বুধবার | ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৮:২৮
Logo
এই মুহূর্তে ::
চাষিদের বাঁচাতে রাজ্যের সরাসরি ফসল কেনার দাওয়াই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার মোদীর মিডিয়া ব্যস্ত কুম্ভের মৃত্যুমিছিল ঢাকতে : তপন মল্লিক চৌধুরী রেডিওকে আরো শ্রুতিমধুর করে তুলেছিলো আমিন সায়ানী : রিঙ্কি সামন্ত গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি চুঁচুড়ার সুগন্ধ্যায় : অসিত দাস প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি — মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : সুমিত ভট্টাচার্য মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়, মিথ এবং ডিকনস্ট্রাকশন : অসিত দাস মহাকুম্ভ ও কয়েকটি প্রশ্ন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব কাশীকান্ত মৈত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন : ড. দীপাঞ্জন দে অমৃতের সন্ধানে মাঘী পূর্ণিমায় শাহীস্নান : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী সরস্বতীর বীণা কচ্ছপী ও গজকচ্ছপ বাঙালি বুদ্ধিজীবী : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

কুমারী মাতা মা কামাখ্যা (চতুর্থ পর্ব) : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়

জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় / ১৯৭ জন পড়েছেন
আপডেট বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কিগো তোমার কি এখনো সময় হয় নি।

দাদা এখনো অফিসে আসে নি আমি রাজেশ।

তারমানে!

আমি দাদার সহচর।

তা বলে আপনি দাদার মেল আইডি খুলবেন।

দাদার সব মেল আইডির পাসওয়ার্ড আমার কাছে আছে। আমি ছাড়া দাদার মেল কেউ খোলে না।

ও। দাদা কখন আসবে। চারটে সাড়ে চারটের সময় আসার কথা।

এখনতো চারটে বেজে গেছে।

এবার চলে আসবে।

ঠিক আছে আমি অনলাইন রয়েছি।

আচ্ছা।

অফিসে ঢুকতেই রাজেশ আমাকে বললো অভি চ্যাট করতে চেয়েছিল।

তারপর নিজের মেল চেক করে কাজে বসলাম। একবার তাকিয়ে দেখলাম অভি অনলাইনেই আছে।

কোন সারাশব্দ নেই।

নিজে থেকে আর হাই হ্যালো করলাম না। নিজের কাজে বসে গেলাম।

কিন্তু কে কার কথা শোনে পিং পিং আওয়াজ হতে তাকালাম।

কিগো এখনো সময় হলো না।

দাঁড়া ব্যাটা, আধঘন্টা অপেক্ষা কর, একটু লিখে নিই, তারপর পেস্ট করছি।

আমি অনলাইন আছি।

থাক। এখন কোথায় আছিস।

অফিসে।

আচ্ছা।

লিখতে শুরু করলাম।

অতীতে কামরূপে বহু হিন্দু রাজা রাজত্ব করেছেন। কিন্তু তাদের ধারাবাহিক ইতিহাস বিলুপ্ত। অনেক ধর্মবিপ্লব এবং যুগবিপ্লবের সাক্ষী কামদেব প্রতিষ্ঠিত মন্দির কামরূপ কামাখ্যা।

কালের অতলে একদিন প্রায় বিলুপ্ত হয়েগেল এই মন্দির। নীলাচল পর্বতের ওই স্থান ঘনো জঙ্গলে ভরে গেল। শক্তিময়ী মাতা কামাখ্যার কথা ভুলেই গেল সকলে। বৌদ্ধযুগের পর গুপ্তবংশের রাজারা কামরূপে বেশ কিছুদিন রাজত্ব করেন। বিশেষ করে বিক্রমাদিত্যের সময় থেকে হিন্দুধর্ম আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১১৫০ সালে পালবংশের ধর্মপাল বর্তমান গৌহাটির পশ্চিমখণ্ডে রাজত্ব করতেন। তিনি খুব ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিছিলেন। তিনি আবার কামাখ্যা দেবীকে নীলচাল পর্বতে খুঁজে বার করে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মপালই মায়ের যথাবিধি পূজার্চনার জন্য কান্যকুব্জ থেকে অনেক সদব্রাহ্মণকে কামরূপে নিয়ে আসেন। এরা বাসত্তরীয় ব্রাহ্মণ নামে খ্যাত। এঁরাই কামাখ্যাদেবীর মন্দিরের আদি পূজারী।

পালবংশের শাসনের পর মন্দিরের আবার অবলুপ্তি ঘটে। মা কামাখ্যা হারিয়ে যান নীলাচলের গহীণ অরণ্যে।

বারভুঞ্যাদের সময় মন্দিরের ইতিহাস অতোটা পরিষ্কার জানা যায় না।

পরে কামরূপের শাসন ভার করায়ত্ত করেন মেছ বা কোচবংশীয় শাসনকর্তা। এরা হাজো বংশীয় নামে পরিচিত ছিলেন। ১৪৮৫ সালে এই বংশের বিশু নামে এক শক্তিমান পুরুষ রাজা হন। ১৪৯০ সালে তিনি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে বিশ্বসিংহ নাম পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর ভাই শিশু, শিবসিংহ নামে পরিচিতি লাভ করেন। পরে এই বিশ্বসিংহ তৎকালীন কামতাপুর বর্তমান কোচবিহারে এসে বসবাস শুরু করেন।

বিশ্বসিংহ এবং তাঁর ভাই শিবসিংহ যখন রাজ্য বিস্তারের অভিপ্রায়ে কামরূপ অভিযান করেন তখন দুই ভাই পথ হারিয়ে নীলাচল পর্বতের গভীর জঙ্গলে হারিয়ে যান। সৈন্যদল থেকে বিচ্ছিন্ন দুই ভাই তখন পথশ্রমে ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত। নীলাচলের চারদিকে ঘন জঙ্গল, হিংস্র জন্তু জানোয়ারের বাস। জলের খোঁজে দুই ভাই মরিয়া। জনপ্রাণী হীন গভীর জঙ্গলে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। বিষন্নমনে দুইভাই তখন দিকভ্রষ্ট। এই রাতের আঁধারে এই গভীর জঙ্গলে তাঁদের কপালে কি লেখা আছে কে জানে। এমন সময় তাঁরা একটা মাটির স্তূপ দেখতে পেলেন। স্তূপের গা দিয়ে জলধারা গড়িয়ে পরছে। এক বৃদ্ধা সেই সীমিত জলাধারের পাশে বসে পূজায় রত।

দুই ভাই অবাক হলেন, এই গহীণ অরণ্যে এই বৃদ্ধা এলেন কোথা থেকে! দুই ভাই কাছে এসে সই বৃদ্ধার কাছে তাদের তৃষ্ণার কথা জানালেন। বৃদ্ধা দুই ভাইকে জল খাওয়ার অনুমতি দিলেন। দুই ভাই প্রাণ ভরে জল খেলেন। তৃষ্ণা মিটল। এইবার দুই ভাই-এর মনে প্রশ্ন জাগল এই গহীণ অরণ্যে যেখানে মানুষের দেখা পাওয়া যায় না সেখানে বৃদ্ধা এলেন কোথা থেকে!

বৃদ্ধা মৃদু হেসে বললেন, কয়েক ঘর পরিবার এখনো এই গহীণ অরণ্যে রয়েগেছে। তারা সবাই মেছ ও কোচ জাতীয়। এই স্তূপে শক্তিময়ী মা অধিষ্ঠান করছেন।

দুই ভাই-এর বিষ্ময়ের ঘোর তখন কাটে না।

বৃদ্ধা বললেন, দেবী জাগ্রতা কাম্যবস্তুর প্রার্থণায় কেউ যদি মায়ের কাছে নিজের মনের কথা জানান তাহলে মা কখনো তাঁকে ফিরিয়ে দেন না।

দুই ভাই এবার বৃদ্ধকে তাঁদের কথা বললেন।

বৃদ্ধা সব শুনে বললেন তোমরা মায়ের কাছে তোমাদের মনোবাঞ্ছা জানাতে পারো।

বৃদ্ধার কথায় সন্তুষ্ট হয়ে দুই ভাই তখন সেই স্তূপের পাশে ভূমিতে লুটিয়ে পরে তাদের মানসপূজা করলেন।

দুজনেই মায়ের কাছে প্রার্থনা করলেন। যদি আমরা বিচ্ছিন্ন সৈন্যদলের সঙ্গে মিলিত হতে পারি এবং আমাদের রাজ্য যদি নিষ্কন্টক হয় তাহলে সোনার মন্দির তৈরি করে মায়ের পূজার্চনার ব্যবস্থা করবো।

মাতৃশক্তি সত্যিকারের আছে কিনা তার প্রমাণ পাওয়ার জন্য বিশ্বসিংহ সেই স্তূপের জলে তার নিজ নাম খোদাই করা হীরের আংটি এবং তিন খন্ড নল (ইকরা) ডুবিয়ে দিলেন।

মনে মনে বললেন আমি দেশে ফিরে কাশীতে গঙ্গাস্নানে যাব। কাশীর গঙ্গায় স্নান করার সময় আমি এই হীরের আংটি দেখতে চাই। তাহলে আমি তোমার শক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ বুঝতে পারবো।

সেদিন গভীর রাতে দুই ভাই তাঁদের সৈন্যদলের সঙ্গে মিলিত হলেন। সৈন্যরাই তাঁদের নীলাচল পর্বত থেকে খুঁজে বার করে উদ্ধার করেন।

দুই ভাই বৃদ্ধার মুখ থেকে দেবীর অনেক মাহাত্ম্য কথা শুনলেন।

রাজা তাঁর রাজ্যে ফিরে এসে রাজকর্য সামলাতে গিয়ে সব ভুলে গেলেন।

তারপর একদিন তিনি কাশীতে গঙ্গাস্নানে এলেন। গঙ্গা স্নান শেষে তিনি যখন গঙ্গায় দাঁড়িয়ে তর্পন করছেন।

তখন তাঁর হাতে সেই তিনখন্ড নল (ইকরা) স্পর্শ করে। তিনি কৌতূহল হয়ে সেই নল হাতে তুলতেই গঙ্গার জলে তাঁর সেই নিজ নাম খদিত আংটি চোখের সামনে ভেসে উঠতে দেখলেন। রাজা বিশ্বসিংহ অবাক হলেন। সেই রাতের সমস্ত কথা তাঁর মনে পরে গেল। তিনি রাজ্যে ফিরে এসেই পণ্ডিতসভা ডাকলেন।

পণ্ডিতদের সামনে তিনি সমস্ত কথা ব্যক্ত করলেন। পণ্ডিতরা শাস্ত্র পুরাণাদি ঘেঁটে সিদ্ধান্তে এলেন, পীঠস্তূপটি একান্ন পীঠের অন্যতম মহামায়া কামাখ্যাদেবীর জাগ্রত শক্তিপীঠ। এখানে মায়ের যোনি মুদ্রা পতিত হয়েছিল। এই মহামায়া মা সকল মানুষের মনের কামনা পূর্ণ করেন বলে তিনি মা কামাখ্যা নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। (আগামীকাল)


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “কুমারী মাতা মা কামাখ্যা (চতুর্থ পর্ব) : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়”

  1. Sukanta Pandit says:

    DADA KAJALDIDHI TA KI 240 ER POR R PABONA R JODI KOTHAO BOOK HISABE BERIYE THAKE SETAO EKTU KINDLY BOLUN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন