সোনার বাংলা ছিল তাদের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু উত্তর প্রদেশের জেলা পঞ্চায়েত ভোট ছিল সে রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে সেমিফাইনাল। বাংলায় চূড়ান্ত আশা ভঙ্গের উত্তর প্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল বিজেপিকে আরও চিন্তায় ফেলল। আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার ভোটের আগে পঞ্চায়েত ভোট ছিল শেষ শক্তি পরীক্ষা। বিধানসভা ভোটের আগে জেলা পঞ্চায়েত দখল সব রাজনৈতিক দলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু সেখানে বিজেপি সমাজবাদী পার্টি ও রাষ্ট্রীয় লোক দলের তুলনায় পিছিয়ে।
একদিকে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ, অন্যদিকে কৃষক আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়ে উত্তর প্রদেশের সব জেলাতেই। ফলে বিজেপির বরাবরের শক্ত ঘাঁটি বারানসি অযোধ্যা, মথুরাতে বিজেপির ভরাডুবি হয়। বারানসি আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী এলাকা। তিন জেলাতেই মন্দির আন্দোলন তীব্রতর। অথচ দেখা গেল, বারানসির ৩০টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে মাত্র ৮টি। এসপি পেয়েছে ১৫, বিএসপি ৫।
অযোধ্যার হাল আরও খারাপ। সেখানে বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৬টি আসন। এসপি পেয়েছে ২২, বিএসপি ৪। মন্দির শহর মথুরাতেও বিজেপির হাল তথৈবচ। জয় সেখানে মাত্র ৩ আসনে। এই জেলায় সিংহভাগ আসন জিতেছে বিএসপি (১২)। আরএলডি পেয়েছে ৯টি আসন। গড় বলে পরিচিত মিরাটেও বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। পেয়েছে মাত্র ৬টি আসন। এসপি ও বিএসপি জিতেছে যথাক্রমে ৯ ও ১২টি। পশ্চিম উত্তর প্রদেশে আম আদমি পার্টিও বেশ কিছু আসন জিতেছে।
একদিকে সোনার বাংলা দখলের স্বপ্ন অধরা অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটে খারাপ ফল বিজেপির কপালে স্পষ্ট ভাজ ফেলেছে। এর মাত্র কয়েক দিন আগে কর্ণাটকের পুরসভার ভোটেও বিজেপির ভরাডুবি হয়। ১০টি বড় শহরের পুর নির্বাচনে বিজেপি পায় মাত্র ১টি আসন।
আগামী বছর দেশের ৩টি রাজ্য উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড ও পাঞ্জাব বিধানসভার ভোট। তার আগে কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা, পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির ধ্বস নেমেছে। অন্যদিকে জোরদার কৃষক আন্দোলন, ব্যাপক করোনার প্রকোপ তারসঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের কারণে দেশব্যাপী বিজেপির ভাবমূর্তি একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি ছিল কেরল এবং তামিলনাড়ুতে। কেরলে প্রথম থেকেই বিজেপির তেমন কিছু করার ছিল না, বরং বাংলায় একটা প্রবল গেরুয়া ঝড়ের সম্ভবনা ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবেই বাংলায় সেই ঝড় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায় ঘাস ফুলের পক্ষে। চমকে দেওয়া ফলাফল হয় তামিলনাড়ুতেও। দুই রাজ্যের দুটি অ-বিজেপি দলের কাছে বিজেপি পুরোপুরি ধরাশায়ী হল কিভাবে। পুরোপুরি অঘটন না হলেও বাংলা ও তামিলনাড়ুতে বিজেপির এইভাবে পতনের জন্য একাধিক কারণ রয়েছে ঠিকই তবে তার সঙ্গে রয়েছে আরও বড় দু-একটি কারণ।
২০১৯-র লোকসভা ভোটের পর থেকেই বাংলার বিধানসভা ভোটকে টার্গেট করে বিজেপি দফায় দফায় সংগঠন সাজিয়েছে, বুথে বুথে সমীক্ষা চালিয়ে ভোটের অঙ্ক কষেছে, বাইরে থেকে হেভিওয়েট নেতারা এসে রাজ্যে ঘুরে বেরিয়েছেন, কিন্তু মানুষর মনে ভরসা জোগাতে পারেননি তাঁরা। বরং তারা বাংলার মানুষের আস্থা হারিয়েছেন কথায় কথায় হিন্দুত্ব, বাঙালি সংস্কৃতির অবমাননা করে। তাই বাংলা জয়ের জন্য মোদী-শাহ ও অন্যান্য বিজেপি নেতারা দিল্লি থেকে কার্যত ডেলিপ্যাসেঞ্জারি করলেও তা কার্যকর হয় নি। বাংলায় তাদের থেকে আরও বড় মুখ মমতা বন্দ্যোপাধায়। তার জনপ্রিয়তার কাছে ধোপে টেকেনি এ রাজ্যে মোদির ২০ ও শাহের ৬০টি জনসভা।
কিন্তু তামিলনাড়ুতে? সেখানে জয়ললিতার মৃত্যুর পর একটি মুখও ছিল না। এডিএমকে ছিল একেবারে দিশাহীন অবস্থায়। একাধিক নেতা জড়িয়ে পড়েছিল নিজেদের মধ্যে দলাদলীতে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থ ছিল এডিএমকে। সেদিক থেকে ডিএমকের স্টালিনকে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে মানুষের। করুণানিধির পর দলের আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন স্টালিন। আর সেই আস্থায় ভর করেই মানুষের ভরসা এবং বিশ্বাস জয় করতে পেরেছে ডিএমকে। সেখানে বাইরে থেকে নেতাদের নিয়ে এসে প্রচারে দাঁড় করিয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেনি বিজেপি।
তবে বাংলা ও তামিলনাড়ুতে অবিজেপি এই দুই শক্তির বিপুল জয়ের মূল মন্ত্র ছিল আম জনতার ভরসা, আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। যেটা বিজেপি কিছুতেই করে উঠতে পারেনি। তাই সর্বভারতীয় সর্ববৃহৎ দল হলেও বাংলা, কেরল ও তামিলনাড়ুর মানুষের কাছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলই বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে। সেকারণেই মানুষ স্থানীয় রাজনৈতিক দলকে আপন করে নিয়েছে। কেরলে বামেদের উপরেই ভরসা রেখেছেন মানুষ। কিন্তু বাংলায় রাখতে পারেনি। যোগীগড় উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ফলাফল হয়েছে সেখানেও একই কারণ, মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়েছে।
বিশ্লেষণধর্মী লেখা, দক্ষ কলমে রাজনৈতিক ব্যাখ্যা।
সবখানে হারবে। পাঞ্জাবে বিজেপির জামানত যাবে। খাতা খুলতে পারবে কিনা সন্দেহ।
আগামী বেশ কিছু বছর পঞ্জাব,হরিয়ানায় বিজেপি কথাটাই কেউ উচ্চারণ করবে না। উত্তরপ্রদেশের একটা বিশাল অংশেও
একই অবস্থা, অন্যান্য রাজ্যে ধীরে ধীরে হলেও বিজেপি বিরোধি হাওয়া সামান্য হলেও বইতে শুরু করেছে। ২০২৪-এ ওরা
উৎখাত হবেই।
konodin ki manush oder sange chhilo,zara chhilo tara asole katagulo kukur sheayal, jangal
theke berie vire gechhilo, chitay-kabare oder jayga nei.