শুক্রবার | ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৫৬
Logo
এই মুহূর্তে ::
১৯ ফেব্রুয়ারি ও স্বামীজির স্মৃতিবিজড়িত আলমবাজার মঠ (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত চাষিদের বাঁচাতে রাজ্যের সরাসরি ফসল কেনার দাওয়াই গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (সপ্তম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার মোদীর মিডিয়া ব্যস্ত কুম্ভের মৃত্যুমিছিল ঢাকতে : তপন মল্লিক চৌধুরী রেডিওকে আরো শ্রুতিমধুর করে তুলেছিলো আমিন সায়ানী : রিঙ্কি সামন্ত গোপাল ভাঁড়ের আসল বাড়ি চুঁচুড়ার সুগন্ধ্যায় : অসিত দাস প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি — মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় : সুমিত ভট্টাচার্য মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়, মিথ এবং ডিকনস্ট্রাকশন : অসিত দাস মহাকুম্ভ ও কয়েকটি প্রশ্ন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভিয়েতনামের গল্প (শেষ পর্ব) : বিজয়া দেব কাশীকান্ত মৈত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন : ড. দীপাঞ্জন দে অমৃতের সন্ধানে মাঘী পূর্ণিমায় শাহীস্নান : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের যোগ : অসিত দাস ‘হরিপদ একজন বেঁটে খাটো সাদামাটা লোক’-এর গল্প হলেও… সত্যি : রিঙ্কি সামন্ত রোহিঙ্গা সংকট — ফেলে আসা বছর ও আগামীদিনের প্রত্যাশা : হাসান মোঃ শামসুদ্দীন বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (পঞ্চম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার ‘রাঙা শুক্রবার অথবা কহরকন্ঠ কথা’ উপন্যাস বিষয়ে শতদল মিত্র যা বললেন রবীন্দ্রনাথের ধর্মীয় পরিচয় : গোলাম মুরশিদ কেজরিওয়াল হারলো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অরাজকতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য : তপন মল্লিক চৌধুরী বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (চতুর্থ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সাহেব লেখক দেড়শো বছর আগেই বলেছিলেন পঞ্চানন কুশারীর কবিয়াল হওয়ার সম্ভাবনার কথা : অসিত দাস বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (তৃতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার সর্বপাপবিনাশীনি জয়া একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (দ্বিতীয় পর্ব) : দিলীপ মজুমদার বাজেটে সাধারণের জীবনমানের উন্নয়নের একটি কথাও নেই : তপন মল্লিক চৌধুরী শঙ্খ ঘোষ-এর ‘এখন সব অলীক’ নস্টালজিক অনুভূতি দিয়ে ঘেরা মায়াময় এক জগৎ : অমৃতাভ দে বাংলার নবজাগরণের কুশীলব (প্রথম পর্ব) : দিলীপ মজুমদার কালো গোঁসাইয়ের চিঠি — চিঠিকেন্দ্রীক স্মৃতির পুনর্জীবন : মোঃ তুষার উদ্দিন নব নব রূপে : নন্দিনী অধিকারী
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বসন্ত পঞ্চমী ও সরস্বতী পুজোর  আন্তরিক শুভেচ্ছা শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

ভিয়েতনামের গল্প (দ্বিতীয় পর্ব) : বিজয়া দেব

বিজয়া দেব / ২০৩ জন পড়েছেন
আপডেট রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ডে নাং সিটি

বাতাসে এখনও যুদ্ধ যুদ্ধ ডাক, কোথাও না কোথাও যুদ্ধ হয়েই চলেছে। সভ্যতা এগোয়, যুদ্ধের ডাক থামে না। লিও টলস্টয় কবে লিখে গিয়েছিলেন “War and Peace”। তাই আজকাল ভাবি শিল্প সাহিত্যের কোনও প্রভাব সভ্যতার গায়ে আঁচড় কাটতেও পারল না? টলস্টয় মানবজীবনের ইতিহাস সম্পর্কেও বলেছিলেন মানবজীবনের ইতিহাসেরও কোনও দিকনির্দেশনা নেই। মনে হয় তা যেন মূলত কিছু আতঙ্কেরই ফসল।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ভিয়েতনামের ছবি ধরে রেখেছে এই মিউজিয়াম (হো চি মিন সিটিতে)। যা ভুলতে পারব না কখনও।

ফিরে আসি যাত্রাপথে। ভিয়েত জেট বিমানে আমরা যাচ্ছি ডে নাং সিটি। একঘন্টা পাঁচ /দশ মিনিটের বিমানযাত্রা। বিমানবন্দরে কড়াকড়ি বেশ। সিকিউরিটি চেকিং এ একেবারে জুতো অব্দি খুলে এপার থেকে ওপারে যেতে হলো। এখানে নারীপুরুষের ভেদাভেদ বিলকুল নেই। সিকিউরিটি চেকিং এ পুরুষ নারীদের কিম্বা নারী পুরুষের দেহ চেকিং করতে পারে। মেয়েদের জন্যে আলাদা করে সিকিউরিটি চেকিং এর জন্যে ঘেরাটোপ চোখে পড়ল না।

জানালার পাশে বসে নীচে তাকিয়ে দেখছি বেঘোরে অন্ধকার। আমরা কি সমুদ্র পেরিয়ে যাচ্ছি? হো চি মিন সিটি হচ্ছে ভিয়েতনামের একেবারে দক্ষিণে, ডে নাঙ সিটি মধ্য ভিয়েতনামে। দুটো শহরের মধ্যে দূরত্ব ৯২৪ কি মি। প্রায় সময়মতো আমরা ডে নাঙ সিটিতে পৌঁছে গেলাম। এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে একইভাবে ডে নাঙের গাইড এসে অভিবাদন জানালো। একটি যুবক। কিন্তু বোঝা গেল একটু সমস্যা হবে আলাপচারিতায়। কারণ তার উচ্চারিত ইংরেজি অনেকটাই ভিয়েতনামী উচ্চারণ ঘেঁষা। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল না। যুবকটি তার নাম ও ফোন নং দিল সবাইকে। নাম হো ফি ভু (Ho Phi Vu)। বলল কেউ কোনও অসুবিধেয় পড়লে কিম্বা দলছুট হয়ে পথ হারিয়ে ফেললে ওকে ফোন করলেই চলবে।

হো ফি ভু। আমাদের গাইড ডে নাঙ শহরের।

তবে এই গাইড একটু গম্ভীর প্রকৃতির। হাসি আছে মুখে, তবে কিছুটা কি কষ্টার্জিত? এসব আমার নিজেকে নিজে প্রশ্ন, নিজের সাথে নিজে কথা। হ্যাঁ, ভাষা একটা সমস্যা হচ্ছে হয়তো, কিম্বা আমাদের হুল্লোড়ে হয়তো বা…. আসলে গাইডদের নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা স্বভাবজাত অভ্যাস এই কলমচির, আর কিছু নয়। গাইডদের যেমন জানতে হয় তেমনই পরিবেশন ক্ষমতা ভালো থাকা খুব জরুরি। সে ক্ষেত্রে হো ফি ভু- কে নিয়ে একটু চিন্তা তো থেকেই যায়। যাক গে, এত ক্লান্ত হয়ে হো ফি ভু -কে চিন্তা করার আর দরকার নেই, ওকে ওর কাছেই ছেড়ে দেওয়া ভালো।

এইবার হো ফি ভু বলল- আজ শহরে বৃষ্টি হয়ে গেছে। আগামীকাল প্রথম ভিউ পয়েন্ট বা না হিলস। আমাদের হয় ছাতা নয় রেনকোট নিয়ে যেতে হবে। বৃষ্টি ও কুয়াশায় ঢেকে থাকবে চারপাশ।

মনে মনে প্রার্থনা করছি আগামীকাল যেন একটা রোদেলা দিন হয়। এখন জানালায় চোখ। শহরটা ঝা চকচকে মনে হচ্ছে। একটা কথা বলে নেওয়া ভালো, পর্যটক হিসাবে একটা দেশের আদৌ কি বিশেষ কিছু জানা হয়? ব্যাপারটা অনেকটা অন্ধের হস্তীদর্শনের মতোই ব্যাপার। তবে যতটুকু চোখে পড়ছে তা হলো চকচকে পথঘাট, চওড়া ফুটপাত, গোছানো গাছপালা। পরিচ্ছন্ন।আপাতত ডিনার। তারপর হোটেল।

ডিনার সেরে যখন হোটেলে ফিরছি তখন সোনালি আলোয় আলোকিত এক ব্রিজ। পুরোটা তখন দেখতে পারিনি। গাইড বলল- হান নদীর ওপর এই ব্রিজের নাম ড্রাগন ব্রিজ। পর্যটন ক্ষেত্রটিতেও এই ব্রিজটি সংযুক্ত হয়ে আছে। প্রতিটি সপ্তাহান্তে এই ড্রাগনের মুখ দিয়ে আগুন বেরোয় এবং নীল আলোর ঝলকানিতে এক অদ্ভুত আবহের সৃষ্টি করে। আমরা ঐ সময়ে যাই নি সুতরাং দেখা হয় নি।

পেছনে ড্রাগন ব্রিজ।

এই ড্রাগনের আরও মুখ দেখেছি ভিয়েতনামের বিভিন্ন জায়গায়। ড্রাগন নিয়ে অনেক মিথ আছে ভিয়েতনামে। ড্রাগন তাদের কাছে রাজকীয়তার প্রতীক এবং রক্ষাকারীর প্রতীক। ড্রাগন ও পরী নিয়ে ওদের মিথ রয়েছে। ড্রাগন জন্ম দিয়েছে তাদের পূর্বপুরুষদের, আর পরী জন্ম দিয়েছে তাদের সন্তানদের ইত্যাদি। ভিয়েতনামকে সমুদ্র ঘিরে আছে বলে ভিয়েতনামের আরেক নাম “নীল ড্রাগনের দেশ”।

প্রসঙ্গে ফিরে আসি। বাস থেকে যখন নামলাম গা জুড়ানো হাওয়া এসে সারাদিনের ক্লান্তিকে যেন উড়িয়ে নিয়ে গেল। বুঝলাম কাছাকাছি সমুদ্র আছে। এই হাওয়া সামুদ্রিক হাওয়া। কিন্তু তখন দেহ চাইছে বিছানা। কিন্তু তার জন্যে এখনও অনেকটা অপেক্ষা।

সকালে ঘুম যখন ভাঙল জানালায় তাকিয়ে দেখি বন্ধ কাচের জানালায় দৃশ্যমান নিঃশব্দ সমুদ্রের ঢেউ অবিরত বেলাভূমিতে আছড়ে পড়ছে। ঝা চকচকে রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে। আমাদের হোটেল সমুদ্রতটের উল্টোদিকে তা গতকাল রাতে বুঝতে পারি নি। মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করলাম প্রগাঢ় নৈ:শব্দে বিশালত্বের হাতছানি। কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিলাম চিত্রার্পিতের মতো। হঠাৎ মনে হলো আজ বা না হিলস, হো ফি ভু তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে বলে দিয়েছে। সময়মতো ব্রেকফাস্ট সেরে সবাই জড়ো হয়েছে লাউঞ্জে।

আবার যাত্রা হলো শুরু বা না হিলসের উদ্দেশ্যে। বা না হিলস একসময় ফরাসিদের অবসর বিনোদনের কেন্দ্র ছিল। সেই হিসেবে তাদের তৈরি করা ভিলা, বাংলো গল্ফ ক্লাব ইত্যাদি ছিল। কিন্তু সেগুলো আর সংরক্ষিত হয়নি, তার পরিবর্তে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে একে তৈরি করা হয়েছে।

বা না হিলসে “sun world”-এ প্রবেশপথ।

আমরা কেবল কারে উপরে উঠছি। অনেকটা সময় ধরেই মনে হচ্ছিল উঠছি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১৪৮৭ মিটার। বর্তমানে ভিয়েতনাম পর্যটন কেন্দ্রে এইটাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কেবল কারগুলোও বিশেষ দ্রষ্টব্যের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু বৃষ্টি মেঘ কুয়াশায় আমরা এতটাই আচ্ছন্ন ছিলাম অনেককিছুই ভালো করে দেখা হয়নি।

কেবল কার। বা না হিলস।

অত:পর গোল্ডেন ব্রিজ।

৫০০ ফুট লম্বা এই ব্রিজটি দুটি হাতের ওপর ধরা। এইটি খুব সম্ভব ছবি তোলার দারুণ স্পট। এই মেঘ কুয়াশার ভেতর অজস্র মানুষের ভিড়ে কার্যত দিশেহারা লাগছিল।

গোল্ডেন সেতুর আসুরিক হাতের ওপর। কুয়াশা, মেঘ ক্রমশই বাড়ছিল। গোল্ডেন ব্রিজে সহযাত্রীরা।

ছবি তোলার হিড়িক পড়েছে নানা ভঙ্গিমায়। তাহলে আমিই বাদ যাই কেন?

(ক্রমশ)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন