সোমবার | ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩৯
Logo
এই মুহূর্তে ::
রবীন্দ্রসাহিত্যে কবিয়াল ও কবির লড়াই : অসিত দাস নকল দাঁতের আসল গল্প : রিঙ্কি সামন্ত বাংলা গান থাকুক সহৃদয়-হৃদয়-সংবাদী (প্রথম পর্ব) : আবদুশ শাকুর মুর্শিদাবাদের কৃষি ঐতিহ্য : অনুপম পাল নক্সী কাঁথায় বোনা জসীমউদ্দীনের বাল্যজীবন : মনোজিৎকুমার দাস পঞ্চানন কুশারীর জাহাজী গানই কি কবির লড়াইয়ের মূল উৎস : অসিত দাস দিব্যেন্দু পালিত-এর ছোটগল্প ‘ঝালমুড়ি’ নকশালবাড়ি আন্দোলন ও বাংলা কবিতা : কার্তিক কুমার মণ্ডল নিঃসঙ্গ ও একাকিত্বের আখ্যান : পুরুষোত্তম সিংহ ভিয়েতনামের গল্প (পঞ্চম পর্ব) : বিজয়া দেব অন্তরের আলো জ্বালাতেই কল্পতরু উৎসব : সন্দীপন বিশ্বাস কল্পতরু — এক উত্তরণের দিন : মৈত্রেয়ী ব্যানার্জী চলচ্চিত্র উৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (শেষ পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী ফেলে আসা বছরে দেশের প্রবৃদ্ধির পালে হাওয়া না ঝড় : তপন মল্লিক চৌধুরী কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (শেষ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জোয়ানিতা ম্যালে-র ছোটগল্প ‘নাইট জব’ অনুবাদ মনোজিৎকুমার দাস দেশজ ফসলের বীজকে কৃষির মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে নদিয়া বইমেলা মুখপত্র : দীপাঞ্জন দে চলচ্চিত্র মহোৎসবে পানাজি থেকে কলকাতা (প্রথম পর্ব) : সায়র ব্যানার্জী শৌনক দত্ত-র ছোটগল্প ‘গুডবাই মাষ্টার’ হেলান রামকৃষ্ণ শিশু বিতানের রজত জয়ন্তী বর্ষপূর্তি উৎসব পালিত হল মহাসমারোহে : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় কার্ল মার্কসের পরিজন, পরিকর (ষষ্ঠ পর্ব) : দিলীপ মজুমদার জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের নদী ধানসিঁড়ি আজও আছে কিন্তু মৃতপ্রায় : মনোজিৎকুমার দাস মৌসুমী মিত্র ভট্টাচার্য্য-এর ছোটগল্প ‘শঠে শাঠ্যং’ যথোচিত মর্যাদায় পালিত হল খানাকুলের রূপকার শান্তিমোহন রায়ের জন্মদিন : মোহন গঙ্গোপাধ্যায় আবার দেখা যদি হলো সখা প্রাণের মাঝে আয় — নেতাজী নগর বিদ্যামন্দিরের পুনর্মিলন : সুশান্ত দাস মোদি বনাম মনমোহন: ইতিহাস বারবার এই বিশ্লেষণ করবে : সন্দীপন বিশ্বাস কবির লড়াইয়ের স্রষ্টা হলেন রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষ পঞ্চানন কুশারী : অসিত দাস চল্লিশতম নদিয়া বইমেলা স্মরণিকা : দীপাঞ্জন দে ভাগ্নার পদধূলিতে ধন্য হল মামার বাড়ি, বেলুড় মঠ ও মিশন অধিগ্রহণ করে মর্যাদা দিল : মোহন গঙ্গোপাধ্যায়
Notice :

পেজফোরনিউজ অর্ন্তজাল পত্রিকার (Pagefournews web magazine) পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনদাতা, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে জানাই ২০২৫ ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা আন্তরিক শুভনন্দন।  ❅ আপনারা লেখা পাঠাতে পারেন, মনোনীত লেখা আমরা আমাদের পোর্টালে অবশ্যই রাখবো ❅ লেখা পাঠাবেন pagefour2020@gmail.com এই ই-মেল আইডি-তে ❅ বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন,  ই-মেল : pagefour2020@gmail.com

আদি দুঃখের সন্তান নীলিম কুমার : শৌনক দত্ত

শৌনক দত্ত / ৪২৮ জন পড়েছেন
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩

এজরাপাউন্ডের মতে, কোন কবি কত পরিশ্রমী ও আন্তরিক তার প্রমাণ তার আঙ্গিক গত চেতনায়। পাঠ ও অভিজ্ঞতার জন্য যেমন তার তৎপরতার দরকার, তেমনি তার দরকার অলস সময়ের। এইটুকু বলেই ঝোলা থেকে একটা বই বের করে নিখিলেশ, নামটা দেখেই চিনতে পারি তিনি সাম্প্রতিক অসমের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত কবি নীলিম কুমার। পৈত্রিক ভিটা নওগাঁ হলেও আমার জন্ম কোচবিহারে কিন্তু বাবা কাকারা অসমিয়া বলতে পারায় কখনো কখনো তাদের কল্যাণে অসমিয়া লেখাপত্র অনেকটা সময় নিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়তে পারি তাছাড়া অন্যদেশ সম্পাদক অঞ্জলি সেনগুপ্ত ও বিশিষ্ট অনুবাদক বাসুদেব দাসের কল্যাণে অসমিয়া সাহিত্যের সাথে আমার পরিচিতি অনেকখানি। তাদের হাত ধরেই নীলিম কুমার ও তাঁর কবিতার সাথে পরিচয়। নীলিম কুমার পড়ার পিছনে আর একজনের কথা না বললেই না তিনি কবি প্রবুদ্ধসুন্দর কর। প্রবুদ্ধদার বিশেষ গুণ ছিল প্রচুর কবিতা মুখস্থ বলতে পারতো যখন তখন, তার কন্ঠে নীলিম কুমারের কবিতা শুনেও আগ্রহ জন্মে ছিল এই কবির প্রতি।

মৌন একটি বেহালার ধারে

আমি বসে রয়েছি

আমি আদি দুঃখের

সন্তান…

আমি চারটি লাইন উচ্চারণ করতেই নিখিলেশ বিস্ময়ে তাকায়। ওর চোখে মুখে স্পষ্ট জিজ্ঞাসা তুই এই কবির কবিতা পড়েছিস? আমার উত্তর দিতে ইচ্ছে করে না ওর দিকে তাকিয়ে তাই বলে উঠি —

ফোনের রিসিভারটি নিয়ে

আমি এপারে কথা বলছি

সে ওপারে

আমি এখানে নেই

সেও সেখানে নেই

যাদুর কাঠিতে সে আমায়

কোথায় যে নিয়ে গেছে

আর আমি

একের পর এক

তার সকল আবরণ

খুলে ফেলছি

আবরণ খুলে

যাকে পেয়েছি

সেই কবিতা

নিখিলেশ এই কবিতাটা বলার পরে নিশ্চিত হয়েছে আমি নীলিম কুমারের কবিতার সাথে পরিচিত। তাই কৌতুহলে জানতে চায় কবিতা কি নীলিম কুমারের এই কবিতার মতোই ধরা দেয়?

এমন প্রশ্নে আসলে কি উত্তর দেব বুঝতে উঠতে পারছিলাম না কবি ও কবিতা নিয়ে আমার নিজস্ব ভাবনার কথা বলতে গিয়ে বহুবছর আগে পড়া একটা ঘটনার আশ্রয় নিয়ে বললাম ইতিহাসের কুখ্যাত শাসক চেঙ্গিস খানের নাম জানিস তো। তিনি শেষ জীবনে পাগল হয়ে উঠেছিলেন অমরত্ব পাওয়ার আশায়।

তার অমাত্যরা অমরত্বের দাওয়াই-সহ অনেক চিকিৎসককে নিয়ে আসতেন তার কাছে। তিনি তাদের তৈরি দাওয়াই তাদের খাওয়াতেন আর সঙ্গে সঙ্গে শিরশ্ছেদ করতেন। দেখতে চাইতেন মৃত্যুর পরও দাওয়াই গুণে তারা বেঁচে ওঠেন কিনা।

অবশেষে তিনি চৈনিক ঋষি, মহাস্থবির কবি চাংচুংকে তার দরবারে এনে অনেক লোভ দেখিয়ে জানতে চান অমর হওয়ার কোনো দাওয়াই সম্পর্কে তিনি জানেন কিনা।

কেননা ততদিনে চাংচুংয়ের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বময়। তিনি সব প্রশ্নের জবাবে কোনো কথা না বলে শুধু চীনা কায়দায় তার বুড়া আঙুল দুটি দেখালেন। আর বললেন, তলোয়ার কিংবা রাজ্যজয় নয়, অমর হওয়ার উপায় প্রেম, জীবে প্রেম।

তাকিয়ে দেখ কত শত সহস্র রাজারানী গত হয়ে গেল, কবিতা বা কবি, হোমর বা লিওপার্দি, সেনেকা বা হাফিজ, রুমি, জামি বা খৈয়াম, হুইটম্যান বা জন ডানের কবিতা বেঁচে আছে নির্বিঘ্নে। আমার কাছে কবি ও কবিতা নীলিম কুমারের কবিতার মতোই বিস্ময়। কথাটা বললাম বটে কিন্তু নিজের কাছেই ফিরে গেলাম কোন দূর্বলতা নেই তো কবির প্রতি? নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করি। অসমিয়া কবিতায় নীলিম কুমার কে এবং কেন? বুদবুদের মতো প্রশ্ন বাড়ছে নিখিলেশ কিসব যেন বলছে আমার সেদিকে মন নেই, আমার ভাবনা জুড়ে ময়নাতদন্ত একজন কবি ও তার কবিতা নিয়ে, আমি জানি এই অসমিয়া কবিতাকাশে বহু কবি নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল মনে পড়ে যায় রঘুনাথ চৌধুরী, হীরেন ভট্টাচার্য, আনন্দচন্দ্র বরুয়া, নলিনীবালা দেবী, পার্বতীপ্রসাদ বরুয়া, নীলমনি ফুকন-সহ আরো কত কত নাম।

অসমীয়া আধুনিক কবিতার দিকে নজর দিলে দেখা যায় চল্লিশের দশকে সাহিত্য পত্রিকা ‘জয়ন্তী’র কবিগোষ্ঠীই অসমীয়া কবিতায় আনেন নতুন ভাবনা, নতুন আঙ্গিক। আগের অসমীয়া কবিতার প্রেমানুভূতির উচ্ছ্বাস ও ইমেজ থেকে বেরিয়ে তারাই কবিতায় আনেন গদ্য ও মুক্তক ছন্দবদ্ধ। মনে করা হয় অমূল্য বরুয়া, ভবানন্দ দত্ত ও হেম বরুয়া অসমীয়া আধুনিক কবিতার জনক। অমূল্য বরুয়ার ‘অন্ধকারের হাহাকার’, ‘বেশ্যা’ বা ভবানন্দ দত্তের ‘রাজপথ’ কিংবা হেম বরুয়ার ‘বাঁদর’ কবিতা ভাবনা ও আঙ্গিকে আধুনিক অসমীয়া কবিতার দিশারী হলেও চল্লিশের অধিকাংশ কবিতা, কবিতা হয়ে ওঠেনি। পঞ্চাশের দশকে চল্লিশের কবি নবকান্ত বরুয়ার লেখা কিছু কবিতা যেমন ‘গলি’, ‘এইখানে নদী ছিল’, ‘অন্ধকার রাতের এলিজি’ প্রভৃতিকে আধুনিক অসমীয়া কবিতার স্বার্থক রূপ বলা যায়। তবে চল্লিশের আরেক কবি অজিৎ বরুয়ার ১৯৪৮ সালে লেখা ‘মন কুয়াশা’, ‘সময়’ অসমীয়া সাহিত্যের প্রথম সার্থকতম আধুনিক কবিতা। এবং আমার মনে হয় অসমীয়া সাহিত্যের প্রথম আধুনিক কবিও তিনিই। তাঁর কবিতাতেই চিত্রকল্পের মাধ্যমে কবির নিজস্ব ঢং প্রকাশ পায়। কবিতার শরীরে অনাকাঙ্খিতভাবে চিত্রকল্প ঢুকে পড়ে কবিতার গঠনশৈলী হয়ে ওঠে ম্যাজিক্যাল। তাঁর ‘জেংরাই’ কবিতাটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতেই পারে। স্মরণ করতে চাই মহিম বরার কবিতা ও তাঁর ব্যবহৃত চিত্রকল্প ও প্রতীক। আগেই বলেছি অসমীয়া পাঠ আমার সীমিত, হয়ত অনেক কবি এখনো অপঠিত রয়ে গেছেন। তবে হোমেন বরগোহাঞি, বীরেশ্বর বরুয়া, নীলমনি ফুকন, ভবেন বরুয়া, হীরেন ভট্টাচার্য, হীরেন গোঁহাই, প্রফুল্ল ভূঞা, নির্মলপ্রভা, কেশব মহন্ত-সহ আরো আধুনিক কবিকে মাথায় রেখেই আমার মনে হয়েছে নীলিম কুমার অসমীয়া আধুনিক কবিতার সফল সন্তান। প্রশ্ন জাগছে জানি, কেন এই কথা বলছি, কারো কারো মনে হতে পারে আমি এই কবির কবিতায় প্রভাবিত বা অন্ধ কিন্তু আপনি যদি অসমীয়া কবিতার বাইরে কবিতার পাঠক হয়ে থাকেন বিশেষ করে বাংলা কবিতার তবে আপনার পাঠ অভিজ্ঞতায় অবশ্যই ধরা পড়বে অসমীয়া আধুনিক কবিতার জনক থেকে শুরু করে ধরে ধরে এগোলে প্রায় সবাই বাংলার কোন না কোন কবি দ্বারা কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে কিংবা থাকাটাও স্বাভাবিক তবে আমার পঠন অভিজ্ঞতায় সেই ব্যতিক্রম অসমীয়া কবির নাম নীলিম কুমার।

আধুনিক কবিদের কবিতায় অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বস্তুর ওপর গন্ধ ধর্মের বৈচিত্র্য বর্ণনার সঙ্গে প্রাণের আপেক্ষিক অনুষঙ্গ। সেই সঙ্গে সমকালীন রাজনীতি সমাজ, সমাজব্যবস্থা, সমাজের কাঠামোগত ও রুচিগত পরিবর্তনের সাথে সাথে সমস্ত মানুষের মনোবৈকল্য ও আধুনিক কবিতার অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এই অনুষঙ্গে আমরা দেখি কবি নীলিম কুমার একান্ত নিজস্ব একটি দৃষ্টি বিস্তার করেন যা শব্দের তীরে হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় কিন্তু সেই দৃষ্টি কবির একান্ত নিজের তার শব্দ ব্যবহার বা চিত্রকল্পে কিংবা ভাবনা আঙ্গিকে কোন কবির প্রত্যক্ষ প্রভাব নেই।

নীলিম কুমারের কবিতা পাঠে বোধগম্য হয়, তিনি ‘কল্পনা’র কার্যকরী একটি স্থানকে সব সময় অনুভব করেন। দৃশ্যপট কবির কল্পনাকে জাগ্রত করতে পারে। সংগত কারণেই তিনি তাঁর কবিতায় উপমা ব্যবহার করেন সুনির্দিষ্ট চিন্তার মাধ্যমে। তিনি মনে করেন ‘কল্পনা’ থেকে কবির চিন্তার উদ্ভাসন হয় স্তরে স্তরে। কবিমন দ্বন্দ্বজর্জরিত না হলে উৎকৃষ্ট কিছু সৃষ্টিকে প্রকারান্তরে তিনি নাকচ করেন। নাগরিক প্রমিত উচ্চারণকে চৌকস ভঙ্গিতে কবিতার বশীভূত করাই হয়ে উঠেছে তার প্রধান কাব্যলক্ষণ। সুচিন্তিত ভাবে নীলিম কুমার তাঁর কবিতাকে আলাদা করেছেন, আমার মনে হয় তিনি পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার-উপযোগী কাব্যভাষায় রূপায়িত করেছেন, আর কাঙ্ক্ষিত জিজ্ঞাসার সঙ্গে অন্তরঙ্গ কায়দায় সেগুলোকে মিশিয়েছেন। তাতে গ্রামীণ রূপকথা, অতিকথা, মিথ এবং সামষ্টিক অভিজ্ঞতার গভীর ছায়াপাত ঘটেছে। যে জীবন তিনি পরীক্ষা করতে চেয়েছেন, অথবা জীবনের যে যে জিজ্ঞাসা ও সংকটগুলোকে গুরুতর করে তুলতে চেয়েছেন, তার সবগুলো হয়ত যাপিত জীবনের নয়। হয়ত সেটা কবির লক্ষ্যও ছিল না। জীবনকে দেখেছেন কবিতার ভেতর, কবিতাকে করে তুলেছেন জীবনের ভাষ্য। প্রতিদিনের উচ্চারিত শব্দসমবায় থেকে সংগ্রহ করেছেন শব্দ। ফলে তার জটিল চিন্তাও হয়ে উঠেছে সহজবোধ্য। মানুষের আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের, বিশেষত নর-নারীর আন্তঃসম্পর্কের কতগুলো তুলনামূলক নির্বিশেষ জিজ্ঞাসাই তার কবিতার মূল উপজীব্য নয়। তিনি কবিতায় ধরতে চেয়েছেন নাগরিক জীবনের গ্লানি এবং শেকড়ের প্রতি আকর্ষণ—এ দুয়ের টানাপড়েনে নীলিম কুমার সমন্বয়বাদী নন; ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী। অসমিয়া আধুনিক কবিতার আগামী প্রজন্মের কাছে নীলিম কুমার রোলমডেল কেননা কাব্য নিরীক্ষার ক্ষেত্রে কবির দীর্ঘদিনের অভ্যাস, অর্জিত জ্ঞান, অধীত মনীষা, আত্মোপলব্ধিজাত অন্তর্নিহিত তাৎপর্যময় চিত্রকল্প, উপমা, উৎপ্রেক্ষা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। কালই শেষ পর্যন্ত কবিতার শ্রেষ্ঠ পাঠক ও বিচারক। অসমিয়া আধুনিক কবিতার ইতিহাসে নীলিম কুমারের কবিতা একাধারে বুর্জোয়া, ধনতন্ত্র ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। যাপিত জীবনের দলিল; মগ্ন প্রেমের প্রবল বিশ্বাসের খতিয়ানও। নীলিম কুমার কবি—সমাজ ও শিল্পে সমন্বয়বাদী; বলার ভঙ্গি এবং অন্তর্জগত চেতনায় ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে প্রোজ্জ্বল। নিজের কণ্ঠস্বাতন্ত্র্য স্পষ্ট করার লক্ষ্যে একই বিষয়ে যেমন বারবার ভিন্ন ভিন্ন কবিতায় উচ্চারণ করেছেন, তেমনি পরম্পরা রক্ষা করে রচনা করেছেন একের পর এক কবিতা।

১৭ মে, ২০২৩


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “আদি দুঃখের সন্তান নীলিম কুমার : শৌনক দত্ত”

  1. Sarbajit Sarkar says:

    সুন্দর লেখা। কবিতার অন্তরের কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশেষ সংখ্যা ১৪৩১ সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন