বুধবার | ২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৪৩
Logo
এই মুহূর্তে ::
রাঁধুনীর বিস্ময় উন্মোচন — উপকারীতার জগৎ-সহ বাঙালির সম্পূর্ণ মশলা : রিঙ্কি সামন্ত রামনবমীর দোল : অসিত দাস মহারাষ্ট্রে নববর্ষের সূচনা ‘গুড়ি পড়বা’ : রিঙ্কি সামন্ত আরামবাগে ঘরের মেয়ে দুর্গাকে আরাধনার মধ্য দিয়ে দিঘীর মেলায় সম্প্রীতির মেলবন্ধন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘বিজ্ঞান অন্বেষক’ পত্রিকার ২২তম বর্ষ উদযাপন : ড. দীপাঞ্জন দে হিন্দিতে টালা মানে ‘অর্ধেক’, কলকাতার টালা ছিল আধাশহর : অসিত দাস আত্মশুদ্ধির একটি বিশেষ দিন চৈত্র অমাবস্যা : রিঙ্কি সামন্ত চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয় : ড. দীপাঞ্জন দে রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল জৈব কৃষি বিপণন হাট অশোকবৃক্ষ, কালিদাসের কুমারসম্ভব থেকে অমর মিত্রর ধ্রুবপুত্র : অসিত দাস কৌতুকে হাসতে না পারলে কামড় তো লাগবেই : তপন মল্লিক চৌধুরী জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ও রোহিঙ্গা সংকটে অগ্রগতি : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন এথেন্সের অ্যাগনোডাইস — ইতিহাসের প্রথম মহিলা চিকিৎসক : রিঙ্কি সামন্ত সন্‌জীদা খাতুন — আমার শিক্ষক : ড. মিল্টন বিশ্বাস হিমঘরগুলিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু মজুত, সস্তা হতে পারে বাজার দর : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় শিশুশিক্ষা : তারাপদ রায় জঙ্গলমহল জৈন ধর্মের এক লুপ্তভুমি : সসীমকুমার বাড়ৈ ওড়িশা-আসাম-ত্রিপুরার অশোকাষ্টমীর সঙ্গে দোলের সম্পর্ক : অসিত দাস পাপমোচনী একাদশী ব্রতমাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত ভগত সিংহের জেল নোটবুকের গল্প : কল্পনা পান্ডে নন্দিনী অধিকারী-র ছোটগল্প ‘অমৃতসরী জায়কা’ মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা একের পর এক কয়েদি, এক বছরে ১৯৬ শিশুর জন্ম : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ‘শোলে’র পঞ্চাশ বছর : সন্দীপন বিশ্বাস বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা ইতিহাস পালটাতে চায় : তপন মল্লিক চৌধুরী অশোক সম্পর্কে দু-চারটে কথা যা আমি জানি : অসিত দাস চৈত্রের শুরুতেই শৈবতীর্থ তারকেশ্বরে শুরু হলো সন্ন্যাস মেলা : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম বাঙালি পরিচালকের প্রথম নির্বাক লাভ স্টোরি : রিঙ্কি সামন্ত গোপিনী সমভিব্যাহারে রাধাকৃষ্ণের হোলি ও ধ্যানী অশোকবৃক্ষ : অসিত দাস শেখাওয়াটির হোলী-হাভেলী : নন্দিনী অধিকারী সংস্কৃত সাহিত্যে অশোকবৃক্ষ যখন দোহলী : অসিত দাস
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ দোলপূর্ণিমা ও হোলি ও বসন্ত উৎসবের  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

সুফি সাধক মহম্মদ গাউস ছিলেন হুমায়ুনের শিক্ষক : জমিল সৈয়দ

জমিল সৈয়দ / ২৯২ জন পড়েছেন
আপডেট শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪

মহম্মদ গাউসের সমাধি, গোয়ালিয়র

মহম্মদ গাউস ছিলেন একজন সুফি সন্ত, সংগীত সাধক, যিনি সম্রাট হুমায়ুনের শিক্ষক ও বিখ্যাত গায়ক তানসেনের অন্যতম সঙ্গীতগুরু।

গোয়ালিয়র দুর্গ থেকে ১ কিমি এবং গোয়ালিয়র জংশন থেকে ৩ কিমি দূরে, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র শহরে মহম্মদ গাউস ও তানসেনের সমাধি রয়েছে। স্থাপত্যের জন্য সুপরিচিত, সমাধি কমপ্লেক্সটি গোয়ালিয়রের বিশিষ্ট দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি।

মহম্মদ গাউসের সমাধি আকবরের শাসনকালে খ্রিস্টিয় ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। মহাম্মদ গাউস ছিলেন একজন আফগান যুবরাজ যিনি পরে একজন সুফি সাধক হয়েছিলেন। কিংবদন্তি অনুসারে, মহম্মদ গাউস ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে গোয়ালিয়রের দুর্গ জয় করার সময় বাবরকে সহায়তা করেছিলেন। ১৬ শতকের এই সুফি সাধক মোগল ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং বলা হয় যে বাবর এবং হুমায়ুনের মতো মোগল সম্রাটদের উপর তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিল।

মহম্মদ গাউস ছিলেন হুমায়ুনের শিক্ষক। নানা বিদ্যায় হুমায়ুনের বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টির পিছনে তিনি ছিলেন। ১৫৪০ সালে শের শাহ সুরির উত্থান এবং হুমায়ুনের ক্ষমতাচ্যুতির কারণে মহম্মদ গাউস গুজরাটে চলে যান।

পরে, মোগল শাসন পূর্ণ গৌরবে ফিরে এলে তিনিও গোয়ালিয়রে ফিরে আসেন। ১৫৬৩ সালে তাঁর মৃত্যু হয় । মৃত্যুর কিছুকাল পরে, এখানে একটি বিশাল এবং দর্শনীয় সমাধি তৈরি করা হয়েছিল।

গোয়ালিয়র দুর্গ জয়ে বাবরকে সহায়তা করার পর, মহম্মদ গাউসকে অনেকটা জমি দেওয়া হয়েছিল যেখানে তিনি একটি ধর্মশালা তৈরি করেছিলেন। এই জায়গাটি শৈল্পিক এবং সৃজনশীল কাজে আগ্রহী লোকদের জন্য একটি কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। অনেক গায়ক এবং শিল্পী তাঁদের প্রতিভা বিকশিত করার জন্য মহম্মদ গাউসের কাছ থেকে পৃষ্ঠপোষকতা এবং সমর্থন পেয়েছিলেন।

সঙ্গীততত্ত্ববিদ চৈতন্য দেব লিখেছেন : গোয়ালিয়রের কাছে বেহাত নামে এক গ্রামে মকরন্দ পাণ্ডে বা মিশ্র নামে এক ব্রাহ্মণ ছিলেন, সঙ্গীতে তাঁর বেশ দক্ষতা ছিলো। তাঁর অনেকগুলি সন্তান শিশু বয়সেই পর পর মারা যায়। প্রতিবেশীরা উপদেশ দিলো গোয়ালিয়রে এক মুসলিম সাধু আছেন, তাঁর নাম মহম্মদ গাউস, তাঁর কাছ থেকে আশীর্বাদ পেলে কিছু একটা সুরাহা হতে পারে। … গাউস তাঁকে একটি তাবিজ দিলেন, বললেন, এই তাবিজ মকরন্দের স্ত্রীকে গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। — যথাসময়ে মকরন্দের স্ত্রী একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। সেই পুত্রের নাম রাখা হলো রামতনু, ডাক নাম তন্না। (B. Chaitanya Deva b.1922 – d.1981)

মহম্মদ গাউসের সঙ্গীতের ছাত্র ছিলেন রামতনু পাণ্ডে, যিনি সঙ্গীত সম্রাট “তানসেন” নামে বেশি পরিচিত ভারতের ইতিহাসে। তিনি সম্রাট আকবরের ডাকে সাড়া দিয়ে দিল্লি যান ও সম্রাটের দরবারে নবরত্নের একটি রত্ন হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন।

বৃন্দাবনে স্বামী হরিদাসের অধীনে তানসেনের প্রাথমিক সঙ্গীত শিক্ষা হয়েছিল। পরবর্তীকালে, তিনি মহম্মদ গাউসের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য আসেন, যা তাঁর সঙ্গীতে সুফি প্রভাব নিয়ে আসে।

জনশ্রুতি আছে, রামতনু পাণ্ডেকে সঙ্গীতে দীক্ষা দেওয়ার সময়, তাঁর জিভের সঙ্গে মহম্মদ গাউসের জিভ ছোঁওয়াতে হয়েছিল, তাতেই নাকি তানসেন জাতিচ্যুত হয়েছিলেন !!!

শেষজীবনে মহম্মদ গাউস চুনার পাহাড়ের নিচে জঙ্গলের মধ্যে এক গুহায় বাস করতেন। বদায়ুনি নামে এক লেখক লিখে গেছেন, দীর্ঘ ১২ বছর গুহার মধ্যে সাধনা করেছিলেন মহম্মদ গাউস। খেতেন বনের ফলমূল ও পাতা। তাঁর আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য খুব শক্তিশালী ও একচ্ছত্র সম্রাটেরাও তাঁর গুহায় আসতেন এবং তাঁর সম্মানে মাথা নিচু করে দাঁড়াতেন।

এরপর মজার কথা লিখেছেন বদায়ুনি। বদায়ুনি তখন ছাত্র এবং আগ্রায় থাকেন। মহম্মদ গাউস তখন ৮০ বছরের বৃদ্ধ। বদায়ুনি একদিন আগ্রায় দেখলেন মহম্মদ গাউসকে। গাউসের পরনে ফকিরের পোশাক, দুর্দান্ত বহিরঙ্গ ও অবর্ণনীয় মর্যাদা। তাঁর খ্যাতি তখন বিশ্বময়। আমার ইচ্ছা হলো তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবো। কিন্তু যখন দেখলাম একজন হিন্দুকে সম্মান দেখানোর জন্য মহম্মদ গাউস উঠে দাঁড়ালেন, তখন আমি আমার আনন্দকে পরিত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।

গাউস মহম্মদের সমাধি মুসলিম ও হিন্দু উভয়েরই একটি বিশিষ্ট তীর্থস্থান। এই সমাধিটির কাঠামোটি সাধারণ মোগল স্থাপত্যের, কিন্তু কেউ সহজেই ভারতীয় স্থাপত্যের বিশেষত গুজরাট এবং রাজস্থা্নের শিল্পধারার সঙ্গে মেলবন্ধন খুঁজে পাবেন।

স্থাপত্যের প্রতিটি চার কোণে ষড়ভুজ স্তম্ভ রয়েছে। বিল্ডিংটি পরিকল্পনায় বর্গাকার এবং শীর্ষে নীল সিরামিক টাইলস দিয়ে সজ্জিত একটি বর্গাকার গম্বুজ। সমাধির দেয়ালে জটিল খোদাই এবং জালিকা রয়েছে।

যেখানে সুফি সাধকদেরকে সমাধিস্থ করা হয় সেই স্থানগুলিকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। অনেক সময় শিষ্য ও সাধুর কাছের মানুষদেরও একই এলাকায় সমাহিত করা হয়। ভারত জুড়ে অন্যান্য সুফি মাজারের মতোই, মুহম্মদ গাউসের সমাধির আশেপাশে বেশ কয়েকটি নামযুক্ত ও নামহীন কবর রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন