা : অসিত দাস মমতা বললেন, এইচএমপি ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দুষ্টচক্র হু জানাল চিন্তা নেই : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (পঞ্চম পর্ব) : আবদুশ শাকুর পৌষ পুত্রদা একাদশী : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (চতুর্থ পর্ব) : আবদুশ শাকুর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপূজায় কবিগান ও যাত্রার আসর : অসিত দাস সসীমকুমার বাড়ৈ-এর ছোটগল্প ‘ঋতুমতী হওয়ার প্রার্থনা’ সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতিফলনে সিনেমা : সায়র ব্যানার্জী নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘সুও দুও ভাসে’ বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (তৃতীয় পর্ব) : আবদুশ শাকুর ভিয়েতনামের গল্প (ষষ্ঠ পর্ব) : বিজয়া দেব নীলমণি ঠাকুরের মেছুয়া-যাত্রা, একটি ঐতিহাসিক পুনর্নির্মাণ : অসিত দাস বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (দ্বিতীয় পর্ব) : আবদুশ শাকুর কাদের প্রশ্রয়ে বাংলাদেশের জঙ্গিরা বাংলার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্রসাহিত্যে কবিয়াল ও কবির লড়াই : অসিত দাস নকল দাঁতের আসল গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (প্রথম পর্ব) : আবদুশ শাকুর মুর্শিদাবাদের কৃষি ঐতিহ্য : অনুপম পাল
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই ২০২৫ ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কুমারী মাতা মা কামাখ্যা (চতুর্থ পর্ব) : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়

জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় / ১৯১ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কিগো তোমার কি এখনো সময় হয় নি।

দাদা এখনো অফিসে আসে নি আমি রাজেশ।

তারমানে!

আমি দাদার সহচর।

তা বলে আপনি দাদার মেল আইডি খুলবেন।

দাদার সব মেল আইডির পাসওয়ার্ড আমার কাছে আছে। আমি ছাড়া দাদার মেল কেউ খোলে না।

ও। দাদা কখন আসবে। চারটে সাড়ে চারটের সময় আসার কথা।

এখনতো চারটে বেজে গেছে।

এবার চলে আসবে।

ঠিক আছে আমি অনলাইন রয়েছি।

আচ্ছা।

অফিসে ঢুকতেই রাজেশ আমাকে বললো অভি চ্যাট করতে চেয়েছিল।

তারপর নিজের মেল চেক করে কাজে বসলাম। একবার তাকিয়ে দেখলাম অভি অনলাইনেই আছে।

কোন সারাশব্দ নেই।

নিজে থেকে আর হাই হ্যালো করলাম না। নিজের কাজে বসে গেলাম।

কিন্তু কে কার কথা শোনে পিং পিং আওয়াজ হতে তাকালাম।

কিগো এখনো সময় হলো না।

দাঁড়া ব্যাটা, আধঘন্টা অপেক্ষা কর, একটু লিখে নিই, তারপর পেস্ট করছি।

আমি অনলাইন আছি।

থাক। এখন কোথায় আছিস।

অফিসে।

আচ্ছা।

লিখতে শুরু করলাম।

অতীতে কামরূপে বহু হিন্দু রাজা রাজত্ব করেছেন। কিন্তু তাদের ধারাবাহিক ইতিহাস বিলুপ্ত। অনেক ধর্মবিপ্লব এবং যুগবিপ্লবের সাক্ষী কামদেব প্রতিষ্ঠিত মন্দির কামরূপ কামাখ্যা।

কালের অতলে একদিন প্রায় বিলুপ্ত হয়েগেল এই মন্দির। নীলাচল পর্বতের ওই স্থান ঘনো জঙ্গলে ভরে গেল। শক্তিময়ী মাতা কামাখ্যার কথা ভুলেই গেল সকলে। বৌদ্ধযুগের পর গুপ্তবংশের রাজারা কামরূপে বেশ কিছুদিন রাজত্ব করেন। বিশেষ করে বিক্রমাদিত্যের সময় থেকে হিন্দুধর্ম আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১১৫০ সালে পালবংশের ধর্মপাল বর্তমান গৌহাটির পশ্চিমখণ্ডে রাজত্ব করতেন। তিনি খুব ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিছিলেন। তিনি আবার কামাখ্যা দেবীকে নীলচাল পর্বতে খুঁজে বার করে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মপালই মায়ের যথাবিধি পূজার্চনার জন্য কান্যকুব্জ থেকে অনেক সদব্রাহ্মণকে কামরূপে নিয়ে আসেন। এরা বাসত্তরীয় ব্রাহ্মণ নামে খ্যাত। এঁরাই কামাখ্যাদেবীর মন্দিরের আদি পূজারী।

পালবংশের শাসনের পর মন্দিরের আবার অবলুপ্তি ঘটে। মা কামাখ্যা হারিয়ে যান নীলাচলের গহীণ অরণ্যে।

বারভুঞ্যাদের সময় মন্দিরের ইতিহাস অতোটা পরিষ্কার জানা যায় না।

পরে কামরূপের শাসন ভার করায়ত্ত করেন মেছ বা কোচবংশীয় শাসনকর্তা। এরা হাজো বংশীয় নামে পরিচিত ছিলেন। ১৪৮৫ সালে এই বংশের বিশু নামে এক শক্তিমান পুরুষ রাজা হন। ১৪৯০ সালে তিনি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে বিশ্বসিংহ নাম পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর ভাই শিশু, শিবসিংহ নামে পরিচিতি লাভ করেন। পরে এই বিশ্বসিংহ তৎকালীন কামতাপুর বর্তমান কোচবিহারে এসে বসবাস শুরু করেন।

বিশ্বসিংহ এবং তাঁর ভাই শিবসিংহ যখন রাজ্য বিস্তারের অভিপ্রায়ে কামরূপ অভিযান করেন তখন দুই ভাই পথ হারিয়ে নীলাচল পর্বতের গভীর জঙ্গলে হারিয়ে যান। সৈন্যদল থেকে বিচ্ছিন্ন দুই ভাই তখন পথশ্রমে ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত। নীলাচলের চারদিকে ঘন জঙ্গল, হিংস্র জন্তু জানোয়ারের বাস। জলের খোঁজে দুই ভাই মরিয়া। জনপ্রাণী হীন গভীর জঙ্গলে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। বিষন্নমনে দুইভাই তখন দিকভ্রষ্ট। এই রাতের আঁধারে এই গভীর জঙ্গলে তাঁদের কপালে কি লেখা আছে কে জানে। এমন সময় তাঁরা একটা মাটির স্তূপ দেখতে পেলেন। স্তূপের গা দিয়ে জলধারা গড়িয়ে পরছে। এক বৃদ্ধা সেই সীমিত জলাধারের পাশে বসে পূজায় রত।

দুই ভাই অবাক হলেন, এই গহীণ অরণ্যে এই বৃদ্ধা এলেন কোথা থেকে! দুই ভাই কাছে এসে সই বৃদ্ধার কাছে তাদের তৃষ্ণার কথা জানালেন। বৃদ্ধা দুই ভাইকে জল খাওয়ার অনুমতি দিলেন। দুই ভাই প্রাণ ভরে জল খেলেন। তৃষ্ণা মিটল। এইবার দুই ভাই-এর মনে প্রশ্ন জাগল এই গহীণ অরণ্যে যেখানে মানুষের দেখা পাওয়া যায় না সেখানে বৃদ্ধা এলেন কোথা থেকে!

বৃদ্ধা মৃদু হেসে বললেন, কয়েক ঘর পরিবার এখনো এই গহীণ অরণ্যে রয়েগেছে। তারা সবাই মেছ ও কোচ জাতীয়। এই স্তূপে শক্তিময়ী মা অধিষ্ঠান করছেন।

দুই ভাই-এর বিষ্ময়ের ঘোর তখন কাটে না।

বৃদ্ধা বললেন, দেবী জাগ্রতা কাম্যবস্তুর প্রার্থণায় কেউ যদি মায়ের কাছে নিজের মনের কথা জানান তাহলে মা কখনো তাঁকে ফিরিয়ে দেন না।

দুই ভাই এবার বৃদ্ধকে তাঁদের কথা বললেন।

বৃদ্ধা সব শুনে বললেন তোমরা মায়ের কাছে তোমাদের মনোবাঞ্ছা জানাতে পারো।

বৃদ্ধার কথায় সন্তুষ্ট হয়ে দুই ভাই তখন সেই স্তূপের পাশে ভূমিতে লুটিয়ে পরে তাদের মানসপূজা করলেন।

দুজনেই মায়ের কাছে প্রার্থনা করলেন। যদি আমরা বিচ্ছিন্ন সৈন্যদলের সঙ্গে মিলিত হতে পারি এবং আমাদের রাজ্য যদি নিষ্কন্টক হয় তাহলে সোনার মন্দির তৈরি করে মায়ের পূজার্চনার ব্যবস্থা করবো।

মাতৃশক্তি সত্যিকারের আছে কিনা তার প্রমাণ পাওয়ার জন্য বিশ্বসিংহ সেই স্তূপের জলে তার নিজ নাম খোদাই করা হীরের আংটি এবং তিন খন্ড নল (ইকরা) ডুবিয়ে দিলেন।

মনে মনে বললেন আমি দেশে ফিরে কাশীতে গঙ্গাস্নানে যাব। কাশীর গঙ্গায় স্নান করার সময় আমি এই হীরের আংটি দেখতে চাই। তাহলে আমি তোমার শক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ বুঝতে পারবো।

সেদিন গভীর রাতে দুই ভাই তাঁদের সৈন্যদলের সঙ্গে মিলিত হলেন। সৈন্যরাই তাঁদের নীলাচল পর্বত থেকে খুঁজে বার করে উদ্ধার করেন।

দুই ভাই বৃদ্ধার মুখ থেকে দেবীর অনেক মাহাত্ম্য কথা শুনলেন।

রাজা তাঁর রাজ্যে ফিরে এসে রাজকর্য সামলাতে গিয়ে সব ভুলে গেলেন।

তারপর একদিন তিনি কাশীতে গঙ্গাস্নানে এলেন। গঙ্গা স্নান শেষে তিনি যখন গঙ্গায় দাঁড়িয়ে তর্পন করছেন।

তখন তাঁর হাতে সেই তিনখন্ড নল (ইকরা) স্পর্শ করে। তিনি কৌতূহল হয়ে সেই নল হাতে তুলতেই গঙ্গার জলে তাঁর সেই নিজ নাম খদিত আংটি চোখের সামনে ভেসে উঠতে দেখলেন। রাজা বিশ্বসিংহ অবাক হলেন। সেই রাতের সমস্ত কথা তাঁর মনে পরে গেল। তিনি রাজ্যে ফিরে এসেই পণ্ডিতসভা ডাকলেন।

পণ্ডিতদের সামনে তিনি সমস্ত কথা ব্যক্ত করলেন। পণ্ডিতরা শাস্ত্র পুরাণাদি ঘেঁটে সিদ্ধান্তে এলেন, পীঠস্তূপটি একান্ন পীঠের অন্যতম মহামায়া কামাখ্যাদেবীর জাগ্রত শক্তিপীঠ। এখানে মায়ের যোনি মুদ্রা পতিত হয়েছিল। এই মহামায়া মা সকল মানুষের মনের কামনা পূর্ণ করেন বলে তিনি মা কামাখ্যা নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। (আগামীকাল)


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “কুমারী মাতা মা কামাখ্যা (চতুর্থ পর্ব) : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়”

  1. Sukanta Pandit says:

    DADA KAJALDIDHI TA KI 240 ER POR R PABONA R JODI KOTHAO BOOK HISABE BERIYE THAKE SETAO EKTU KINDLY BOLUN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন