শুক্রবার | ৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:২১
Logo
এই মুহূর্তে ::
সিঁদুরের ইতিকথা আর কোন এক গাঁয়ের বধূর দারুণ মর্মব্যথা : দিলীপ মজুমদার সাহিত্যিকদের সংস্কার বা বাতিক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষে শ্রীপাণ্ডবা বা নির্জলা একাদশীর মাহাত্ম্য : রিঙ্কি সামন্ত দশহরার ব্যুৎপত্তি ও মনসাপূজা : অসিত দাস মেনকার জামাই ও জামাইষষ্ঠী : শৌনক ঠাকুর বিদেশী সাহিত্যিকদের সংস্কার ও বাতিক : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী ভক্তের ভগবান যখন জামাই (শেষ পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-এর ছোটগল্প ‘সময়ের প্ল্যাকটফর্ম’ গুহাচিত্র থেকে গ্রাফিটি : রঞ্জন সেন জামিষষ্ঠী বা জাময়ষষ্ঠী থেকেই জামাইষষ্ঠী : অসিত দাস কার্বাইডে পাকানো আম দিয়ে জামাইষষ্ঠীতে জামাই খাতির নয়, হতে পারে ক্যান্সার : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ভক্তের ভগবান যখন জামাই (প্রথম পর্ব) : রিঙ্কি সামন্ত কাশ্মীর নিয়ে বিজেপির নেহরুকে দোষারোপ ধোপে টেকেনা : তপন মল্লিক চৌধুরী রবীন্দ্র নাটকের দুই ট্র্যাজিক রাজা : শৌনক দত্ত কবির মৃত্যু : দিলীপ মজুমদার শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের সপ্তসঙ্গিনী : স্বামী তেজসানন্দ মহারাজ দীঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক : সন্দীপন বিশ্বাস সিঁদুরে মেঘের গর্জন : অসিত দাস শতবর্ষে অন্য বিনোদিনী — তৃপ্তি মিত্র : শৌনক দত্ত আমার প্রথম অভিনয় দেখে সত্যেন বসুই বলেছিলেন— তোর হবে : জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ইন্দ্রজিৎ আমাকে ক্লান্ত করে কেবলই ক্লান্ত : তপন মল্লিক চৌধুরী মনোজ বসু-র ছোটগল্প ‘বাঁশের কেল্লা’ গ্রেস কটেজ বুলেটিন প্রকাশ : দীপাঞ্জন দে অথ ওয়াইন কথা : রিঙ্কি সামন্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের চিকিৎসাবিভ্রাট : অসিত দাস বাংলা ইসলামি গান ও কাজী নজরুল ইসলাম : আবু বকর সিদ্দিকি পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের অনবদ্য সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি : মনোজিৎকুমার দাস কঠোর শাস্তি হতে চলেছে নেহা সিং রাঠোরের : দিলীপ মজুমদার রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন : শান্তা দেবী বাঙালি মুসলমান সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা : ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা (গুরু পূর্ণিমা) আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

রবীন্দ্রনাথ, পঁচিশে বৈশাখ ও জয়ঢাক : অসিত দাস

অসিত দাস / ৩২৩ জন পড়েছেন
আপডেট শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫

পঁচিশে বৈশাখ নিয়ে কিছু লিখতে গেলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি আক্ষেপের কথা মনে পড়ে। তিনি নাকি কবিতায় বৈশাখের সঙ্গে জয়ঢাক ছাড়া কিছু মেলাতে পারেননি।

আর একটি কবিতা পড়েছিলাম বহুদিন আগে। কবির নাম মনে পড়ছে না। কবিতাটির নাম ‘চব্বিশে ও ছাব্বিশে বৈশাখ’। এখানে লিখলাম যতটা মনে পড়ে —

চব্বিশে ও ছাব্বিশে বৈশাখ

পঁচিশে বৈশাখের আগের দিনটি ছিল চব্বিশে বৈশাখ।

এক মহাপুরুষের জন্মের শেষ প্রস্তুতি চলছিল,

ডাক্তার, বদ্যি, হাকিম, ধাইমা সকলেই ছিল উৎকণ্ঠিত।

এর মধ্যেই ঘন ঘন বার্তা পাঠানো হচ্ছিল

এদিক ওদিকে আত্মীয় কুটুম্বজনের বাড়িতে

এক নক্ষত্রের জন্মের আগাম খবর জানিয়ে।

দলগত সংহতির কোনও ত্রুটি বা ব্যত্যয়

ঘটাতে পারত সমূহ সর্বনাশ।

**

মহাপুরুষের জননীকে কিন্তু থাকতে হচ্ছিল

ধীর স্থির ও অচঞ্চল,

কারণ তিনিই তো হবেন রত্নগর্ভা

মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাদেই!

মহাপুরুষ ভূমিষ্ঠ হলেন পঁচিশে বৈশাখে—

তারপরের দিনটি যে ছিল ছাব্বিশে বৈশাখ

তা বলাই বাহুল্য।

**

এদিনটা ছিল আরও মারাত্মক

পৃথিবীর আলোর সঙ্গে মুখোমুখি মোলাকাতের

দ্বিতীয় চব্বিশ ঘণ্টার গুরুত্ব ছিল আরও অনেক বেশি

পৃথিবীর যাবতীয় ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া ও ছত্রাকের

আক্রমণ প্রতিহত করার প্রক্রিয়াটা সেদিনই যে

সেই নবজাতককে রপ্ত করতে হয়েছিল।

এরপরের ঘটনা তো কীটাণুর বিরুদ্ধে

এক মানবসন্তানের যুদ্ধজয়ের ইতিহাস।

এহেন ক্রান্তদর্শী ও কালজয়ী রবীন্দ্রনাথেরও কিন্তু দৃষ্টির কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। লাল-দুর্বলতা বলা যায় এটিকে। লাল রঙ তিনি ভালো দেখতে পেতেন না। তখন লাল সেলামের চল হয়নি বঙ্গে। হলে তিনি আরও আতান্তরে পড়তেন।

কাব্যসাহিত্যে তিনি ‘লাল’ শব্দটি বেশি জায়গায় লেখেননি। ‘রাঙা’ ব্যবহার করেছেন। ‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে’— যেমন লিখেছেন, তেমনি ছেলে-ভোলানো ‘রবিমামা দেয় হামা, গায়ে রাঙা জামা ওই’— এটাও লিখেছেন।

লাল একেবারে লেখেননি তা নয়, তবে তুলনায় কম। সাহিত্যে ও আত্মজৈবনিক লেখাতে ক্বচিৎ কদাচিৎ লাল রঙের উল্লেখ পাওয়া যায়।

জীবনস্মৃতিতে ‘হিমালয়যাত্রা’ পর্বে লিখেছেন, ‘পিতা গায়ে একটি লাল শাল পরিয়া হাতে একটি মোমবাতির সেজ লইয়া নিঃশব্দসঞ্চরণে চলিয়াছেন’।

‘য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র’-এ লিখিয়াছেন, “একজন মুসলমানিনী সাজিয়াছেন, লাল ফুলো ইজের, তার উপর একটা রেশমের পেশোয়াজ, মাথায় টুপির মতো—”।

আর একটি পত্রে লিখিয়াছেন, “ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে লাল লাল ফুলো ফুলো মুখ নিয়া বাড়ির দরজার বাইরে ও রাস্তায় খেলা করিতেছে।”

তাহলে কবিগুরু প্রশান্তকুমার মহলানবিশের পত্নী নির্মলকুমারী মহলানবিশকে তিনি লাল রঙ দেখতে না পাওয়ার কথা বলতে গেলেন কেন? তা না বললে নির্মলকুমারীই বা বাইশে শ্রাবণ বইয়ে লিখলেন কেন, —

“বাগানে ঘাসের মধ্যেও খুব ছোট নীল রঙের জংলী ফুল ফুটে থাকলে ঠিক ওঁর চোখে পড়তো, বলতেন, ‘দ্যাখো দ্যাখো, কী চমৎকার ফুলটা’। হাসতেন আর বলতেন, ‘কী আশ্চর্য। এতো স্পষ্ট জিনিসটা দেখতে পাচ্ছ না? আমি তোমার লাল ফুল ভালো দেখতে পাইনে বলে আমাকে ঠাট্টা করো।…”

তবে কবিতা, গল্প, উপন্যাসে লাল-এর চেয়ে ‘রাঙা’ যে বেশি ব্যবহার করেছেন, সেটা অনস্বীকার্য।

কবিগুরু যে আংশিক বর্ণান্ধ ছিলেন, তা কবি নিজেই স্বীকার করেছেন।

তাহলে রবীন্দ্রনাথের ‘লাল’ রঙ আসলে কী? তিনি যদি সত্যিই লাল রঙ দেখতে পেতেন, তবে তিনি বিভিন্ন সময়ে লাল রঙ দেখতে না পাওয়ার কথা বলতে গেলেন কেন?

আমরা বর্ণান্ধ মানুষের রঙের স্পেক্ট্রামের কথা জানি। রেড-গ্রিন কালার ব্লাইন্ড ব্যক্তিরা লালকে শুধু সবুজই দেখেন না, বাদামি ও ধূসরও দেখেন। রবীন্দ্রনাথের লেখায় উল্লিখিত লাল আসলে বাদামি বা ধূসর। তাঁর আঁকা ছবিতেও সেটা লক্ষ্য করা যায়। মনে হয় রবীন্দ্রনাথের রেড-সেনসিটিভ কোন সেলে (Cone Cell) শুধু নয়, গ্রিন-সেনসিটিভ কোন সেলেও গোলমাল ছিল। অর্থাৎ তিনি শুধু প্রোটানোপই (Protanope) ছিলেন না, ডিউটেরানোপ-ও (Deuteranope) ছিলেন।

তাই তিনি লাল রঙকে বেগুনি, বাদামি বা ধূসর দেখতেন। এই রঙকেই তিনি ‘লাল’ লিখেছেন বিভিন্ন লেখায়।

জানি না, চক্ষুবিশেষজ্ঞরা কবির রঙের এই বিচিত্র পারসেপশন নিয়ে কী বলবেন! জ্যোতির্ময় বসু আর পিকফোর্ডের পরে কেউ এটা নিয়ে কাজ করেছেন কি?


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন


StatCounter - Free Web Tracker and Counter StatCounter - Free Web Tracker and Counter